OrdinaryITPostAd

সাজেক ভ্যালি কোন জেলায় অবস্থিত? সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ টিপস

সাজেক ভ্যালি কোন জেলায় অবস্থিত বা সাজেক উপত্যকা কোথায় অবস্থিত আপনি কি তা জানতে চান তাহলে এই পোস্ট আপনার জন্য। আজ আমি সাজেক ভ্যালি কোন জেলায় অবস্থিত বা সাজেক কোন বিভাগে অবস্থিত সে সম্পর্কে জানাবো। আপনি যদি সাজেক ভ্যালি কোন জেলায় অবস্থিত ও সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ খরচ জানতে চান তাহলে পোস্টটি ভালোভাবে পড়ুন।

সাজেক যাওয়ার পথে, আপনি আপনার সম্পূর্ণ ভ্রমণের অর্ধেক অনন্দ উপভোগ করতে পারবেন।পাহাড়ের ভিতর দিয়ে যাওয়ার সময় সাজেক উপত্যকার রাস্তা ও সাজেক ভ্যালির সৌন্দর্য আপনার মন কেড়ে নেবে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক সাজেক ভ্যালি কোন জেলায় অবস্থিত বা সাজেক উপত্যকা কোথায় অবস্থিত এবং সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ খরচ কত।

সূচিপত্রঃ সাজেক ভ্যালি কোন জেলায় অবস্থিত

সাজেক ভ্যালি কোন জেলায় অবস্থিত এবং এর কিছু তথ্য

সাজেক ভ্যালি রাঙ্গামাটি জেলার উত্তরে ভারতের মিজোরাম সীমান্তে অবস্থিত। কর্ণফুলী নদী থেকে উৎপন্ন সাজেক নদীর নামানুসারে সাজেক ভ্যালির নামকরণ করা হয়েছে। সাজেক রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার একটি ইউনিয়ন, যা বাংলাদেশের বৃহত্তম ইউনিয়ন এবং এর মোট আয়তন প্রায় ৭০০ বর্গমাইল। সাজেকের পশ্চিম দিকে খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলা, দক্ষিণ দিকে রাঙ্গামাটি জেলার লংগাডু উপজেলা, উত্তর দিকে ত্রিপুরা এবং পূর্ব দিকে ভারতের মিজোরাম অবস্থিত।

সাজেক রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় গেলে বেশি সুবিধা হয়। খাগড়াছড়ি সদর থেকে সাজেক উপত্যকার দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার, দীঘিনালা থেকে ৪৯ কিলোমিটার এবং বাঘাইহাট থেকে ৩৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সাজেক ভ্যালি বাংলাদেশের একটি খুব সুন্দর পর্যটন স্থান। যা এখন ভ্রমণপ্রেমীদের ভ্রমণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। সাজেক উপত্যকাটি পাহাড়, ঘন জঙ্গল এবং সবুজ গাছপালা দিয়ে সাজানো। পাহাড়ের মধ্য দিয়ে অনেক ছোট ছোট নদী বয়ে গেছে যার মধ্যে রয়েছে কাচালং এবং মাচালং। এখান থেকে আপনারা সাজেক ভ্যালি কোন জেলায় অবস্থিত বা সাজেক কোন বিভাগে অবস্থিত তা জানতে পারবেন।

সাজেক ভ্যালি যাওয়ার সময় যেসব চোখে পড়বে

সাজেক উপত্যকা দুর্গম এলাকাতে অবস্থিত হলেও প্রতি বছর এখানে অনেক মানুষ বেড়াতে আসে। এর অপরূপ সৌন্দর্য সবাইকে বিমোহিত করে। সাজেক উপত্যকাকে বলা হয় পাহাড়ের রানী ও রাঙামাটির ছাদ। খাগড়াছড়ি থেকে দীঘিনালা আর্মি ক্যাম্প দিয়ে সাজেক যেতে হয়। সাজেক যাওয়ার সময় দশম বাঘাইহাট পুলিশ ও আর্মি ক্যাম্প চোখে পড়বে। সাজেক যেতে হলে এই আর্মি ক্যাম্প থেকে অনুমতি নিতে হয়। তারপর দেখবেন টাইগার টিলা আর্মি ক্যাম্প ও মাচালং বাজার।

আরো পড়ুনঃ সুন্দরবন দিবস কবে পালিত হয় - সুন্দরবন দিবস ২০২৩ কবে

মাচালং বাজার পার হলেই সাজেকের প্রথম গ্রাম রুইলুই পাড়া দেখা যাবে, যার উচ্চতা ১৮০০ ফুট। রুইলুই পাড়ার প্রধান জনগোষ্ঠী লুসাই। এছাড়াও এখানে পাঙ্কুয়া, ত্রিপুরা ও চাকমাদের বসবাস রয়েছে। রুইলুই পাড়া ১৮৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। লাল থাঙ্গা লুসাই রুইলুই পাড়ার প্রধান। রুইলুই পাড়া থেকে সাজেক উপত্যকা খুব কাছে। সাজেকের বিজিবি ক্যাম্পই হল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিজিবি ক্যাম্প। সাজেক উপত্যকায় হেলিকপ্টার পড়ার জন্য হেলিপ্যাড সুবিধা রয়েছে।

সাজেক ভ্যালির অপরূপ কিছু ছবি







সাজেক ভ্যালির সুন্দর পর্যটন স্পট

সাজেকের কাছে অনেক সুন্দর পর্যটন স্পট রয়েছে। রুইলুই পাড়া থেকে আড়াই ঘণ্টার পথ যাওয়ার পর, কমলক ঝর্ণা দেখতে পাবেন যা আপনার মনকে জুড়িয়ে দেবে। কমলাক ঝর্ণা পিদাম তোয়াসা ঝর্ণা বা সিকাম তোয়সা ঝর্ণা নামেও পরিচিত। সাজেকের শেষ গ্রাম কংলাক পাড়া। এই এলাকাটিকে লুসাই সম্প্রদায় নামে পরিচিত। কংলাক পাড়া থেকে ভারতের লুসাই পাহাড় দেখা যায়, যেখান থেকে কর্ণফুলী নদীর উৎপত্তি হয়েছে। অনেক সময় সাজেক বিজিবি ক্যাম্প থেকে নিরাপত্তার কারণে কংলাক পাড়ায় যেতে দেওয়া হয় না। 

সাজেক থেকে ফেরার সময় হাজাচোরা ঝর্ণা, দীঘিনালা ঝুলন্ত ব্রিজ, আলুটিলা গুহা ও দীঘিনালা বনবিহার দেখতে পাবেন। এসব এত প্রাকৃতিক সুন্দরতার জন্য বা সাজেক ভ্যালির সৌন্দর্য এর জন্য এটা একটা সুন্দর পর্যটন স্পট বা সুন্দর ছুটি কাটানোর বা সময় কাটানোর জন্য খুব ভালো জায়গা। আর আপনি যদি জানতে চান সাজেক ভ্যালি কোন জেলায় অবস্থিত বা সাজেক উপত্যকা কোথায় অবস্থিত তা আমরা উপরে জানিয়েছি।

সাজেক ভ্যালি ভ্রমণের জন্য কিছু টিপস

  • সাজেক ভ্যালিতে যাওয়ার আগে হোটেল বুক করা জরুরি।
  • ছুটির দিনে ভীড় বেশি হয়, তাই কেউ যদি বেড়াতে গিয়ে নির্জনতা চায় তাহলে ছুটির সময় না যাওয়াই ভালো।
  • সাজেকে যাওয়ার সময় অবশ্যই বিজিবি (বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশ) থেকে অনুমতি নিতে হবে।
  • সাজেক একটি প্রত্যন্ত এলাকা এবং কোন বিদ্যুৎ নেই। তাই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যেমন ওষুধ, পাওয়ার ব্যাংক ইত্যাদি সাথে নিন।
  • সাজেক ভ্যালির পথগুলো আঁকাবাঁকা আর খাড়া। এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, তাই আপনাদের খুব সতর্ক হওয়া উচিত।
  • স্থানীয় ডুবুরি পরিবহন ব্যবহার করা উচিত।
  • কিছু হালকা নাস্তা সাথে  রাখতে পারেন।
  • পানি নিতে ভুলবেন না। কারণ এখানে পানির সংকট রয়েছে।

আরো পড়ুনঃ সুন্দরবন দিবসের প্রতিপাদ্য - সুন্দরবন দিবসের শুভেচ্ছা

সমুদ্রতল থেকে সাজেক ভ্যালির উচ্চতা

সাজেক ভ্যালি কোন জেলায় অবস্থিত বা সাজেক উপত্যকা কোথায় অবস্থিত সাজেক উপত্যকা পার্বত্য চট্টগ্রামে অবস্থিত। সুতরাং, সাজেক উপত্যকার উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় 1800 ফুট বা 550 মিটার উপরে অবস্থিত।

সাজেক ভ্যালি কিভাবে যাব এবং সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ খরচ

সাজেক রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা দিয়ে যাওয়া অনেক সহজ। তাই প্রথমে খাগড়াছড়ি আসতে হবে। ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি যেতে আপনি সৌদিয়া পরিবহন, শ্যামলী, শান্তি পরিবহন, এস আলম, ঈগল ইত্যাদি আরো বাস পেয়ে যাবেন। সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ খরচ নন-এসি বাসে আপনার খরচ হবে প্রায় ৫২০ টাকা। এসি বাসে যেতে চাইলে BRTC বা সেন্ট মার্টিন পরিবহন পাবেন ৭০০ থেকে ৯০০ টাকায়। 

এছাড়া শান্তি পরিবহন সরাসরি দীঘিনালা যায় এবং মাত্র ৫৮০ টাকা ভাড়া লাগবে। এই বাসের বিভিন্ন পয়েন্টে কাউন্টার রয়েছে। ঢাকার গাবতলী, কলাবাগানসহ শহরের অন্য জায়গায়। আপনি যদি ছুটির দিনে যেতে চান, তাহলে আগে টিকিট না কিনে থাকলে টিকিট পাওয়া কঠিন হতে পারে। খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। খাগড়াছড়ি থেকে জীপ গাড়ি রিজার্ভ করে সাজেক ভ্যালি দেখতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ হজ্জ কার ওপর ফরজ এবং ফরজ হওয়ার শর্ত - মৃৎ ব্যক্তির জন্য হজ্জ

যাওয়া এবং আসার ভাড়ার সাথে আপনার খরচ হবে ৮০০০ থেকে ১০,০০০ টাকা। এই গাড়িতে ১২ থেকে ১৫ জন উঠতে পারে। তবে আপনি যদি একটি ছোট গ্রুপে থাকেন তবে খরচ কমাতে অন্য গ্রুপের সাথে যোগ দিতে পারেন। অন্য কোনো গ্রুপ খুঁজে পাওয়া সম্ভব না হলে সিএনজি নিতে পারেন। এতে আপনার খরচ হবে ৪০০০ থেকে ৫০০০ টাকা। তবে রাস্তাটি খুব উঁচু নিচু হওয়ার কারণে সিএনজিতে ভ্রমণ না করাই ভালো।

সাজেক ভ্যালি কোন জেলায় অবস্থিত - শেষ কথা

সাজেক ভ্যালি বাংলাদেশের একটি সুন্দর পর্যটন স্পট যা রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের কাসালং পর্বতমালার পাহাড়ের মধ্যে অবস্থিত। সাজেক উপত্যকা রাঙামাটির পাহাড় ও ছাদের রানী হিসেবে পরিচিত। প্রকৃতির নির্মল ও অপরূপ সৌন্দর্যের মাঝে সাজেক পাহাড়ের কাসালং রেঞ্জের সবুজ পাহাড়ে অবস্থিত। 

সাজেক ভ্যালির সৌন্দর্য দেখার জন্য অনেক মানুষ প্রতিদিন এই সাজেকে আসে। কিন্তু আজকের পোস্টের বিষয় হল সাজেক ভ্যালি কোন জেলায় অবস্থিত বা সাজেক কোন বিভাগে অবস্থিত। আশা করি উপরের আলোচনা থেকে আপনারা সাজেক ভ্যালি কোন জেলায় অবস্থিত ও সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ খরচ সম্পর্কে জানতে পারবেন। ২২৪৯৮ 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url