OrdinaryITPostAd

মহররম মাসের ১০ তারিখের ফজিলত - মহররম মাসের ফজিলত ও আমল

মুহাররম মাস আরবি বছরের প্রথম মাস। এই মাসের আমাদের এই সুন্দর পৃথীবিকে মহান আল্লাহ্‌ তায়ালা সৃষ্টি করেছিলেন আবার এই মাসেই মহান আল্লাহ্‌ তায়ালা আমাদের এই সুন্দর পৃথীবিকে ধ্বংস করে দিবেন। আবার এই মাসেই কারবালার প্রান্তরে হাসান হুসাইনের শহীদি মৃত্যু হয়। আজ আমরা আমাদের এই পোস্টে মহররম মাসের ১০ তারিখের ফজিলত, মহররম মাসের ফজিলত ও আমল, মুহাররম মাসের আমল, মুহাররমের তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করব।

চলুন আর দেরি না করে জেনে নেই মহররম মাসের ১০ তারিখের ফজিলত, মহররম মাসের ফজিলত ও আমল, মুহাররম মাসের আমল, মুহাররমের তাৎপর্য সম্পর্কে বিস্তারিত।

পেজ সূচিপত্রঃ মহররম মাসের ১০ তারিখের ফজিলত - মহররম মাসের ফজিলত ও আমল

মুহাররম কাকে বলে? | মহররম মাসের ১০ তারিখের ফজিলত

মুহাররম আরবি শব্দ যার অর্থ হল পবিত্র ও সম্মানিত। মুহাররম মাসের ১০ তারিখ একটি বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ দিন। এই দিনকে আশুরা বলে। হিজরী বছরের এই পবিত্র মাসে মহান আল্লাহ্‌ তায়ালা এই সুন্দর পৃথীবিকে সৃষ্টি করেছেন, আবার এই পবিত্র মাসেই মহান আল্লাহ্‌ তায়ালা এই সুন্দর পৃথীবিকে ধ্বংস করবেন। এছাড়াও এই পবিত্র মাসেই হাসান-হুসাইনের কারবালার প্রান্তরে শহীদি মৃত্যু হয়। এছাড়াও আরও অনেক ধরনের বিশেষ ইতিহাসেরও সাক্ষী এই মাস।

আশুরা ইংরেজী মাসের কত তারিখে?

আরবি মুহাররম মাসের ১০ তারিখে আশুরা পালিত হয়। এই বছর ইংরেজী আগস্ট মাসের ৮ তারিখ পবিত্র আশুরা পালিত হবে।

মহররম মাসের ১০ তারিখের ফজিলত

মহররম মাসের ১০ তারিখ পবিত্র আশুরা। এই দিনের ফজিলত অনেক। এই দিনেই আদম (আ.)-এর সৃষ্টি, স্থিতি, উত্থান ও পৃথিবীতে অবতরণসব ঘটনাই ঘটেছে। আবার এই দিনের কিয়ামত হওয়ার কথা মহানপবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বর্ণনা করেছেন। তাই এই দিনে মহানবী (সাঃ) তার সকল উম্মাতদের রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। মহানবী (সাঃ) তার উম্মাতদের আশুরার ২ টি রোজা রাখার কথা বলেছেন। এই দুইদিন হল মহাররমের ৯ ও ১০ তারিখ। কিন্তু যদি কোন কারণে ৯ তারিখ রোজা না রাখতে পারেন তাহলে ১০, ১১ তারিখ রোজা রাখার নির্দেশ আছে।

আরও পড়ুনঃ মহররম কত তারিখে ২০২২

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন- মহররম মাসের ১০ তারিখে রোজা রাখলে পূর্ববতী ১ বছরের সকল সগীরা গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। কারণ রমজান মাসের পর আশুরার রোজা হল সর্বোত্তম। ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেছেন- আমি মহানবী (সাঃ) কে আশুরার দিনের রোজার থেকে অন্য কোন দিনের রোজাকে বেশী গুরুত্ব প্রদান করতে দেখিনি। 

মুহাররম মাসের আমল | মহররম মাসের ফজিলত ও আমল | মহররম মাসের ১০ তারিখের ফজিলত

হিজরি বছরের সম্মানিত মাস আছে মোট ৪টি যার মধ্যে একটি মুহাররম মাস। রমজান মাসের পর রোজা রাখার জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ মাস হিসেবে মুহাররম মাসকে বিবেচনা করা হয়। এই মাস মহান আল্লাহ্‌ তায়ালার মাস হিসাবে পরিচিত। এই মাসের তথা মহাররমের ১০ তারিখের কিছু ফজিলত আছে। এই মাসে তওবা, রোজা, ইস্তেগফারের প্রতি বেশী উৎসাহিত করা হয়েছে। চলুন মহাররম মাসের আমল সম্পর্কে জেনে নেই।

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে- মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন "রমজান মাসের পর রোজার জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ মাস মুহাররম মাস বা আল্লাহ্‌র মাস"। আর ফরজ নামাজের থেকে সবচেয়ে উত্তম নামাজ হল রাত্রিকালীন নামাজ। (মুসলিম)

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তার উম্মাতদের এই মাসের ১০ তারিখে বিশেষ আমল করতে বলেছেন। এবং মুহাররমের ১০ তারিখে রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। হাদিসে বলা হয়েছে- মহানবী (সাঃ) মদিনায় হিজরতের পরে দেখেন যে ইয়াহুদিরা হযরত মূসা (আঃ) এর মুক্তির জন্য এই দিনে রোজা রাখছে। তখন তিনি কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা বলেন-

هَذَا يَوْمٌ عَظِيمٌ أَنْجَى اللهُ فِيْهِ مُوْسَى وَقَوْمَهُ وَغَرَّقَ فِرْعَوْنَ وَقَوْمَهُ فَصَامَهُ مُوْسَى شُكْرًا فَنَحْنُ نَصُوْمُهُ. فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَنَحْنُ أَحَقُّ وَأَوْلَى بِمُوْسَى مِنْكُمْ. فَصَامَهُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ

 এই দিনটি মহান দিন। এই দিনে হযরত মূসা (আঃ) রোজা রেখেছেন এবং এই দিনে মূসা (আঃ) ফিরাউন ও তার দলবলকে নদীতে ডুবিয়ে মেরেছেন। তাই তারা শুকরিইয়া আদায়ের জন্য এই দিনে রোজা রাখেন। তখন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন, হযরত মূসা (আঃ) কে অনুসরন করার ব্যাপারে তোমাদের চেয়ে বেশী হকদার আমরা। তাই মহানবী (সাঃ) সেদিন নিজে রোজা রেখেছেন এবং আমাদের সকলকে মহাররমের এই  তারিখে রোজা রাখতে বলেছেন।

আরও পড়ুনঃ বাংলা ইংরেজি আরবি মাসের কত তারিখ আজ ২০২২

মহাবনী (সাঃ) এই আশুরার দিনে আমাদের  দিন রোজা রাখতে বলেছেন। কারণ ইয়াহুদিরা ১ দিন রোজা রাখে। তাই আমারা যেন তাদের অনুসরণ না করি। আমাদের মহানবী ইয়াহুদিদের থেকে ব্যাতিক্রম করতে বলেছেন তাই য়ামাদের ২ দিন রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)। 

১০ই মুহাররম মাসকে বিজয়ের মাস বলা হয় কারণ এই মাসের ১০ তারিখে মহান আল্লাহ্‌ তায়ালা তার রাসূল হযরত মূসা (আঃ) কে তার সঙ্গী বনি ইসরাইলকে ফেরাউনের আক্রমন থেকে রক্ষা করেছিলেন এবং ফেরাউন ও তার দলবল নীলনদে ডুবে মারা যায়।

মুহাররমের তাৎপর্য | মহররম মাসের ১০ তারিখের ফজিলত

হিজরি বছরের প্রথন ও সর্বশ্রেষ্ঠ মাস মুহাররম মাস। এই মাসকে সম্মানিত ও হারাম মাস বলা হয়েছে। কারন আই মাসে সকল প্রকার যুদ্ধ-বিগ্রহ করা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। আরবি বছরের ১২টি মাসের মধ্যে ৪ টি মাসকে উত্তম  বলা হয়েছে তার মধ্যে মহাররম মাস অন্যতম। আরবি মুহাররম মাসের ১০ তারিখ পবিত্র আশুরা। এই দিনেই আদম (আ.)-এর সৃষ্টি, স্থিতি, উত্থান ও পৃথিবীতে অবতরণসব ঘটনাই ঘটেছিল। আবার এই দিনেই হাসান-হুসাইনের শহীদি মৃত্যু হয়েছিল। 

আবার এই দিনেই মহান আল্লাহ্‌ তায়ালা, হযরত মূসা (আঃ) তার সঙ্গী বনী ইসরাইলকে ফেরাউনের কবল থেকে রক্ষা করেছিলেন ও ফেরাউন তার দলবল সহ নীলনদে ডুবে মারা যান। এই দিনেই হযরত নূহ (আঃ) নৌযানে করে যাত্রা আরম্ভ করেছিলেন এবং বন্যা ও প্লাবন এর সমাপ্তি হয়েছিল। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এই দিনেই কিয়ামত হওয়ার কথা বলেছেন। তাই মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এই দিনে সকলকে বেশী বেশী ইস্তেগফার, রোজা, নামাজ পড়তেন এবং সকলকে পড়ার কথা বলেছেন।

আশুরার দিনে রোজা রাখার উদ্দেশ্য | মহররম মাসের ১০ তারিখের ফজিলত

মহররম মাসের ১০ তারিখ পবিত্র আশুরা পালিত হয়। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এই মাসের ৯,১০,১১ তারিখ রোজা রাখতে বলেছেন। যদি কেউ ৩ টা রোজা রাখতে না পারে তাহলে ৯,১০ তারিখ অথবা ১০,১১ তারিখ রোজা রাখার কথা বলেছেন। এই দিনে অত্যাচারী পাপিষ্ঠ ফেরাঊন ও তার দলবল মহান আল্লাহ্‌ তায়ালার প্রিয় নবী মূসা (আঃ) কে হত্যার ষড়যন্ত্র করে। কিন্তু মহান আল্লাহ্‌ তায়ালার বিশেষ রহমতে হযরত মূসা (আঃ) ও বনী সম্প্রদায় ফেরাঊনের হাত থেকে রক্ষা পায় ও ফেরাউন ও তার দলবল নলনদে ডুবে মারা যায়।

আরও পড়ুনঃ আশুরার রোজা ২০২২

হযরত মূসা (আঃ) মহান আল্লাহ্‌ তায়ালার শুক্রিয়া আদায়ের জন্য এই দিনে রোজা রাখেন, মহানবী (সাঃ) ও হযরত মূসা (আঃ) এর তাওহীদী আদর্শের সনিষ্ঠ অনুসারী হিসাবে এই দিনে রোজা রাখেন এবং তার উম্মতদেরও এই দিনে রোজা রাখতে বলেছেন। কিন্তু ইহুদিরা শুধুমাত্র মহররম মাসের ১০ তারিখ রোজা রাখতেন তাই মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এই ১০ তারিখে সাথে আগের ও পরের যেকোন একটি তারিখেও রোজা রাখতে বলেছেন যাতে করে তার উম্মতদের ইয়াহুদিদের সাথে মিল না হয়।

শেষ কথাঃ মহররম মাসের ১০ তারিখের ফজিলত - মহররম মাসের ফজিলত ও আমল

বন্ধুরা, আজ আমরা মহররম মাসের ১০ তারিখের ফজিলত - মহররম মাসের ফজিলত ও আমল নিয়ে একটি পোস্ট তৈরি করেছি। আমাদের এই পোস্টে মহররম মাসের ১০ তারিখের ফজিলত, মহররম মাসের ফজিলত ও আমল, মুহাররম মাসের আমল, মুহাররমের তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

আশাকরি, আমাদের এই মহররম মাসের ১০ তারিখের ফজিলত, মহররম মাসের ফজিলত ও আমল, মুহাররম মাসের আমল, মুহাররমের তাৎপর্য পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগবে এবং আপনারা উপকৃত হবেন। এরকম আরও সুন্দর সুন্দর নতুন পোস্ট পেতে আমাদের সঙ্গেই থাকুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url