OrdinaryITPostAd

২৬শে মার্চকে স্বাধীনতা দিবস ঘোষনা করা হয় কবে, কত সালে জানুন

 

আপনি কি ২৬শে মার্চ কে স্বাধীনতা দিবস ঘোষনা করা হয় কবে ও ২৬শে মার্চ কে স্বাধীনতা দিবস ঘোষনা করা হয় কত সালে জানতে চান? তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য। আজ আমরা আলোচনা করব ২৬শে মার্চ কে স্বাধীনতা দিবস ঘোষনা করা হয় কবে ও ২৬শে মার্চ কে স্বাধীনতা দিবস ঘোষনা করা হয় কত সালে তা নিয়ে।

চলুন আর দেরি না করে জেনে নেই ২৬শে মার্চ কে স্বাধীনতা দিবস ঘোষনা করা হয় কবে ও ২৬শে মার্চ কে স্বাধীনতা দিবস ঘোষনা করা হয় কত সালে।

আরও পড়ুনঃ স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতা

পেজ সূচিপত্রঃ ২৬শে মার্চ কে স্বাধীনতা দিবস ঘোষনা করা হয় কবে

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস কবে?

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ২৬ মার্চ। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ। প্রতি বছর গভীর শ্রদ্ধা ও ভাবগম্ভীর্যের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের তাৎপর্যপূর্ণ এই দিনটিকে স্মরণ করে পালন করা হয়।

স্বাধীনতা দিবসের ইতিহাস | ২৬শে মার্চ কে স্বাধীনতা দিবস ঘোষনা করা হয় কবে

ধর্মের ভিত্তিতে ১৯৪৭ সালে জন্ম নেয় ভারত ও পাকিস্তান নামক দুটি রাষ্ট্র। কিন্তু শুরু থেকেই দেখা যাচ্ছিলো পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব দিকের ভূখণ্ড তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) মধ্যে বৈরীতার হাওয়া। ভাষাসহ চাকরি ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তানের সাথে বৈষম্যের আচরণ করতে থাকে শক্তিশালী পশ্চিম পাকিস্তান - যার ফলশ্রুতিতে পরিস্থিতি একটা অনিবার্য সংঘাতের দিকে মোড় নেয় ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে।

তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান সরকার ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গভীর রাতে হামলা চালায় পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) নিরীহ জনগণের উপর ও স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে গ্রেপ্তারের আগেই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন। ঘোষণাটি ছিল নিম্নরুপঃ

ইংরেজিঃ "Maybe this is my last message. Bangladesh is independent from today. I urge the people of Bangladesh to be ready wherever they are, whatever they have and to resist the Pakistani aggressors with all their might. Continue fighting until the last Pakistani troops are expelled from the land of Bengal and the final victory of this Bengal is achieved".

বাংলা অনুবাদঃ "হয়ত এটাই আমার শেষ বার্তা। বাংলাদেশ আজ থেকে স্বাধীন। বাংলাদেশের জনগনকে আমি আহব্বান দিচ্ছি যে, যেখানে যে আছে, যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত হও এবং পাকিস্থানি হানাদার বাহিনীকে সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিরোধ কর। এই বাংলার মাটি থেকে পাকিস্থানি হানাদার বাহিনীর সর্বশেষ সৈন্যটিকে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত এবং লড়ায় চালিয়ে যাও সেই পর্যন্ত যতক্ষন পর্যন্ত এই বাংলার চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না হয়"।

শেখ মুজিবুর রহমান এর স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রে ২৬শে মার্চ মাইকিং করে প্রচার করা হয়। পরে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে ২৭শে মার্চ মেজর জিয়াউর রহমান  বঙ্গবন্ধুর পক্ষ থেকে পুনরায় স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি পাঠ করেন।

২৬শে মার্চ কে স্বাধীনতা দিবস ঘোষনা করা হয় কবে

রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের শুরু হয় ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসের মাধ্যমে। অনেক ত্যাগ ও রক্তের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর দীর্ঘ নয় মাসের এই যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা বিজয় লাভ করি।মহান স্বাধীনতা অর্জিত হয়। তারপর থেকেই প্রতিবছর বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ২৬ মার্চকে পালন করা হয়।

আরও পড়ুনঃ বঙ্গবন্ধু ও মেজর জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা ইংরেজিতে

কিন্তু ২৬শে মার্চ কে স্বাধীনতা দিবস ঘোষনা করা হয় কবে তা আমরা অনেকেই জানি না। দেশ স্বাধীন হবার পর ২৬ মার্চকে বাংলাদেশে জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন করার ঘোষণা দেয়া হয় ১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি প্রকাশিত এক বিশেষ প্রজ্ঞাপনে এবং এ দিনটিতে সরকারিভাবে ছুটি ঘোষণা করা হয়।

স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য | ২৬শে মার্চ কে স্বাধীনতা দিবস ঘোষনা করা হয় কবে

নিচে স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য দেওয়া হলঃ

প্রত্যেকটি জাতির কাছে স্বাধীনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং আবেগের বিষয়। এমনি এমনি প্রত্যেকটি দেশের স্বাধীনতা আসে নি। কোন না কোন জাতির কাছ থেকে প্রত্যেকটি জাতিকে স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়েছে। অনেক রক্ত, নিপীড়ন এবং শাসনের ইতিহাস অর্জিত আছে সেই স্বাধীনতার পেছনে। সবচেয়ে বেশি ভয়াবহ বাংলাদেশের স্বাধীনতা। কারণ বাঙালিরা দুইটি উপনিবেশের কাছ থেকে তুই বাকস্বাধীনতা অর্জন করেছিল।

ব্রিটিশরা ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ থেকে চলে যায়। এই উপমহাদেশ থেকে ব্রিটিশরা চলে যাওয়ার পর  থেকে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায় এই উপমহাদেশ। ব্রিটিশরা জিন্নাহর দ্বিজাতি তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে দুটি আলাদা ভূখণ্ডের জন্ম দিয়ে গেছে উপমহাদেশকে হিন্দু এবং মুসলিম বসবাস করার জন্য। যার একটি পাকিস্তান ও অন্যটি হিন্দুস্তান বা বর্তমান ভারত। কিন্তু দুটি অংশে বিভক্ত করে দেওয়া হয় পাকিস্তানকে। যার একটি পূর্ব পাকিস্তান যা বর্তমান বাংলাদেশে নামে ও অপরটি পশ্চিম পাকিস্তান যা বর্তমানে পাকিস্তান নামে পরিচিত।

এই দুইটি আলাদা প্রদেশের মধ্যে হাজার হাজার কিলোমিটার ব্যবধান ছিল পাকিস্তানের। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সেই সময়েও অর্জিত হয়নি যখন পাকিস্তান স্বাধীনতা লাভ করে । পশ্চিম পাকিস্তানিরা বাংলাদেশকে উপনিবেশিক রাষ্ট্রে পরিণত করে যার কারণ পাকিস্তানের শাসনযন্ত্র পশ্চিম পাকিস্তানীদের হাতে ছিল। তারা বিভিন্নভাবে বাংলাদেশের মানুষের উপর শোষণ-নিপীড়ন করে। তারা সর্বপ্রথম আঘাত হানে বাংলাদেশের ভাষা সংস্কৃতি ইত্যাদির উপর। এর ফলস্বরূপ ভাষা আন্দোলন শুরু হয় ১৯৫২ সালে। এরপর ৬ দফা আন্দোলন ১৯৬৬ সালে, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, এবং ৭০ এর নির্বাচন শুরু হয়। আমাদের ইতিহাসের সাথে যার সবকিছুই জড়িত।

পাকিস্তান প্রদেশ ১৯৭০ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর হাতে ক্ষমতা না দিয়ে পাকিস্তানের শাসক বাহিনী বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করে। তারা বিভিন্ন জায়গায় কারফিউ জারি করে আন্দোলনকে স্তিমিত করার জন্য এছাড়াও এদেশের মানুষকে গণহারে হত্যা শুরু করে। এর ফলে  7 ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণে ফুলে-ফেঁপে ওঠে তৎকালীন ৭ কোটি মানুষ এবং জীবন দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য।

পাকিস্তানি বাহিনী এদেশের নিরীহ মানুষের উপর এক নৃশংস গণহত্যা চালায় ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ওই দিনে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়। তার আগে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। সেই যুদ্ধ প্রায় নয় মাস চলমান থাকে। এদেশের ৩০ লক্ষ মানুষ যুদ্ধে শহীদ হন এবং  স্বাধীনতা অর্জিত হয় আরও ২ লক্ষ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে। বাংলার রাজপথ রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল সেদিন। সেদিন স্বাধীনতার জন্য বাংলাদেশের প্রতিটি বাঙালি হাতের মুঠোয় নিজের জীবনকে  নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। অবশেষে ১৬ ই ডিসেম্বর ১৯৭১ বাংলার স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য উদিত হয়।

এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের ইতিহাস রচিত হয়েছিল যা বাংলাদেশের এই স্বাধীনতার ইতিহাস পর্যালোচনা করলেই দেখা যায়। সেদিন এদেশের জ্ঞানীগুণী বুদ্ধিজীবীরা ও মুক্তিবাহিনীরা রাজাকার, আলশামস, ও আলবদর বাহিনীর টার্গেটে পরিণত হয়েছিল। তারা বাড়ি থেকে বাংলার জ্ঞানীগুণী এবং মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্বিচারে গুলি করে মেরে ফেলতো। তাই বাংলার মানুষ এই রক্ত ক্ষয় সংগ্রামের কথা সারাজীবন মনে রাখবে । তাই কবি ভাষায় বলতে গেলে।

"যতদিন রবে পদ্মা ,মেঘনা, যমুনা, গৌরি বহমান

ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান"

আরেকটি কথা সবার প্রথমে বলা উচিত যা স্বাধীনতার তাৎপর্য কে ধরে রাখে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বা স্বাধীনতার মহানায়কের আত্মত্যাগের কথা। এই মানুষটি দেশের মানুষের স্বাধীনতার জন্য, এদেশের মানুষের মুক্তির জন্য সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছে। ১৯৭১ সালে এই মানুষটি এইদেশের স্বাধীনতা রক্তিম সূর্য ছিনিয়ে আনে তার মহান নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে।

আমরা এই স্বাধীনতা পেয়েছি বহুৎ ত্যাগ এবং সংগ্রামের বিনিময়ে। আমরা কতটুকু স্বাধীনতার স্বাদ লাভ করতে পারছি স্বাধীনতার এই ৫২ বছরে? আমরা এখনো পিছিয়ে আছি অনেক ক্ষেত্রে। আমাদের উন্নতি করতে হবে এইসব ক্ষেত্রে। একত্রিত হয়ে দেশ এবং জাতি গঠনে এগিয়ে যেতে হবে বাংলাদেশের ১৮ কোটি জনগণকে। বঙ্গবন্ধু সারা জীবন স্বপ্ন দেখে গেছেন এদেশের মানুষ কখনো দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবে না ও কেউ অনাহারে, অন্ধকারে থাকবে না। এদেশের মানুষ কখনো বেকার থাকবে না। একটি সোনার বাংলায় বঙ্গবন্ধুর এদেশকে পরিণত করতে এগিয়ে আসুন। জয় বাংলা, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক। এটাই ছিল স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য।

আরও পড়ুনঃ স্বাধীনতা দিবস রচনা প্রতিযোগিতা ২০২২

শেষ কথাঃ ২৬শে মার্চ কে স্বাধীনতা দিবস ঘোষনা করা হয় কবে

বন্ধুরা আজ আমরা আলোচনা করব ২৬শে মার্চ কে স্বাধীনতা দিবস ঘোষনা করা হয় কবে ও ২৬শে মার্চ কে স্বাধীনতা দিবস ঘোষনা করা হয় কত সালে তা নিয়ে। আমাদের এই ২৬শে মার্চ কে স্বাধীনতা দিবস ঘোষনা করা হয় কবে ও ২৬শে মার্চ কে স্বাধীনতা দিবস ঘোষনা করা হয় কত সালে পোস্টটিতে সকল তথ্য বিস্তারিত দেওয়া হয়েছে। আশা করি আমাদের এই ২৬শে মার্চ কে স্বাধীনতা দিবস ঘোষনা করা হয় কবে ও ২৬শে মার্চ কে স্বাধীনতা দিবস ঘোষনা করা হয় কত সালে পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগবে। ধন্যবাদ।

আপনার জন্য এই ধরণের আরো কিছু পোস্ট

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url