OrdinaryITPostAd

শবে বরাতের নামাজের নিয়ম - শবে বরাতের নামাজ কিভাবে পড়তে হয়

শবে বরাতের নামাজের নিয়ম এবং শবে বরাতের নামাজ কিভাবে পড়তে হয় জেনে নিন। শবে বরাতের নামাজ আমাদের জন্য নফল ইবাদাত। শবে বরাতের নামাজ নফল ইবাদাত হলেও নবী কারীম (সাঃ) অত্যন্ত পছন্দ করতেন। এবং তিনি শবে বরাতের নামাজের নিয়ম যথাযথ মেনে আদায় করতে বলছেন। আমরা পুরো রচনাটি মনোযোগ দিয়ে পড়ি শবে বরাতের নামাজের নিয়ম জেনে নেই। 

পেজ সুচিপত্রঃ

শবে বরাত কি?

শবে বরাত বা লাইলাতুল বরাত হচ্ছে হিজরি শাবান মাসের  ১৪ ও ১৫ তারিখের মধ্যবর্তী রাতে পালিত একটি গুরুত্বপূর্ণ রাত। উপমহাদেশে এই রাতকে শবে বরাতের রাত বলা হয়।  ইসলামী বিশ্বাসমতে এই শবে বরাতের রাতে আল্লাহ্‌ তাআলা বান্দাদের ক্ষমা করে দেন। সকল মুসলিম শবে বরাতের নফল নামাজ আদায় করে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য লাভের চেষ্টা করে। তাই আমাদের শবে বরাতের নামাজের  নিয়ম মেনে আদায় করতে হবে। শবে বরাত সম্পর্কে আল্লাহর রাসুল (সাঃ) বলেছেন "আমার কাছে শাবান মাসের এবাদাত বন্দেগী অধিক প্রিয়,যখন তোমাদের কাছে শবে বরাতের রাত হাজির হবে তখন তোমরা সেই রাতে জাগ্রত থাক(কুরআন তিলাওয়াত করো, নামাজ পড়,জিকির কর, তাসবিহ পড়) এবং দিনের বেলা রোজা রাখ।  কারন মহান আল্লাহ তাআলা এই দিনে গুনাহ মাফের জন্য সকল বান্দার দিকে তাকিয়ে থাকে, যে বান্দা মন খুলে প্রার্থনা করে আল্লাহ্‌ তাআলা তার সকল মনের আশা পূরণ করে"। তাই আমাদের শবে বরাতের নামাজের নিয়ম এবং শবে বরাতের নামাজ কিভাবে পড়তে হয় জেনে নিতে হবে।

শবে বরাত ২০২২ সালের কোন তারিখে?

মুসলিম ধর্মপ্রাণ সকলের মনে প্রশ্ন শবে বরাত কবে হতে পারে। চাঁদ দেখার উপর আসলে শবে বরাত নির্ভর করে। আরবি শাবান মাসের ১৪ ও ১৫ তারিখের মধ্যবর্তী রাতে শবে বরাত উদযাপিত হয়। 

আর এই বছরে ইংরেজি মাসের ১৯ মার্চ দিবাগত রাত(১৬ শাবান ১৪৪৩ হিজরি) শবে বরাত হবে বলে আশা করা  যাচ্ছে।
তাই আমরা মুসলিম ধর্মপ্রাণ মানুষ শবে বরাতের রাতটি স্মরণে রাখব এবং শবে বরাতের নামাজের নিয়ম মেনে আদায় করব।

শবে বরাত সম্পর্কিত বিভিন্ন বর্ণিত বানীঃ

শবে বরাত মানে "মুক্তির রাত"। বিভিন্ন সহিহ হাদিসে বর্ণিত আছে যে নবী কারিম ( সাঃ) এই শাবান মাসের ১ থকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত নফল রোজা রাখতেন আবার কখনো কখনো পুরো মাস জুড়ে নফল রোজা রাখতেন। এ বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন " এ মাসে রাব্বুল আলামিনের কাছে মানুষের কর্ম উঠানো হয়। এবং আমি ভালবাসি যে , আমার রোজা রাখা অবস্থায় আমার আমল উঠানো হোক।"
   -(নাসাই আস সুনান(৪/২০১; আলবানী সহিহুত তারগীব ১/২৪৭)
রাসুল(সাঃ) বলেন "আল্লাহ মধ্য শাবানের রাতে  আত্মপ্রকাশ করেন এবং মুশরিক ও হিংসুক ব্যতিত তাঁর সৃষ্টির সকলকে ক্ষমা করেন"। তাই আমাদের জানা উচিত  শবে বরাতের নামাজ কিভাবে পড়তে হয়  এবং শবে বরাতের নামাজের নিয়ম কিভাবে পালন করতে হয়।
হাদিস অনুসারে এই রাত দোয়া কবুল,ক্ষমা প্রার্থনা এবং আল্লাহর কাছে চাওয়ার রাত। ুঅতএব আমরা বুঝতে পারছি যে শবে বরাতের নামাজ কিভাবে পড়তে হয় তা জানা অত্যন্ত জরুরী। নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে আমরা বিস্তারিত জানি।

শবে বরাতের নামাজের নিয়মঃ

শবে বরাতের নামাজ সঠিক নিয়মে আদায় না করলে আল্লাহ তাআলা আমাদের উপর নারাজ হবেন। তাই আমাদের শবে বরাতের নামাজের নিয়ম অনুসরণ করে আদায় করতে হবে।এই অনুচ্ছেদটি পড়ে আমরা শবে বরাতের নামাজের সঠিক নিয়ম এবং শবে বরাতের নামাজ কিভাবে পড়তে হয় তা জানি। 
শবে বরাতের নফল নামাজের নিয়ম অন্যান্য নফল নামাজের মতই। তাও আমাদের শবে বরাতের নামাজের সঠিক নিয়ম টা জানতে হবে। শবে বরাতেও অন্যান্য নফল নামাজের মতই ২ রাকাত করে নফল নামাজ পড়তে হয়।প্রথমে নিয়্যত পাঠ করতে হয়-
  "নাওয়াইতুয়ান উসও লিল্লাহি তাআলা রাকাতে সালাতিল লায়লাতিল বারাতি মুতাওয়াজ্যিহান ইলা জিহাতিল কা বাতিশ  শারি ফাতিল আল্লাহু আকবর" বা বাংলায় নিয়াত করা যাবে যে
 "আমি কাবা শরিফের দিকে মুখ করে আল্লাহ এর উদ্দেশ্যে এই লাইলাতুল কদরের ২ রাকাত নফল নামাজ আদায় করছি"। তবে প্রত্যেক রাকাতে আয়াতুল কুরসি পড়তে হবে। এটা উত্তম এবং মুস্তাহাব আমল।
  প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহার পর পবিত্র কুরআনের যে কোন সূরা পড়তে হয়। যে কোন সুরার মধ্যে সুরা এখলাস,কদর,আয়তাল কুরসি পড়লে অনেক সোয়াব পাওয়া যায়। 
দুই বা চার রাকাত নামাজের পর দোয়া দরুদ,তাসবিহ পাঠ করতে হয়। এছাড়াও জিকির করতে হয় এবং কোরআন তেলাওয়াত করতে হয়। এরপর আবার ২ বা ৪ রাকাত নামাজ শেষ করার পর এভাবে দোয়া দরূদ পাঠ করতে হয়।
শবে বরাতের নফল নামাজের কোন ধরাবাধা রাকাত সম্পরকে বলা হয় নাই। তবে যে যত রাকাত পড়তে পারবে তত সওয়াব হবে। তবে অবশ্যই সাধ্যর মধ্যে পড়তে হবে। আল্লাহ তালা তার কোন বান্দাকেই সাধ্যের বাইরে কোন কিছু  চাপায় দেন নাই।
তবে অনেক হাদিসে উল্লিখিত আছে যে কম করে হলেও ১২ রাকাত নফল নামাজ আদায় করা উত্তম। কিন্তু অবশ্যই ১২ রাকাতের অধিক সালাত আদায় করা যাবে।
এই রাতে যেহেতু একটা দীর্ঘ সময় পাওয়া যায় তাই ফজিলতময় নামাজ সালাতুল তাসবিহ পড়া উত্তম।
এই নামাজ সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, যদি আপনি প্রতিদিন আমল করতে পারেন তাহলে করুন,না হলে প্রতি জুমাবারে এই সালাত আদায় করুন , যদি তা না পারেন তাহলে প্রতি মাসে একবার আদায় করুন আর যদি তা না পারেন তাহলে প্রতি বছিরে একবার আদায় করুন আর তাও যদি না পারেন তাহলে জীবনে একবার হলেও আদায় করুন। 
তাহলে আমরা এই অনুচ্ছেদটি পড়ে শবে বরাতের নামাজের নিয়ম সম্পরকে একটা সঠিক ধারনা পেলাম।

আরও কিছু শবে বরাতের নামাজের নিয়মঃ

১। ২ রাকাত তহিয়াতুল অজুর নামাজঃ সাধারনত এই ২ রাকাত নামাজ পড়ার আগে অজুর নামাজ পড়তে হয়। যা শবে বরাতের নামাজের নিয়ম এর মধ্যে পড়ে।
 প্রতি রাকাতে সুরা ফাতিহা,আয়াতুল কুরসি,তিনবার এখলাস পড়তে হবে।
প্রতি ফোঁটা পানির বদলে সাতশত নেকি লিখা হবে।
২। শবে বরাতের নামাজ কিভাবে পড়তে হয়ঃ প্রতি ২ রাকাত শবে বরাতের নামাজের প্রত্যেক রাকাতে সুরা ফাতিহা,১৫ বার এখলাস শরিফ পড়তে হয়। অতঃপর সালাম ফিরানোর পর ১২ বার দরুদ শরীফ পড়তে হয়।
গুনাহ হতে মাগফিরাতের বখসিস পাওয়া যায়, রুজিতে বরকত পাওয়া জায়, দুঃখকষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়া যায় ।
তাহলে আমরা বুঝছি শবে বরাতের নামাজের নিয়ম মানা উচিত। 

শবে বরাতের নামাজের নিয়ম এ কিছু সতর্কতাঃ

শবে বরাতের নামাজ তো অবশ্যই সঠিক নিয়মে আদায় করতে হবে সেই সাথে আমাদের কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ফরজ নামাজ অবশ্যই আদায় করতে হবে । মনে রাখতে হবে নফলের থেকে ফরজ নামাজ বেশি জরুরি তাই আগে অবশ্যই ফরজ নামাজ সঠিক নিয়মে আদায় করতে হবে। নফল পড়ে ক্লান্ত হয়ে যেয়ে ফরজ না পড়তে পারলে সব শেষ তাই আগে ফরজ নামাজ আদায় করতে হবে। যত রাত জেগে নামাজ পড়েন না কেন ফজর নামাজ অবশ্যই আদায় করবেন। তবে চেষ্টা  করতে হবে শবে বরাতের নামাজের নিয়ম মান্য করা।

শবে বরাত নামাজের ফজিলতঃ

শবে বরাতের নামাজ কিভাবে পড়তে হয় তা জানলাম এবার আমরা এই নামাজের ফজিলত সম্পরকে জানব। এই রাতের ও ফজিলত অনেক। আমরা অবশ্যই নেকি পাব যখন আমরা শবে বরাতের নামাজের নিয়ম পালন করব।
 হযরত ফাতিমা(রাঃ) এরশাদ করেন"আমি শবে বরাতের নামাজ আদায়কারীর সাফায়াত ব্যতিত জান্নাতে কদম রাখবনা"। রাসুল(সাঃ) বলেন "আল্লাহ মধ্য শাবানের রাতে  আত্মপ্রকাশ করেন এবং মুশরিক ও হিংসুক ব্যতিত তাঁর সৃষ্টির সকলকে ক্ষমা করেন"।
হাদিস অনুসারে এই রাত দোয়া কবুল,ক্ষমা প্রার্থনা এবং আল্লাহর কাছে চাওয়ার রাত। তাই আমাদের শবে বরাতের নামাজের নিয়ম মেনে আদায় করতে হবে।
মুসলিম বান্দাগণ অবশ্যই এই বরকতময় রাতে বেশি বেশি সালাত আদায় করবেন। আত্মিয় ,পরিবার, দেশবাসি, বিশ্বাসীর জন্য মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করবেন। এই ফজিলতপূর্ণ রাতে আমরা সঠিক নিয়মে নামাজ আদায় করব।
আল্লাহ তাআলা সবাইকে নেক হেদায়েত দিন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url