২০২৫ সালে হ্যালোইন কবে এবং কিভাবে উদযাপন করা হয়
হ্যালোইন কি এবং কেন আমরা এটি উদযাপন করি আবার ২০২৫ সালে হ্যালোইন কবে এবং কিভাবে উদযাপন করা হয় এই প্রশ্নগুলো অনেকের মনেই আসে। হ্যালোইন একটি প্রাচীন কেল্টিক উৎসব স্যামহেইন থেকে উদ্ভূত যা পরে খ্রিস্টীয় ঐতিহ্যের সঙ্গে মিলিত হয়ে আধুনিক হ্যালোইনে রূপ নিয়েছে।
হ্যালোইনকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আনন্দ, সাজসজ্জা, কস্টিউম পার্টি, ভৌতিক
সাজসজ্জা এবং বিশেষ খাবারের মাধ্যমে উদযাপন করা হয়। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র,
কানাডা, ইউরোপের দেশগুলোতে এই উৎসব ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এই ব্লগে আমরা
হ্যালোইন সর্ম্পকে বিস্তারিত আলোচনা করব। চলুন শুরু করি।
পেজ সূচিপত্রঃ ২০২৫ সালে হ্যালোইন কবে এবং কিভাবে উদযাপন করা হয়
- ২০২৫ সালে হ্যালোইন কবে এবং কিভাবে উদযাপন করা হয়
- হ্যালোইন কি এবং এর ইতিহাস
- ইউরোপে হ্যালোইনের প্রভাব
- এশিয়ায় হ্যালোইন উদযাপনের জনপ্রিয়তা
- শিশুদের জন্য হ্যালোইনের আকর্ষণ
- ট্রিক-অর-ট্রিট প্রথা কিভাবে শুরু হয়েছিল
- হ্যালোইনে কস্টিউম ও সাজসজ্জার বিশেষত্ব
- কুমড়ো খোদাই এর ইতিহাস ও গুরুত্ব
- হ্যালোইনের বিশেষ রেসিপি
- ২০২৫ সালের হ্যালোইনের জন্য ট্রেন্ডিং সাজসজ্জার আইডিয়া
- হ্যালোইন উদযাপনে নিরাপত্তা নির্দেশিকা
- লেখকের মন্তব্যঃ ২০২৫ সালে হ্যালোইন কবে এবং কিভাবে উদযাপন করা হয়
২০২৫ সালে হ্যালোইন কবে এবং কিভাবে উদযাপন করা হয়
২০২৫ সালে হ্যালোইন কবে এবং কিভাবে উদযাপন করা হয় এই প্রশ্নটি অনেকের মধ্যেই
কৌতূহল জাগায়। প্রতি বছরই হ্যালোইন ৩১শে অক্টোবর তারিখে পালিত হয় এবং ২০২৫
সালেও হ্যালোইন ৩১ অক্টোবর শুক্রবার ২০২৫ তারিখে উদযাপিত হবে। দিনটি বিশ্বজুড়ে
বিশেষ উৎসব হিসেবে পালিত হয় বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও এশিয়ার কিছু দেশে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে হ্যালোইন ব্যাপকভাবে উদযাপন করা হয়। শিশু ও তরুণরা
ভৌতিক কস্টিউম পরে বাড়ি বাড়ি ঘুরে Trick-or-Treat করে ক্যান্ডি সংগ্রহ করে।
ঘরে ঘরে সাজানো হয় কুমড়ো খোদাই করা হ্যালোইনের সবচেয়ে পরিচিত প্রতীক।
এছাড়াও ভুতুড়ে সাজসজ্জা, হরর মুভি নাইট, থিম পার্টি এবং ভৌতিক বাড়ির
প্রদর্শনীও এই সময়ে বেশ জনপ্রিয়।
এশিয়ার অনেক দেশেও হ্যালোইনের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে বড় শহরের
রেস্টুরেন্ট, ক্যাফে এবং শপিং মলগুলোতে বিশেষ সাজসজ্জা, পার্টি ও কস্টিউম
প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। শিশুদের জন্য এটি সবচেয়ে মজার সময় কারণ তারা
নানা ধরনের কস্টিউম পরে ক্যান্ডি ও চকলেট সংগ্রহের আনন্দ উপভোগ করে।
হ্যালোইন শুধু ভৌতিক উৎসব না বরং এটি সৃজনশীলতা, আনন্দ এবং সামাজিক মিলনের একটি
প্রতীক। শিশু থেকে বড় সবাই এই দিনে একসঙ্গে উৎসবের আনন্দ উপভোগ করে। তাই ২০২৫
সালের হ্যালোইনও সারা বিশ্বে একই উদ্দীপনা ও রঙিন আবহে উদযাপিত হবে বলেই আশা
করা যায়।
হ্যালোইন কি এবং এর ইতিহাস
হ্যালোইন হলো একটি আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত উৎসব যা প্রতি বছর ৩১শে অক্টোবর পালিত
হয়। এটি বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড এবং ইউরোপের
অন্যান্য দেশে অত্যন্ত জনপ্রিয়। বর্তমানে হ্যালোইন উদযাপন করা হয় ভৌতিক
সাজসজ্জা, কস্টিউম পার্টি, ট্রিক-অর-ট্রিট, কুমড়ো খোদাই এবং বিশেষ হ্যালোইন
খাবার ও পার্টির মাধ্যমে।
হ্যালোইনের ইতিহাস ঃ হ্যালোইনের উৎপত্তি প্রাচীন কেল্টিক উৎসব
স্যামহেইন থেকে যা প্রায় ২০০০ বছর আগে আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের কেল্টিক
জনগোষ্ঠীর মধ্যে পালিত হতো। স্যামহেইন মূলত ফসল কাটার উৎসব এবং শীতকাল শুরু
হওয়ার সময় পালন করা হতো। কেল্টরা বিশ্বাস করত ৩১ অক্টোবর রাতে জীবিত ও মৃতের
জগতের মধ্যে সীমারেখা পাতলা হয়ে যায় ফলে মৃত আত্মারা পৃথিবীতে ফিরে আসতে
পারে।
এই কারণে মানুষ আগুন জ্বালাত, মুখোশ পরত এবং খাবারের নৈবেদ্য দিত যাতে দুষ্ট
আত্মারা ক্ষতি করতে না পারে। পরবর্তীতে খ্রিস্টীয় সংস্কৃতির প্রভাবে এই উৎসব
মিশে যায়। খ্রিস্টীয় চার্চ ১ নভেম্বরকে ঘোষণা করে All Saints Day এবং এর আগের
রাতকে বলা হয় All Hallows Eve যা পরবর্তীতে সংক্ষেপিত হয়ে পরিচিত হয় Halloween
নামে। তবে খ্রিস্টীয় ঐতিহ্য এখনও হ্যালোইনের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ
হিসেবে রয়ে গেছে।
মধ্যযুগ থেকে আধুনিক যুগে হ্যালোইন আরও পরিবর্তিত হয়। ইউরোপ থেকে অভিবাসীদের
মাধ্যমে এটি যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়ে এবং ধীরে ধীরে আধুনিক সাংস্কৃতিক উৎসবে
রূপ নেয়। আজকের দিনে হ্যালোইন মূলত সৃজনশীলতা, বিনোদন ও সামাজিক মিলনের প্রতীক
হিসেবে পরিচিত। শিশু থেকে বড় সবাই কস্টিউম পরে, কুমড়ো খোদাই করে এবং ভৌতিক
পার্টিতে অংশগ্রহণ করে আনন্দ উপভোগ করে।
ইউরোপে হ্যালোইনের প্রভাব
ইউরোপে হ্যালোইনের প্রভাব ব্যাপক এবং বহুমাত্রিক। মূলত হ্যালোইন একটি
খ্রিস্টীয় উৎসব হলেও আজ এটি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক প্রভাব
বিস্তার করেছে। শিশু থেকে বড়দের মধ্যে কস্টিউম পার্টি, ট্রিক-অর-ট্রিটের মতো
কার্যক্রম জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে যা পরিবারের এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে মিলন ও
আনন্দের পরিবেশ তৈরি করে।
পাশাপাশি হ্যালোইনের কারণে অর্থনৈতিক কার্যক্রমেও প্রভাব পড়ে। ইউরোপীয়
দোকানগুলো ভয়ঙ্কর থিমের সাজসজ্জা, মিষ্টি ও কস্টিউম বিক্রির মাধ্যমে বড়
রাজস্ব আয় করে। পর্যটন ক্ষেত্রেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বিশেষ করে
যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড, জার্মানি এবং ফ্রান্সে। যেখানে পর্যটকরা হ্যালোইন
উদযাপনের জন্য বিভিন্ন ইভেন্ট এবং দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন করে।
সাংস্কৃতিক প্রভাব হিসেবে হ্যালোইন ইউরোপীয় চলচ্চিত্র, সাহিত্য ও আর্ট ফর্মেও
স্থান করে নিয়েছে যা প্রাচীন ঐতিহ্য এবং আধুনিক বিনোদনের সংমিশ্রণ হিসেবে
সমাদৃত। সামগ্রিকভাবে ইউরোপে হ্যালোইন কেবল একটি উৎসব না এটি সামাজিক,
অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক স্তরে গভীর ভাবে প্রভাব ফেলে।
এশিয়ায় হ্যালোইন উদযাপনের জনপ্রিয়তা
এশিয়ায় হ্যালোইন উদযাপনের জনপ্রিয়তা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে বিশেষ করে জাপান,
দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, ফিলিপাইন এবং সিঙ্গাপুরের মতো দেশগুলোতে। যদিও হ্যালোইন
মূলত পশ্চিমা খ্রিস্টীয় উৎসব তবে এশিয়ার শহুরে যুব সমাজ এবং পর্যটক সম্প্রদায়
এটি বিনোদন, সামাজিক মিলন এবং ক্রিয়েটিভ কস্টিউম পার্টির মাধ্যমে উদযাপন
করছে।
বিপুল সংখ্যক শপিং মল, থিম পার্ক, রেস্তোরাঁ এবং কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান ভয়ঙ্কর
সাজসজ্জা, ট্রিক-অর-ট্রিট ইভেন্ট এবং হ্যালোইন পার্টি আয়োজন করে যা
অর্থনীতিকভাবেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। এছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব এবং
আন্তর্জাতিক সংস্কৃতির সঙ্গে সংযোগে হ্যালোইনের গ্রহণযোগ্যতা আরও বৃদ্ধি করেছে।
এটি যুব সমাজের বিনোদন, ক্রিয়েটিভ এক্সপ্রেশন এবং শহুরে লাইফস্টাইলের অংশ হিসেবে
প্রতিষ্ঠিত হয়ে উঠছে।
শিশুদের জন্য হ্যালোইনের আকর্ষণ
হ্যালোইন শিশুদের মধ্যে এক বিশেষ উত্তেজনা ও আনন্দের অনুভূতি সৃষ্টি করে। রঙিন
ভুতুড়ে পোশাক, জ্যাক-ও-ল্যান্টার্ন এবং মিষ্টি চকলেটের ভরপুর ট্রিক-অর-ট্রিট
কার্যক্রম শিশুদের কল্পনাশক্তি ও সৃজনশীলতা বাড়ায়। এই উৎসব শিশুদের
সামাজিকীকরণের জন্যও একটি চমৎকার সুযোগ কারণ তারা বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে একসাথে
অংশগ্রহণ করতে পারে। বিশেষ করে হ্যালোইনের সময় শিশুরা ভয়ঙ্কর কিন্তু মজাদার
চরিত্রের সঙ্গে পরিচিত হয়।
শিশুরা হ্যালোইনের মাধ্যমে গল্প, নাটক এবং ভূতের কল্পনার সঙ্গে পরিচিত হয় যা
তাদের মনস্তাত্ত্বিক ও মানসিক বিকাশে সাহায্য করে। এছাড়াও হ্যালোইন শিশুদের ভয়
এবং সাহসের মধ্যে সঠিক ভারসাম্য শেখায় কারণ তারা নিরাপদ পরিবেশে ভয়ঙ্কর চরিত্র
ও পরিস্থিতি মোকাবিলা করে। প্যারেন্টস এবং শিক্ষকদের উচিত শিশুদের জন্য নিরাপদ ও
সৃজনশীল হ্যালোইন কার্যক্রমের ব্যবস্থা করা যাতে তারা আনন্দ উপভোগের সঙ্গে সঙ্গে
শিক্ষা ও কল্পনাশক্তি বিকাশের সুযোগ পায়।
ট্রিক-অর-ট্রিট প্রথা কিভাবে শুরু হয়েছিল
ট্রিক-অর-ট্রিট প্রথার উৎপত্তি ইউরোপের প্রাচীন কেল্টিক উৎসব স্যামহেইন থেকে। সেই
সময় মানুষ বিশ্বাস করত অক্টোবরের শেষ রাতে মৃত আত্মারা জীবিতদের জগতে ফিরে আসে।
আত্মাদের শান্ত করতে তারা খাবার ও মিষ্টি বাড়ির সামনে রেখে দিত। পরে মধ্যযুগে
ইংল্যান্ডে সোলিং নামের একটি প্রথা চালু হয় যেখানে দরিদ্র শিশুরা বাড়ি বাড়ি
ঘুরে মৃত আত্মার জন্য প্রার্থনার বিনিময়ে কেক ও খাবার পেত।
আরোও পড়ুনঃবুদ্ধ পূর্ণিমার দিন কি করতে হয়?
এভাবেই পরবর্তীতে এই প্রথা গাইজিং রূপে স্কটল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডে ছড়িয়ে পড়ে
যেখানে শিশুরা ছদ্মবেশে সাজত এবং বিনিময়ে খাবার বা উপহার চাইত। ১৯শ শতকে আইরিশ
অভিবাসীরা এই সংস্কৃতি আমেরিকায় নিয়ে এলে ধীরে ধীরে এটি আধুনিক হ্যালোইনের
ট্রিক-অর-ট্রিট রূপ নেয়। বর্তমানে এটি শিশুদের জন্য এক বিশেষ বিনোদন যেখানে তারা
রঙিন ভুতুড়ে পোশাক পরে প্রতিবেশীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিষ্টি সংগ্রহ করে। এই
প্রথা হ্যালোইন উৎসবের মূল আকর্ষণ হিসেবেও বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
হ্যালোইনে কস্টিউম ও সাজসজ্জার বিশেষত্ব
হ্যালোইনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো এর রঙিন এবং ভুতুড়ে কস্টিউম ও সাজসজ্জা।
এই সময় মানুষ বিভিন্ন ভৌতিক চরিত্র যেমন ভ্যাম্পায়ার, চম্পটানো ভূত, জাদুকরী,
ডাইন, এবং কার্টুন চরিত্রের পোশাকে সজ্জিত হয়। কস্টিউমের সঙ্গে মিলিয়ে হ্যালোইন
পার্টির ঘর সাজানো হয় জ্যাক-ও-ল্যান্টার্ন, কৃত্রিম ধোঁয়া, হাড়ের প্রতিকৃতি,
প্লাস্টিক স্পাইডার এবং অন্ধকার আলো দিয়ে।
এই সাজসজ্জা শিশু ও বয়স্ক সকলের মধ্যে উদ্দীপনা সৃষ্টি করে এবং হ্যালোইনের মজা
দ্বিগুণ করে। আজকের দিনে হ্যালোইনের কস্টিউম ফ্যাশনেবল ও থিম ভিত্তিক হয়ে উঠেছে
যা পার্টি, প্যারেড এবং সামাজিক ইভেন্টে বড় আকর্ষণ হিসেবে কাজ করে। হ্যালোইনের
কস্টিউম ও সাজসজ্জার শুধু ভয়ঙ্কর চিত্রই তৈরি করে না এটি উৎসবের সৃজনশীলতা,
আনন্দ এবং সামাজিক অংশগ্রহণের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশও।
কুমড়ো খোদাই এর ইতিহাস ও গুরুত্ব
২০২৫ সালে হ্যালোইন কবে এবং কিভাবে উদযাপন করা হয় তা জানলে আপনি পরিবারের সঙ্গে
হ্যালোইন থিমযুক্ত পার্টি ও সাজসজ্জার মাধ্যমে উৎসবকে আনন্দ ও উপভোগ্য করে তুলতে
পারবেন।কুমড়ো খোদাই বা জ্যাক-ও-ল্যান্টার্ন হ্যালোইনের সবচেয়ে পরিচিত প্রতীক।
এর উৎপত্তি মূলত প্রাচীন আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের লোককথা থেকে যেখানে একটি
কল্পিত চরিত্র জ্যাককে নিয়ে বলা হত যে সে মৃত্যুর পরও প্রেতাত্মার মতো পথ খুঁজে
বেড়ায়।
লোককাহিনী অনুসারে জ্যাক তার জীবনকালে কৌশলে শয়তানকে ঠকায় এবং মৃত্যুর পরে
আলোহীন পথে ঘুরতে বাধ্য হয়। এই গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে মানুষ কুমড়ো খোলার
মাধ্যমে মুখ বা ভয়ঙ্কর চেহারা খোদাই করত এবং ভিতরে প্রদীপ জ্বালিয়ে ভূতের আত্মা
ও অশুভ শক্তি দূরে রাখার বিশ্বাস করত।
১৯শ শতকে আইরিশ অভিবাসীরা এই প্রথা আমেরিকায় নিয়ে আসে এবং ধীরে ধীরে এটি আধুনিক
হ্যালোইনের কুমড়ো খোদাই হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কুমড়ো খোদাই হ্যালোইনের
ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং উৎসবের আনন্দের প্রতীক হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত।
হ্যালোইনের বিশেষ রেসিপি
হ্যালোইনের অন্যতম আকর্ষণ হলো রঙিন ও থিমভিত্তিক খাবার ও বিশেষ রেসিপি। এই সময়
মিষ্টি, কেক, কুকি, চকোলেট এবং কুমড়ো ব্যবহার করে তৈরি বিভিন্ন রেসিপি শিশু ও
প্রাপ্তবয়স্কদের আকৃষ্ট করে। বিশেষ করে কুমড়োর পায়েস, জ্যাক-ও-ল্যান্টার্ন
কুকি, ব্লাডি জেলি, স্পাইডার কেক এবং থিমভিত্তিক পিজা হ্যালোইনের জনপ্রিয়
খাবারের মধ্যে অন্যতম।
হ্যালোইনের খাবার উৎসবের থিম এবং ভয়ঙ্কর মেজাজকে আরও শক্তিশালী করে। পরিবার এবং
বন্ধুদের সঙ্গে একত্রে এই খাবার প্রস্তুত করা শিশুদের সৃজনশীলতা এবং রান্নার
দক্ষতা বাড়ায়। এছাড়াও এই রেসিপিগুলি হ্যালোইনের পার্টি, স্কুল ইভেন্ট এবং
সামাজিক অনুষ্ঠানে বিশেষ আনন্দ যোগ করে।
২০২৫ সালের হ্যালোইনের জন্য ট্রেন্ডিং সাজসজ্জার আইডিয়া
২০২৫ সালে হ্যালোইন কবে এবং কিভাবে উদযাপন করা হয় তা সঠিকভাবে জেনে পরিকল্পনা
করলে উৎসবটি আরো আনন্দময় করে তোলা সম্ভব। ডিজাইনাররা হ্যালোইনের সাজসজ্জায়
প্রাকৃতিক উপকরণ নিউট্রাল টোনস যেমন- আইভরি, চারকোল, এমেরাল্ড গ্রিন, মিডনাইট
ব্লু, এবং জুয়েল টোনস যেমন - অ্যাবারডিন, অবার্ন ব্যবহার করতে পরামর্শ দিচ্ছেন।
সাজসজ্জার টিপসঃ গথিক ও ভিক্টোরিয়ান থিম Wednesday সিরিজের প্রভাবে
বিশেষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে যা পার্টিকে ভয়ঙ্কর এবং আকর্ষণীয় মেজাজ প্রদান করতে
সক্ষম। হোমমেড এবং রেট্রো ডেকোর যেমন হ্যান্ডক্রাফটেড ব্যানার, ক্রোচেট ফিগার এবং
রেট্রো টেবিল সেটিংস পার্টিকে ইউনিক করে তোলতে এবং ফ্রন্ট পোর্চে লেয়ারড কুমড়ো
ডিসপ্লে ও রিসাইক্লড উপকরণ ব্যবহার করে পরিবেশ আরও আনন্দদায়ক করাতে সাহায্য
করবে।
আরোও পড়ুনঃবুদ্ধ পূর্ণিমা আর বৈশাখী পূর্ণিমা কি এক
স্টাইলিশ লাইটিং, ক্যান্ডেলস্টিক, গজ লাইটিং এবং ফগ মেশিন পার্টির মেজাজকে আরও
উত্তেজনাপূর্ণ করে। কস্টিউম ট্রেন্ডের মধ্যে পপ কালচার রেফারেন্স, জেনা অরটেগারের
গথিক স্টাইল এবং ভার্চুয়াল থিমযুক্ত ডিজাইন বিশেষভাবে জনপ্রিয় যা শিশু ও
প্রাপ্তবয়স্কদের আগ্রহ বাড়াতে পারে। পার্টি আয়োজনের ক্ষেত্রে থিমভিত্তিক গেমস ও
কস্টিউম কনটেস্ট, থিমভিত্তিক খাবার ও মিষ্টি সাজানো।নিরাপত্তা ব্যবস্থা যেমন
পর্যাপ্ত লাইটিং, নিরাপদ প্রদীপ এবং ফায়ার এক্সটিঙ্গুইশার রাখা
গুরুত্বপূর্ণ।
হ্যালোইন উদযাপনে নিরাপত্তা নির্দেশিকা
হ্যালোইন উদযাপন আনন্দময় হলেও নিরাপত্তার দিকে যথেষ্ট খেয়াল রাখা অত্যন্ত
জরুরি। শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের নিরাপদ হ্যালোইনের জন্য কিছু মূল নির্দেশিকা
রয়েছে। প্রথমে ট্রিক-অর-ট্রিট করার সময় শিশুদের প্রাপ্তবয়স্কের তত্ত্বাবধানে
রাখা জরুরি। কস্টিউম নির্বাচন করার সময় এমন কাপড় ব্যবহার করুন যা দেখতে
ভালো এবং চলাফেরা সহজে করা যায়।
পরিবেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হ্যালোইন পার্টিতে নিরাপদ লাইটিং, ক্যান্ডেল বা
প্রদীপ ব্যবহারের সময় বিশেষ সতর্কতা এবং ফায়ার এক্সটিঙ্গুইশার থাকা আবশ্যক।
খাবারের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে প্যাক করা মিষ্টি ও খাবার গ্রহণ করা উচিত এবং অচেনা
কারো থেকে খাবার নেওয়া এড়াতে হবে। বাড়ি সাজানোর ক্ষেত্রে ধারালো বা ঝুঁকিপূর্ণ
সাজসজ্জা শিশুদের থেকে দূরে রাখবেন। নিরাপদ পরিবেশে হ্যালোইন পার্টি করলে উৎসব
আরো আনন্দময় ও আনন্দদায়ক স্মৃতি ধরে রাখতে সাহায্য করবে।
লেখকের মন্তব্যঃ ২০২৫ সালে হ্যালোইন কবে এবং কিভাবে উদযাপন করা হয়
২০২৫ সালে হ্যালোইন কবে এবং কিভাবে উদযাপন করা হয় তা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
২০২৫ সালে হ্যালোইন উদযাপন হবে ৩১ অক্টোবর এবং এটি একটি আন্তর্জাতিকভাবে জনপ্রিয়
উৎসব। শিশু এবং বড়রা হ্যালোইন উদযাপনের জন্য রঙিন ভুতুড়ে কস্টিউম পরিধান করে।
ট্রিক-অর-ট্রিট, কুমড়ো খোদাই, হ্যালোইন পার্টি, থিমভিত্তিক সাজসজ্জা এবং বিশেষ
হ্যালোইন খাবারের মাধ্যমে আনন্দ উপভোগ করে।
শিশুদের জন্য ট্রিক-অর-ট্রিট হলো সবচেয়ে আকর্ষণীয় কার্যক্রম যেখানে তারা
প্রতিবেশীদের বাড়ি ঘুরে মিষ্টি সংগ্রহ করে। প্রাপ্তবয়স্করা কস্টিউম কনটেস্ট,
থিমভিত্তিক গেমস এবং হ্যান্ডক্রাফটেড ডেকোরেশন দিয়ে উৎসবকে আরও স্মরণীয় করে
তোলে। তাই সঠিক পরিকল্পনা এবং নিরাপত্তার সঙ্গে হ্যালোইন উদযাপন করলে ৩১
অক্টোবরকে পরিবারের জন্য একটি স্মরণীয় এবং আনন্দময় দিন হিসেবে উদযাপন করা
সম্ভব। ভালো থাকবেন । ধন্যবাদ। 250737
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url