OrdinaryITPostAd

শাবান মাসের ফজিলত সম্পর্কে ০৪টি হাদিসের বিস্তারিত আলোচনা

শাবান মাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস বর্ণিত হয়েছে অনেকগুলো। ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে যে মাসগুলো গুরুত্বপূর্ণ তার মধ্যে শাবান মাস অন্যতম একটি। তাই আজকের এই আর্টিকেলে শাবান মাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। শাবান মাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস গুরুত্ব জেনে নিন।

সূচিপত্রঃ শাবান মাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস

শাবান মাস কি?

ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে কয়েকটি মাসের প্রতি আল্লাহতালা বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। যদিও প্রতিটি মাসের গুরুত্ব রয়েছে কিন্তু কোরআন এবং হাদিসে বর্ণিত কয়েকটি মাস সম্পর্কে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সেই মাসগুলোর মধ্যে সাবান মাস হলো অন্যতম একটি। শাবান মাস কি এ বিষয়টি সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হলো।

আরো পড়ুনঃ ঈদুল ফিতর ২০২৩ কত তারিখ বাংলাদেশ - ২০২৩ সালে রোজার ঈদ

শাবান মাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস রয়েছে অনেকগুলো। কারণ এই মাসটি আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস ছিল। ইসলামিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী শাবান মাস হচ্ছে অষ্টম তম মাস। শাবান মাস সাধারণত রমজান মাস এবং রজব মাসের মাঝে এসে থাকে। শাবান মাসের অনেক ফজিলত রয়েছে।

শাবান মাসের গুরুত্ব

আর শাবান মাসের গুরুত্ব রয়েছে তাই শাবান মাস সম্পর্কে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ শাবান মাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস বর্ণনা করেছেন। শাবান মাসে প্রতিটি বান্দার ইবাদতের আমলনামা আল্লাহতায়ালার কাছে উপস্থাপন করা হয় তাই আমাদের প্রিয় নবী সাঃ এই মাসটিকে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।

শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত ১৫ তারিখের রাতকে শবে বরাত বলা হয়। শবে বরাত কথাটি ফারসি এর বাংলা অর্থ হল মুক্তির রাত অথবা ভাগ্যের রজনী। এ রাতে আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদেরকে ক্ষমা করে থাকেন। এই মাসে রাসূলুল্লাহ সাঃ বেশি বেশি সিয়াম পালন করতেন। তিনি শাবান মাসের অধিকাংশ দিনে একটানা সিয়াম পালন করতেন বলে বুখারী ও মুসলিম হাদিসের বর্ণিত রয়েছে।

তাহলে যেহেতু আমাদের প্রিয় নবী এই মাসে সবথেকে বেশি সিয়াম পালন করতেন তাই এ মাসের গুরুত্ব সম্পর্কে আমরা বুঝতেই পারছি। তিনি সাবান মাসের পুরোটাই নফল সিয়াম পালন করতেন। মোটামুটি গ্রহণযোগ্য বা হাসান পর্যায়ের হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে যে, শাবান মাসে বান্দার আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয় তাই এই মাসে তিনি বেশি বেশি নফল ইবাদত আদায় করতেন।

শাবান মাসের ফজিলত - শাবান মাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস

যেহেতু সাবান মাস আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাই আমাদের শাবান মাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত। কারণ এই মাসটি সম্পর্কে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর অনেকগুলো প্রসিদ্ধ হাদিস রয়েছে। কারণ এই মাসটি ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মানুষগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। নিচে শাবান মাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস উল্লেখ করা হলো।

হযরত আয়েশা রাঃ হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাঃ রোজা রাখতে থাকতেন, যাতে আমরা বলতাম যে, তিনি শাবান মাসে আর রোজা ছাড়বেন না। আবার তিনি রোজা ভাঙতে শুরু করতেন যাতে আমরা বলতাম যে তিনি সাবান মাসে আর রোজা রাখবেন না। আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে রমজান মাস ছাড়া আর কখনো পূর্ণ মাস রোজা রাখতে দেখিনি আর তাকে শাবান মাস ছাড়া অন্য কোন মাসে এত বেশি রোজা রাখতে দেখিনি।

হযরত আয়েশা রাঃ বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ সাবানের পূর্ণ মাসই রোজা রাখতেন। তিনি শাবানের রোজা রাখতেন তবে অল্প কিছুদিন।{ বুখারী, মুসলিম}

হযরত উসামা রাঃ বর্ণনা করেছেন, একদিন আমি রাসুলুল্লাহ সাঃ কে শাবান মাসে বেশি বেশি রোজা রাখার কারণ জিজ্ঞেস করলাম। তিনি উত্তরে বললেন, " লোকেরা রজব ও রমজান এ দুই মাসে গুরুত্ব বেশি দেয় এবং রোজা ও রাখে। কিন্তু মধ্যবর্তী সাবান মাসটিকে উপেক্ষা করে চলে অথচ শাবান মাসে বান্দার আমলগুলো আল্লাহর দরবারে উপস্থাপন করা হয়। আমার কামনা হল আমার আমল সমূহ দরবারে উপস্থাপন করার সময় আমি রোজা অবস্থায় থাকি এ কারণে আমি শাবান মাসের বেশি বেশি রোজা রাখি"।

আরো পড়ুনঃ শবে বরাতের নামাজের নিয়ম - শবে বরাতের নামাজ কিভাবে পড়তে হয়

হযরত আয়েশা রাঃ হতে বর্ণিত, হযরত মুহাম্মদ সাঃ পবিত্র শাবান মাসের প্রতি এত লক্ষ রাখতেন যে অন্য কোন মাসের ক্ষেত্রে এতটা লক্ষ্য রাখতেন না।{ সুনানে আবু দাউদ} পবিত্র শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে অর্থাৎ ১৫ শাবান রাত হচ্ছে পবিত্র শবে বরাত। যার অর্থ হলো ভাগ্য রজনী। এই দিনটিতে আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদেরকে ক্ষমা করে থাকেন। এ রাত থেকে ইবাদতের রাত হিসেবেই বিবেচনা করা হয়।

শাবান মাসে নবীজির দোয়া

যেহেতু শাবান মাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস বর্ণিত হয়েছে অর্থাৎ আমাদের প্রিয় নবী সাঃ এই মাসটি সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন এবং গুরুত্ব দেখেছেন তাহলে এখান থেকে বোঝা যায় যে শাবান মাসের গুরুত্বটা কত বেশি। শাবান মাসের নবীজির দোয়া রয়েছে যেটি অবশ্যই আমাদের হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর উম্মত হিসেবে করা উচিত।

নবীজি সাঃ রজব মাসের শুরু থেকে রজব ও শাবান মাসব্যাপী রোজা পালন করতেন। কারণ তিনি আল্লাহর কাছে এই মাস দুইটির বরকত কামনা করতেন। সাবান মাস আসলেই সাবান মাসের বরকত কামনা করতেন এবং রমজান মাস পাওয়ার জন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে আবেদন জানাতেন। তিনি যে দোয়াটি পড়তেন সেটি নিজে উল্লেখ করা হলোঃ

আরবিঃ اَللَّهُمَّ بَارَكْ لَنَا فِىْ شَعْبَانَ وَ بَلِّغْنَا رَمَضَان

বাংলা উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা বারাকলানা ফি শাবান ওয়া বাল্লিগনা রামাদান

অর্থঃ হে আল্লাহ! শাবান মাস কে আমাদের জন্য বরকতময় করুন এবং আমাদেরকে রমজানে পৌঁছে দিন।

শাবান মাসের ইবাদত

শাবান মাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস গুলো আমরা জেনেছি। একজন প্রকৃত মুসলিম হিসেবে আমাদের শাবান মাসের ইবাদত সম্পর্কে জানতে হবে। শাবান মাসের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত রয়েছে যেগুলো করলে অনেক সওয়াব পাওয়া যায়। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ শাবান মাসে অনেক নফল ইবাদত পালন করেছেন।

শাবান মাসে রাসূলুল্লাহ সাঃ নফল রোজা রাখতেন। আমরা জানি যে রমজান মাসের রোজা সকল মানুষের উপর ফরজ। রমজান মাস ছাড়া ভিন্ন কোন মাসে ফরজ রোজা নেই। রমজান মাস ছাড়া অন্য কোন মাসে রোজা করা হলে সেগুলো নফল রোজার সওয়াব পাওয়া যাবে। সাধারণত তাই আমাদের প্রিয় নবী সাঃ এই মসজিদে নফল রোজা রাখতেন।

হযরত মুহাম্মদ সাঃ সাবান মাসে সবচেয়ে বেশি নফল রোজা রাখতেন। তিনি অন্য কোন মাসে এই পরিমাণ রোজা পালন করতেন না। হযরত আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, " নবীজি সাঃ শাবান মাসের চেয়ে বেশি রোজা অন্য কোন মাসে রাখতেন না। তিনি পুরো সাবান মাসে রোজা রাখতেন এবং বলতেন, তোমাদের মধ্যে যতটুকু সামর্থ্য আছে ততটুকু নফল আমল করো। কারণ তোমরা পরিশ্রান্ত হয়ে না করা পর্যন্ত আল্লাহতালা দান বন্ধ করেন না।"

আরো পড়ুনঃ শাবান মাসে রোজা কয়টি - শাবান মাসে রোজা রাখার নিয়ম

এছাড়া শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে অর্থাৎ ১৫ শাবান শবে বরাত অর্থাৎ লাইলাতুল বরাত যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি রাত। এ রাতে ইবাদত করলে অনেক বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। এ রাতে অনেক বেশি নফল নামাজ আদায় করতে হয়। আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী আপনি নফল নামাজ আদায় করতে পারবেন না। কত রাকাত আদায় করতে হবে তা কোন হাদিসে নেই।

আমাদের শেষ কথাঃ শাবান মাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে শাবান মাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়া শাবান মাস সম্পর্কে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। কারণ সাবান মাস আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস ছিল। তাই অবশ্যই আমাদের মুসলিম হিসেবে এই মাসের গুরুত্ব দেওয়া আবশ্যক।

আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। যদি না পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে নিন ধন্যবাদ।২০৭৯১

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url