আপনি কি, কাঁচা কাঁঠাল রান্না করে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে
চাচ্ছেন? তাহলে, এই পোস্টটি আপনার জন্য। অনেকেই কাঁচা কাঁঠাল গরুর
মাংসের বিকল্প মনে করেন। কিন্তু অনেকেই জানেন না, কাঁচা কাঁঠাল আমাদের
শরীরের জন্য কতটা উপকারী।
গ্রামবাংলায় কাঁচা কাঁঠালের ভুনা, তরকারি কিংবা ভাজি সাধারণ একটি
খাবার। কিন্তু এই সাধারণ খাবারের মধ্যেই রয়েছে দারুণ পুষ্টিগুণ
উপাদান, যা শরীরের শক্তি বাড়াতে এবং হজম শক্তি ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এই
পোস্টে কাঁচা কাঁঠাল রান্না করে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা
হবে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ কাঁচা কাঁঠাল রান্না করে খাওয়ার উপকারিতা
অনেকেই কাঁচা কাঁঠাল রান্না করে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চেয়ে
থাকেন। আমাদের দেশে অনেকেই কাঁচা কাঁঠালকে গরুর মাংসের সাথে তুলনা
করেন। কারণ, কাঁচা কাঁঠালের ভুনা অনেকটাই মাংসের মতো দেখতে এবং খেতেও
বেশ মজাদার। কিন্তু কাঁচা কাঁঠাল শুধুমাত্র স্বাদের জন্যই নয়, আমাদের
স্বাস্থ্যের জন্যও অনেক উপকারী। বিশেষ করে যারা নিয়মিত শাকসবজি খেতে ভালোবাসেন,
তাদের জন্য এটি দারুণ একটা খাবার। কাঁচা কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে
ফাইবার এবং আঁশ। যারা কোষ্ঠকাঠিন্য ভোগেন, তাদের জন্য এটি অনেক
উপকারী।
প্রতিদিন এক বেলা করে কাঁচা কাঁঠালের তরকারি খেলে হজম শক্তি ভালো থাকে এবং পেটে
গ্যাস কম হয়। অনেকের আবার খাবার খাওয়ার পর পেট ভার লাগে, কাঁচা কাঁঠাল সেই
সমস্যাও কমাতে সাহায্য করে। এরপরে, কাঁচা কাঁঠালে রয়েছে আয়রন। যাদের
রক্তস্বল্পতা রয়েছে বা শরীর দুর্বল লাগে, কাঁচা কাঁঠাল তাদের
জন্যও অনেক উপকারী। বিশেষ করে মেয়েদের শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণ এটি
ভালো ভূমিকা রাখে। এছাড়াও কাঁচা কাঁঠালে থাকে ভিটামিন সি, যা শরীরের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়তে সাহায্য করে।
বর্ষাকালে বা সর্দি-কাশির মৌসুমে এই ভিটামিন "সি" শরীরকে সুরক্ষিত রাখতে
অনেক সাহায্য করে। আবার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও কাঁচা কাঁঠাল খুবই
ভালো, কারণ এতে চিনির পরিমাণ খুবই কম। অনেকেই ওজন কমাতে চায়, কিন্তু
বুঝে উঠতে পারে না কোন কোন খাবারগুলো তাদের জন্য ভালো। কাঁচা কাঁঠাল তাদের
জন্যও অনেক উপকারী। কারণ, এতে ক্যালোরি কম এবং পেট ভরানোর মতো
উপাদান বেশি থাকে। এর ফলে হালকা খাবার খাওয়ার পরেও পেট অনেকক্ষণ ভরা অনুভব
হয়।
সবশেষে বলা যায়- কাঁচা কাঁঠাল সহজেই রান্না করা যায়। গ্রাম অথবা
শহর যেখানেই থাকুন না কেন, কাঁচা কাঁঠাল সহজেই পাওয়া যাবে। কাঁচা কাঁঠাল
মসলা দিয়ে ভুনা করে, মাছের সাথে তরকারি অথবা শুকনো ভাজি করেও খাওয়া যায়।
কাঁচা কাঁঠাল শুধুমাত্র একটি সহজলভ্য খাবার নয়, এটি একটি
উপকারী, পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর খাবার। আমাদের প্রতিদিনের খাবার
তালিকায় কাঁচা কাঁঠাল নিয়ম করে রাখা উচিত।
কাঁঠালের বিচি রান্না করে খাওয়ার উপকারিতা
কাঁঠাল খাওয়ার পর অনেকেই বিচিগুলো ফেলে দেন, আবার কেউ সেগুলো শুকিয়ে রেখে
পরে ভুনা করে বা তরকারিতে দিয়ে খেয়ে থাকেন। কিন্তু এই ছোট্ট কাঁঠালের
বিচির মধ্যেও রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ এবং স্বাস্থ্য উপকারিতা। যারা নিয়মিত
কাঁঠালের বিচি খায়, তারা শুধু স্বাদই উপভোগ করে না, শরীরেও অনেক উপকার
পায়। কাঁঠালের বিচিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, যা আমাদের শরীরের কোষ
গঠনে সাহায্য করে। বিশেষ করে যারা মাছ-মাংস কম খায় বা নিরামিষ খেতে পছন্দ
করে, তাদের জন্য কাঁঠালের বিচি খাওয়া প্রাকৃতিক প্রোটিনের উৎস হতে পারে।
এটি খেলে শরীরের হাড় মজবুত হয়।
কাঁঠালের বিচি খেলে শরীরের দুর্বলতা কমে যায়। এর পাশাপাশি কাঁঠালের বিচিতে
রয়েছে ফাইবার, যা হজমে সহায়তা করে। যারা ওজনের সমস্যায় ভোগেন বা
কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে, তারা যদি সপ্তাহে ২-৩ দিন কাঁঠালের বিচি রান্না
করে খান, তাহলে অনেক উপকার পাবেন। এছাড়াও কাঁঠালের বিচিতে রয়েছে
ভিটামিন "এ" এবং ভিটামিন "সি", যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। যারা
সহজেই ঠান্ডা-সর্দিতে আক্রান্ত হন, তাদের ক্ষেত্রে কাঁঠালের বিচি এক
ধরনের প্রাকৃতিক সুরক্ষা দিতে পারে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
হচ্ছে- কাঁঠালের বিচিতে রয়েছে পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়াম।
যা হাড় শক্ত রাখে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। বিশেষ করে যারা
উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন, তাদের জন্য কাঁঠালের বিচি হালকা ঝাল-মসলা দিয়ে
রান্না করে খাওয়া খুবই উপকারী হতে পারে। সবশেষে বলা যায়- কাঁঠালের বিচি
দিয়ে নানা ধরনের তরকারি রান্না করা যায়। যেমন-
ভর্তা, ভুনা, ডাল, এমনকি কাঁঠালের বিচি ভেজেও খাওয়া
যায়। এটি রান্নায় সহজ এবং এর উপকার অনেক। তাই এবার থেকে কাঁঠাল খাওয়ার পর
বিচিগুলো ফেলে না দিয়ে সংগ্রহ করে রাখতে হবে। রান্না করে খেলে বুঝতে
পারবেন- খেতে যেমন মজাদার, তেমন উপকারও অনেক।
কাঁচা কাঁঠালের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
কাঁচা কাঁঠাল অনেকের কাছে শুধুমাত্র একটি গ্রীষ্মকালীন সবজি। কিন্তু এর
ভেতরে লুকিয়ে আছে এমন কিছু পুষ্টিগুণ উপাদান যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।
গ্রামের মানুষজন যুগ যুগ ধরে কাঁচা কাঁঠাল খেয়ে আসছেন। বিশেষ
করে কাঁচা কাঁঠালের ভুনা এবং তরকারি করে। এখন বিজ্ঞানও বলে- এই সবজিটি
আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। কাঁচা কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর আঁশ এবং
ফাইবশ, যা হজমের জন্য খুবই ভালো। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য
রয়েছে, তাদের জন্য এটি একটি প্রাকৃতিক উপকারী উপাদান।
নিয়মিত কাঁচা কাঁঠাল রান্না করে খেলে পেট পরিষ্কার থাকে এবং গ্যাসের সমস্যা কমে
যায়। এই কাঁঠালে রয়েছে ভিটামিন সি, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে সর্দি-কাশি বা ঋতু পরিবর্তনের সময় এটি
শরীরকে রক্ষা করে। এছাড়াও কাঁচা কাঁঠালে রয়েছে পটাশিয়াম, যা রক্তচাপ
নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। যারা ডায়াবেটিসে ভোগেন, তাদের জন্য
কাঁচা কাঁঠাল উপকারী একটি খাবার হতে পারে। এতে শর্করার পরিমাণ কম থাকে, তাই রক্ত
চিনির মাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা থাকে না। সবশেষে বলা যায়- এটি সহজলভ্য, সব
জায়গাতেই পাওয়া যায় এবং নানা রকম ভাবে রান্না করা যায়।
কাঁচা কাঁঠাল কি ডায়েটের জন্য ভালো
অনেকেই যখন ওজন কমানোর জন্য ডায়েট শুরু করেন, তখন ভাবেন কোন খাবার খাবে আর
কোন খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এমন অবস্থায় কাঁচা কাঁঠাল খাওয়া নিয়ে অনেকের
মনেই প্রশ্ন থাকে- কাঁচা কাঁঠাল কি ডায়েটের জন্য উপকারী? এর উত্তর
হচ্ছে- হ্যাঁ, কাঁচা কাঁঠাল ডায়েট মেনে চলা মনে হচ্ছে যেন বেশ উপকারী।
কাঁচা কাঁঠালে ক্যালরির পরিমাণ খুবই কম থাকে। এর ফলে যারা ওজন
কমাতে চান, তারা নিশ্চিন্তে এটি খেতে পারেন। এতে থাকা ফাইবার অনেকক্ষণ পেট
ভরা রাখে, যার কারণে অতিরিক্ত খিদে পায় না এবং অতিরিক্ত খাওয়া কমে
যায়।
এছাড়াও এতে চর্বি বা ফ্যাট খুবই কম। যারা চর্বি বহুল খাবার এড়িয়ে
চলেন, তাদের জন্য কাঁচা কাঁঠাল খাওয়া একটি স্বাস্থ্যকর উপায় হতে
পারে। আবার এতে রয়েছে কিছু প্রাকৃতিক এন্টি-অক্সিডেন্ট, যা শরীর পরিষ্কার
রাখতে সাহায্য করে এবং মেটাবলিজম ঠিক রাখে। অনেকে মনে করেন, শুধু শাকসবজি
খেলেই ডায়েট হয়। কাঁচা কাঁঠাল সেই শাক সবজি গুলোর মধ্যে পড়ে। তবে
খেয়াল রাখতে হবে, যাতে রান্না সময় খুব বেশি তেল-মসলা ব্যবহার না
হয়, তাহলে এটি একটি আদর্শ ডায়েট ফুড হয়ে উঠবে।
কাঁচা কাঁঠাল কিভাবে রান্না করতে হয়
কাঁচা কাঁঠাল রান্না করার জন্য ভয় পাওয়ার কিছু নেই। যদিও কাটতে একটু কষ্ট
হয়, তবে ঠিকভাবে করলে খুব সহজেই মজাদার একটা খাবার তৈরি করা যায়। প্রথমে
একটি মাঝারি সাইজের এবং ভালো কাঁচা কাঁঠাল বেছে নিতে হবে। এরপরে, খোসা ছাড়িয়ে
টুকরো টুকরো করে কেটে নিতে হবে। কাঁচা কাঁঠাল কাটার আগে হাতে ও ছুরিতে ভালো করে
তেল মেখে নিলে কাঁঠালের আঠা লেগে থাকবে না। কাঁঠালের টুকরোগুলো কেটে হালকা লবণ আর
হলুদ দিয়ে সিদ্ধ করে নিতে হবে। বেশি সিদ্ধ হলে গলে যেতে পারে, তাই মাঝারি
অবস্থায় নামিয়ে নিতে হবে।
এরপরে, একটি প্যানে সরিষার তেল গরম করে পরিমাণ মতো পেঁয়াজ কুচি, রসুন
বাটা, আদা বাটা, শুকনা মরিচ, লাল মরিচের গুঁড়ো, জিরা গুঁড়ো
এবং ধনে গুঁড়ো দিয়ে ভাজতে হবে। মসলাগুলো ভালোভাবে কষানো হয়ে
গেলে, সেখানে কাঁচা কাঁঠালের সিদ্ধ টুকরাগুলো দিয়ে দিতে হবে। হালকা
নেড়ে চেড়ে কিছুক্ষণ ঢেকে রাখতে হবে। আপনি চাইলে- একটু পানি দিয়ে
গ্রেভি করতে পারেন, আবার শুকনো ভুনা করেও খেতে পারেন। শেষে ঘি বা ধনে
পাতা দিয়ে দিলে আরো স্বাদ বেড়ে যাবে। এই কাঁচা কাঁঠাল ভাতের
সাথে, খিচুড়ির সাথে এমনকি রুটি দিয়ে খেতে ভীষণ ভালো লাগে।
কাঁচা কাঁঠাল কি ওজন কমাতে সাহায্য করে
অনেকেই ওজন কমানোর জন্য খাবার তালিকা থেকে প্রায় অনেক খাবারই বাদ দিয়ে দেন।
কিন্তু আপনি কি জানেন, কাঁচা কাঁঠাল এমন একটি খাবার যা খেতেও সুস্বাদু এবং
ওজন কমাতেও বেশ উপকারী? বিশেষ করে যারা ডায়েট করছেন, তাদের জন্য কাঁচা
কাঁঠাল একেবারে প্রাকৃতিক ও স্বাস্থ্যকর খাবার হতে পারে। কাঁচা
কাঁঠালে ক্যালোরি খুবই কম। যার ফলে এটি খাওয়ার পর শরীরে বাড়তি চর্বি
জমার আশঙ্কা থাকে না। আবার কাঁচা কাঁঠালে ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকে, যার
ফলে অল্পতেই তৃপ্তি আসে এবং অনেকক্ষণ পেট ভার থাকে।
এছাড়াও কাঁচা কাঁঠাল প্রাকৃতিকভাবে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে
সাহায্য করে। যারা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে পারেন না বা ডায়াবেটিসে
ভুগছেন, তাদের জন্য এটি নিরাপদ একটি খাবার। আরেকটি ভালো দিক
হচ্ছে- কাঁচা কাঁঠালে প্রচুর এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীর পরিষ্কার
রাখতে এবং মেটাবলিজম ঠিক রাখতে সাহায্য করে, যার ফলে ওজন সহজে কমে যায়। তবে
অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে, রান্নার সময় যেন বেশি তেল-মসলা না হয়। হালকা
সিদ্ধ বা ভুনা করলেই একেবারে পারফেক্ট ডায়েট ফুড হতে পারে।
কাঁচা কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা কি কি
কাঁচা কাঁঠাল আমাদের দেশে খুব পরিচিত একটি সবজি। অনেকেই মাংসের বিকল্প হিসেবে এর
ভুনা খেতে ভালোবাসেন। শুধু স্বাদ নয়, কাঁচা কাঁঠালে রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য
উপকারিতা। কাঁচা কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর ফাইবার এবং আঁশ, যা হজম শক্তি
ভালো রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং পেট পরিষ্কার
থাকে। যাদের গ্যাসের সমস্যা আছে, তারা কাঁচা কাঁঠাল খেলে উপকার পেতে পারেন।
কাঁচা কাঁঠালে ভিটামিন সি থাকে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বাড়ায়। ঠান্ডা এবং সর্দি-কাশির মৌসুমে এটি খেলে সহজে অসুস্থ
হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
এছাড়াও এতে রয়েছে আয়রন, যা রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়াতে
সাহায্য করে। বিশেষ করে যারা রক্তস্বল্পতায় ভোগেন, তাদের জন্য কাচা কাঁঠাল
খাওয়া অনেক উপকারী। এতে চর্বি বা ফ্যাট খুবই কম, তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে
চাইলে এটি নিশ্চিন্তে খাওয়া যায়। ডায়াবেটিস রোগীরাও কাঁচা কাঁঠাল খেতে
পারেন, কারণ এতে শর্করার পরিমাণ কম। সবশেষে বলা যায়- এই সবজিটি
সহজলভ্য এবং বিভিন্নভাবে রান্না করে খাওয়া যায়। তাই কাঁচা কাঁঠাল শুধুমাত্র
স্বাদের জন্যই নয়, স্বাস্থ্য রক্ষার দিক থেকেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি
খাবার।
কাঁঠাল খেলে কি গ্যাস হয়
অনেকেই মনে করেন কাঁঠাল খেলে গ্যাস হয়। এই ধারণা পুরোপুরি ভুল নয়, তবে
সবার ক্ষেত্রে এক রকম নাও হতে পারে। বিশেষ করে পাকা কাঁঠাল কিছু মানুষের হজমে
সমস্যা তৈরি করতে পারে। এতে থাকা প্রাকৃতিক চিনি ও ফাইবার অনেকের পেটে অতিরিক্ত
গ্যাস তৈরি করে। যাদের হজম শক্তি একটু দুর্বল, তারা যদি বেশি পরিমাণে পাকা
কাঁঠাল খায়, তাহলে পেট ফাঁপা ভাব বা অস্বস্তি হতে পারে। তবে কাঁচা
কাঁঠাল সাধারণত গ্যাসের সমস্যা করে না। বরং কাঁচা কাঁঠালে থাকা আঁশ হজমে সাহায্য
করে। অনেকেই কাঁচা কাঁঠাল তরকারি বা ভুনা খেয়ে বেশ আরাম বোধ করেন।
আবার রান্নার সময় যদি বেশি তেল, মসলা এবং ঝাল ব্যবহার করা হয়, তাহলে গ্যাস
বা অম্বলের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও যাদের পেটে আগে থেকেই গ্যাস বা
এসিডিটির সমস্যা রয়েছে, কাঁঠাল খাওয়ার পর তাদের পেটে হালকা গ্যাস হতে পারে। এমন
অবস্থায় কাঁঠাল খাওয়ার পরে হালকা গরম পানি খেলে উপকার পাওয়া যাবে। সবশেষে বলা
যায়- কাঁঠাল খেলে গ্যাস হয় কিনা? সেটা নির্ভর করে ব্যক্তির
ওপর, খাওয়ার পরিমাণের উপর এবং কাঁঠালটি কতটা পাকা বা কাঁচা তার উপর। পরিমাণ
মতো কাঁচা কাঁঠাল খেলে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয় বরং আরো ভালোভাবে পুষ্টি
পাওয়া যাবে।
কাঁচা কাঁঠাল ভুনা করে খাওয়ার উপকারিতা
কাঁচা কাঁঠাল ভুনা আমাদের দেশীয় রান্নায় একটি জনপ্রিয় পদ। অনেকেই কাঁচা
কাঁঠালকে গরুর মাংসের বিকল্প মনে করে থাকেন। তবে শুধু স্বাদের জন্যই
নয়, কাঁচা কাঁঠাল ভুনা খাওয়ার বেশি উপকারিতা রয়েছে। কাঁচা কাঁঠালের
প্রচুর আঁশ এবং ফাইবার থাকে। ভুনা করে খেলে এই আঁশ সহজে হজম হয় এবং পেট পরিষ্কার
রাখতে সাহায্য করে। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য বা গ্যাসের সমস্যা রয়েছে, তাদের
জন্য এটি অনেক উপকারী হতে পারে। এরপরে, কাঁচা কাঁঠাল ভুনা করে খেলে শরীরের
শক্তি পাওয়া যায়। এতে প্রাকৃতিক কার্বোহাইড্রেট থাকে, যা অনেকক্ষণ পেট ভার
রাখতে সাহায্য করে।
এছাড়াও এতে কিছুটা প্রোটিন, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম এবং
এন্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। কাঁচা
কাঁঠাল ভুনা করে খাওয়ার ফলে অতিরিক্ত তেল-মসলার প্রয়োজন হয় না, তাই এটি
হালকা ও সহজে হজম করা যায়। সবচেয়ে ভালো দিক হচ্ছে- কাঁচা কাঁঠাল ভুনা
খেতে যেমন মজা, তেমনি ভাতের সাথে, রুটির সাথে এবং খিচুড়ির সাথে খেতে
দারুণ লাগে। সবশেষে বলা যায়-কাঁচা কাঁঠাল ভুনা এটি একটি
স্বাস্থ্যকর, সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর খাবার। যার নিয়মিত খেলে শরীর ভালো
থাকবে এবং তৃপ্তি আসবে।
কাঁচা কাঁঠাল রান্না করে খাওয়ার উপকারিতা-শেষ কথা
এই পোস্টে কাঁচা কাঁঠাল রান্না করে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে
বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। কাঁচা কাঁঠাল শুধুমাত্র একটি সস্তা ও সহজলভ্য সবজি
নয়, এটি একটি প্রাকৃতিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার। কাঁচা কাঁঠাল ভুনা,
তরকারি বা ভাজি- যেভাবেই রান্না করা হোক না কেন, খেতে অনেক সুস্বাদু এবং
স্বাস্থ্যের জন্যও খুব উপকারী। এতে থাকা ফাইবার হজম শক্তি ভালো রাখে এবং
ভিটামিন "সি" রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। আর আয়রন ও পটাশিয়াম
শরীরে ভেতর থেকে শক্তি যোগাতে সাহায্য করে।
যারা ডায়েট করতে চান, তাদের জন্য একটি একটি আদর্শ খাবার। কারণ, এতে
ক্যালোরি কম এবং অনেকক্ষণ পেট ভরা রাখে। আবার ডায়াবেটিসের রোগীরাও এটি খেলে
অনেক উপকার পাবেন। কারণ, এতে শর্করার পর মাত্রা কম। সবচেয়ে ভালো
দিক হচ্ছে- গ্রামেই হোক অথবা শহরে, এই সবজিটি সব জায়গাতে পাওয়া যায়।
সবশেষে বলা যায়- কাঁচা কাঁঠাল শুধুমাত্র স্বাদের জন্য
নয়, স্বাস্থ্য ঠিক রাখতেও অনেক উপকারী। এটি শরীরের যত্নে নিয়মিত খাবারের
জন্য উপযোগী। 250455
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url