OrdinaryITPostAd

নারীদের জন্য হজ্জের বিধি-বিধানসমূহ - হজ্জে মহিলাদের পর্দা

আপনি কি নারীদের জন্য হজ্জের বিধি-বিধানসমূহ জানতে চাচ্ছেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কেননা আজকের আর্টিকেলইতে নারীদের জন্য হজ্জের বিধি-বিধানসমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাই নারীদের জন্য হজ্জের বিধি-বিধানসমূহ সম্পর্কে জানতে হলে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
নারীদের জন্য হজ্জের বিধি-বিধানসমূহ
নিচে আপনাদের জন্য মহিলারা কাদের সাথে হজে যেতে পারবে, নারীদের হজ-সফরের নিয়ম-বিধান এবং নারীদের জন্য হজ্জের বিধি-বিধানসমূহ সম্পর্কে ধাপে ধাপে আলোচনা করা হয়েছে। যেখান থেকে খুব সহজেই নারীদের জন্য হজ্জের বিধি-বিধানসমূহ জানতে পারবেন। তাই দেরি না করে নারীদের জন্য হজ্জের বিধি-বিধানসমূহ জেনে নিন।

পেজ সূচিপত্রঃ নারীদের জন্য হজ্জের বিধি-বিধানসমূহ 

মহিলারা কাদের সাথে হজে যেতে পারবে

মহিলারা কাদের সাথে হজে যেতে পারবে এই বিষয়ে জেনে রাখা অবশ্যই উচিত।কেননা সামর্থবান মহিলাদের জন্যও হজ ফরজ। কিন্তু মহিলারা সচারচর একা হজে যেতে পারে না। আর মহিলারা যেকোন মানুষের সাথেও হজে যেতে পারবে না। তাই মহিলারা কাদের সাথে হজে যেতে পারবে সে সম্পর্কে অবশ্যই জানতে হবে।
মহিলারা হজে যাওয়ার সময় সঙ্গী হিসেবে মাহরাম পুরুষের সাথে যেতে পারবে। অর্থাৎ যাদের সাথে বিয়ে জায়েজ নেই তাদের সাথে যেতে পারবে। স্বামী, সন্তান, ভাই, পিতা, শশুর, জামাই ইত্যাদি। তবে একা দুধভাইয়ের সাথে এবং যুবতি শাশুড়ি জামাতার সঙ্গে যেতে পারবে না। তবে যদি মাহরাম না থাকে তাহলে মাহরাম না হওয়া পর্যন্ত হজে যাওয়া শরীয়তসম্মত হবে না।

নারীদের হজ-সফরের নিয়ম-বিধান

কোনো নারী হজে যেতে সক্ষম হলে তাকে তার স্বামী বা পরিবারের কোনো সদস্যের সঙ্গে যেতে হবে। যদি তারা এটি বহন করতে না পারে, তাহলে তাকে নিজেই এর জন্য অর্থ প্রদান করতে হবে। মহিলারা যখন হজ বা ওমরাহ নামে একটি ধর্মীয় ভ্রমণে যান, তখন তাদের পুরুষদের মতো একই নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। পার্থক্য শুধু এই যে মহিলারা সেলাইকৃত যে কোনও রঙের নিয়মিত পোশাক পরতে পারেন।
নারী পুরুষের হজ পালনের ক্ষেত্রে সবকিছু প্রায় একই থাকে তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে নারীদের আলাদা নির্দেশনা রয়েছে। নারীদের হজ-সফরের নিয়ম-বিধান রয়েছে অনেক। আপনারা যদি এই নিয়ম-বিধানগুলো সম্পূর্ন জানতে চান তাহলে নিচের অংশটিতে সম্পূর্ণ ভাবে নারীদের জন্য হজ্জের বিধি-বিধানসমূহ জানতে পারবেন। 

নারীদের জন্য হজ্জের বিধি-বিধানসমূহ 

নারীরা সামর্থ্যবান হলে তাদের ওপরও হজ্জ ফরজ। এখন কোন নারীর স্বামী বা পিতার যদি সামর্থ্য না থাকে তাহলে সে নিজে সামর্থবান হলে নিজের খরচেও হজ্জ আদায় করতে পারবেন। নারীদের হজ্জ ও ওমরাহ করার বিধান প্রায় একই রকম। তবে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে যেমন নারীরা সেলাইকৃত যেকোন রঙ্গের কাপড় পড়তে পারবে। তবে শাড়ি না হয়ে সালোয়ার কামিজ হওয়া সবচেয়ে ভালো। সেই সাথে মাথা ঢেকে রাখবে।

চেহারা ভালোভাবে ঢেকে রাখবে যেন কাপড় না লাগে। তালবিয়া পড়বে ধীরে ধীরে যেন তা অন্য পুরুষ শুনতে না পায়। নিজের সুবিধামত হাতমোজা, পামোজা, জুতা পরবে। যখন তাওয়াফের সময় হবে তখন রমল ও সাঈর সময় সবুজ দুই পিলারের মধ্যবর্তী স্থান দৌড়ে অতিক্রম করতে পারবে না। পর্দার জন্য নেকাব পরবে যেন চেহারা না দেখা যায় তবে খেয়াল রাখতে হবে কাপড় যেন গায়ের সাথে লেগে না যায়। মাঝেমধ্যে গেলেও সমস্যা নাই। পুরুষরা না থাকলে চেহারার ওপর থেকে কাপড় সরিয়ে নিতে পারবে।
১ ঘন্টার বেশি সময় যদি কোন নারীর কাপড় চেহারার সাথে লেগে থাকে কিন্তু ১২ ঘন্টার কম তাহলে তাকে ২ কেজি গম বা সেই পরিমান সদকা দিতে হবে। তবে ১২ ঘন্টার বেশি লাগাতার লেগে থাকলে ১ টি ছাগল বা দুম্বা জবেহ করা ওয়াজিব হবে। মহিলাদের যদি হজের দিন নামাজ না পড়ার ওজর থাকে তাহলে মিনা, আরাফা ও মুজদালিফার যে কাজগুলো রয়েছে সেগুলো আদায় করবে। শুধু তাওয়ায়াফে জিয়ারত করা স্থগিত থাকবে।

হজের কুরবানি দেওয়ার পরে নারীদের চুলের অগ্রভাগের ১ ইঞ্চি করে কেটে ফেলতে হবে। যদি কম বয়সী মেয়ে হয় তাহলে মাথার সব চুল কামানো যাবে। নারীদের চুল নিজ হাতে অথবা অন্য কোন নারী বা মাহরাম পুরুষের দ্বারা কাটতে হবে। নন মাহরাম পুরুষের দ্বারা কখনোই কাটা যাবে না। নারীদের যে নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে ওজর থাকলে সে তাওয়াফে জিয়ারত করতে পারে না, সেক্ষেত্রে যদি কাফেলারা রওনা দিয়ে দেই আর দেরি না করে ঐ অবস্থাতেই জিয়ারত করে নিতে হবে। তবে সেইজন্য একটি দুম্বা বা উট জবাই করে দিবে এবং তাওবা করে নিবে। কিন্তু কোনভাবেই তাওয়াফ জিয়ারত না করে আসা যাবে না। 

যদি কেউ তাওয়াফে জিয়ারত না করেই বাসায় চলে আসে তাকে পরবর্তীতে আবার জিয়ারত করতে হবে। যতদিন না সে জিয়ারত করবে ততদিন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিশেষ সম্পর্ক বৈধ হবে না। হজের সময় মাসিক পিল যদি স্বাস্থ্যের ক্ষতি না করে তাহলে খাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধ নেই। নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে মহিলাদের নির্দিষ্ট স্থানে নামাজ আদায় করতে হবে। তবে সেখানে যদি জায়গা না হয় তাহলে পুরুষদের পাশে একই জায়গায় নামাজ আদায় কারীর পাশে বসে থাকবে। 

নবী রাসুল (স) এর কবর জিয়ারত করতে অর্থাৎ সালাম পেশ করতে যাওয়া মুস্তাহাব। নারীদের এই জিনসটি মাথার রাখতে হবে যে তাদের অবশ্যই হজে যেতে হলে মাহরাম পুরুষদের সাথে যেতে হবে। যদি কেউ সারাজীবনে মাহরাম না পায় তাহলে বদলি হজের অসিয়ত করে যাবেন। তার মৃত্যুর পর তার অর্থে বদলি হজ করাতে হবে।

হজ্জে মহিলাদের পর্দা

একটি ভুল ধারণা অনেকের মধ্যেই প্রচলিত রয়েছে যে হজ্জে মহিলাদের পর্দা করতে হয় না। এটা আসলেই একটি ভুল ধারণা। মহিলাদের অবশ্যই পর্দা করতে হবে। ইহরামের সময় মুখমন্ডলে কাপড় লাগানো নিষেধ কিন্তু ইহরামের সময় মুখমন্ডলে কাপড় লাগানো আর গায়রে মাহরামের সামনে ইচ্ছে করে মুখ খোলা রাখা আরেক বিষয়। "হযরত আয়েশা রা. বলেন, ইহরামের হালতে আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে ছিলাম। লোকেরা যখন আমাদের নিকট দিয়ে অতিক্রম করত তো আমরা আমাদের চাদর মাথার সামনে ঝুলিয়ে দিতাম। চলে যাওয়ার পর সরিয়ে ফেলতাম।" -সুনানে আবু দাউদ।

মহিলা হাজীদের কি বলে

মহিলা হাজীদের কি বলে তা কি আপনারা জানেন। হজ্জ পালন করা মহিলাদের সৌদি আরবে একটি সম্মানিত নামে ডাকা বা অবিহিত করা হয়। সৌদি আরবে যেসব নারীরা হজ্জ করে তাদের বলা হয় "মা হাজি"।

আশা করি আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েছেন এবং নারীদের জন্য হজ্জের বিধি-বিধানসমূহ জানতে পেরেছেন। আর্টিকেলটি পড়ে নারীদের জন্য হজ্জের বিধি-বিধানসমূহ ছাড়াও মহিলা হাজীদের কি বলে, হজ্জে মহিলাদের পর্দা ইত্যাদি বিষয় জানতে পেরেছেন। আশা করি এসকল তথ্যগুলো আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। তাই এধরণের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেশি বেশি জানতে ও পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন, ধন্যবাদ। 21021.

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url