OrdinaryITPostAd

যে ৬টি কারণে মাসিক দেরিতে হয় - নিয়মিত পিরিয়ড শুরুর উপায়

যে ৬টি কারণে মাসিক দেরিতে হয় সে বিষয়গুলো নিয়ে আজকের এই পোস্ট সাজিয়েছি। বিভিন্ন কারণে মেয়েদের মাসিক হতে বিলম্ব হতে পারে। মাসিক দেরিতে হয় কেন তা অনেকেই জানতে চেয়ে থাকেন। শারীরিক অসুস্থতাসহ যে ৬টি কারণে মাসিক দেরিতে হয় সে কারণগুলো জেনে নিতে এই পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে শুরু থেকে একদম শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
সাধারণত ২৮ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যেই একজন নারীর ঋতুস্রাব প্রক্রিয়া চলতে থাকে। এর চেয়ে যদি বিলম্বে মাসিক হয়ে থাকে তবে তাকে 'লেট' বলে গণ্য করা হয়। আজ এই পোস্টটি থেকে আপনারা যে ৬টি কারণে মাসিক দেরিতে হয়, অনিয়মিত ঋতুস্রাব হওয়ার কারণ ইত্যাদি বিষয় গুলো বিস্তারিত জেনে নিতে পারবেন। আশা করি এই কারণগুলো জানলে বিলম্বে মাসিক হওয়ার সকল বিষয় আপনাদের সামনে সুস্পষ্ট হয়ে যাবে।

পোস্ট সূচিপত্র - যে ৬টি কারণে মাসিক দেরিতে হয় জেনে নিন

অনিয়মিত ঋতুস্রাব হওয়ার কারণে যেসকল সমস্যা হয়

স্বাভাবিক মাসিকের সময় কালের চেয়ে ৮-১০ দিন দেরিতে মাসিক হলে তাকে অনিয়মিত ঋতুস্রাব বলে আখ্যায়িত করা হয়। যেকোনো বয়সী মেয়েদেরই অনিয়মিত ঋতুস্রাব হতে পারে। এই পোস্টের পরবর্তী অংশে যে ৬টি কারণে মাসিক দেরিতে হয় তা আলোচনা করব। তবে অনিয়মিত ঋতুস্রাব হওয়ার কারণে যেসব সমস্যা হয় সেগুলো আগে জেনে নিন।
  • অতিরিক্ত রক্তপাত হতে পারে। একমাসে রক্তপাত বেশি, আরেক মাসে কম হতে পারে।
  • মেজাজ খিটখিটে ও মানসিক অশান্তি সৃষ্টি হয়। 
  • বাচ্চা ধারণ ক্ষমতা কমে যেতে পারে।
  • নির্ধারিত সময়ের বেশি সময় ধরে পিরিয়ড স্থায়ী হতে পারে। 
  • প্রচন্ড মাথা ব্যথা ও অস্থিরতা ভাব সৃষ্টি হয়। 
  • অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণের ঘটনা ঘটতে পারে।

যে ৬টি কারণে মাসিক দেরিতে হয় | অনিয়মিত ঋতুস্রাব হওয়ার কারণ | অনিয়মিত ঋতুস্রাব কেন হয়

যেকোনো বয়সী নারীদের সচরাচর ২৮ দিন পর পর পিরিয়ড হয়ে থাকে। ২১-৩৫ দিনের আগে বা পরে ২-৭ দিন পিরিয়ড স্থায়ী থাকলে সেটি অনিয়মিত ঋতুস্রাব। যে ৬টি কারণে মাসিক দেরিতে হয় ও যে ৬টি কারণে আপনার অনিয়মিত ঋতুস্রাব হচ্ছে তার কারণসমূহ এবার জেনে নেওয়া যাক। 
  1. অতিরিক্ত মানসিক চাপ: পিরিয়ড দেরিতে হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হলো অতিরিক্ত মানসিক চাপ। কারণ অতিরিক্ত মানসিক চাপের ফলে হাইপোথ্যালামিক এমেনোরিয়া হতে পারে। ফলে হরমোনের স্বাভাবিক কর্মকান্ড ব্যাহত হয়ে মাসিক দেরিতে হয়। 
  2. পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম: এটি একটি হরমোন জনিত রোগ। অতিরিক্ত জন্ম নিয়ন্ত্রণ করার ঔষধ সেবন করলে এই রোগটি হতে পারে। এছাড়াও কিছু জন্মনিয়ন্ত্রণকরণ ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণে পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম হয়। ঘন ঘন পিল খেলে মাসিকে সমস্যা হয়। 
  3. থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যহীনতা: থাইরয়েড গ্ল্যান্ড আমাদের মেটাবলিজম নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি দেহের অভ্যন্তরীণ কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। থাইরয়েড গ্রন্থির যেকোনো সমস্যার কারণে মাসিক অনিয়মিত হতে পারে।
  4. অধিক ওজন বা কম ওজন: মাসিকে দেরি হওয়ার জন্য আপনার দেহের অধিক ওজন দায়ী। আবার শরীরের ওজন কম হলেও মাসিক দেরিতে হতে পারে।
  5. অতিরিক্ত ভ্রমণ: মেয়েদের শরীর সাধারণত খুব সহজে নতুন নতুন পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে পারে না। তাই আপনি যদি অতিরিক্ত ভ্রমণ করে থাকেন তবে আপনার রজত চক্রের সময় পরিবর্তিত হয়ে মাসিকে দেরি হতে পারে। 
  6. জরায়ুর টিউমার: অনেক সময় মেয়েদের জরায়ুতে টিউমার সৃষ্টি হয়ে তা ঋতুস্রাব প্রক্রিয়াকে মন্থর করে দেয়। ফলে অনিয়মিত মাসিক হতে থাকে।
  7. বয়ঃসন্ধিকাল: বয়ঃসন্ধিকালে সাধারণত মেয়েদের শরীরে ইস্ট্রোজেন এবং প্রজেস্টেরন হরমোনের ঘাটতি দেখা দেয়। ফলে মাসিক দেরিতে হতে পারে। এছাড়াও জন্মগত ত্রুটির কারণেও মাসিক দেরিতে হয়।
  8. অসুস্থতা: যেসব মেয়েদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তারা খুব সহজে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আর অসুস্থ ও দুর্বল শরীরে ঋতুস্রাব প্রক্রিয়া দেরিতে হয়। 
  9. অতিরিক্ত ব্যায়াম: অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম ও ব্যায়ামের কারণে পিরিয়ড অনিয়মিত হতে পারে। কারণ অতিরিক্ত এক্সারসাইজ শরীরে ইস্ট্রোজেনের লেভেল কমিয়ে দেয়। 
  10. শরীরের গঠন: অনেকের বংশগত কারণে শরীরের গঠনে ভিন্নতা থাকতে পারে। ফলে কোন ধরনের নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই তার মাসিক দেরিতে হতে পারে। 

নিয়মিত মাসিক চাইলে আপনি যে কাজগুলো করবেন | নিয়মিত মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায় 

নিয়মিত মাসিক হওয়াটা সুস্থতার লক্ষণ। কিন্তু মাসিক হতে বিলম্ব হলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক অসুবিধা দেখা দিতে পারে। আপনারা প্রধান যে ৬টি কারণে মাসিক দেরিতে হয় সে সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন। এবার চলুন নিয়মিত মাসিক চাইলে যে কাজগুলো আপনি করবেন তা জেনে নেওয়া যাক।
  • ভালো খাদ্যাভ্যাস গঠন করতে হবে এবং সকল প্রকার প্রসেসড ফুড, ফাস্ট ফুড থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে। সব সময় স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে।
  • ২৪ ঘন্টায় অন্তত ৮ ঘন্টা অবশ্যই ঘুমাতে হবে। কেননা ঘুম কম হওয়ার কারণে এ ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে। 
  • মানসিকভাবে যথাসম্ভব সুস্থ থাকতে হবে। স্ট্রেস কম রাখতে হবে। কোন প্রকার দুশ্চিন্তা করা যাবে না। 
  • নিয়মিত সময় করে ব্যায়াম করতে হবে। নিয়মিত মেডিটেশন ও যোগ ব্যায়াম স্ট্রেস কমাতে বেশ সহায়ক।
  • যাদের মেনোপজ হয়ে গেছে তাদের আরো বেশি স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করতে হবে। এতে তাদের শারীরিকভাবে অসুস্থতার ঝুঁকি কম থাকবে। 
  • জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলসহ অন্যান্য ঔষধের ব্যবহার সীমিত রাখতে হবে। 
  • অ্যালোভেরা, কাঁচা পেঁপে, আদা, দারুচিনি, কাঁচা হলুদ, জিরা প্রভৃতি খেলে তা নিয়মিত মাসিক হতে সহায়তা করে। 
  • সর্বোপরি ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে ব্যবস্থা নিতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ঔষধও সেবন করা যেতে পারে। 

অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা হলে কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন? 

প্রিয় পাঠক আশা করি ইতোমধ্যে আপনারা যে ৬টি কারণে মাসিক দেরিতে হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছেন। এবার চলুন কখন অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা গুরুতর হলে এবং কি কি লক্ষণ দেখা দিলে ডাক্তারের কাছে যাবেন তা জেনে নেওয়া যাক।
  • হঠাৎ যদি পিরিয়ড বেশি ইরেগুলার হয়ে যায় তবে ডাক্তারের কাছে যেতে পারেন। 
  • রজঃচক্র ৩৫ দিনেরও বেশি হয়ে গেলে। 
  • পিরিয়ড যদি ২১ দিনের সাইকেলে হয়। 
  • পিরিয়ড বার বার এক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী থাকলে। 
  • যদি ৪৫ বছরের আগেই পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যায় এবং মেনোপজ হওয়ার পরেও যদি পিরিয়ড চলতে থাকে।
  • পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত ব্যথা এবং রক্তপাত হলে। 

উপসংহার - যে ৬টি কারণে মাসিক দেরিতে হয়

পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার পরে আপনারা আশা করি যে ৬টি কারণে মাসিক দেরিতে হয় এবং পিরিয়ড দেরিতে হলে করণীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে ফেলেছেন। অতএব, পোস্টটি পড়ে অনিয়মিত পিরিয়ডের ব্যাপারে আপনাদের ধারণা সুস্পষ্ট হয়েছে। আর্টিকেলটি উপকারে আসলে এখনই শেয়ার করে ফেলুন এবং এই ধরনের আরো স্বাস্থ্য বিষয়ক নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। @23891

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url