OrdinaryITPostAd

কারো নামে কোরবানি দেওয়ার বিষয়ে ইসলাম কি বলে

ইসলামে নামে কোরবানি দেওয়ার বিষয়ে কি বলে? আমরা অনেকেই এ বিষয়টি জানিনা। কুরবানী দেওয়ার সময় যারা টাকা দেই সাধারণত তাদের নামে কোরবানি দেওয়া হয়। কিন্তু ইসলামে নামে কোরবানি দেওয়ার বিষয়ে কি বলে? এসব সম্পর্কে অবশ্যই জেনে নেওয়া উচিত। এই আর্টিকেলে ইসলামে নামে কোরবানি দেওয়ার বিষয়ে কি বলে? সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

ইসলামে নামে কোরবানি দেওয়ার বিষয়ে কি বলে

আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকেন তাহলে ইসলামে নামে কোরবানি দেওয়ার বিষয়ে কি বলে? তা জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে ইসলামে নামে কোরবানি দেওয়ার বিষয়ে কি বলে? এই সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

কনটেন্ট সূচিপত্রঃ ইসলামে নামে কোরবানি দেওয়ার বিষয়ে কি বলে

ইসলামে নামে কোরবানি দেওয়ার বিষয়ে কি বলে

আমরা কেবলমাত্র আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্ট লাভের আশায় উৎসর্গ দিয়ে থাকি সাধারণত তাকেই কোরবানি বলা হয়। এর আভিধানিক অর্থ হল ঈদুল আযহা অর্থাৎ কোরবানির ঈদ। মুসলিমদের কাছে কোরবানির ঈদ অতি গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যপূর্ণ একটি এবাদাত। যারা সামর্থ্যবান রয়েছে সাধারণত তাদের উপরে আল্লাহতালা কোরবানি করা ওয়াজিব করেছেন।

আমরা অনেকেই কুরবানী দেওয়ার সময় আমাদের নাম উল্লেখ করে দেয়। কিন্তু ইসলামে নামে কোরবানি দেওয়ার বিষয়ে কি বলে? এ সম্পর্কে অনেকের কোন ধরনের ধারণা নেই। কোরবানি শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো ত্যাগ করা বা নৈকট লাভ। জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ সকাল থেকে ১২ তারিখ সূর্য অস্তের আগ পর্যন্ত আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট পশু জবাই করা হয়।

আরো পড়ুনঃ কোন কোন পশু কোরবানি দেওয়া যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত

এদিকে পশু জবার আগে বেশিরভাগ মানুষ অংশীদারদের নাম বলে থাকেন। ইসলামে নামে কোরবানি দেওয়ার বিষয়ে কি বলে? সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত। কিন্তু কোরবানির সময় কোরবানি দাতাদের নাম উল্লেখ করা জরুরী নয়। কেননা কার পক্ষ থেকে অসুখ কোরবানি করা হচ্ছে সেটা পশু কেনার সময় নির্ধারিত হয়ে যায় এবং আমাদের আল্লাহ তায়ালা এটি সবথেকে ভালো জানেন।

কোরবানির পশুর ক্ষেত্রে দেখা হবে মালিকানা কাদের। পশুতে যার যার মালিকানা আছে তারা যাদের নামে কোরবানি আদায়ের নিয়ত করবে তাদের নামে কোরবানি হবে। পশু জবাইয়ের সময় কোরবানি দাতাদের নাম উল্লেখ করাও সুন্নত নয়। কেননা রাসূলুল্লাহ সাঃ কোরবানির পোষ্ট জবাই করার সময় কার পক্ষ থেকে কোরবানি হচ্ছে তার নাম মুখে উল্লেখ করেননি।

কোরবানির নাম দেওয়ার নিয়ম

আমাদের দেশে বহু বছর থেকে চলমান একটি প্রচলন হলো কোরবানি দেওয়ার সময় গরুকে শোয়ানোর পরে যে ব্যক্তি তার অর্থ কোরবানি দিচ্ছে সে একজন অথবা বহু জন হুজুর তাদের সকলের নাম নিয়ে তারপরে পশু কোরবানি করে থাকেন। কিন্তু কোরবানির নাম দেওয়ার নিয়ম আমরা অনেকেই সঠিক ভাবে জানি না যার ফলে আমাদের মাঝে একটা ভুল প্রচলন রয়েছে।

দেখা যায় যে ব্যক্তি বা ব্যক্তিরা কোরবানি দেয় তাদের বাবার নাম সহ তাদের নাম উল্লেখ করা হয়। কিন্তু ইসলামিক স্কলারদের মত অনুযায়ী কোরবানির নাম মুখে উচ্চারণ করে আদায় করা ফরজ বা আবশ্যক নয়। তবে কোরবানির সময় কোরবানি দেওয়ার ব্যাক্তিদের নাম উচ্চারণ করে তাদের কোরবানি কবুল করে নেওয়ার কথা উচ্চারণ করে আল্লাহর কাছে দোয়া করা যায়।

আমাদের সমাজে যে প্রচলন রয়েছে উচ্চারণ করে কোরবানির নাম দেওয়া সেটি আবশ্যক নয়। কোন ব্যক্তি যখন কোরবানির পশু কেনার জন্য টাকা দেয় বা নিয়ত করে আল্লাহতালার কাছে এটি সম্পন্ন হয়ে যায়। কোন ব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানী হচ্ছে এটি আমাদের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহতালা সবার আগে এবং ভালোমতো জানেন। তাই মুখে উচ্চারণ করে দেওয়া জরুরী নয়।

যে ব্যাক্তি অথবা হুজুর কোরবানি পশু জবাই করবে তিনি চাইলে একটি কাগজে সকলের নাম লিখে কোরবানির আগের মুহূর্তে সকলের নাম উচ্চারণ করে দোয়া করতে পারবে। সকলের নাম উচ্চারণ করে আল্লাহতালার কাছে কুরবানী যেন কবুল হয় সেই দোয়া করতে পারে। আশা করি কোরবানির নাম দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন।

কোরবানি কয় নামে দেওয়া যায়

আমরা ইতিমধ্যে ইসলামে নামে কোরবানি দেওয়ার বিষয়ে কি বলে? সে সম্পর্কে জেনেছি। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে সার্বজনীন দুইটি উৎসবের মধ্যে অন্যতম হলো ঈদুল আযহা অর্থাৎ কোরবানির ঈদ। কোরবানীর ঈদে মূল ইবাদত হচ্ছে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্ট অর্জনের জন্য পশু কোরবানি দেওয়া। নিজেদের অর্থে কেনা পশুটি আল্লাহর নামে উৎসর্গ করে সবাই করে দেওয়া হচ্ছে কুরবানী ফজিলত। কোরবানি কয় নামে দেওয়া যায়? এ বিষয়ে আমরা অনেকে অজ্ঞ।

আরো পড়ুনঃ কোরবানি ওয়াজিব না ফরজ - কোরবানি ওয়াজিব নাকি সুন্নত

হিজরী ক্যালেন্ডার অনুযায়ী জিলহজ মাসের ১০ তারিখ সকাল থেকে ১৩ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোরবানি করা যায়। আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির বিধানে কেউ একা কোরবানি দিয়ে থাকেন আবার কেউবা ভাগে কোরবানি দিয়ে থাকেন। তবে ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী কোরবানি করার কিছু বিধান রয়েছে। গরু মহিষ ও উট এ জাতীয় যে পশুগুলো কোরবানির জন্য বৈধ। এগুলোর মধ্যে ভাগে কোরবানি দেওয়া জায়েজ।

নবী করীম সাঃ সাত ভাগ পর্যন্ত কোরবানি দেওয়ার অনুমোদন করেছেন। একটি সহীহ মুসলিমের হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, রাসুলুল্লাহ সাঃ উটের মধ্যে ১০ ভাগ পর্যন্ত কোরবানি দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছিলেন। সুতরাং এক্ষেত্রে ভাগে কুরবানী দেওয়া জায়েজ রয়েছে। আপনি গরু কোরবানি দেওয়ার ক্ষেত্রে সাতটি নামে অর্থাৎ সাত ভাগে কোরবানি দিতে পারেন। এখানে একজনের একাধিক ভাগ থাকতে পারে।

মৃত ব্যক্তির নামে কোরবানি হবে কী - মৃত ব্যক্তির নামে কোরবানি দেওয়া যাবে কি

আমরা অনেকেই আমাদের মৃত আত্মীয়-স্বজনদের নামে কুরবানী দিতে চাই। যার ফলে পূর্বে মৃত ব্যক্তির নামে কোরবানি দেওয়া যাবে কি? এ বিষয়ে জানতে চাই। যেহেতু কোরবানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত তাই এর খুঁটিনাটি বিষয়গুলো প্রথমে জেনে নিতে হবে। মৃত ব্যক্তির নামে কোরবানি হবে কী? সে সম্পর্কে ধারণা নিয়ে এরপরে কুরবানী দিতে হবে। মৃত ব্যক্তির নামে কোরবানি দেওয়া যাবে কি? তা জেনে নেওয়া যাক।

যেহেতু নিজের ওপর কুরবানী ওয়াজিব। তাই প্রথমে আমাদের উচিত হবে আমাদের নিজেদের নামে কুরবানী দেওয়া। মৃত ব্যক্তিকে সওয়াব পৌঁছানোর নিয়ত করে দেওয়া। যার ফলে এ কাজটি করলে নিজের কোরবানি আদায় হবে এবং মৃতকে সওয়াব পৌঁছানো হবে। এটাই সবথেকে উত্তম পদ্ধতি গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি।

কেউ যদি মৃত ব্যক্তির পক্ষে কোরবানি দেন তাহলে তার কুরবানী দেওয়া কিংবা মৃতের জন্য কোরবানি করা জায়েজ। তবে যদি মৃত ব্যক্তি ওসিয়াত না করে থাকেন তাহলে এটি নফল কোরবানি হিসেবে গণ্য হবে। কোরবানির স্বাভাবিক গোশতের মতোই সেটিকে নিজেরাও খেতে পারবে আবার আত্মীয় স্বজনদেরকে দেওয়া যাবে।

তবে যদি মৃত ব্যক্তি কোরবানির জন্য করে গিয়ে থাকেন তাহলে এই গোশত নিজেরা খেতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে গোশত গরিব মিসকিনদের মাঝে সাদকা করে দিতে হবে। {মুসনাদে আহমেদঃ ১-১০৭} কোন গরুতে যদি সপ্তম অংশ মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানী দেওয়া হয় তাহলে সবার কোরবানি শুদ্ধ হবে এবং অন্য অংশের সদস্যরা ওই ভাগের গোশত খেতে পারবে।

ইসলামে নামে কোরবানি দেওয়ার বিষয়ে কি বলেঃ উপসংহার

ইসলামে নামে কোরবানি দেওয়ার বিষয়ে কি বলে? কোরবানির নাম দেওয়ার নিয়ম, কোরবানি কয় নামে দেওয়া যায়, মৃত ব্যক্তির নামে কোরবানি হবে কী? মৃত ব্যক্তির নামে কোরবানি দেওয়া যাবে কি? এ বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। বন্ধুরা আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। একজন মুসলিম হিসেবে আপনার অবশ্যই উক্ত বিষয়গুলো জেনে রাখা উচিত।

আরো পড়ুনঃ কোরবানি কার উপর ফরজ - কোরবানি কাদের উপর ফরজ

আপনার এবং আপনার পরিবারের সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন আর্টিকেলে অবশ্যই সে পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকুন। কারণ আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের তথ্যমূলক আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়।২০৮৭৬

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url