কোভিড ওমিক্রন এক্সবিবি করোনার লক্ষন
কোভিড ওমিক্রন এক্সবিবি করোনার লক্ষন গুলো আমাদের প্রত্যেকের জানা উচিত। ২০২০ সালের কোভিড ১৯ বা করোনা ভাইরাসের মহামারির পর সম্প্রতি সময়ে আবারো করোনা ভাইরাস শক্তিশালী ভেরিয়েন্ট কোভিড ওমিক্রন এক্সবিবি নামে দেখা দিচ্ছে।

কোভিড ওমিক্রন এক্সবিবি করোনার লক্ষন
- কোভিড ওমিক্রন এক্সবিবি করোনার লক্ষন
- কোভিড ওমিক্রন এক্সবিবি হলে করনীয় কি জানুন
- কোভিড ১৯ ও কোভিড ওমিক্রন এক্সবিবি এর মধ্যে পার্থক্য
- করোনা ভাইরাস হলে যে ভুল গুলো করা যাবে না
- করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে যে খাবার গুলো খেতে হবে
- করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে যে খাবার গুলো খাওয়া যাবে না
- করোনা ভাইরাসের টিকা নেওয়া ঠিক কিনা জানুন
- কোভিড ওমিক্রন এক্সবিবি করোনায় কারা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন
- কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন?
- পরিশেষেঃ কোভিড ওমিক্রন এক্সবিবি করোনার লক্ষন
কোভিড ওমিক্রন এক্সবিবি করোনার লক্ষন
কোভিড ওমিক্রন এক্সবিবি করোনার লক্ষন সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত জানবো। ২০১৯
সালের শেষের দিকে করোনা ভাইরাসের আবির্ভাবের পরে এটি বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে পড়ে
এবং একটি মহামারির রুপ ধারন করে। ধীরে ধীরে এই ভাইরাসের সংক্রামন কমতে থাকলেও
বর্তমানে এই ভাইরাসটি নতুন রুপে ফিরে এসেছে। এটিকেই মূলত বলা
হচ্ছে কোভিড ওমিক্রন এক্সবিবি। এটি আগে থেকে বিদ্যমান ওমিক্রন
ভ্যারিয়েন্টগুলোর তুলনায় কিছুটা বেশি সংক্রামক হলেও সাধারণত ততটা
মারাত্মক নয়। আমাদের প্রত্যেকের এই ভাইরাস সম্পর্কে জানা উচিত এবং সেই সাথে
সচেতন হওয়া উচিত। তাই এখন আমরা কোভিড ওমিক্রন এক্সবিবি করোনা ভাইরাসের
কিছু লক্ষন সম্পর্কে জানবো।
- হালকা থেকে মাঝারি জ্বর
- গলা ব্যথা বা গলা খুসখুসে
- শুকনো কাশি
- নাক বন্ধ বা সর্দি
- মাথাব্যথা
- দুর্বলতা ও ক্লান্তি
- শরীর ব্যথা
- হালকা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা
- ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব হওয়া
- চোখ লাল হওয়া বা চুলকানো
- গন্ধ বা স্বাদের হ্রাস
- শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া
- বুক ব্যথা বা চাপ অনুভব করা
- কথা বলতে কষ্ট হওয়া
- ঠোঁট বা মুখ নীল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
কোভিড ওমিক্রন এক্সবিবি হলে করনীয় কি জানুন
কোভিড ওমিক্রন ক্সবিবি ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হলে দ্রুত আর সঠিক ব্যবস্থা
গ্রহণ করা খুব জরুরি একটি কাজ। এই ভ্যারিয়েন্ট সাধারণত হালকা উপসর্গ সৃষ্টি
করলেও কিছু ক্ষেত্রে জটিলতাও দেখা দিতে পারে বিশেষ করে বয়স্ক ও দীর্ঘস্থায়ী
অসুস্থতায় ভোগা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এটি প্রান ঘাতিও হতে পারে। কোভিড
ওমিক্রন ক্সবিবি ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হলে সর্ব প্রথমে যে কাজটি করতে হবে
সেটি হচ্ছে পরিবার বা অন্যান্য মানুষদের কাছে থেকে সাময়িক সময়ের জন্য আলাদা
থাকতে হবে। কারণ এই ভাইরাসটি হলো এক ধরনের সংক্রামন জাতীয় ভাইরাস অর্থাৎ
হাঁচি, কাসি কিংবা সাধারণ সংস্পর্শে এই ভাইরাস একজন থেকে অন্য জনের কাছে পার
হতে পারে। তাই আপনি যদি এই ভাইরাসের উপসর্গ দেখে বুঝতে পারেন আপনি এই ভাইরাসে
আক্রান্ত তাহলে নিজেকে পরিবারের মানুষদের কাছে থেকে অন্তত ৫ থেকে ৭ দিনের
জন্য আলাদা থাকতে হবে।
আরোও পড়ুনঃ খালি পেটে চিরতা খাওয়ার উপকারিতা
এরপর যে কাজটি করতে হবে সেটি হচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম নিতে
হবে। শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক রাখতে এবং দ্রুত সুস্থ হওয়ার জন্য
যথেষ্ট বিশ্রাম নেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ন কাজ। এরপর পর্যাপ্ত পানি ও তরল
খাবার গ্রহণ করতে হবে। ডিহাইড্রেশন এড়াতে দিনে কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস
পানি পান করতে হবে এবং সঙ্গে স্যুপ, শরবত, ইলেকট্রোলাইট পান করাও শরীরের
পক্ষে অনেক উপকারী। আপনার শরীরের যদি জ্বর অনুভব করেন
তাহলে প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষুধ সেবন করতে পারেন। এই সময় হালকা বা মাঝারি
কাশিও হতে পারে। এমন অবস্থায় হালকা কুসুম পানিতে অল্প পরিমাণ লবন মিশিয়ে
গর্গল করতে পারেন। এরপর যে গুরুত্বপূর্ন কাজ সেটি হচ্ছে নিজেকে ও নিজের
ব্যবহার করা জিনিস পত্র সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। সহজপাচ্য
ও পুষ্টিকর খাবার যেমন স্যুপ, ফল, সবজি, ডিম খেতে হবে এবং রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন সি, জিংক ও প্রোটিন যুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে।
কোভিড ১৯ ও কোভিড ওমিক্রন এক্সবিবি এর মধ্যে পার্থক্য
বিষয় | কোভিড-১৯ | ওমিক্রন এক্সবিবি |
---|---|---|
উৎপত্তি | ২০১৯ সালের শেষ দিকে চীনের উহান শহরে | ২০২২-২৩ সালে, ওমিক্রনের বিভিন্ন সাবভ্যারিয়েন্ট থেকে |
সংক্রমণের গতি | তুলনামূলক কম সংক্রামক | অনেক বেশি সংক্রামক ও দ্রুত ছড়ায় |
উপসর্গ | শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসে সংক্রমণ | গলা ব্যথা, কাশি, মাথাব্যথা |
মৃত্যুর ঝুঁকি | তুলনামূলকভাবে বেশি | তুলনামূলকভাবে কম |
টিকার প্রতিক্রিয়া | টিকা কার্যকরভাবে সংক্রমণ ও জটিলতা কমায় | টিকা সংক্রমণ পুরোপুরি আটকাতে পারে না |
গন্ধ ও স্বাদ হারানো | সাধারণ উপসর্গ হিসেবে প্রায়ই দেখা যেত | তুলনামূলকভাবে কম দেখা যায় |
নতুন লক্ষণ | গলাব্যথা, কাশি, শ্বাসকষ্ট | চোখ লাল হওয়া, গলা খুসখুস, নাক বন্ধ, ক্লান্তি ইত্যাদি |
করোনা ভাইরাস হলে যে ভুল গুলো করা যাবে না
করোনা ভাইরাস হলে মানুষ আতক্ত হয়ে এমন অনেক কাজ করে ফেলেন যেগুলো করা একদম
উচিত নয়। তার মধ্যে উন্নতম যে ভুলটি করে থাকেন সেটি হচ্ছে আইসোলেশনে না
থাকা। অনেকে নিজের শরীরে এই ভাইরাসটির লক্ষন থাকার কারণেও সতর্ক হন না
এবং আইসোলেশনে না থেকে পরিবার, আত্নীয় ও মানুষ জনের সাথে মিলামেশা করেন।
যার কারণে সংক্রামনের হার আরোও বেশি বৃদ্ধি পায়। আবার নিজের মন মতো ওষুধ
খাওয়ার মত ভুল আমরা অনেকেই করে থাকি। আমরা যখন বুঝতে পারি আমাদের শরীরের মধ্য
করোনা ভাইরাসের লক্ষন রয়েছে তখন নিজের ইচ্ছে মত চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া
অ্যান্টিবায়োটিক, স্টেরয়েড বা অন্য শক্তিশালী ওষুধ খেয়ে থাকি যা আমাদের
শরীরের জন্য মারাত্নক ক্ষতিকর হতে পারে। তাই এই ভুল থেকে আমাদের বিরত থাকতে
হবে।
এছাড়াও আবার অনেকে যে ভুলটি করে থাকেন সেটি হচ্ছে মাস্ক না পরা বা
সতর্কতা না মানা। আক্রান্ত হয়েও অনেকেই মাস্ক পরেন না, বারবার মুখে
হাত দেন বা হাঁচি কাশির সময় মুখ ঢাকেন না এটি ভাইরাস ছড়ানোর অন্যতম প্রধান
কারণ গুলোর মধ্যে একটি। আবার অনেকে যে ভুলটি করে থাকেন সেটি
হচ্ছে পর্যাপ্ত পানি না খাওয়া। জ্বর ও সংক্রমণের সময় শরীর দ্রুত
ডিহাইড্রেট হয়। পানি ও তরল খাবার না খেলে শরীরে দুর্বলতা আরোও বাড়তে পারে।
তাই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে এই ভুলটি কখনোই করা যাবে না।
আবার ফাস্টফুড ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার মত সাধারণত ভুল গুলো অনেকেই
করে থাকেন। এই সময় শরীরকে রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করতে পুষ্টিকর খাবার
প্রয়োজন। অতিরিক্ত ভাজাপোড়া বা মসলাদার খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিতে
পারে। তাই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত এই খাবার গুলো
খাওয়া যাবে না।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে যে খাবার গুলো খেতে হবে
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখা ও দ্রুত
সুস্থ হওয়ার জন্য সঠিক খাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরি একটি কাজ। এই ভাইরাসে
আক্রান্ত হলে সহজপাচ্য এবং পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে যাতে
শরীরে শক্তি জোগায়। তাই আমাদের প্রত্যেকের এমন খাবারের নাম জানা উচিত যা
সহজে হজম হবে এবং শরীরে শক্তি জোগাবে। এমন ১৫ টি খাবারের নাম নিচে তুলে ধরা
হলো। তবে যাদের নির্দিষ্ট খাবারে কোন সমস্যা থেকে থাকে তাহলে সেই খাবার
খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
আরোও পড়ুনঃ ওজন কমাতে গ্রিন টি খাওয়ার নিয়ম
- মুরগির স্যুপ
- খিচুড়ি বা নরম ভাত
- কলা
- আপেল
- মাল্টা বা কমলা
- সিদ্ধ সবজি যেমনঃ গাজর, কুমড়া, লাউ ইত্যাদি
- পালংশাক বা অন্যান্য সবুজ শাকসবজি
- সিদ্ধ ডিম
- মাছ
- দুধ
- আদা ও লেবু চা
- ডাবের পানি
- লেবু পানি
- বাদাম
- মসুর বা মুগ ডালের ঝোল ইত্যাদি।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে যে খাবার গুলো খাওয়া যাবে না
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে দ্রুত সুস্থ হওয়ার জন্য শুধু কি খাবার খাওয়া যাবে
তা জানলেই চলবে না বরং কোন খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত তাও জানা অত্যন্ত
গুরুত্বপুর্ন একটি কাজ। এই সময় শরীর দুর্বল থাকে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা
হ্রাস পায় ফলে কিছু খাবার শরীরের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। তাই আমাদের
প্রত্যেকেরই জানা উচিত কোন খাবারগুলো করোনা ভাইরাস আক্রান্ত অবস্থায় খেলে রোগ
বাড়তে পারে বা সুস্থ হতে সময় বেশি লাগে। নিচে এমন ১৫টি খাবারের নাম দেওয়া হলো
যেগুলো করোনা আক্রান্ত অবস্থায় এড়িয়ে চলা উচিত।
- অতিরিক্ত তেল মসলা দেওয়া ভাজাপোড়া খাবার
- ফাস্টফুড জাতীয় খাবার
- অতিরিক্ত ঠান্ডা খাবার
- কোমল পানীয় ও ক্যানজাত পানীয়
- কোল্ড কফি বা আইসক্রিম
- অতিরিক্ত ঝাল খাবার
- প্রসেসড খাবার
- মিষ্টি জাতীয় খাবার
- অতিরিক্ত ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়
- প্যাকেটজাত জুস
- ধূমপান
- এলকোহল জাতীয় পানীয়
- বাসি বা দীর্ঘ সময় ফ্রিজে রাখা খাবার
- অতিরিক্ত গরু বা খাসির চর্বিযুক্ত মাংস
- খাবারের সাথে কাঁচা পেঁয়াজ বা রসুন
- অত্যধিক পরিমাণে বাদাম বা শুকনো ফল ইত্যাদি।
করোনা ভাইরাসের টিকা নেওয়া ঠিক কিনা জানুন
করোনা ভাইরাসের টিকা নেওয়ার এক দিক দিয়ে সুবিধা রয়েছে আবার অন্য দিক দিয়ে
কিছু অসুবিধাও রয়েছে। তবে অসুবিধার চাইতে সুবিধা বেশি। প্রথমে জেনে নেওয়া
যাক করোনা ভাইরাসের টিকা নেওয়ার সুবিধা কি। করোনা ভাইরাসের টিকা নেওয়ার
ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে করে। টিকা শরীরে
প্রতিরোধ গড়ে তোলে যাতে ভাইরাস আক্রান্ত হলেও দেহ সহজে মোকাবিলা করতে পারে
এবং উপসর্গ কমাতে পারে। আবার একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে টিকা নেওয়া
ব্যক্তিদের হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর হার অনেক কম। বিশেষ করে বয়স্ক ও
অসুস্থদের জন্য এটি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। কারণ অসুস্থ
ও বয়স্ক মানুষদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকার ফলে এই ভাইরাসে সহজেই
আক্রান্ত হয়ে পড়ে এবং এই সকল মানুষদের এই ভাইরাসে মৃত্যুঝুকিও বেশি থাকে। তাই
এমন অবস্থায় এই অসুস্থ ও বয়স্ক মানুষদের করোনা ভাইরাসের টিকা নেওয়া অনেক
গুরুত্বপূর্ন কাজ।
আরোও পড়ুনঃ রক্তশূন্যতায় ভোগার গুরুতর লক্ষণ
এছাড়াও এই ভাইরাসের টিকা নেওয়ার ফলে সংক্রমণ হলেও সাধারণত হালকা জ্বর,
কাশি, দুর্বলতা হয় এবং ফুসফুসে সংক্রমণ বা অক্সিজেন কমে যাওয়ার মতো জটিলতা কম
দেখা যায়। তাছাড়াও করোনার টিকা নেওয়ার অন্যতম এক সুবিধা হচ্ছে সামনে যদি আরোও
শক্তিশালী করোনার ভেরিয়েন্ট আসে তাহলে তার থেকে সহজেই মোকাবেলা করা সম্ভব
হবে। এখন আমাদের কিছু অসুবিধা ও ভুল ধারণা সম্পর্কে জানা উচিত। করোনার টিকা
নেওয়ার একটি অন্যতম অসুবিধা হচ্ছে এর অনেক সাইড ইফেক্ট আছে। যেমনঃ হালকা
জ্বর, ব্যথা, ক্লান্তি, এলার্জি, চর্মরোগ ইত্যাদি। এই সকল সমস্যা করোনা
ভাইরাসের টিকা নেওয়ার ফলে অনেক মানুষের ভুগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার
অনেক ভুল ধারণাও রয়েছে এই বিষয় নিয়ে। তবে সব মিলিয়ে পরিবারের সুরক্ষার
পাশপাশি নিজের শরীরকে ভাইরাসের মোকাবেলা করার জন্য এই টিকা নেওয়া উচিত।
কোভিড ওমিক্রন এক্সবিবি করোনায় কারা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন
কোভিড ওমিক্রন এক্সবিবি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে বিশেষ
করে বয়স্ক ব্যক্তিরা অর্থাৎ ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী
ব্যক্তিরা। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
তাই বয়স্কদের ক্ষেত্রে সংক্রমণ গুরুতর হতে পারে। বয়স্ক ব্যক্তি
ছাড়াও শিশু ও নবজাতক ও গর্ভবতী নারীরাও বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন। কারণ
শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এখনো পূর্ণভাবে গড়ে ওঠে না ফলে তাদের ক্ষেত্রে
ঝুঁকি বেশি থাকতে পারে আবার গর্ভাবস্থায় রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা কিছুটা
দুর্বল থাকে। ঠিক এই কারণেই শিশু এবং গর্ভবতী মায়েরা করোনার এই ভেরিয়েন্টে
বেশি আক্রান্ত হতে পারেন। তাছাড়াও বিশেষ কিছু রোগে ভোগা ব্যক্তিরাও এই
ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন। এই সকল রোগের একটি তালিকা নিচে দেওয়া হলো।
- ডায়াবেটিস
- উচ্চ রক্তচাপ
- হৃদরোগ
- কিডনি বা লিভারের সমস্যা
- ক্যান্সার
- হাঁপানি বা অন্যান্য শ্বাসকষ্টের রোগ
- অর্গান ট্রান্সপ্লান্ট রোগী
- HIV বা AIDS রোগী ইত্যাদি।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন?
কোভিড ১৯ বা ওমিক্রন এক্সবিবি ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হলে অনেক সময় ঘরে বসেই
হালকা উপসর্গে সুস্থ হওয়া সম্ভব। তবে কিছু উপসর্গ বা পরিস্থিতি আছে যখন
অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন। কারণ উপযুক্ত সময়ে চিকিৎসা না নিলে
রোগ জটিল আকার ধারণ করতে পারে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য উপসর্গ
হচ্ছে দীর্ঘ সময় ধরে জ্বর থাকা। যদি ১০১°F বা ৩৮.৩°C এর বেশি জ্বর
৩ দিন বা তার বেশি সময় থাকে এবং সেই সাথে প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষুধ
খাওয়ার পরেও জ্বর না কমে তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পররামর্শ নিতে হবে। তবে একটি
বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে সেটি হচ্ছে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই মুখে
মাস্ক, হাতে গ্লাভস এবং প্রয়োজনীয় সাস্থ সতর্কতা মেনে চিকিৎসকের কাছে যেতে
হবে।
এছাড়াও আরোও কিছু উপসর্গ রয়েছে। যেমনঃ শ্বাসকষ্ট বা অক্সিজেন লেভেল কমে
গেলে। অর্থাৎ হালকা হাঁটলেও দম নিতে কষ্ট হলে, বুক ভার বা ব্যথা
অনুভব হলে অথবা পালস অক্সিমিটার ব্যবহার করে দেখলে অক্সিজেন লেভেল ৯৪%
এর নিচে নামলে অতি দ্রুত ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। এছাড়াও মাথা ঘোরানো,
দুর্বলতা, কথা জড়ানো, বা চেতনা হারানোর উপক্রম হলেও সময় নষ্ট না করে দ্রুত
অভিজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু লক্ষণ
থাকলে যেমনঃ খাওয়াদাওয়ায় অনীহা, বারবার বমি করা, অতিরিক্ত
ঘুমানো, জ্বর বা কাশি ২ থেকে ৩ দিনের বেশি স্থায়ী হওয়া ইত্যাদি লক্ষন
দেখা দিলে নিজে নিজে চিকিৎসা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
পরিশেষেঃ কোভিড ওমিক্রন এক্সবিবি করোনার লক্ষন
কোভিড ওমিক্রন এক্সবিবি করোনার লক্ষন সম্পর্কে আমরা উপরে বিস্তারিত আলোচনা
করেছি। আমরা শুধু কোভিড ওমিক্রন এক্সবিবি করোনা ভাইরাসের লক্ষন সম্পর্কে
আলোচনা করিনি বরং এই ভাইরাস আক্রান্ত হলে মানুষ সাধারণ যে ভুলগুলো করে থাকি
সেগুলো সম্পর্কেও তুলে ধরেছি। এর পাশপাশি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে যে
খাবার গুলো খাওয়া যাবে এবং যে খাবার গুলো খাওয়া যাবে না সেই সম্পর্কেও আলোচনা
করা হয়েছে। এছাড়াও কোভিড ১৯ এবং কোভিড ওমিক্রন এক্সবিবি করোনার পার্থক্য
তুলে ধরা হয়েছে। সব মিলিয়ে আশা করা যায় যে আপনি যদি উপরের তথ্য গুলো ভালোভাবে
পড়েন তাহলে কোভিড ওমিক্রন এক্সবিবি করোনার লক্ষন সম্পর্কে একটি স্পষ্ট
ধারণা পেয়ে যাবেন। 250311
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url