OrdinaryITPostAd

২০২৫ সালের ঈদ-উল-আযহার সম্ভাব্য তারিখ ও পরিকল্পনা

 ২০২৫ সালের ঈদ-উল-আযহার সম্ভাব্য তারিখ ও পরিকল্পনা সম্পর্কে আজকে আমরা জানবো। মুসলমানদের প্রধান দুইটি উৎসবের মধ্যে ঈদ-উল-আযহা হচ্ছে একটি। তাই আজকে আমরা ২০২৫ সালের ঈদ-উল-আযহা উদ্‌যাপনের সম্ভাব্য তারিখ এবং পরিকল্পনা সম্পর্কে জানবো।

২০২৫ সালের-ঈদ-উল-আযহার-সম্ভাব্য-তারিখ-ও-পরিকল্পনা

ঈদ-উল-আযহা ইসলামি হিজরি ক্যালেন্ডারের জিলহজ মাসের ১০ তারিখে পালন করা হয়। ২০২৫ সালে ঈদ-উল-আযহার সম্ভাব্য তারিখ হতে পারে ৬ জুন রোজ শুক্রবার। তবে হিজরি ক্যালেন্ডার চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে তাই দুই থেকে এক দিন কম অথবা বেশি সময় লাগতে পারে।

সূচিপত্রঃ ২০২৫ সালের ঈদ-উল-আযহার সম্ভাব্য তারিখ ও পরিকল্পনা

২০২৫ সালের ঈদ-উল-আযহার সম্ভাব্য তারিখ ও পরিকল্পনা

২০২৫ সালের ঈদ-উল-আযহার সম্ভাব্য তারিখ ও পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। ঈদ-উল-আযহা, মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। যা কোরবানির ঈদ নামেও পরিচিত। এটি ইসলামি বর্ষপঞ্জির জিলহজ মাসের ১০ তারিখে উদ্‌যাপিত হয়। এই উৎসবটি মূলত হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য প্রিয় সন্তান হযরত ইসমাঈল (আঃ) কে কোরবানি দেওয়ার প্রস্তুতি এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে পাঠানো পশু কোরবানির ঘটনার স্মরণে পালিত হয়। মুসলিমদের জন্য বিশেষ করে এই ঘটনা আল্লাহ তায়ালার প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের জন্য চরম শিক্ষা। তাই এখন আমরা ২০২৫ সালের ঈদ-উল-আযহার সম্ভাব্য তারিখ সম্পর্কে জানবো।

কোরবানি ঈদ সাধারণ ইসলামিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী জিলহজ মাসের ১০ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়। আন্তর্জাতিক ইসলামিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২০২৫ সালের ঈদ-উল-আযহা ০৬ জুন রোজ শুক্রবার অনুষ্ঠিত হতে পারে। আমরা জানি যে ইসলামিক ক্যালেন্ডারের মাস গুলো চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে গণনা করা হয়। তাই চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে এই তারিখ পরিবর্তন হতে পারে। ঠিক এই কারণেই বাংলাদেশে ঈদ-উল-আযহা উদ্‌যাপিত হওয়ার নির্দিষ্ট সময় এখনো বলা সম্ভব নয় কিন্তু প্রস্তুতি হিসেবে ০৬ জুন রোজ শুক্রবার ঈদ-উল-আযহা অনুষ্ঠিত হতে পারে।

ইসলামিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ঈদ-উল-আযহার সময়

ইসলামিক ক্যালেন্ডারে মাস বা দিন গুলো হিসেব করা হয় চাঁদের ঘূর্ণন গতির উপর নির্ভর করে। অর্থাৎ ইংরেজি বছর বা মাসের হিসেব যেমন সূর্যকে কেন্দ্র করে হিসেব করা হয় ঠিক তেমনি ইসলামিক ক্যালেন্ডারে বছর বা মাসের হিসেব করা হয় চাঁদের ঘূর্ণন গতির উপর নির্ভর করে। ঠিক এই কারণেই ইংরেজি ক্যালেন্ডারের সাথে আরবি ক্যালেন্ডারে দুই অথবা একদিন কম বেশি থাকে। যেহেতু চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে মাস ও দিন গুলো নির্ধারণ করা হয় ঠিক এই কারণেই পূর্ব থেকে নির্ধারণ করা আরবি মাসের হিসাব গুলো দুই থেকে এক দিনের কম বেশি হতে পারে।
ঈদ-উল-আযহা অনুষ্ঠিত হয় জিলহজ মাসের ১০ তারিখে। জিলহজ মাস হচ্ছে আরবি মাসের ১২তম মাস। আর এখন থেকে হিসাব করলে জিলহজ মাসের ১০ তারিখ হচ্ছে ইংরেজি ক্যালেন্ডারের জুন মাসের ০৬ তারিখ। যেহেতু আরবি ক্যালেন্ডারের মাস গুলো ২৯ অথবা ৩০ দিনের হয়ে থাকে তাও আবার সম্পূর্ণ চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে ঠিক এই কারণে এই সময়ের কম অথবা বেশি হতে পারে। তাই বলা যায় ইসলামিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ঈদ-উল-আযহা অনুষ্ঠিত হওয়া সম্পূর্ণ নির্ভর করবে চাঁদ দেখার উপর। তবে ইসলামিক ক্যালেন্ডার ও জ্যোতির্বিজ্ঞানের হিসাব মতে এবারের কোরবানি ঈদ হবে জিন মাসের ৬ তারিখ যা পরিবর্তন যোগ্য।

কোরবানির পশু ক্রয়ের উপযুক্ত সময় জেনে নিন

ঈদ-উল-আযহার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে পশু কোরবানি করা। তাই সঠিক সময়ে পশু ক্রয় না করলে পরে হইতো বিড়ম্বনার শিকার হতে পারে। এছাড়াও সময় মত পশু না ক্রয় করলে আরো অনেক ঝামেলার শিকার হতে পারে। যেমন ঃ বাংলাদেশ হচ্ছে মুসলিম দেশ। এই দেশের অধিকাংশ মানুষ মুসলিম হওয়ার কারণে কোরবানির সময় পশুর ঘাটতি দেখা দিতে পারে। অথবা ভালো মানের পশু পাওয়া নাও যেতে পারে। এছাড়াও অন্যতম একটি সমস্যা হচ্ছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা এই সময় পশুর দাম বাড়িতে দিতে পারে। তাই কোরবানির পশু ক্রয় করার জন্য উপযুক্ত সময় নির্বাচন অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

কোরবানির জন্য পশু সাধারণত ১৫ থেকে ২০ দিন আগে ক্রয় করা ভালো। কারণ এই সময় পশুর বাজার ঠিক থাকে এবং এই কয়দিনে পশু এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে। ফলে পশুর স্বাস্থ্য নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। তাছাড়াও এই সময় উপযুক্ত তার কারণ হচ্ছে এই সময় মূলত দেশের বিভিন্ন স্থানে পশু বিক্রয় করার জন্য হাট বসে এবং এই সময় নায্য মূল্যে প্রতারণা ছড়া পশু ক্রয় করা যায়। এই সময়ের পূর্বে পশু ক্রয় করতে হলে পরিচিত আরো কাছে থেকে কেনা ভালো কিন্তু এই সময়ের পরে কখনোই কোরবানির পশু ক্রয় করা ঠিক হবে না। কারণ এই শেষ সময় বাজারে ভালো পশু না থাকলেও পশুর দাম উচ্চ মাত্রায় চাওয়া হয়। তাই আপনার একান্ত কোনো সমস্যা না থাকলে এই সময় গুলোতে কোরবানির পশু ক্রয় থেকে এড়িয়ে চলুন।

ঈদ-উল-আযহার আগের রাতে করণীয় কাজ

ঈদ মানের আনন্দ ঈদ মানে উল্লাস। ঈদের দিন উপলক্ষ্যে এর আগের রাতে আনন্দ করার পাশাপাশি আমাদের কিছু আমল ও করণীয় রয়েছে যেগুলো করলে ঈদের দিনের বরকত আরও বৃদ্ধি পায়। ঈদের আগের রাতে আল্লাহ তায়ালা বিশেষ সওয়াব দিয়ে থাকেন। তাই আমাদের উচিত হবে এই রাতে নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত ও দোয়া করা উত্তম। এছাড়াও ঈদের আগের দিন রাতে চাঁদ উঠা মুহূর্ত সকলের সাথে আনন্দের সহিত পালন করা উত্তম। এর ফলে একে অপরের প্রতি সুসম্পর্ক তৈরি হয়।

ঈদ-উল-আযহার আগের রাত থেকেই নিজেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। আল্লাহ তায়ালার ইবাদত বন্দেগি করতে করতে হবে। ঈদ মানে আনন্দ তাই বিশেষ করে ঈদের আগের দিন রাত থেকে সকল প্রকার খারাপ কাজ যেমনঃ মারামারি, ঝগড়া, বিবাদ ইত্যাদি পরিহার করতে হবে। কারণ আপনার খারাপ ব্যবহারের ফলে একজন মানুষের ঈদের আনন্দ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এরপর ঈদের দিন সকালে নিজেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে শরীরে সুগন্ধি মেখে ঈদ গাহ মাঠে ঈদের সালাতের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে হবে। 

পশু কোরবানি করার পূর্বে যে-সকল কাজ করতে হয়

পশু কোরবানি হচ্ছে ঈদ-উল-আযহার একটি অন্যতম অংশ। হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য প্রিয় সন্তান হযরত ইসমাঈল (আঃ) কে কোরবানি দেওয়ার যে পরীক্ষা আল্লাহ তায়ালা নেন সেই পরীক্ষায় হযরত ইব্রাহিম (আঃ) পাশ করেন। ঠিক সেই ঘটনাকে স্বরন করে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে প্রতিবছর জিলহজ মাসের ১০ তারিখে সারা বিশ্বের মুসলমানরা তাদের প্রিয় পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন। তবে কোরবানি করার পূর্ব কিছু কাজ রয়েছে যেগুলো পালন না করলে কোরবানি সঠিক ভাবে নাও হতে পারে। 

কোরবানি কবুল হওয়ার অন্যতম মূল শর্ত হচ্ছে আপনি যে উপার্জনের টাকায় কোরবানির পশু ক্রয় করবেন সেই অর্থ হালাল পন্থায় উপার্জিত হতে হবে। অথবা আপনি যদি নিজের পালিত পশু কোরবানির উদ্দেশ্যে পালন করে তাহলে সেই পশু হালাল পদ্ধতি স্নেহ ও মমতা দিয়ে পালন করতে হবে। আপনার ক্রয় কৃত পশুটি যদি হালাল উপার্জন থেকে ক্রয় না করেন তাহলে সেই কোরবানি আল্লাহ তায়ালার কাছে কবুল নাও হতে পারে। 

পশু কোরবানি করার পূর্বে অর্থাৎ ঈদের দিন গোশন করে নিজেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে হবে। এরপর পরিষ্কার পোশাক পরিধান করতে হবে। সম্ভব হলে সুগন্ধি বিশেষ করে আতর ব্যবহার করতে পারেন। এরপর সকালবেলা ঈদের নামাজ সকলে এক সাথে পালন করতে হবে। ঈদের নামাজ সকাল বেলা এক সাথে পালন করা হচ্ছে সুন্নত মুয়াক্কাদা। নামাজ শেষ করে ইমামের খুতবা শোনা এবং এরপর কোরবানির কাজ শুরু করা উত্তম।

কোরবানির মাংস বণ্টনের সঠিক পদ্ধতি

কোরবানির মাংস বণ্টনের মাধ্যমে ধনী ও গরিবদের মধ্যে সু সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। তাই কোরবানি মাংস কোরআন ও সুন্নত মেনে বণ্টন করতে হবে। কোরবানির মাংস শুধু নিজের ভোগের জন্য নয় বরং গরিব দুঃখী, আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের মধ্যে তা ন্যায়সঙ্গতভাবে বণ্টন করাও ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা। কোরআন ও হাদিসে কোরবানির মাংস বণ্টনের বিষয়ে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। 
২০২৫ সালের-ঈদ-উল-আযহার-সম্ভাব্য-তারিখ-ও-পরিকল্পনা
আল্লাহ তায়ালা বলেছেনঃ অতঃপর যখন তা (কোরবানির পশু) কাত হয়ে পড়ে, তখন তা থেকে খাও এবং যারা ধৈর্যশীল অভাবগ্রস্ত, এবং যারা অভাবগ্রস্ত কিন্তু মুখ ফুটে চায় না, তাদেরকেও খাওয়াও। এভাবে আমি তা তোমাদের কাজে নিয়োজিত করেছি যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো। - (সূরা আল-হাজ্জ, আয়াত ৩৬)

এই আয়াত থেকে আমরা বুঝতে পারছি যে কোরবানির মাংস ৩ ভাগে ভাগ করতে হবে। প্রথম ভাগ নিজের জন্য রাখা, দ্বিতীয় ভাগ অভাবী ও দরিদ্রদের দেওয়া এবং তৃতীয় ভাগ আত্মীয়, বন্ধু ও প্রতিবেশীদের জন্য রাখা। কোরবানির মাংস বন্টনে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা কোরবানির মাংস সংরক্ষণ করো, খাও এবং দান কর। - (সহিহ মুসলিমঃ ১৯৭১) এই হাদিস থেকেও আমরা লক্ষ্য করি যে কোরবানির মাংস সমান তিন ভাবে ভাগ করার কথা বলা হয়েছে। তিন ভাগের মধ্যে এক ভাগ বেশি আরেক ভাগ কম করা যাবে না। সমান তিন ভাগে ভাগ করতে হবে।

ইসলামিক নিয়ম অনুযায়ী কোরবানি করার নিয়ম

কোরবানি করা একটি ইবাদত তাই সকল ইবাদত করার পূর্বে যেমন নিয়ত করতে হয় ঠিক তেমনি কোরবানি করার পূর্বে নিয়ত করতে হবে। নিয়ত দুই ভাবে করা যায় একটি হচ্ছে  মনে মনে আরেকটি হচ্ছে মুখে বলা। মনে মনে নিয়ত করার জন্য বলতে পারেন - আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোরবানি করছি। আপনি নিয়ত নিচে দেওয়া দোয়ার মাধ্যমে করতে পারেন ঃ

  • বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার, হাযা মিন্নী কুরবানান। অথবা,
  • বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার, হাযা আন্ ফুলান কুরবানান।
এর বাংলা আভিধানিক অর্থ হচ্ছে আল্লাহর নামে, আল্লাহ মহান। এটি আমার পক্ষ থেকে অমুকের পক্ষ থেকে কোরবানি। কোরবানির জন্য পশু অবশ্যই নির্দিষ্ট কিছু দিক বিবেচনা করে ক্রয় করতে হবে যেমনঃ গরু বা মহিষ কমপক্ষে ২ বছর, ছাগল বা ভেড়া কমপক্ষে ১ বছর এবং উটের বয়স কমপক্ষে ৫ বছর হতে হবে। পশুর দাঁত দেখে বয়স নির্ধারণ করে সুস্থতা ও ত্রুটি মুক্ত পশু ক্রয় করতে হবে। 
এরপর কোরবানির দিন ১০ জিলহজ অথবা ১১ ও ১২ জিলহজ পশু কোরবানি করতে হবে। ঈদের দিন সালাত আদায় করে আসার পর কোরবানির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কোরবানি কখনোই ঈদের নামাজের আগে হয়না। ঈদের সালাত আদায় করে আসার পর পশুকে কেবলা মুখী হয়ে কাত করে ধারালো ছুরি দিয়ে জবেহ করা। জবেহ করার সময় অবশ্যই বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে জবেহ করা করা। এরপর কোরবানির মাংস সমান তিন ভাগে ভাগ করে এক ভাগ নিজের কাছে, এক ভাগ আত্মীয় স্বজন, প্রতিবেশীদের এবং শেষ ভাগ গরিব-মিসকীনদের জন্য রেখে দেওয়া।

ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষ্যে ভ্রমণ পরিকল্পনা

ঈদ-উল-আযহা মুসলিম উম্মাহর জন্য এক পবিত্র ও আনন্দময় সময়। এই ঈদের সাথে কেবল ধর্মীয় উৎসবই নয় বরং থাকে এক চিরচেনা মিলনমেলার ভালোবাসার বাঁধন এবং কিছুটা অবকাশের সুবর্ণ সুযোগ। শহরের ব্যস্ততা, কর্মচাপ ও দৈনন্দিন জীবনের ক্লান্তির ভিড়ে ঈদ যেন এনে দেয় এক নতুন স্বস্তির ছোঁয়া। অনেকে কোরবানির দায়িত্ব পালন শেষে পরিবার পরিজন নিয়ে বেরিয়ে পড়েন একটু ঘুরে আসার উদ্দেশ্যে। ঈদের কয়েকদিন ছুটি তাই অনেকের জন্যই ভ্রমণের সুবর্ণ সময় হয়ে ওঠে।
২০২৫-সালের-ঈদ-উল-আযহার-সম্ভাব্য-তারিখ-ও-পরিকল্পনা
ঈদের পরপরই বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র, ঐতিহাসিক স্থান ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা জায়গাগুলো ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত হয়ে ওঠে। বিশেষ করে যারা শহরে যান্ত্রিকতা থেকে কিছুটা মুক্তি খুঁজে বেড়ান তাদের জন্য গ্রামের শান্ত পরিবেশ কিংবা পাহাড়, সমুদ্র অথবা নদীর ধারে কয়েকটা দিন কাটানো হতে পারে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। কোরবানির কাজ শেষ করে একদিন বিশ্রাম নেওয়ার পর পরদিন থেকেই শুরু করা যেতে পারে ঘোরাঘুরির প্রস্তুতি। তবে ঈদের দিন ঘুরার জন্য বেশি দূরের জায়গা গুলোতে না যাওয়া ভালো। ঈদের পরের দিন থেকে দূরে কোথাও ঘুরতে যাওয়া পরিকল্পনা করাই ভালো। 
অনেকেই এই সময়টাতে পরিবারসহ কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন, সাজেক, সিলেট, বান্দরবান বা রাঙামাটি পছন্দ করেন। আবার কেউ কেউ নিজ জেলার আশেপাশের দর্শনীয় স্থানগুলোকে ঘুরে দেখেন। কেউ কেউ ধর্মীয় সফরে মসজিদ বা দরগায় যেতেও পছন্দ করেন। ঈদের এই উৎসব যেন হয়ে ওঠে এক আত্মিক ও মানসিক প্রশান্তির উৎস। যেহেতু ঈদের সময় আবহাওয়া সাধারণত অনুকূলে থাকে তাই ভ্রমণ আরও স্বাচ্ছন্দ্যময় হয়ে ওঠে। তবে ঈদের ভ্রমণে সব সময় সাবধান থাকতে হবে। কেননা এই সময় যান বাহনের চাপ বেশি থাকার পাশাপাশি চুরি বা ছিনতাই এর মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে। তাই সতর্কতার সহিত নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে হবে।

ঈদ-উল-আযহার সম্ভাব্য তারিখ ও পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্নঃ ২০২৫ সালের কোরবানি ঈদ কত তারিখ?
উত্তরঃ ২০২৫ সালে কোরবানি ঈদ অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাব্য তারিখ হচ্ছে জুন মাসের ৬ তারিখ রোজ শুক্রবার। তবে এটি চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে পরিবর্তন হতে পারে।

প্রশ্নঃ কোরবানি দেওয়া ফরজ নাকি সুন্নত?
উত্তরঃ প্রত্যেক সামর্থবান সুস্থ্য মস্তিষ্কের মানুষের কোরবানি করা ওয়াজিব। ওয়াজিব হচ্ছে ফরজের নিচের ধাপ।

প্রশ্নঃ আরবি মাসের কত তারিখে কোরবানি দিতে হয়?
উত্তরঃ আরবি জিলহজ মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখ পর্যন্ত সময়ে কোরবানি করা যায়।

প্রশ্নঃ কোরবানির নিয়ত কি?
উত্তরঃ কোরবানির নিয়ত হচ্ছে - আল্লাহর নামে, আমি এই কোরবানি করছি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য।

প্রশ্নঃ কোরবানির পশু জবাই করা সময় কোন দোয়া পাঠ করতে হয়?
উত্তরঃ ইন্নি ওয়াজ্জাহতু ওজহিয়া লিল্লাযি ফাতারাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদা হানীফা ওয়া মা আনা মিনাল মুশরিকীন।
বাংলা অর্থ - আমি আমার মুখ এমন সত্তার দিকে ফিরালাম যিনি আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন, একনিষ্ঠ হয়ে, এবং আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই।

প্রশ্নঃ কোরবানি মাংস বন্টন নিয়ে কোরআনে কি বলা হয়েছে?
উত্তরঃ অতঃপর যখন তা (কোরবানির পশু) কাত হয়ে পড়ে, তখন তা থেকে খাও এবং যারা ধৈর্যশীল অভাবগ্রস্ত, এবং যারা অভাবগ্রস্ত কিন্তু মুখ ফুটে চায় না, তাদেরকেও খাওয়াও। এভাবে আমি তা তোমাদের কাজে নিয়োজিত করেছি যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো। - (সূরা আল-হাজ্জ, আয়াত ৩৬)

প্রশ্নঃ কোরবানি মাংস বন্টন নিয়ে হাদিসে কি বলা হয়েছে?
উত্তরঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন - তোমরা কোরবানির মাংস সংরক্ষণ করো, খাও এবং দান কর। - (সহিহ মুসলিমঃ ১৯৭১)

প্রশ্নঃ কোরবানির মাংস বিক্রয় করা কি জায়েজ?
উত্তরঃ কোরবানির মাংস, চামড়া বা কোরবানি পশুর কোন কিছুই বিক্রি করা জায়েজ নয়।

প্রশ্নঃ কসাইয়ের মজুরি হিসেবে কি কোরবানির মাংস দেওয়া যায়?
উত্তরঃ কসাইয়ের মজুরি মাংস দিয়ে দেওয়া যাবে না। মজুরি বা পারিশ্রমিক হিসেবে নগদ অর্থ প্রদান করতে হবে।

প্রশ্নঃ কি পরিমাণ সম্পদ থাকলে কোরবানি করা ওয়াজিব হয়?
উত্তরঃ যে ব্যক্তির কাছে নিসাব পরিমাণ অর্থ থাকবে তার উপর কোরবানি করা ওয়াজিব। নিসাব পরিমাণ অর্থ বলতে ৭.৫ তোলা স্বর্ণ, ৫২.৫ তোলা রূপা অথবা  সমপরিমাণ অর্থ থাকবে তার উপর কোরবানি করা ওয়াজিব।

শেষ কথা - ২০২৫ সালের ঈদ-উল-আযহার সম্ভাব্য তারিখ ও পরিকল্পনা

২০২৫ সালের ঈদ-উল-আযহার সম্ভাব্য তারিখ ও পরিকল্পনা সম্পর্কে উপরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করা যায় যে ২০২৫ সালের কোরবানি ঈদ অনুষ্ঠিত হবে জুন মাসের ০৬ তারিখে। বলে রাখা ভালো যে উপরের তারিখটি হচ্ছে সম্ভাব্য তারিখ। চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে এই তারিখ পরিবর্তিত হতে পারে। এছাড়াও উপরে আমরা ঈদ-উল-আযহার কিছু পরিকল্পনা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আমরা আশা করি যে উপরের দেওয়া তথ্য গুলো পড়লে ২০২৫ সালের ঈদ-উল-আযহার সম্ভাব্য তারিখ ও পরিকল্পনা নিয়ে সাধারণ প্রশ্ন ও এর উত্তর পেয়ে যাবেন।   250311

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url