OrdinaryITPostAd

ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ? - মিলাদুন্নবী কত তারিখ ২০২৩?

ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ? ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ অনুষ্ঠিত হবে  ৯ অক্টোবর ২০২৩। ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে কি কি করণীয় এবং কি কি বর্জনীয় সেই সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে।তাই ঈদে মিলাদুন্নবী সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য জানতে হলে আপনাকে পুরো আর্টিকেলটি পড়তে হবে।

পেজ সূচিপত্র: ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ? - মিলাদুন্নবী কত তারিখ ২০২৩?

ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ? - মিলাদুন্নবী কত তারিখ ২০২৩?: উপস্থাপনা

মুসলিম জাতির জন্য দুই ঈদ আল্লাহ এবং তার রাসুল কর্তৃক নির্ধারিত। এই  দুই ঈদ এর বাইরে আর কোন ঈদ নেই। সুতরাং কোরআন এবং হাদিসের দৃষ্টিকোণ থেকে ঈদে মিলাদুন্নবী বলে কোন অনুষ্ঠান নেই। বর্তমানে অনেকেই ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করে। যেহেতু ঈদে মিলাদুন্নবী সম্পর্কে কোরআন এবং হাদীসে কোন তথ্য নেই, তাই মিলাদুন্নবী পালন করা বাঞ্ছনীয় নয়। 

১২ই রবিউল আউয়াল ও ঈদে মিলাদুন্নবী নিয়ে আরও কিছু পোস্ট

ইসলামের কোন যুগে এই ঈদে মিলাদুন্নবীর প্রচলন ছিল না। পরবর্তীতে ঈদে মিলাদুন্নবীর প্রচলন করা হয়েছে। বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যসহ অন্যান্য ইসলামিক দেশে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা হয় না। ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা হয় শুধু ভারতে উপমহাদেশসহ আরো কয়েকটি দেশে। 

যদি ইসলামের যুগ থেকেই ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করার কোন প্রয়োজন থাকতো তাহলে অবশ্যই তা সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে পালন করা হতো। অথচ সৌদি আরবে ঈদ ই মিলাদুন্নবী পালন করা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। 

ঈদে মিলাদুন্নবীর প্রচলন কবে থেকে শুরু হয়?

ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় হিজরী চতুর্দশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় থেকে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা শুরু হয় আর নতুন এই অনুষ্ঠানটি শুরু করেন তৎকালীন খলিফা আল মুয়িজ্জু লি-দীনিল্লাহ। শুধু ঈদে মিলাদুন্নবী নয় তিনি রাসূলুল্লাহ (সা:) এর জন্মদিন, হযরত আলী(রাঃ), ফাতেমা(রাঃ), হাসান এবং হোসাইন(রাঃ) এর জন্মদিন সহ আরো বহু বেদাত চালু করেন।

প্রাথমিকভাবে তা শুধুমাত্র মিশরে পালন করা হলেও পরবর্তীতে আস্তে আস্তে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মাঝে ঈদে মিলাদুন্নবী অন্যতম একটি ধর্মীয় উৎসব হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। এইসব আচার-অনুষ্ঠান মিশর থেকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়ার পেছনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তার নাম হলো আবু সাঈদ কুকবুরী।
আবু সাঈদ কুকবুরী বসবাস করতেন ইরাক অঞ্চলের প্রদেশ এবং তৎকালীন সময়ে তার প্রচুর জনসমর্থন থাকায় ভক্ত থাকায় খুব সহজেই তিনি এই আচার-অনুষ্ঠান গুলো বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে দিতে পেরেছেন। 

আপনি যদি লক্ষ্য করেন তাহলে বুঝতে পারবেন না যে অধিকাংশ বেদাত ইরাক থেকে ছড়িয়ে পড়েছে। এবং এটা কেমন একটি অঞ্চলে যেখানে ইসলামের বিভিন্ন ধরনের ইতিহাস জড়িত রয়েছে। ইরাক ইসলামের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নিয়েছে। ইরাকে যেমন অনেক ভালো কাজ হয়েছে ঠিক তেমনি ভাবে সেখান থেকে অনেক কুসংস্কৃতিও ছড়িয়েছে। 

পরবর্তীতে এ সকল আচার-অনুষ্ঠান ভারতীয় উপমহাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। ভারতীয় উপমহাদেশে যেসকল মুসলিম শাসক ছিল তাদের অধিকাংশই ছিল সে মতাবলম্বীরা এই ধরনের বেদাত পালনে খুবই পটু। তাই যখন তারা এ ধরনের আচার অনুষ্ঠানের ব্যাপারে জানতে পারে তখন তারা এই আচার-অনুষ্ঠান গুলো পালন করতে আগ্রহী হয়ে পড়ে আর এভাবেই তাদের মাধ্যমে ভারতীয় উপমহাদেশে ঈদে মিলাদুন্নবী সহ আরো বিভিন্ন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন যে ঈদে মিলাদুন্নবী ইসলামের কোন বিধান নয় বরং ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা বেদাত কাজ আর বেদাআত কাজ করলে নিঃসন্দেহে গুনা হয়। অবশ্যই আপনাকে এই ধরনের বেদাত কাজ পরিহার করতে হবে এবং নিজেকে পরিশুদ্ধ রাখতে হবে। 

ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের ভিত্তি কি? 

যারা ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করে তারা মনে করে যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ১২ ই রবিউল আউয়াল জন্মগ্রহণ করেছেন। কিন্তু এই তথ্যটি অকাট্য ভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবে জন্মগ্রহণ করেছেন সেই ব্যাপারে ইসলামিক স্কলারদের মতপার্থক্য রয়েছে। তবে সব থেকে বেশি গ্রহণযোগ্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রবিউল আউয়াল মাসের ৯ তারিখে জন্মগ্রহণ করেছেন। 

এ ব্যাপারে বিখ্যাত সিরাত গ্রন্থ রাহীকুল মাখতুম বলা হয়েছে যে রাসূল সাঃ রবিউল আউয়াল মাসের ৯ তারিখে জন্মগ্রহণ করেছেন। সুতরাং যারা ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করে তাদের এই অনুষ্ঠান পালন করার ভিত্তি যদি রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর জন্মদিন হয়ে থাকে সেটাও কিন্তু অকাট্যভাবে প্রমাণিত নয়?

তর্কের খাতিরে যদি ধরে নেয়া যায় যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখে জন্মগ্রহণ করেছেন, এখন প্রশ্ন হল যে জন্মদিন পালন করা কতটুকু বৈধ? ইসলামে কি জন্মদিন পালন করার বৈধতা রয়েছে? 
এ ব্যাপারে সকল ইসলামিক স্কলার একমত যে জন্মদিন পালন করা কখনোই বৈধ নয় সুতরাং জন্মদিন পালন করা যদি বৈধ না হয়ে থাকে তাহলে কোন দৃষ্টিকোণ থেকে তারা ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করে? যাইহোক একথা স্বতঃসিদ্ধ যে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করার কোনো রীতি ইসলামে নেই। বা ইসলাম কখনো ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা সমর্থন করে না।

মূল ধারার কোনো ইসলামিক স্কলার কখনোই ঈদে মিলাদুন্নবীর সমর্থন করেনা বা ঈদে মিলাদুন্নবী অনুমোদন করে না। এ ব্যাপারে প্রখ্যাত হানাফী আলেমদের মতামত রয়েছে। বিশিষ্ট হানাফী চিন্তাবিদ আল্লামা তাজুদ্দীন ফাকেহানী (রাঃ) বলেন, মিলাদের এই কু-প্রথা না কোরআন দ্বারা প্রমাণিত না হাদিস দ্বারা আর এধরনের কোন আচার অনুষ্ঠান পূর্ববর্তী কোন আনন্দের থেকেও প্রমাণিত নয়। সুতরাং এটি একটি গর্হিত কাজ যা বাতিলপন্থী নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য তৈরি করেছে এবং বর্তমানে মাজার পুজারিরা লালন পালন করছে। (বারাহীনে ক্বাত্বেআ- ১৬৪ পৃ)

এ ব্যাপারে আর একজন প্রখ্যাত হানাফী চিন্তাবিদ প্রখ্যাত আলিম মাওলানা আঃ রহীম হানাফী রাঃ বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দুইশত বছর পরে একজন ইতিহাসের পাপীষ্ঠ বাদশা এই কুপ্রথা চালু করেন মারাত্মকভাবে ঘৃণিত একটি কাজ। যেই বাদশা এই ধরনের বেদাত চালু করেছে, ইতিহাসে তাকে পাপিষ্ঠ এবং ঘৃণিত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।  (সুন্নাত ও বিদআত- ২২৬ পৃ)

ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ? - মিলাদুন্নবী কত তারিখ ২০২৩?

আরবি ক্যালেন্ডার অনুসারে এবছর বারই রবিউল আউয়াল ইংরেজি মাসের  ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩। অর্থাৎ   ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে আরবি রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ হয়। যদিও কিছু কিছু দেশে রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ পরবে  ২৫ সেপ্টেম্বর। 

কেননা বাংলাদেশসহ ভারতীয় উপমহাদেশে আরবি তারিখ গণনা করা হয় সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর থেকে একদিন বেশি। ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ? বা মিলাদুন্নবী কত তারিখ ২০২৩? আশা করি এই প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন।

ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ? - মিলাদুন্নবী কত তারিখ ২০২৩?: উপসংহার

ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ? বা মিলাদুন্নবী কত তারিখ ২০২৩? তা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে।এবং ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা যাবে কিনা বা ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা সম্পর্কে ইসলামের বিধান কি তা ইতোপূর্বে আলোচনা করা হয়েছে উপরোল্লেখিত আলোচনা থেকে আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন যে, ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা যাবে কিনা?

না জেনে না বুঝে কারো দেখাদেখি কোন আমল করা কখনই উচিত নয়। আমল করার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে যাচাই-বাছাই করে এরপরে আমল করতে হবে। ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী সহ এই ধরনের বেদাত গুলো মূলত ইহুদী এবং খ্রিষ্টানদের থেকে আস্তে আস্তে ইসলাম ধর্মে অনুপ্রবেশ করেছে।
আর এই বিষয়গুলো ছড়িয়েছে মূলত শিয়া পন্থীরা। শিয়ারা বিভিন্ন ধরনের বেদাত পালনে খুবই অভ্যস্ত এবং তারা বিভিন্ন ধরনের ভ্রান্ত বিশ্বাস লালন করে থাকে। তাদের এই ভ্রান্ত বিশ্বাস গুলো তারা সবসময় জনসাধারণের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যায় এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা সফল হয়। আর এ কারণেই বর্তমানে ভারতীয় উপমহাদেশে এত মানুষ বেদাতের সাথে জড়িত। ১৬৪১৩

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url