ফ্রিল্যান্সিং ইনকামের টাকা তুলতে কোন একাউন্ট সবচেয়ে ভালো
ফ্রিল্যান্সিং ইনকামের টাকা তুলতে কোন একাউন্ট সবচেয়ে ভালো এই প্রশ্ন সাধারণত নতুন ফ্রিল্যান্সারদের কমন প্রশ্ন। তাই আজকে আমরা বাংলাদেশ থেকে ফ্রিল্যান্সিং আয়ের টাকা তুলতে কোন একাউন্ট আপনার জন্য সহজ, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।
ফ্রিল্যান্সিং ইনকামের টাকা তুলতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পেপালের মত সুবিধা জনক লেনদেন মাধ্যম থাকলেও বাংলাদেশে অফিসিয়ালি এই সুযোগ নেই। ঠিক এই কারণে বাংলাদেশের হাজারো ফ্রিল্যান্সার তাদের ইনকামের টাকা তুলার সময় অনেক ঝামেলে ও অতিরিক্ত ট্যাক্স এর সম্মুখীন হন।
ফ্রিল্যান্সিং ইনকামের টাকা তুলতে কোন একাউন্ট সবচেয়ে ভালো
- ফ্রিল্যান্সিং ইনকামের টাকা তুলতে কোন একাউন্ট সবচেয়ে ভালো
- স্ক্রিল,পেওনিয়ার, ট্যাপ ট্যাপ সেন্ড ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা
- ডাইরেক্ট ব্যাংক ট্রান্সফার করার সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ
- বিকাশ ও নগদ ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সিং টাকা উত্তোলন পদ্ধতি
- ব্যাংক নাকি ই-ওয়ালেট কোনটি ভালো বিস্তারিত জানুন
- বাংলাদেশের জন্য কোন একাউন্ট সবচেয়ে সুবিধাজনক?
- বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সাররা যে পেমেন্ট মেথড সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করেন
- পেপাল নাকি পেওনিয়ার কোন পেমেন্ট মেথড ভালো?
- ফাইভার, আপওয়ার্ক থেকে কীভাবে টাকা তুলতে হয় বিস্তারিত জানুন
- পরিশেষেঃ ফ্রিল্যান্সিং ইনকামের টাকা তুলতে কোন একাউন্ট সবচেয়ে ভালো
ফ্রিল্যান্সিং ইনকামের টাকা তুলতে কোন একাউন্ট সবচেয়ে ভালো
ফ্রিল্যান্সিং ইনকামের টাকা তুলতে কোন একাউন্ট সবচেয়ে ভালো এই বিষয় নিয়ে আজকে আমরা বিস্তারিত জানবো। আমরা জানি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফ্রিল্যান্সারদের লেনদেন করার সুবিধার্থে পেপালের মত অনেক উন্নত পেমেন্ট মেথড এর সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশে এই ধরণের সুযোগ না থাকার কারণে ফ্রিল্যান্সারদের তাদের ইনকামের টাকা তুলার জন্য বিভিন্ন থার্ড পার্টি পেমেন্ট মেথড ব্যবহার করতে হয়। এর অনেক বড় একটি অসুবিধা হচ্ছে এই সকল পেমেন্ট মেথড ব্যবহার করার ফলে প্রতিবারের ট্রানজিকশনে একটি বড় অংকের টাকা প্রদান করতে হয় যা বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের জন্য অনেক বড় অসুবিধার কারণ।
আমরা আগেই জেনেছি যে বাংলাদেশে অফিসিয়ালি পেপাল নেই। ফ্রিল্যান্সিং ইনকামের টাকা তুলতে পেপাল হচ্ছে সব চাইতে বিশ্বস্ত ও কম ট্যাক্স গ্রহণকারী একটি পেমেন্ট মেথড। পেপাল এর পরিবর্তে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা সবচাইতে বেশি যে পেমেন্ট মেথড ব্যবহার করেন সেটি হচ্ছে পেওনিয়ার। বাংলাদেশে অফিসিয়ালি ২০১৪ সালে পেওনিয়ার প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে এটি অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং বাংলাদেশের অনেক ফ্রিল্যান্সার এই পেমেন্ট মেথড ব্যবহার করেই বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস ও মার্কেটপ্লেসের বাহিরে লেনদেন শুরু করেন।
পেওনিয়ার এর পাশাপাশি বাংলাদেশে স্ক্রিল, ট্যাপ ট্যাপ সেন্ড সহ বিভিন্ন ই-ওয়ালেট ব্যবহার করে থাকেন। এছাড়াও অনেক ফ্রিল্যান্সার আছেন যারা এই সকল থার্ড পার্টি পেমেন্ট মেথড ব্যবহার না করে সরাসরি তাদের ইনকামের টাকা ব্যাংক ট্রান্সফার বা ব্যাংক ওয়্যার ট্রান্সফার করে থাকেন। উপরের বিভিন্ন পেমেন্ট মেথডের রয়েছে আলাদা আলাদা সুযোগ ও সুবিধা এবং সেই সাথে রয়েছে এই সকল পেমেন্ট মেথড ব্যবহারের অসুবিধাও। এখন আমরা নিচে ফ্রিল্যান্সিং ইনকামের টাকা তুলতে কোন একাউন্ট সবচেয়ে ভালো এই বিষয় নিয়ে বিস্তারিত ভালো আলোচনা করার চেষ্টা করবো।
স্ক্রিল,পেওনিয়ার, ট্যাপ ট্যাপ সেন্ড ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা
স্ক্রিল, পেওনিয়ার, ট্যাপ ট্যাপ সেন্ড এই তিনটি হচ্ছে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের ব্যবহৃত সবচেয়ে জনপ্রিয় লেনদেন মাধ্যম। তবে এই মাধ্যম গুলো জনপ্রিয় হলেও এদের রয়েছে কিছু আলাদা আলাদা সুবিধা ও অসুবিধা। এখন আমরা এই সকল সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করবো এবং আশা করা যায় যে আলোচনা শেষে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন যে ফ্রিল্যান্সিং ইনকামের টাকা তুলতে উপরের দেওয়া তিনটি মাধ্যমের মধ্যে কোনটি আপনার জন্য ভালো হবে।
স্ক্রিল ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা
আমরা প্রথমেই যে পেমেন্ট মেথড নিয়ে আলোচনা করবো সেটি হচ্ছে স্ক্রিল। স্ক্রিল হচ্ছে বাংলাদেশের জন্য একটি জনপ্রিয় ইলেকট্রনিক পেমেন্ট সিস্টেম। বর্তমানে স্ক্রিলের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সাররা তাদের কাজের পেমেন্ট বা ইন্টারন্যাশনাল শপিং করে আসছে। স্ক্রিল ব্যবহারের কিছু সুবিধা হচ্ছে স্ক্রিল ব্যবহার করে আপনি সহজেই আন্তর্জাতিক লেনদেন করতে পারবেন। ফ্রীল্যান্সিং কাজ থেকে আয়ের অর্থ সরাসরি স্ক্রিলে পাঠানো যায়। এছাড়াও স্ক্রিলের ট্রানজেকশন ফি তুলনামূলকভাবে অনেক কম। এরপর স্ক্রিল ডেবিট কার্ড সুবিধা দিয়ে থাকে। যার মাধ্যমে আপনি এটিএম থেকে টাকা উঠাতে পারবেন। এছড়াও স্ক্রিল ব্যবহারের সব চাইতে বেশি সুবিধা সেটি হচ্ছে নিরাপত্তা।
এখন আমরা স্ক্রিল ব্যবহারের কিছু অসুবিধা সম্পর্কে জানবো। স্ক্রিল ব্যবহারের সব চাইতে বড় অসুবিধা যেটি সেটি হলো এটি দেশীয় সকল লোকাল ব্যাংক সাপোর্ট করেনা। তাই আপনি যখন মোটা অংকের টাকা সরাসরি আপনার লোকাল ব্যাংকে ট্রান্সফার করতে যাবেন তখন ঝামেলার সম্মুখীন হতে পারেন। এরপর যে অসুবিধা সেটি হচ্ছে স্ক্রিল অ্যাকাউন্ট খুললে কিছু কাগজপত্রের মাধ্যমে ভারিফিকেশন করতে হয়। এই ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া অনেক সময় অনেকের কাছে একটু বেশি কঠিন হয়ে যায়। তাছাড়াও বাংলাদেশে স্ক্রিল খুব ভালো সাপোর্ট প্রদান করেনা। তাই আপনি লেনদেন বা অন্য কোন সমস্যার মুখোমুখি হলে সাপোর্ট পেতে অসুবিধায় পড়তে পারেন।
পেওনিয়ার ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা
আমরা এবার যে পেমেন্ট মেথড নিয়ে কথা বলবো সেটি হচ্ছে পেওনিয়ার। পেওনিয়ার হচ্ছে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের কাছে একটি জনপ্রিয় আন্তর্জাতিক পেমেন্ট সিস্টেম। পেওনিয়ারের মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই বিদেশি ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে পেমেন্ট রিসিভ করতে পারবেন এবং সেই টাকা সরাসরি আপনার লোকাল ব্যাংকে ট্রান্সফার করতে পারবেন। পেওনিয়ারের একটি বড় সুবিধা হচ্ছে এটির মাধ্যমে মাস্টারকার্ড সুবিধা পাওয়া যায়। যেটি দিয়ে আপনি শপিং করতে পারেন বা এটিএম থেকে টাকা তুলতে পারেন। এছাড়াও পেওনিয়ারের ফি অন্যান্য পেমেন্ট সিস্টেমের তুলনায় তুলনামূলকভাবে কম তাই আপনার আয়ের বড় অংশই আপনার হাতে থাকে। ফাইভার, আপওয়ার্ক এর মতো আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেস থেকে সহজেই পেমেন্ট রিসিভ করা যায়। যা ফ্রিল্যান্সিং কাজকে অনেক সহজ করে তোলে। আর সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে পেওনিয়ারের কাস্টমার সাপোর্ট বেশ ভালো যেকোনো সমস্যায় দ্রুত সাহায্য পাওয়া যায়।
এখন আমরা পেওনিয়ারের কিছু অসুবিধা সম্পর্কে জানবো। পেওনিয়ার ব্যবহারের সবচেয়ে বড় অসুবিধা হচ্ছে এর অ্যাকাউন্ট ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া। নতুন ব্যবহারকারীদের জন্য এই ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া অনেক সময় জটিল মনে হতে পারে এবং ডকুমেন্ট সঠিক না হলে বারবার রিজেক্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আরেকটি অসুবিধা হচ্ছে, স্থানীয় ব্যাংকে টাকা ট্রান্সফারের সময় প্রায় দুই থেকে তিন দিন পর্যন্ত লেগে যেতে পারে যা অনেকের কাছে বিরক্তিকর মনে হতে পারে। পেওনিয়ারের মাস্টারকার্ডের জন্য প্রতি বছর রিনিউয়াল ফি দিতে হয় যা অনেকের কাছে বাড়তি খরচ হিসেবে ধরা পড়ে। পাশাপাশ সব ব্যাংক বা এটিএম পেওনিয়ারের কার্ড সাপোর্ট করে না। তাই নির্দিষ্ট এটিএম খুঁজে বের করা একটা ঝামেলার বিষয়। এছাড়াও কখনো কখনো পেওনিয়ারের লাইভ চ্যাট বা ইমেইল সাপোর্ট থেকে উত্তর পেতে দেরি হয়। যা তৎক্ষণাৎ সমাধান চাওয়া ব্যবহারকারীদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
ট্যাপ ট্যাপ সেন্ড ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা
আমরা এখন যে পেমেন্ট মেথড নিয়ে কথা বলবো সেটি হচ্ছে ট্যাপ ট্যাপ সেন্ড। এটি বাংলাদেশের ব্যবহারকারীদের কাছে একটি সহজ এবং ঝামেলাহীন মানি ট্রান্সফার সিস্টেম হিসেবে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। খুব অল্প সময়ে মাত্র কয়েকটি ক্লিকেই টাকা দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাঠানো যায়। যা ব্যবহারকারীদের জন্য দারুণ সুবিধাজনক। ট্যাপ ট্যাপ সেন্ডের সবচেয়ে ভালো দিক হলো এর রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া খুবই সহজ এবং একটি সাধারণ স্মার্টফোনেই অ্যাপ ডাউনলোড করে ব্যবহার শুরু করা যায়। এছাড়াও এর ফি অন্যান্য সার্ভিসের তুলনায় কম। তাই চার্জ নিয়ে খুব একটা চিন্তা করতে হয় না। নিরাপত্তার দিক থেকেও এটি বেশ ভালো কারণ প্রতিটি লেনদেনে ওটিপি ভেরিফিকেশন থাকে যা ইউজারদের অর্থ নিরাপদ রাখে। এই পেমেন্ট সিস্টেম দিয়ে পেবাসীরা বেশি লেনদেন করেলেও সম্প্রতি অনেক ফ্রিল্যান্সাররা লেনদেন করার জন্য এটি ব্যবহার করছে।
আরোও পড়ুনঃ ফাইবার একাউন্ট খোলার নিয়ম
এখন আমরা ট্যাপ ট্যাপ সেন্ড ব্যবহারের কিছু অসুবিধা সম্পর্কে জানবো। প্রথমত এই সার্ভিসটি সব দেশ বা ব্যাংকে সাপোর্ট করে না ফলে অনেকেই কাঙ্ক্ষিত সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন। আরেকটি বড় অসুবিধা হচ্ছেচ কখনো কখনো সার্ভারে চাপ বেশি হলে লেনদেন আটকে যেতে পারে যা বিশেষ করে জরুরি মুহূর্তে অনেক বিরক্তিকর হয়ে ওঠে। কিছু ব্যবহারকারী অভিযোগ করে থাকেন যে অ্যাপ আপডেটের পর ছোটখাটো বাগ দেখা দেয় যা ব্যবহার অভিজ্ঞতাকে কিছুটা খারাপ করে ফেলে। এছাড়াও কাস্টমার সাপোর্ট থেকে সাড়া পেতে অনেক সময় অপেক্ষা করতে হয় যা অনেকের কাছে বিরক্তিকর মনে হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অসুবিধা হলো ভুল তথ্য দিয়ে টাকা পাঠিয়ে ফেললে সেটা ফেরত আনা বেশ জটিল। তাই বলা যায় ফ্রিল্যান্সিং এর টাকা উঠাতে এই পেমেন্ট সিস্টেম সুবিধার পাশাপাশি ইমারজেন্সি সময়ে ঝামেলায়ও ফেলতে পারে।
ডাইরেক্ট ব্যাংক ট্রান্সফার করার সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ
ডাইরেক্ট ব্যাংক ট্রান্সফার একটি অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য এবং সহজ উপায় হিসেবে অনেকের কাছে জনপ্রিয়। বিশেষ করে বড় অংকের লেনদেন বা অফিসিয়াল পেমেন্টের ক্ষেত্রে এটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। কারণ এখানে তৃতীয় পক্ষের কোনো ঝামেলা থাকে না যা ব্যবহারকারীদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়। খুব সহজেই এক ব্যাংক থেকে আরেক ব্যাংকে টাকা পাঠানো যায় এবং যখন ট্রান্সফার সম্পন্ন হয় তখন ব্যাংক থেকে এসএমএস বা নোটিফিকেশন পাওয়া যায় যা মানসিক চিন্তা থেকে মুক্তি দেয়। এমনকি এই পদ্ধতিতে লেনদেনও খুব সহজ ও ঝামেলা বিহীন তাই অনেকেই এটি পছন্দ করেন।
তবে ডাইরেক্ট ব্যাংক ট্রান্সফারের কিছু অসুবিধাও রয়েছে। মাঝে মাঝে ব্যাংকের সার্ভার সমস্যা হওয়ার কারণে লেনদেন আটকে যেতে পারে যা তখন সত্যিই এক ধরনের ঝামেলা সৃষ্টি করে। এছাড়াও অন্য কোনো মাধ্যমের তুলনায় ব্যাংকে লেনদেন করার সময় কিছু অতিরিক্ত কাগজপত্র বা ফর্মালিটির ঝামেলা থাকে যা অনেকের কাছে বিরক্তিকর হতে পারে। সবচেয়ে বড় অসুবিধা হচ্ছে ভুল অ্যাকাউন্ট নম্বরে টাকা পাঠিয়ে ফেললে সেটি ফেরত আনা বেশ জটিল কাজ হয়ে দাঁড়ায় তাই এই প্রক্রিয়া খুব সতর্কভাবে ব্যবহার করা উচিত।
সুবিধা | অসুবিধা |
---|---|
ব্যাংকের মাধ্যমে সরাসরি ও নিরাপদ লেনদেন হয় | সার্ভার সমস্যা হলে লেনদেন আটকে যেতে পারে |
বড় অংকের টাকা সহজে ট্রান্সফার করা যায় | ভুল অ্যাকাউন্ট নম্বরে টাকা গেলে ফেরত আনা কঠিন |
এসএমএস বা ইমেইল নোটিফিকেশন পাওয়া যায় | অনেক সময় ব্যাংকে গিয়ে ফর্ম পূরণ করতে হয় |
দেশের ভেতর ও বাইরে টাকা পাঠানো সম্ভব | ইন্টারন্যাশনাল ট্রান্সফারে চার্জ বেশি লাগে |
থার্ড পার্টি অ্যাপ ছাড়াই সরাসরি লেনদেন করা যায় | ব্যাংকের কার্যদিবস ছাড়া লেনদেন সম্ভব নয় |
বিকাশ ও নগদ ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সিং টাকা উত্তোলন পদ্ধতি
বিকাশ ও নগদ হচ্ছে বাংলাদেশের মোবাইল ব্যাংকিং এর জনপ্রিয় একটি মাধ্যম। বাংলাদেশে যত গুলো মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম রয়েছে তার মধ্যে বিকাশ ও নগদ সবার শীর্ষে। আগে বিকাশ ও নগদ নিয়ে শুধু মাত্র দেশের ভেতরে এক বিকাশ বা নগদ থেকে শুধু মাত্র অন্য বিকাশ ও নগদ একাউন্টে টাকা লেনদেন করা যেত। বর্তমান সময়ে বিকাশ ও নগদ উভয়ে ভিসা কার্ডের সুযোগ উন্মুক্ত করার কারণে আপনি এই বিকাশ ও নগদের ভিসা কার্ড দিয়ে বিভিন্ন ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট করা থেকে শুরু করে ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফোর্ম গুলো থেকে সরাসরি কার্ডে টাকা ট্রান্সফার করতে পারবেন। এখন আপনার জানবো কিভাবে বিকাশ ও নগদের ক্রেডিড কার্ড বা ভিসা কার্ড অর্ডার করতে হয়। আমরা শুধু নগদের ভিসা কার্ড অ্যাপ্লাই প্রসেস জানবো ঠিক একই পদ্ধতিতে আপনি বিকাশের ভিসা কার্ডও অ্যাপ্লাই করতে পারবেন।
- প্রথমে নগদ অ্যাপ লগইন করে নিতে হবে।
- এরপর সেবা মেনুতে প্রবেশ করতে হবে।
- এরপর কার্ড অথভা ভিসা কার্ড অপশন সিলেক্ট করতে হবে।
- এরপর নতুন ভিসা কার্ড আবেদন বাটনে ক্লিক করতে হবে।
- এরপর জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দিয়ে একটি ফর্ম পূরণ করতে হবে।
- এরপর কার্ড টাইপ সিলেক্ট করতে হবে ( ভার্চুয়াল নাকি ফিজিক্যাল)
- সব শেষে আবেদন প্রক্রিয়াটি সাবমিট করে দিতে হবে।
- নির্দিষ্ট সময় পর আপনার কার্ডটি আপনার হাতে পেয়ে যাবেন।
বিঃদ্রঃ বিকাশ বা নগদ ভিসা কার্ড অ্যাপ্লাই করার জন্য আপনার একটি বৈধ্য পাসপোর্ট থাকা আবশ্যক। বৈধ্য পাসপোর্ট ছাড়া বিকাশ বা নগদ ভিসা কার্ড অ্যাপ্লাই করতে পারবেন না।
ব্যাংক নাকি ই-ওয়ালেট কোনটি ভালো বিস্তারিত জানুন
ব্যাংক নাকি ই-ওয়ালেট কোনটি ভালো এই বিষয় নিয়ে এখন আমরা সংক্ষেপে আলোচনা করবো। যদি নিরাপত্তা আর বড় অংকের লেনদেন নিয়ে কথা ঙ্কে তাহলে ব্যাংক সব সময়ই কিছুটা এগিয়ে থাকে। ব্যাংকে টাকা রাখলে সেভিংস নিরাপদ থাকে এবং বিভিন্ন ধরনের সুদ সুবিধা পাওয়া যায় যা অনেকের জন্য সঞ্চয়ের বড় ভরসা হয়ে দাঁড়ায়। পাশাপান ব্যাংক থেকে লোন ফিক্সড ডিপোজিট বা কার্ড সেবা নেওয়ার সুযোগ থাকে যা ভবিষ্যতের জন্য বেশ উপকারী। তবে ব্যাংকিং প্রক্রিয়ায় কিছু অসুবিধাও রয়েছে ফর্ম পূরণ, লাইনে দাঁড়ানো বা ছুটির দিনে ব্যাংক বন্ধ থাকার কারণে অনেকেই বিরক্ত হন। এছাড়াও অনলাইন ব্যাংকিং সেবা এখনো সব ব্যাংকে পুরোপুরি নির্ভরযোগ্য নয়। তাই অনেকে এটিকে কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ মনে করেন। সব মিলিয়ে ব্যাংক মূলত নিরাপদ সঞ্চয় আর বড় লেনদেনের জন্য সেরা।
অন্যদিকে ই-ওয়ালেটের সুবিধা হলো সব কিছু একেবারে হাতের মুঠোয় চলে আসে। মোবাইল থেকেই টাকা পাঠানো, বিল পেমেন্ট, রিচার্জ সব কাজ করা যায় যা সময় বাঁচায় এবং জীবনকে সহজ করে তোলে। ই-ওয়ালেট ব্যবহারকারীরা খুব দ্রুত লেনদেন করতে পারেন এবং ব্যাংকে লাইনে দাঁড়ানোর কোনো ঝামেলা নেই। এর পাশাপাশি অনেক সময় ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, কুপনের সুবিধা পাওয়া যায়, যা ব্যাংকের তুলনায় বেশি আকর্ষণীয়। তবে ই-ওয়ালেটের নিরাপত্তা কিছুটা কমতি দেখা দেয়। যেমন ফোন হারালে বা পিন শেয়ার করলে টাকা হারানোর আশঙ্কা থাকে। আর বড় অঙ্কের টাকা লেনদেন সবসময় সহজ হয় না যা একটি বড় অসুবিধার কারণ।
সহজ ভাষায় যদি বলা যায় তাহলে আপনি যদি আপনার ফ্রিল্যান্সিং এর টাকা ঝুঁকি ছাড়া আপনার হাতে পেতে চান তাহলে ব্যাংক লেনদেন আপনার জন্য বেস্ট। তবে এক্ষেত্রে চার্জ বা ট্যাক্স একটু বেশি লাগতে পারে। আর আপনি যদি চান আপনি ট্যাক্স এর পরিমাণ কম দিবেন তাহলে রিস্ক নিয়ে আপনি ই-ওয়ালেট ব্যবহার করতে পারেন।
বাংলাদেশের জন্য কোন একাউন্ট সবচেয়ে সুবিধাজনক?
বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট তুলতে পেওনিয়ার সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। কারণ এর মাধ্যমে ফাইভার, আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার ডট কম এর মতো বড় মার্কেটপ্লেস থেকে সহজেই টাকা আনা যায়। তবে পেওনিয়ারের পাশাপাশি স্ক্রিলও ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিশেষ করে যাদের ক্লায়েন্টরা ইউরোপ বা নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট থেকে পেমেন্ট করে থাকেন। স্ক্রিলের বড় সুবিধা হলো তুলনামূলকভাবে কম ফি দিয়ে টাকা দেশে আনা যায় এবং তা স্থানীয় ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তোলা সম্ভব। যা অনেকের কাছে বড় সুবিধা হিসেবে ধরা হয়। স্ক্রিল অ্যাকাউন্ট খোলা বেশ সহজ এবং এতে দ্রুত ডলার বা ইউরো রিসিভ করা যায়। যদিও পেওনিয়ারের তুলনায় স্ক্রিল কিছুটা কম পরিচিত নির্দিষ্ট কিছু সেক্টরে এর ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে।
স্ক্রিলের আরেকটি ভালো দিক হলো এটি শুধু মার্কেটপ্লেস থেকে নয় বরং ক্লায়েন্টদের কাছ থেকেও সরাসরি পেমেন্ট নেওয়ার সুযোগ দেয় যা অনেক ফ্রিল্যান্সারের জন্য দরকারি একটি সুবিধা। এছাড়াও স্ক্রিল প্রিপেইড মাস্টারকার্ড থাকলে এটিএম থেকে সরাসরি টাকা তোলা যায় যা টাকার অ্যাক্সেস আরও সহজ করে তোলে। তবে এর কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে যেমন সব বাংলাদেশি ব্যাংক স্ক্রিল সাপোর্ট করে না তাই অ্যাকাউন্ট খোলার আগে ভালোভাবে রিসার্চ করা খুব জরুরি। যারা ব্যাংক নির্ভর না হয়ে স্বাধীনভাবে পেমেন্ট পেতে চান তাদের জন্য স্ক্রিল নিঃসন্দেহে ভালো বিকল্প হতে পারে। সব মিলিয়ে পেওনিয়ার আর স্ক্রিল দুটিই ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটপ্লেস গুলো থেকে টাকা তুলতে বেশ সুবিধাজনক হওয়ার কারণে বাংলাদেশের বেশির ভাগ ফ্রিল্যান্সার এই পেমেন্ট মেথড ব্যবহার করেন।
বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সাররা যে পেমেন্ট মেথড সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করেন
বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের কাছে পেওনিয়ার নিঃসন্দেহে সবচেয়ে জনপ্রিয় পেমেন্ট মেথড। কারণ এর মাধ্যমে ফাইভার, আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার, টপটাল এর মতো আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেস থেকে খুব সহজেই টাকা তোলা যায়। পেওনিয়ারের বড় সুবিধা হলো এর মাধ্যমে ডলার খুব দ্রুত স্থানীয় ব্যাংকে রূপান্তর করা যায় আর ফি তুলনামূলকভাবে কম যা ফ্রিল্যান্সারদের আয়ে বেশ বড় সাশ্রয় এনে দেয়। মাস্টারকার্ড সুবিধার কারণে এটিএম থেকে সরাসরি টাকা তোলা যায় যা অনেকের কাছে বাড়তি এক সুবিধা হিসেবে কাজ করে।
যদিও পেপাল এবং স্ক্রিলের মতো কিছু বিকল্প আছে কিন্তু বাংলাদেশে পেপাল অফিসিয়ালি সাপোর্ট করে না আর স্ক্রিলও নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে সীমিত জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তাই অনেকেই শেষ ধাপে পেওনিয়ার থেকে টাকা ব্যাংকে নিয়ে এসে বিকাশ বা নগদে ট্রান্সফার করে নেন যা স্থানীয় লেনদেনকে আরও সহজ করে তোলে। সবদিক মিলিয়ে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের কাছে পেওনিয়ার শুধু জনপ্রিয় নয় বরং সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পেমেন্ট সলিউশন হিসেবে পরিচিত।
পেপাল নাকি পেওনিয়ার কোন পেমেন্ট মেথড ভালো?
পেপাল এবং পেওনিয়ার দুটোই আন্তর্জাতিক পেমেন্ট সিস্টেম হিসেবে বিশ্বব্যাপী অনেক পরিচিত কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে পেওনিয়ারই বেশি সুবিধাজনক বলে আমি মনে করি। কারণ পেওনিয়ার বাংলাদেশের মধ্যে অফিসিয়ালি সাপোর্টেড। যার ফলে ফ্রিল্যান্সাররা সহজেই ফাইভার, আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার এর মতো মার্কেটপ্লেস থেকে টাকা তুলতে পারেন এবং সরাসরি ব্যাংক বা এটিএমে টাকা নিতে পারেন। এর চার্জও তুলনামূলকভাবে কম আর টাকা তোলার সময় খুব দ্রুত হয় যা ফ্রিল্যান্সারদের জন্য একটি বড় সুবিধাজনক বলে বিবেচিত হয়। তাছাড়াও পেওনিয়ারের প্রিপেইড মাস্টারকার্ড ব্যবহার করে সরাসরি টাকা তোলা সম্ভব যা আরও সুবিধাজনক। তাই বাংলাদেশে পেওনিয়ার এখন একপ্রকার বেষ্ট চয়স হয়ে উঠেছে ফ্রিল্যান্সারদের জন্য।
আরোও পড়ুনঃ Upwork এ যেভাবে পেমেন্ট মেথড সেটআপ করবেন
পেপাল যদিও বৈশ্বিকভাবে অনেক বড় নাম এবং বিশ্বব্যাপী ই কমার্স এবং পেমেন্ট সিস্টেমে বেস্ট একটি পেমেন্ট মেথড কিন্তু বাংলাদেশের জন্য তা অনেকটা সীমাবদ্ধ। কারণ বাংলাদেশে পেপাল অফিসিয়ালি চালু নয এবং এজন্য ফ্রিল্যান্সাররা সাধারণত থার্ড পার্টি রুট বা আত্মীয় বন্ধুর সাহায্যে পেপাল ব্যবহার করেন যা ঝুঁকিপূর্ণ এবং সীমিত সুবিধা প্রদান করে। পেপাল থাকলে অবশ্যই আরও সুবিধা হতো কারণ এটি দ্রুত পেমেন্ট প্রদান করে, ইউজার ফ্রেন্ডলি এবং অনেক জায়গায় সহজেই গ্রহণযোগ্য। তবে বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায়, বাংলাদেশের জন্য পেওনিয়ারই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ভালো এবং নির্ভরযোগ্য পেমেন্ট মেথড বলে অনেকেই মনে করেন।
ফাইভার, আপওয়ার্ক থেকে কীভাবে টাকা তুলতে হয় বিস্তারিত জানুন
ফাইভার ও আপওয়ার্ক হলো বর্তমান সময়ে সবচাইতে জনপ্রিয় ও বড় মার্কেটপ্লেস। বিশ্বের বড় বড় ফ্রিল্যান্সাররা সাধারণত তাদের প্রথম চয়েজ হিসেবে ফাইভার ও আপওয়ার্কে কাজ করে থাকেন। আজকে আমরা জানবো কিভাবে ফাইভার ও আপওয়ার্ক থেকে টাকা তুলতে হয়। মূলত ফাইভার ও আপওয়ার্ক থেকে টাকা তুলার প্রক্রিয়া কিছুটা একই হওয়ার কারনে আমরা নিচে শুধু ফাইভারের টাকা তুলার পদ্ধতি সম্পর্কে ধাপে ধাপে জানবো।
- প্রথমে ফাইভার একাউন্ট লগইন করে নিতে হবে।
- এরপর ড্যাশবোর্ড থেকে রেভেনিও বা আর্নিং অপশনে যেতে হবে।
- এরপর উইড্রো অপশন সিলেক্ট করতে হবে।
- এরপর পেমেন্ট মেথড সিলেক্ট করতে হবে।
- মেথড সিলেক্ট করার পর টাকার পরিমাণ ঠিক করতে হবে।
- সব শেষে উইড্রো বা রিকোয়েস্ট উইড্রো করে দিতে হবে।
- নির্দিষ্ট সময় পর ফাইভার থেকে আপনার একাউন্টে টাকা চলে যাবে।
পরিশেষেঃ ফ্রিল্যান্সিং ইনকামের টাকা তুলতে কোন একাউন্ট সবচেয়ে ভালো
ফ্রিল্যান্সিং ইনকামের টাকা তুলতে কোন একাউন্ট সবচেয়ে ভালো এই বিষয় নিয়ে আমরা উপরে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি যদি একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার হয়ে থাকেন এবং ঝামেলা বিহীন ভাবে ও অল্প ট্যাক্স দিয়ে টাকা আপনার পকেটে আনতে চান তাহলে আপনার উচিত হবে পেওয়ানিয়ার একাউন্ট ব্যবহার করা। বাংলাদেশে পেপাল না থাকার কারণে বর্তমান সময়ে পেওনিয়ার হচ্ছে বেস্ট একটি অপশন। পেওনিয়ার ছাড়াও ফ্রিল্যান্সিং ইনকামের টাকা তুলার অনেক পেমেন্ট সিস্টেম নিয়ে উপরে আলোচনা করা হয়েছে আপনি চাইলে বিস্তারিত পড়ে আপনার মনে থাকা এই প্রশ্নটি থেক মুক্তি পেতে পারেন বলে আশা করা যায়। সব শেষে এই গুরুত্বপূর্ন তথ্য গুলো আপনার পরিচিত কেউ অথবা বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। 250311
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url