OrdinaryITPostAd

শাবান মাসের রোজা কয়টি - শাবান মাসে রোজা রাখার ০৭টি ফজিলত

প্রিয় বন্ধুরা শাবান মাসের রোজা কয়টি? এ বিষয়ে জানতে চান? তাহলে সঠিক জায়গাতেই এসেছেন। আমরা জানি যে শাবান মাস অনেক ফজিলতপূর্ণ এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। শাবান মাসের রোজা কয়টি এ বিষয়ে জানা থাকলে আমরা শাবান মাসে রোজা পালন করতে পারব। আপনাদের সুবিধার্থে শাবান মাসের রোজা কয়টি তা আলোচনা করা হলো।

শাবান মাসে রোজা কয়টি

কনটেন্ট সূচিপত্রঃ শাবান মাসের রোজা কয়টি - শাবান মাসে রোজা রাখার ফজিলত

শাবান মাসের রোজা কয়টি - শাবান মাসে রোজা রাখার ফজিলতঃ ভূমিকা

শাবান মাসের আমল গুলোর মধ্যে রোজা রাখা অন্যতম একটি। আমাদের সবার প্রিয় নবী সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ শাবান মাসে রোজা রাখতেন। সেই সময় থেকেই আমরা হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর উম্মত হিসেবে শাবান মাসে রোজা পালন করি। শাবান মাসে রোজা পালন করার অনেক গুরুত্ব এবং ফজিলত রয়েছে। অনেকেই জানে না শাবান মাসের রোজা কয়টি?

আরো পড়ুনঃ শবে বরাতের নামাজের নিয়ম - শবে বরাতের নামাজ কিভাবে পড়তে হয়

আমরা যদি শাবান মাসের রোজা কয়টি? এ বিষয় সম্পর্কে জানি এবং শাবান মাসে রোজা রাখার ফজিলত সম্পর্কে জানতে হলে খুব সহজেই এই ইবাদতগুলো করতে পারব। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ শাবান মাসে রোজা রাখতেন নবীজির সুন্নত হিসেবে আমাদের রোজা রাখা উচিত।

শাবান মাসের ফজিলত

আরবি বছরের অষ্টম মাস হল শাবান মাস। শাবান মাসের ফজিলত রয়েছে। শাবান মাসের এবাদত গুলো নফল ইবাদত নামে পরিচিত। একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের অবসর নফল ইবাদত সম্পর্কে জানা উচিত। কারণ কিয়ামতের দিন ফরজ ইবাদতের যখন ঘাটতি পরবে তখন আল্লাহ তা'আলা নফল এর মধ্য দিয়ে তা পূরণ করে দেবেন। আমাদের জীবনের নফল ইবাদত এর গুরুত্ব রয়েছে অনেক।

হযরত আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ শাবানের পূর্ণ মাসই রোজা রাখতেন। তিনি সামান্য রোজা রাখতেন তবে অল্প কিছুদিন। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ শাবান মাসের সবথেকে বেশি নফল ইবাদত করতেন। ইসলামের ভাষ্য অনুযায়ী রজব মাস হলো আল্লাহতালার মাস, শাবান মাস হলো নবীজির সাঃ এর মাস এবং রমজান মাস হল উম্মতের মাস।

হযরত আয়েশা রাঃ বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাঃ রোজার রাখতে থাকতেন যাতে আমরা বলতাম যে তিনি শাবান মাসে আর রোজা ছাড়বেন না। আবার তিনি রোজা ভাঙতে শুরু করতেন যাতে আমরা বলতাম যে তিনি শাবান মাসে আর রোজা রাখবেন না। আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে রমজান মাস ছাড়া আর কখনো সম্পূর্ণ রোজা রাখতে দেখিনি এবং শাবান মাস ছাড়া কোন মাসে এত বেশি রোজা রাখতে দেখিনি।

হযরত আনাস রাঃ হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাঃ আমাকে বলেছেন, "যদি পারো এভাবে সকাল সন্ধ্যা পার কর যেন তোমার অন্তরে কারো প্রতি হিংসা না থাকে, তবে তাই করো" এরপর বলেন, "এটাই আমার সুন্নত আদর্শ, যে ব্যক্তি আমার সুন্নত অনুসরণ করল সে প্রকৃতপক্ষে আমাকে ভালোবাসলো, যে আমাকে ভালবাসল সে জান্নাতে আমার সঙ্গেই থাকবে"{তিরমিজি শরীফঃ ৩৬}

রমজান মাসের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে শাবান মাসের তারিখের হিসাব রাখা বিশেষ জরুরি এটি একটি সুন্নত। নবীজি সাঃ বলেন, "তোমরা রমজানের জন্য শাবানের চাঁদের হিসাব রাখো।"{সিলসিলাতুস সহিহাহ} সম্ভব হলে নতুন চাঁদ দেখা সুন্নত, চাঁদ দেখে নতুন চাঁদের দোয়া পড়া সুন্নত, চন্দ্র মাসের তারিখের হিসাব রাখা ফরজে কিফায়া। কারণ ইসলামের বিধিবিধান গুলো চাঁদের তারিখের সাথে সম্পর্কযুক্ত।

শাবান মাসে করণীয়

যেহেতু শাবান মাস আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস তাই শাবান মাসে করনীয় রয়েছে অনেক কিছুই। আমরা যদি শাবান মাস থেকে ইবাদতের সাথে পালন করতে পারি তাহলে নফল ইবাদত গুলো আমাদের আমলনামায় যুক্ত হবে। তার জন্য আমাদের শাবান মাসের রোজা কয়টি? এ বিষয়ে সম্পর্কে জানতে হবে।

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ রমজান মাসের সকল রোজা পালন করতেন এবং শাবান মাসে থেকে অন্য কোন মাসে বেশি রোজা পালন করতেন না। কারণ শাবান মাসে যে সকল রোজা পালন করতেন সেগুলো নফল রোজার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। তাই আমাদের প্রথম করণীয় হলো শাবান মাসে অতিরিক্ত নফল রোজা রাখা।

আরো পড়ুনঃ ঈদুল ফিতর ২০২৩ কত তারিখ বাংলাদেশ - ২০২৩ সালে রোজার ঈদ

এছাড়া সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ রজব মাসের শুরু থেকেই রজব ও শাবান মাসব্যাপী রোজা পালন করতেন। আল্লাহর কাছে এই দুই মাসের বরকত কামনা করতেন এবং রমজান মাসের জন্য হায়াত বৃদ্ধির দোয়া করতেন। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ শাবান মাসে আল্লাহতালার কাছে এই দোয়াটি করতেন এবং আমাদেরও করা উচিত।

আরবিঃ اَللَّهُمَّ بَارَكْ لَنَا فِىْ شَعْبَانَ وَ بَلِّغْنَا رَمَضَان

বাংলা উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা বারাকলানা ফি শাবান ওয়া বাল্লিগনা রামাদান

বাংলা অর্থঃ হে আল্লাহ! শাবান মাস কে আমাদের জন্য বরকতময় করুন এবং আমাদেরকে রমজানের পৌঁছে দিন।

শাবান মাসের রোজা কয়টি

শাবান মাসের রোজা কয়টি? এর কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা নেই। এক সাহাবী হতে বর্ণিত, নবী সাঃ এক ব্যক্তি থেকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি এই মাসের মধ্যভাগে কিছু রোজা রেখেছিলে? সে বলল, না। রাসুলুল্লাহ সাঃ বললেন, তুমি তারপরে রমজানের রোজা শেষ করে দুইটি রোজা রাখবে। {সহিহ মুসলিমঃ ২৬৪২} রমজান মাস শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগে থেকেই রোজা রাখার প্রয়োজন নেই।

এক হাদীসে মাসের অর্ধেক হলেই রোজা না রাখার কথা বর্ণিত হয়েছে। সেই দিনগুলোই রমজানের রোজার প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে কোন ব্যক্তি যদি সপ্তাহের সুন্নাত রোজা পালন করতে অভ্যস্ত হয়ে থাকে তাহলে সে ধারাবাহিক রক্ষা করার জন্য রোজা পালন করতে পারে। রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, "শাবান মাসের অর্ধেক অবিবাহিত হলে তোমরা রোজা রাখবে না"{সুনানে আবু দাউদঃ ২৩৩৭}

শাবান মাসে নবীজি রোজা পালন করতেন। কবর জিয়ারত করতেন। আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করতেন। বিশেষ করে অন্যান্য আরবি মাস গুলোর মত মধ্য শাবানে আইয়ামে বিজের রোজা পালন করার পাশাপাশি লাইলাতুল বরাত উদযাপন করতেন এবং লাইলাতুল বরাত উপলক্ষে রোজা ও ইবাদত পালন করতেন।

সাপ্তাহিক রোজা - সোমবার, নবীজির জন্মদিন উপলক্ষে দোয়া এবং বৃহস্পতিবার এই দিন আল্লাহর কাছে বান্দার সাপ্তাহিক আমলনামা পেশ করা হয়।

মাসিক রোজা - প্রতি চন্দ্র মাসের - ১, ১০, ২০, ২৯ এবং ৩০ তারিখে নফল রোজা পালন করতেন। কোন সময় ও দিন তারিখ নির্ধারণ ছাড়া যত বেশি নফল ইবাদত করা যায়। আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জন খুব দ্রুত হয়ে যায় অতিরিক্ত নফল রোজা পালন করার মাধ্যমে।

শাবান মাসে রোজা রাখার ফজিলত

নফল ইবাদতের মধ্যে রোজা অন্যতম। আল্লাহতায়ালার নৈকট্য অর্জনের জন্য ফরজ-ওয়াজিব নয় এমন রোজা পালনকেই নফল রোজা বলা হয়। নফল রোজার অনেক বড় ফজিলত ও সওয়াব রয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত এক হাদিসে কুদসিতে এসেছে, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, আদম সন্তানের প্রতিটি আমলের সওয়াব দ্বিগুণ করে দেওয়া হয়।

পুণ্যকর্মের সওয়াব দশগুণ থেকে সাতশ গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। আল্লাহতায়ালা বলেন, তবে রোজা ব্যতীত। কারণ রোজা আমার আর আমিই এর প্রতিদান দিই। {সহিহ বোখারি ও মুসলিম} শাবান মাসকে নবী করিম সাঃ শাবান আমার মাস বলে অবহিত করেছিলেন।

নবীজী সাঃ শাবান মাস থেকেই রমজানের প্রস্তুতি নিতেন। রজব ও শাবানজুড়েই তিনি রমজানের অধীর অপেক্ষায় থাকতেন। রজব মাসের শুরু থেকেই রাসূলুল্লাহ সাঃ দোয়া করতেন, "আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রাজাবা ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগনা রামাজান"

এর অর্থ হলো হে আল্লাহ! আপনি আমাদের রজব ও শাবান মাসে বরকত দিন এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন রমজান পর্যন্ত হায়াত বৃদ্ধি করুন। রমজানের আগমনের জন্য মহানবী সাঃ দিনক্ষণ গণনা করতেন। আম্মাজান হজরত আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত,  রাসূলুল্লাহ সাঃ শাবান মাসের (দিন-তারিখের হিসাবের) প্রতি এত অধিক লক্ষ্য রাখতেন, যা অন্য মাসের ক্ষেত্রে রাখতেন না। {সুনানে আবু দাউদঃ ২৩২৫}

আরো পড়ুনঃ শাবান মাসের রোজা কয়টি - শাবান মাসে রোজা রাখার নিয়ম

নবী করিম সাঃ শাবান মাসে অধিকহারে নফল রোজা রাখতেন। হজরত উম্মে সালমা (রা.) বলেন, আমি হজরত রাসূলুল্লাহ সাঃ কে শাবান ও রমজান মাস ছাড়া অন্য কোনো দুই মাস একাধারে রোজা রাখতে দেখিনি। {সুনানে আবু দাউদ}

হজরত আয়েশা রাঃ বলেন, আমি নবী করিম সাঃ কে শাবান মাসের মতো এত অধিক নফল পরিমাণে রোজা করতেন যা অন্যকোনো মাসে রাখতে দেখিনি। এ মাসের সামান্য কয়েক দিন ছাড়া সারা মাসই তিনি রোজা রাখতেন। {সুনানে তিরমিজিঃ ৭৩৭} আশা করি শাবান মাসের রোজা কয়টি? এবং শাবান মাসে রোজা রাখার ফজিলত সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

শাবান মাসের রোজা কয়টি - শাবান মাসে রোজা রাখার ফজিলতঃ উপসংহার

শাবান মাস ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। আগামী ২২ তারিখ থেকে শুরু হতে চলেছে শাবান মাস। যারা শাবান মাসের রোজা কয়টি? এবং শাবান মাসে রোজা রাখার ফজিলত জানেনা তারা উপরে আলোচনাগুলো মনোযোগ সহকারে পড়ে নিন এবং যত বেশি নফল ইবাদত করতে পারেন করতে থাকুন। যত বেশি নফল ইবাদত করবেন আপনার সওয়াব এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।

আপনাদের বিষয়গুলো জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত। আপনার এবং আপনার পরিবারের সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি। ২০৮৭৬

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url