ঈদে মিলাদুন্নবী কি বিদআত? - ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ?

বিশ্বনবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই সর্বোত্তম বাণী আল্লাহর কিতাব। আর সর্বোত্তম আদর্শ মুহাম্মদ (সাঃ) এর আদর্শ। সবচেয়ে নিকৃষ্ট বিষয় হলো- দ্বীনের মধ্যে নব-উদ্ভাবিত বিষয়। দ্বীনের মধ্যে নব-উদ্ভাবিত সব কিছুই বিদআত। প্রত্যেক বিদআত ভ্রষ্টতা, আর প্রত্যেক ভ্রষ্টতার পরিণাম জাহান্নাম।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৫৩৫)

ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা এই পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। ইসলামের নতুন করে কোন কিছু চালু করার কোন প্রয়োজন নেই এবং ইসলামে যা রয়েছে সেখান থেকে কোন কিছু বাদ দেয়ার কোন দরকার নেই। অর্থাৎ ইসলাম স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি ধর্ম এই ধর্মে সবকিছুই সম্পন্ন হয়ে গেছে এখানে নতুন করে প্রবেশ করানোর আর কোনো সুযোগ নেই।

অথচ বাংলাদেশসহ ভারতীয় উপমহাদেশে জাকজমকভাবে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা হয়। অনেক মানুষ বুঝে না বুঝে এই উৎসবে যোগদান করে। ঈদে মিলাদুন্নবী কি বিদআত?, ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ?, ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা হারাম?, ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করার হুকুম কি? এবং ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি বিদআত? সে সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হবে। 

ঈদে মিলাদুন্নবী কি বিদআত? বা ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি বিদআত? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইলে আর্টিকেলের এই অংশটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। কোন ব্যক্তি যদি দীনের ভিতর নতুন কোন বিষয়ের অনুপ্রবেশ ঘটানো হলো বেদাত। 

মিলাদ বা ঈদে মিলাদুন্নবী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে ছিল না, সাহাবাদের যুগে ছিল না, এমনকি তাবেই বা তাবে-তাবেয়ীদের যুগেও ছিল না। সুতরাং যে আমল ইসলামের সোনালী যুগে ছিল না সেটা কি করে সুন্নত বা নফল আমল হতে পারে? যাই হোক চলুন দেখে নেয়া যাক, ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি বিদআত?

বিশ্ব বিখ্যাত বীর গাজী সালাহউদ্দিন আইয়ুবী(র) ইরাকের একটি প্রদেশের গভর্নর হিসেবে আবু সাঈদ মুজাফফরুদ্দীন কুকুবুরী কে গভর্নর নিয়োজিত করেন। আবু সাঈদ মুজাফফরুদ্দীন কুকুবুরী সর্বপ্রথম এই মিলাদের প্রচলন ঘটান বিশেষজ্ঞদের মতে ৬০৪ হিজরীতে কুকুবুরী সর্বপ্রথম মিলাদের প্রচলন ঘটিয়েছেন।

সুতরাং বুঝতেই পারছেন না যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মৃত্যুর ৬০০ বছর পরে একজন ব্যক্তি মিলাদের প্রচলন করেন সুতরাং তা অবশ্যই বিদআতের অন্তর্ভুক্ত। মিলাদ বা ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা যাতে সেই ব্যাপারে চার মাযহাবের সকলেই একমত। 

উপমহাদেশের প্রখ্যাত হানাফী আলেমদের মধ্যে বিখ্যাত মুজাদ্দিদে আলফেসানী(র), আল্লামা হায়াত সিন্ধী(র), মাহমুদুল হাসান দেওবন্দী(র), (র), আশরাফ আলী থানভী(র) ও রশীদ আহমাদ গাংগুহী মাহমুদুল হাসান দেওবন্দী(র) সহ প্রায় সকল হানাফী আলেম সম্মিলিতভাবে মিলাদ পালন করা বিদআত বলে মনে করতেন। 

অথচ এই ঈদে মিলাদুন্নবী আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশে বেশ ঘটা করে পালন করা হয়। মূল ধারার কোন আলম এই ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা বৈধ মনে করেন না। যেহেতু অধিকাংশ আলেম এ ব্যাপারে একমত যে, ঈদে মিলাদুন্নবী বিদআত সুতরাং সেটা পালন করা থেকে অবশ্যই আপনাকে বিরত থাকতে হবে। ঈদে মিলাদুন্নবী কি বিদআত? বা ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি বিদআত? আশা করি এই প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন।

আপনি যদি ফরজ বিধান পালন না করেন, তাহলে কিন্তু আপনাকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। পক্ষান্তরে যদি কোন নফল ইবাদত করতে না পারেন সে জন্য আপনার পাপ হবে না। আপনি যদি ফরজ বিধান পালন না করেন, আবার সুন্নত পালন না করেন কিন্তু মুস্তাহাফের দোহাই দিয়ে বছরে একদিন ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করেন তাহলে আপনি নিজে নিজে চিন্তা করুন আপনি কতটুকু খাঁটি মুসলমান। ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করার হুকুম কি? বা ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি বিদআত? আশা করি এই প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন। 

যেহেতু ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা হারাম, সুতরাং আপনাকে অবশ্যই এই ধরনের ইসলাম বহির্ভূত কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে এবং অপরকে সচেতন করতে হবে। ঈদে মিলাদুন্নবী কি বিদআত?, ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ?, ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা হারাম?, ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করার হুকুম কি? এবং ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি বিদআত? আশা করি এই প্রশ্নগুলোর উত্তর পেয়েছেন।