ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার নিয়ম
আপনি কি, ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে, এই পোস্টটি আপনার জন্য।ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলা খুবই সহজ এবং নির্ভরযোগ্য একটি পদ্ধতি। যারা সুদ মুক্ত এবং শরিয়াহ মোতাবেক ব্যাংকিং সেবা নিতে চাচ্ছেন, তাদের জন্য এটি আদর্শ।
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার পর পাসবুক, মুনাফা সুবিধা ও
মোবাইল অ্যাপস এর মাধ্যমে লেনদেন করার সুযোগ-সুবিধা পাবেন। সৎভাবে
আপনার টাকা সুরক্ষিত রাখার জন্য ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট দারুণ একটি
মাধ্যম।এই পোস্টে ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার নিয়ম
সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার নিয়ম
- ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার নিয়ম
- ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার জন্য কি কি দরকার
- ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার উপকারিতা
- ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার খরচ
- ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার যোগ্যতা
- ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট মুনাফা কিভাবে পাওয়া যায়
- ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার পর চেকবই পাওয়ার নিয়ম
- মহিলাদের জন্য ইসলামী ব্যাংকে সেভিংস একাউন্ট খোলার নিয়ম
- ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট চালানোর নিয়ম ও নিরাপত্তা
- ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার নিয়ম-শেষ কথা
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার নিয়ম
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে অনেকেই জানেন
না। ইসলামী ব্যাংকে সেভিংস একাউন্ট খোলার মানে হচ্ছে, আপনার টাকা এমন
এক জায়গায় রাখা হচ্ছে, যেখানে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক লেনদেন করা হয়
এবং সুদের সাথে কোনো সম্পর্ক থাকে না। অনেকেই ভেবে থাকেন, ব্যাংক মানেই
হচ্ছে সুদ। কিন্তু বিষয়টা তেমন নয়, ইসলামী ব্যাংক এই
ধারণাটা বদলে দিয়েছে। এখানে আপনি একদিকে যেমন টাকা জমা রাখতে
পারবেন, ঠিক তেমনি ব্যাংক থেকে শরিয়াহ মোতাবেক মুনাফা নিতে
পারবেন।
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার জন্য প্রথমে আপনাকে, আপনার এলাকার
নিকটস্থ ইসলামী ব্যাংকের কোনো শাখায় যেতে হবে। সেখানে গেলে
আপনি, ব্যাংক থেকে "সেভিংস একাউন্ট ফরম" নিতে পারবেন। উক্ত ফর্মটি আপনার
সঠিক তথ্যগুলো দিয়ে পূরণ করতে হবে। যেমন- আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র (NID)
অথবা জন্ম সনদ লাগবে, আপনার নিজের পাসপোর্ট সাইজের দুটি ছবি প্রয়োজন
হবে, বিদ্যুৎ বিল অথবা গ্যাস বিলের ফটোকপি লাগবে (বর্তমান ঠিকানার প্রমাণ
হিসেবে) এবং একজন পরিচিত লোকের রেফারেন্স (যদি ব্যাংক
চাই) ইত্যাদি তথ্য গুলো সঠিকভাবে দিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশী ব্যাংক একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম
সব কাগজপত্র গুলো ঠিক থাকলে ব্যাংক ম্যানেজার আপনার ফরম গ্রহণ করবে এবং চেক করে ঠিকঠাক থাকলে, একাউন্ট খুলে দিবে। সাধারণত ১ থেকে ২ দিনের মধ্যেই একাউন্ট একটিভ হয়ে যায়। অ্যাকাউন্ট খোলার পর আপনি একটি পাস বুক এবং চাইলে চেক বুকও পেতে পারেন। ইসলামী ব্যাংক থেকে মুনাফা পাওয়ার নিয়মটিও একেবারে স্বচ্ছ। মাস শেষে বা নির্দিষ্ট সময় পার হবার পর ব্যাংক থেকে একটি নির্দিষ্ট হারে মুনাফা দিয়ে থাকে। এটি সুদ হিসেবে ধরা হয় না বরং শরিয়াহ মোতাবেক লাভের অংশ। সব মিলিয়ে বলা যায়, যারা ইসলামী পদ্ধতিতে টাকা জমা রাখতে চাচ্ছেন, তাদের জন্য ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট একটি নির্ভরযোগ্য এবং সহজ মাধ্যম।
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার জন্য কি কি দরকার
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া সহজ হলেও, কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও তথ্য আগে থেকেই প্রস্তুত রাখা ভালো। আপনি যখন ব্যাংকে যাবেন, তখন যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে এবং সমস্ত তথ্য আপনার সাথেই থাকে, তাহলে একাউন্ট খোলার কাজ কোনো ঝামেলা ছাড়াই দ্রুত হয়ে যাবে। অনেকেই প্রথমবার ব্যাংকে গিয়ে সমস্যায় পড়ে যায়- কি কি তথ্য বা কাগজপত্র লাগবে এবং কিভাবে ফরম পূরণ করতে হয়। তাই, আগে থেকেই জেনে রাখা ভালো, এতে করে সময়ও বাঁচবে ব্যাংকের কাজও দ্রুত শেষ হবে। একাউন্ট খোলার জন্য যা যা প্রয়োজন তা নিচে দেওয়া হলোঃ
- প্রথমতঃ জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) প্রয়োজন হয়। জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে পাসপোর্ট অথবা জন্ম নিবন্ধন হলেও চলবে।
- দ্বিতীয়তঃ দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি। ছবিটি অবশ্যই, পরিষ্কার হতে হবে এবং সদ্য তোলা ছবি হতে হবে।
- তৃতীয়তঃ আপনার বর্তমান ঠিকানার প্রমাণ লাগবে। এর জন্য আপনি চাইলে, বিদ্যুৎ বিলের কাগজ অথবা গ্যাস বিলের কাগজ ব্যবহার করতে পারেন।
- চতুর্থঃ এবার নমিনির তথ্য লাগবে। আপনার অনুপস্থিতিতে যারা টাকা তুলতে পারবে সেটি নির্ধারণের জন্য।
- পঞ্চমঃ একজন রেফারেন্স এর প্রয়োজন হবে। যদি ব্যাংক চাই, তাহলে একজন রেফারেন্সের প্রয়োজন হয়। ইসলামী ব্যাংকের বর্তমান কোনো গ্রাহকের নাম এবং অ্যাকাউন্ট নম্বর।
- ষষ্ঠঃ ব্যাংকের নির্ধারিত ফর্ম পূরণ করতে হবে। অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো সঠিকভাবে দিয়ে ফরম পূরণ করতে হবে।
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার উপকারিতা
ইসলামী ব্যাংকে সেভিংস একাউন্ট খোলা মানে, আপনি আপনার কষ্টের টাকাটা এমন এক
জায়গায় রাখছেন।যেখানে ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী সবকিছু পরিচালনা
হয়ে থাকে। এখানে সুদের কোনো জায়গা নেই। তাই যার হালাল ভাবে
টাকা জমা রাখতে চান, তাদের জন্য এটা একটা দারুণ পথ। এই ব্যাংকে একাউন্ট
খুললে, আপনার টাকা শুধু নিরাপদ থাকবে না বরং ব্যাংক আপনার টাকা ব্যবসার কাজে
ব্যবহার করবে এবং যা লাভ হবে তার এক অংশ আপনাকেও দিবে।আর এটাকে বলা হয়
মুনাফা। সুদের মতো হারাম কিছু এখানে থাকে না, যার ফলে মনেও শান্তি
থাকে।
আরেকটা ভালো দিক হচ্ছে- ইসলামী ব্যাংকে আপনার সব টাকা নিরাপদে
থাকবে। ঘরে রাখলে যেমন চুরি বা ক্ষতির ভয় থাকে, এখানে কোনো কিছুরই ভয়
থাকবে না। একাউন্ট খোলার পর ব্যাংক থেকে পাসবুক, চেকবুক এবং মোবাইল
ব্যাংকিং এর সুবিধাও পাবেন। মানে আপনি বাসায় বসে টাকা পাঠাতে পারবেন এবং
তুলতেও পারবেন। আপনি চাইলে, অল্প টাকায় ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারবেন।
মাসে মাসে অথবা নির্দিষ্ট সময় পর পর আপনি নির্দিষ্ট পরিমাণ মুনাফা
পাবেন।সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে- আপনি কিছু না জানলে, ইসলামী ব্যাংকের
কর্মীরা আপনাকে অনেক সহযোগিতা করবে এবং বুঝিয়ে দিবে।
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার খরচ
সাধারণত ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার জন্য সরাসরি কোনো ফি নেওয়া হয় না। তবে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত ও খরচ থাকতে পারে। সাধারণত একাউন্ট খোলার সময় একটি ন্যূনতম পরিমাণ টাকা জমা রাখতে হয়। উদাহরণস্বরূপঃ সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে সেভিংস একাউন্ট খোলার জন্য নূন্যতম জমা রাখা টাকার পরিমাণ ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।এরপরে, চেক বই ফি। প্রথম বার চেক বই বিনামূল্যে প্রদান করা হয়ে থাকে। তবে পরবর্তীতে চেক বইয়ের জন্য প্রতি পাতায় ৫ টাকা করে নেওয়া হতে পারে। এরপরে, একাউন্ট বন্ধের ফি। যদি আপনি এখন বন্ধ করতে চান, তাহলে ২০০ টাকা ফি দিতে হতে পারে।
এরপরে, একাউন্ট রক্ষণাবেক্ষণ ফি। ব্যাংকে নির্দিষ্ট পরিমাণ ব্যালেন্স বজায় না রাখলে, রক্ষণাবেক্ষণ ফি নেওয়া হয়ে থাকে।উদাহরণস্বরূপঃ ১০,০০০ টাকা ব্যালেন্সের জন্য সাধারণত কোনো ফি লাগে না। তবে, ১০,০০১ টাকা থেকে ২৫,০০০ টাকা পর্যন্ত ব্যালেন্সের জন্য ১০০ টাকা ফি নেওয়া হতে পারে। এরপরে রয়েছে অন্যান্য খরচ। যেমন- স্টেটমেন্ট ইস্যু, সার্টিফিকেট ইস্যু ইত্যাদি কাগজপত্রের জন্য অতিরিক্ত ফি প্রযোজ্য হতে পারে। উল্লেখযোগ্যঃ উপরোক্ত খরচগুলো ব্যাংক ও সময় ভেদে পরিবর্তন হতে পারে। তাই অ্যাকাউন্ট খোলার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের শাখায় গিয়ে জেনে নিতে হবে।
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার যোগ্যতা
ইসলামী ব্যাংকে সেভিংস একাউন্ট খোলার জন্য কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতার
প্রয়োজন হয়। যেমন- বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। পুরুষ অথবা মহিলা, যে
কেউ বাংলাদেশের নাগরিক হলে এই একাউন্ট খুলতে পারবেন। অ্যাকাউন্ট খোলার
জন্য ব্যক্তির বয়স অবশ্যই ১৮ হতে হবে। তবে, ১৮ বছরের নিচে হলে
অভিভাবকের মাধ্যমে একাউন্ট খোলা যেতে পারে। জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা
পাসপোর্ট লাগবে, দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের পরিষ্কার ছবি লাগবে এবং
বর্তমান ঠিকানা প্রমাণের জন্য বিদ্যুৎ বিল অথবা গ্যাস বিলের কাগজ জমা
দিতে হবে।
এরপরে, নমিনির তথ্য লাগবে। একাউন্ট খোলার জন্য একজন নমিনি
নির্ধারণ করতে হয়, এর জন্য তার ছবি এবং তথ্য প্রদান করতে হবে। একাউন্ট
খোলার সময় একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা প্রাথমিকভাবে জমা রাখতে হবে। দুই বা
ততোধিক ব্যক্তি যৌথভাবে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন, তবে এক্ষেত্রে সকলের সম্মতি
ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে। এই যোগ্যতা গুলো পূরণ করতে
পারলে, আপনি ইসলামী ব্যাংকে সেভিংস একাউন্ট খুলতে
পারবেন। তবে, ব্যাংকের নীতিমালা এবং সময়ের পরবর্তীতে তথ্য গুলো
পরিবর্তিত হতে পারে। তাই, আপনার নিকটস্থ ইসলামী ব্যাংকের
শাখায় যোগাযোগ করা উচিত।
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট মুনাফা কিভাবে পাওয়া যায়
ইসলামী ব্যাংকের সেভিংস একাউন্ট থেকে আপনি সরাসরি সুদ পাবেন
না। এখানে আপনি মুনাফা পাবেন ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী
হালালভাবে। প্রশ্ন হচ্ছে- মুনাফা কিভাবে আসে? ব্যাংকে আপনি যখন
টাকা জমা রাখবেন, তখন ব্যাংক সেই টাকা ব্যবহার করে ব্যবসা করবে অথবা কোনো
প্রকল্পে বিনিয়োগ করবে। যেমন- বড় কোনো কোম্পানিতে পণ্য
সরবরাহ, নির্মাণ কাজ, বৈধ আমদানি-রপ্তানি ইত্যাদি। এরপরে সেই
ব্যবসা থেকে যে লাভ হয়, সেগুলো ব্যাংক গ্রাহকদের মাঝে একটি নির্দিষ্ট
অনুপাতে ভাগ করে দেয়। এই ভাগ করা কে বলা হয় মুনাফা।
মনে করেন, আপনি ৫০ হাজার টাকা ব্যাংকে জমা রেখেছেন। ব্যাংক সেই টাকা
ব্যবসা করে মাস শেষে অথবা তিন মাসে একবার মোট লাভের হিসাব করে থাকে। তারপর
তার মধ্যে আপনার অংশের মুনাফা আপনাকে দিয়ে দিবে। তবেই মনে হয় সবসময়
একই হবে না- কারণ ব্যবসায় লাভ কম বেশি হতে পারে। এই পদ্ধতিকে বলা হয়
মুদারাবা ভিত্তিক বিনিয়োগ, যেখানে আপনি মূলধন দেন আর ব্যাংক ব্যবসা
পরিচালনা করে। মুনাফা সাধারণত মাসিক, ত্রিমাসিক অথবা বার্ষিক
ভিত্তিতে আপনার একাউন্টে জমা হবে।
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার পর চেকবই পাওয়ার নিয়ম
আপনি যখন ইসলামের ব্যাংকে সেভিংস একাউন্ট খুলবেন, তখন প্রয়োজন
হলে চেক বই নেওয়ার সুযোগও পেয়ে যাবেন।তবে চেক বই পাওয়া কিছু
নির্দিষ্ট নিয়মের উপর নির্ভর করে। প্রথমত, সেভিংস একাউন্ট খোলার
সময় আপনি যদি চেক বই চান, তাহলে অ্যাকাউন্ট খোলার ফর্মে সেই অনুরোধ জানাতে
হবে। ফর্মে একটা অংশ থাকে, যেখানে লিখতে হয় "Do you require a cheque
book?" সেখানে "Yes" টিক দিলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনার চাহিদা অনুযায়ী
চেক বই প্রসেস করে দিবে। একাউন্ট খোলার পর আপনার দেওয়া তথ্য ব্যাংক
যাচাই করে এবং একাউন্ট একটিভ হলে ৩-৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রথম চেক বই
প্রস্তুত করে ফেলে।
এরপর ব্যাংক থেকে আপনার মোবাইল নম্বরে একটি এসএমএস পাঠানো হয় " আপনার চেক
বই প্রস্তুত, নির্দিষ্ট শাখা থেকে গ্রহণ করেন"। চেক বই সংগ্রহ করতে গেলে
আপনার সঙ্গে- জাতীয় পরিচয় পত্র, একাউন্ট নম্বর এবং একাউন্ট খোলার
রিসিট(যদি থাকে) নিয়ে যেতে হবে। সাধারণত ব্যাংকে গিয়ে একটি ফর্মে স্বাক্ষর
করলে, চেক বই হাতে পেয়ে যাবেন। তবে কেউ যদি একাউন্ট খোলার সময় চেকবই
করে না নেন, তাহলে পরবর্তীতে চাইলে ব্যাংকের শাখায় গিয়ে আলাদা হবে
ফরম পূরণ করে চেকবই চাইতে পারেন।
মহিলাদের জন্য ইসলামী ব্যাংকে সেভিংস একাউন্ট খোলার নিয়ম
বর্তমানে অনেক মহিলা নিজে থেকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে চান। তাই ইসলামী ব্যাংক মহিলাদের জন্য সহজ নিয়মে সেভিংস একাউন্ট খোলার সুযোগ দিচ্ছে। এই একাউন্ট খোলার প্রক্রিয়াটি খুবই সহজ এবং নিরাপদ।প্রথমে, আপনাকে যেকোনো একটি নিকটস্থ ইসলামী ব্যাংক শাখায় যেতে হবে। সেখানে গিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলার আবেদন ফরম চেয়ে নিতে হবে। অনেক চাকায় মহিলা গ্রাহকদের জন্য আলাদা সার্ভিস টেক্সে থাকে, যাতে করে তারা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।
অ্যাকাউন্ট খোলার সময় বেশ কিছু তথ্য প্রয়োজন হয়। যেমন- জাতীয়
পরিচয় পত্র বা পাসপোর্ট (মুলকপি ও ফটোকপি), দুই কপি পরিষ্কার পাসপোর্ট
সাইজের ছবি, ঠিকানা প্রমাণের জন্য বিদ্যুৎ বিল অথবা গ্যাস বিলের কাগজ
এবং একজন নমিনির ছবি ও তথ্য (যে মৃত্যুর পর একাউন্টে টাকা পাবে)। যদি
কেউ গৃহিণী হন এবং নিজস্ব কোনো আয় না থাকে, তাহলে স্বামী বা পরিবারের কারো
সহায়তায় অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আয় সম্পর্কিত অংশে স্বামীর
পেশা উল্লেখ করা যায়। অনেক সময় ব্যাংক এটি স্বাক্ষর নমুনা
চায়- তাও দিতে হয়।
আরো পড়ুনঃ কৃষি ব্যাংক একাউন্ট চেক করার নিয়ম
একাউন্ট খোলার জন্য ছোট পরিমাণ টাকা প্রাথমিকভাবে জমা রাখতে হবে। সাধারণত
৫০০ টাকা অথবা ১,০০০ টাকার মতো। সবশেষে, ফরম পূরণ ও কাগজপত্র জমা
দেওয়ার পর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যাচাই বাছাই করে একাউন্ট চালু করে দিবে।এরপর
আপনি চাইলে এটিএম কার্ড এবং চেক বইয়ের জন্য আবেদন করতে পারেন। মহিলাদের
জন্যই সেবা অনেক সহজ এবং নিরাপদ। ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী পরিচালিত হওয়ায়
অনেকেই আজ নিজের নামে একাউন্ট খুলেছেন। আপনারও
চাইলে, সহজ এবং নিরাপদ ভাবে ইসলামী ব্যাংকে সেভিংস একাউন্ট খুলে নিতে
পারবেন।
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট চালানোর নিয়ম ও নিরাপত্তা
ইসলামী ব্যাংকে সেভিংস একাউন্ট খুলে রাখলেই কাজ শেষ হয়ে যায় না বরং একাউন্ট নিয়মিত চালানো এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা খুবই জরুরী। যেহেতু এটি আপনার পরিশ্রমের টাকা জমিয়ে রাখার জায়গা, তাই একটু সচেতন হলেই আপনি নিশ্চিন্তে একাউন্ট ব্যবহার করতে পারবেন। এখানে, নিয়মিত লেনদেন করুন। মাসে অন্তত একবার টাকা জমা অথবা উত্তোলন করলে একাউন্টে একটিভ থাকবে। অনেকদিন লেনদেন না করলে অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যেতে পারে। চেক এবং এটিএম কার্ড ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে।
আপনি যদি চেক ব্যবহার করেন, তাহলে সঠিকভাবে তারিখ, টাকার
পরিমাণ এবং স্বাক্ষর করতে হবে। এটিএম কার্ড ব্যবহার করার সময় পিনকোড গোপন
রাখতে হবে। নিরাপত্তা বিষয়ক কিছু পরামর্শ- আপনার একাউন্ট নম্বর, কার্ড
নম্বর এবং পিন নাম্বার কারো সঙ্গে শেয়ার করা যাবে না। যদি ফোন কলে কেউ
ব্যাংকের পরিচয়ে তথ্য নিতে চাই, তা কখনোই দিবেন না।কোনো
সন্দেহজনক লেনদেন দেখলে সঙ্গে সঙ্গে নিকটস্থ শাখায় জানিয়ে দিন। এই
নিয়মগুলো মেনে চললে আপনার একাউন্ট থাকবে নিরাপদ এবং আপনি ইসলামিক পদ্ধতিতে
ব্যাংকিং করতে পারবেন।
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার নিয়ম-শেষ কথা
এই পোস্টে ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে
বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। বর্তমানে নিজের নামে একটি ব্যাংক একাউন্ট
থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর যদি সেটা হয় ইসলামিক নিয়ম অনুযায়ী
পরিচালিত কোনো ব্যাংক, তাহলে মানসিক শান্তিতে থাকা যায়। ইসলামিক ব্যাংকের
সেভিংস একাউন্ট খোলার নিয়ম এতটাই সহজ এবং স্বচ্ছ যা একজন সাধারণ মানুষ খুব
সহজেই প্রক্রিয়াটি বুঝতে পারবে এবং নিজে নিকটস্থ শাখায় গিয়ে অ্যাকাউন্ট
খুলে নিতে পারবে।
সবশেষে বলা যায়, আপনি যদি ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী টাকা জমিয়ে রাখতে
চান, তাহলে ইসলামী ব্যাংকের সেভিংস একাউন্ট হতে পারে আপনার প্রথম পছন্দের
মাধ্যম। নিয়ম গুলো একটু ভালোভাবে বুঝি, প্রয়োজনে কাগজপত্র নিয়ে
নিকটস্থ শাখায় গেলে খুব সহজে আপনি একাউন্ট খুলে নিতে পারবেন। একাউন্ট খোলার
২-৩ দিনের মধ্যে আপনার একাউন্ট একটিভ হয়ে যাবে। নিজের আর্থিক ভবিষ্যৎ
এক ধাপে এগিয়ে নিতে ইসলামী ব্যাংকের সেভিংস একাউন্ট দিয়ে আপনার সঞ্চয় যাত্রা
শুরু করতে পারেন। 250455
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url