এক্সেল অ্যাকাউন্টিং শেখার সহজ উপায়
এক্সেল অ্যাকাউন্টিং শেখার সহজ উপায় জানতে চান? এক্সেল এর কাজ ও শেখার নিয়ম
বুঝতে পারলে আপনি খুব সহজেই নিজের ব্যবসা, চাকরি কিংবা ব্যক্তিগত
হিসাব-নিকাশে ব্যবহার করতে পারবেন। এই ব্লগে আমি ধাপে ধাপে এমনভাবে আলোচনা করবো
যাতে নতুনরাও সহজে বুঝতে পারে।
আমার এই লেখায় আপনি শিখতে পারবেন কীভাবে এক্সেলে অ্যাকাউন্টিং শুরু করবেন, কোন
কোন ফাংশন ব্যবহার করবেন, টেবিল বানাবেন, এবং সহজ ফর্মুলা দিয়ে হিসাব করবেন।
অর্থাৎ এই গাইড পড়ে আপনি এক্সেল অ্যাকাউন্টিং শেখার একটি পূর্ণাঙ্গ ধারণা পাবেন
যা আপনার কাজকে আরও সহজ করে তুলবে।
পেজ সূচিপত্রঃএক্সেল অ্যাকাউন্টিং শেখার সহজ উপায়
- এক্সেল অ্যাকাউন্টিং শেখার সহজ উপায়
- এক্সেল অ্যাকাউন্টিং কি ও শেখার গুরুত্ব
- এক্সেল অ্যাকাউন্টিং দিয়ে কি কি করা যায়
- এক্সেল এ ডেটা এন্ট্রি করার নিয়ম
- এক্সেল ফর্মুলা শেখার নিয়ম
- এক্সেলে SUM ফাংশন কিভাবে ব্যবহার করবেন
- এক্সেলে IF ফাংশন এর ব্যবহার
- এক্সেলে AVERAGE ফাংশন শেখার উপায়
- এক্সেল শর্টকাট কী লিস্ট
- লেখকের মন্তব্যঃএক্সেল অ্যাকাউন্টিং শেখার সহজ উপায়
এক্সেল অ্যাকাউন্টিং শেখার সহজ উপায়
এক্সেল অ্যাকাউন্টিং শেখার সহজ উপায় বর্তমান সময়ে জানা অত্যন্ত জরুরি। কারণ
এটি আপনার প্রতিদিনের হিসাব-নিকাশকে অনায়াসেই সহজ, সঠিক এবং দ্রুত করে দিতে
পারে। এক্সেল শেখা আসলে অনেকটা খাতা-কলমে হিসাব করার মতোই শুধু এখানে সবকিছু
ডিজিটাল ওয়েতে হয়। প্রথমেই আপনাকে এক্সেল এর বেসিক অংশগুলো চিনতে হবে।
এক্সেলের পাতা আসলে অনেকগুলো Row আর কলাম Column দিয়ে তৈরি যেগুলোর মিলিত
অংশকে সেল Cell বলে। প্রতিটি সেল হলো একটা ছোট ঘর যেখানে আপনি নাম, তারিখ,
সংখ্যা বা যে কোনো তথ্য লিখতে পারবেন। শুরুতে একটা নতুন শীট বানিয়ে খরচের
হিসাব লিখে দেখুন যেমন তারিখ, খরচের নাম, কত টাকা খরচ হলো ইত্যাদি। এরপর মোট
যোগফল বের করতে =SUM ফাংশন ব্যবহার করুন। এতে সহজেই যোগফল পেয়ে যাবেন যেমন
খাতায় সব যোগ করেন।
এক্সেলে শেখার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো ফর্মুলা ব্যবহার করা। শুরুতে শুধু
কয়েকটা দরকারি ফাংশন শিখলেই চলবে যেমন SUM যোগফল, AVERAGE গড়, IF শর্ত দিয়ে
হিসাব আর VLOOKUP তালিকা থেকে তথ্য খুঁজে আনা। প্রতিদিন ছোট ছোট টেবিল বানিয়ে
এই ফাংশনগুলো ব্যবহার করে প্র্যাকটিস করলে হাত পাকবে। ধরুন আজকের আয় ও খরচ
লিখে রাখলেন, তাহলে খরচ বাদ দিয়ে কত টাকা বাকি রইল তা বের করার জন্য একটি সহজ
সূত্র লিখে ফেলতে পারেন।
এভাবে প্রতিদিনের লেনদেন লিখে রাখলে আপনি আস্তে আস্তে পুরো অ্যাকাউন্টিং
সিস্টেম তৈরি করতে পারবেন। শুধু টেবিল নাএক্সেলে ডেটা আরও সুন্দরভাবে
উপস্থাপন করার জন্য গ্রাফ ও চার্ট আছে। যখন খরচ বা আয়ের হিসাব অনেক হবে তখন
চার্ট ব্যবহার করলে সহজে বোঝা যাবে কোন খাতে বেশি খরচ হচ্ছে বা কোন মাসে বেশি
আয় হয়েছে। সবকিছু শিখতে হলে প্রতিদিন ২০-৩০ মিনিট এক্সেলে প্র্যাকটিস করতে
থাকুন।
আরো পড়ুনঃ
বাংলাদেশে এসইও করে টাকা ইনকাম
প্রথম কয়েকদিন শুধু লিখতে শিখুন, এরপর সহজ ফর্মুলা ব্যবহার করুন, ধীরে ধীরে
টেবিল, ফিল্টার, চার্ট আর রিপোর্ট বানানো শিখবেন। ইউটিউব বা অনলাইন ফ্রি
টিউটোরিয়াল দেখে অনুশীলন করলে আরও সহজ লাগবে। এক্সেল অ্যাকাউন্টিং শেখা
অনেকটা ধাপে ধাপে হাঁটার মতো আগে হাঁটতে শিখবেন, তারপর দৌড়াবেন। তাই একেবারে
বেসিক থেকে ধীরে ধীরে এগোলে আপনি খুব সহজেই পুরো এক্সেল অ্যাকাউন্টিং আয়ত্ত
করতে পারবেন।
এক্সেল অ্যাকাউন্টিং কি ও শেখার গুরুত্ব
এক্সেল অ্যাকাউন্টিং হলো মাইক্রোসফট এক্সেল সফটওয়্যার ব্যবহার করে
আয়-ব্যয়, খরচ, লাভ-লোকসান, বাজেট এবং বিভিন্ন আর্থিক তথ্য সঠিকভাবে হিসাব
করার একটি আধুনিক ও সহজ পদ্ধতি। সহজভাবে এক্সেলকে ডিজিটাল খাতা বা লেজার বলা
হয় যেখানে সারি ও কলামের মাধ্যমে টেবিল তৈরি করে প্রতিদিনের লেনদেন সংরক্ষণ
করা যায়।
এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো বিভিন্ন ফর্মুলা ব্যবহার করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে
ফলাফল বের করা। যেমন মাসজুড়ে দৈনিক খরচ লিখলে মাত্র একটি ফর্মুলার সাহায্যে
মোট খরচ, গড় খরচ কিংবা নির্দিষ্ট কোনো খাতে কত ব্যয় হয়েছে তা কয়েক
সেকেন্ডেই বের করা সম্ভব।
এক্সেল অ্যাকাউন্টিং শেখার গুরুত্ব অনেক। এটি একটি সাশ্রয়ী সমাধান কারণ
আলাদা কোনো দামি সফটওয়্যারের প্রয়োজন হয় না। এর মাধ্যমে দ্রুত ও
নির্ভুলভাবে হিসাব-নিকাশ করা যায় যা আপনার সময় বাঁচাবে এবং ভুলের সম্ভাবনাও
কমাবে। পিভট টেবিল, চার্ট ও গ্রাফের মাধ্যমে সহজে ডেটা বিশ্লেষণ করতে পাররবন
ফলে কোন খাতে আয়-ব্যয় বেশি হচ্ছে তা বোঝা যায়।
এছাড়াও ব্যক্তিগত বাজেট ম্যানেজমেন্ট থেকে শুরু করে ছোট ব্যবসার হিসাব কিংবা
বড় প্রতিষ্ঠানের রিপোর্ট তৈরি সব ক্ষেত্রেই এক্সেল সমানভাবে কাজ করে। এক্সেল
দক্ষতা চাকরির বাজারেও গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে অ্যাকাউন্টস, ফাইন্যান্স,
ডেটা অ্যানালাইসিসসহ বিভিন্ন পেশায় এক্সেল জ্ঞান একটি অতিরিক্ত যোগ্যতা
হিসেবে ধরা হয়। নিয়মিত এক্সেলে হিসাব রাখলে খরচ কোথায় হচ্ছে তা সহজে বোঝা
যায় এবং বাজেট ম্যানেজমেন্ট করাও সহজ ও স্বচ্ছল হয়।
এক্সেল অ্যাকাউন্টিং দিয়ে কি কি করা যায়
এক্সেল অ্যাকাউন্টিং দিয়ে অসংখ্য কাজ করা যায় যা আপনার ব্যক্তিগত থেকে শুরু
করে ব্যবসায়িক সব ধরনের হিসাব-নিকাশ সহজে করা সম্ভব। এক্সেল অ্যাকাউন্টিং এর
মাধ্যমে আয়-ব্যয়ের হিসাব রাখা যায়। আপনার মাসজুড়ে দৈনিক খরচ লিখে সহজে
মোট খরচ ও গড় ব্যয় বের করতে পারবেন। এটি দিয়ে বাজেট তৈরি ও ব্যালেন্স
ট্র্যাকিং করা যায়। ধরুন আপনি একটি নির্দিষ্ট খাতে কত টাকা খরচ করতে চান
সেটি এক্সেলে লিখে রাখলে খরচ বেড়ে গেলে তা আপনি সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারবেন।
এক্সেল দিয়ে ছোট ব্যবসা থেকে বড় প্রতিষ্ঠানের লাভ-লোকসান রিপোর্ট তৈরি করা
যায়। বিক্রি, কেনাকাটা, বেতন কিংবা খরচের হিসাব এক জায়গায় রেখে মাত্র
কয়েকটি ফর্মুলা ব্যবহার করলেই রিপোর্ট বের হয়ে যায়। এছাড়া ইনভয়েস, বেতন
শীট ও বিল তৈরি করতেও এক্সেল ব্যবহৃত হয়। অনেক সময় এক্সেলে তৈরি ডেটা দিয়ে
চার্ট বা গ্রাফ বানিয়ে আর্থিক অবস্থা ভিজ্যুয়ালি সহজে বুঝতে পারবেন যা
বিশ্লেষণ করা খুব সাহায্য হয়।
তাছাড়া এক্সেল অ্যাকাউন্টিং দিয়ে স্টক ম্যানেজমেন্ট করা সম্ভব। কোন পণ্য কত
পরিমাণে আছে, কত বিক্রি হলো বা কত অর্ডার করতে হবে এসব সহজে ট্র্যাক করা
যায়। সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এক্সেল এমন একটি টুল যা দিয়ে ফাইন্যান্সিয়াল
অ্যানালাইসিস, পূর্বাভাস এবং ভবিষ্যৎ বাজেট প্ল্যানিং করা সম্ভব। সঠিকভাবে
ব্যবহার করতে পারলে এটি আপনার আর্থিক সিদ্ধান্ত গ্রহণকে সহজ, দ্রুত ও নির্ভুল
করতে সাহায্য করবে।
এক্সেল এ ডেটা এন্ট্রি করার নিয়ম
এক্সেল অ্যাকাউন্টিং শেখার সহজ উপায় হলো এক্সেলে ডেটা এন্ট্রি করা খুবই সহজ
তবে কিছু নিয়ম মানলে কাজ আরও সঠিক ও দ্রুত হয়। প্রথমে এক্সেল খুলে নতুন
একটি Worksheet ওপেন করুন। প্রতিটি শীটে Row এবং Column থাকে যেখানে সারি
সংখ্যার মাধ্যমে এবং কলাম অক্ষরের মাধ্যমে চিহ্নিত করতে হয়। প্রতিটি সারি ও
কলামের মিলনস্থলকে Cell বলা হয় আর এখানেই মূলত ডেটা লিখতে হয়।
আরো পড়ুনঃ
স্মার্টফোনের স্টোরেজ বাড়ানোর সহজ উপায়
ডেটা এন্ট্রি করার সময় প্রথমে আপনাকে নির্ধারণ করতে হবে আপনি কোন কলামে কী
ধরনের তথ্য রাখবেন। যেমন কলাম A-তে তারিখ, কলাম B-তে খরচের খাত, কলাম C-তে
পরিমাণ এবং কলাম D-তে মন্তব্য এমন করে রাখতে পারেন। এরপর একটি সেলে ক্লিক করে
সরাসরি টাইপ করলে ডেটা সেখানে যুক্ত হয়ে যাবে। প্রতিটি এন্ট্রি শেষ হলে Enter
চাপলে নিচের সারিতে চলে যাবে এবং Tab চাপলে ডান পাশের সেলে চলে যাবে।
সংখ্যা লিখতে হলে শুধু সংখ্যা টাইপ করলেই হবে তবে টাকা বা শতাংশের মতো মান
চাইলে সেলের ফরম্যাট পরিবর্তন করতে হয়। এজন্য সেল সিলেক্ট করে Right Click
থেকে Format Cells অপশন থেকে Number, Currency, Date ইত্যাদি বেছে নিতে
পারবেন। যদি একই ধরনের তথ্য বারবার লিখতে হয় তবে AutoFill ফিচার ব্যবহার করে
একটি ভ্যালু টেনে নিয়ে গেলে বাকি সেলগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে পূরণ হয়ে যাবে।
ডেটা এন্ট্রি করার সময় বানান বা সংখ্যার ভুল এড়াতে Data Validation ব্যবহার
করা ভালো যাতে নির্দিষ্ট ফরম্যাট ছাড়া অন্য কিছু লেখা না বসে। এছাড়া কলাম
হেডার বা শিরোনাম Bold করে দিলে তথ্য পড়তে আপনার সুবিধা হবে। ডেটা এন্ট্রি
শেষ হলে পুরো টেবিল সেভ করার জন্য Ctrl + S চাপলে ফাইল সেভ হয়ে যাবে।
এক্সেল ফর্মুলা শেখার নিয়ম
এক্সেলের সবচেয়ে শক্তিশালী দিক হলো ফর্মুলা ব্যবহার করা। ফর্মুলার মাধ্যমে
সহজ যোগ-বিয়োগ থেকে শুরু করে জটিল হিসাব, ডেটা অনুসন্ধান কিংবা শর্তভিত্তিক
ফলাফল বের করা সম্ভব। ফর্মুলা শেখার জন্য কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হয়। এক্সেলের
প্রতিটি ফর্মুলা সবসময় = চিহ্ন দিয়ে শুরু হয়। নির্দিষ্ট ফাংশনের নাম লিখে তার
ভেতরে সেল বা ভ্যালু উল্লেখ করতে হয়। যেমন =SUM(A1:A10) মানে হলো A1 থেকে A10
পর্যন্ত সব সংখ্যার যোগফল । ফর্মুলাগুলো হলো SUM যোগফল বের করার জন্য।
AVERAGE গড় নির্ণয়ের জন্য। MIN/MAX সর্বনিম্ন বা সর্বোচ্চ মান বের করার জন্য।
COUNT কতগুলো সংখ্যা আছে তা বের করতে ব্যবহৃত হয়। IF শর্ত অনুযায়ী ভিন্ন
ভিন্ন ফলাফল বের করার জন্য। VLOOKUP / HLOOKUP বড় টেবিল থেকে ডেটা খুঁজে বের
করার জন্য। ROUND সংখ্যাকে রাউন্ড করার জন্য। ফর্মুলা শেখার সবচেয়ে ভালো উপায়
হলো প্র্যাকটিস করা। নিজের মাসিক আয়-ব্যয়ের হিসাব লিখে তাতে SUM বা AVERAGE
ব্যবহার করুন।
পরীক্ষার ফলাফল লিখে গড় বের করতে চেষ্টা করুন। এরপর আস্তে আস্তে বড় টেবিলে
VLOOKUP, HLOOKUP বা IF ফর্মুলা প্র্যাকটিস করতে পারেন। এক্সেলের ফর্মুলা
শেখার জন্য ফর্মুলা বারের দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। যখন কোনো ফর্মুলা লিখবেন
এক্সেল স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনাকে সাজেশন দেখাবে যা আপনাকে সঠিক ফাংশন বাছাই করতে
সাহায্য করবে। আবার ভুল ফর্মুলা লিখলে এক্সেল Error দেখায় সেগুলোও বুঝে
সমাধান করা শিখতে হবে।
এক্সেলে SUM ফাংশন কিভাবে ব্যবহার করবেন
এক্সেলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সহজ ফাংশন হলো SUM যার মাধ্যমে দ্রুত যেকোনো
সংখ্যা বা সেলের মান যোগ করা যায়। সাধারণভাবে SUM ফাংশন সবসময় = চিহ্ন দিয়ে
শুরু হয় এবং এর ভেতরে যে সংখ্যা বা সেল রেঞ্জ দিলে সেগুলোর যোগফল বের করে দেয়
যেমন =SUM(10,20,30) লিখলে ফলাফল 60 বের হবে।
আরো পড়ুন :
১০০০ টাকার মধ্যে সেরা বাটন ফোন
আবার যদি A1 থেকে A5 সেলের মধ্যে দৈনিক খরচের মান লেখা থাকে তাহলে
=SUM(A1:A5) লিখলে এক্সেল স্বয়ংক্রিয়ভাবে সব খরচ যোগ করে ফলাফল
দেখাবে। যোগ করার জন্য সব মানগুলোকে একসাথে সিলেক্ট করতে হবে।
একাধিক রেঞ্জ একসাথে যোগ করতে চাইলে =SUM(A1:A5, C1:C5) দিলে উভয় রেঞ্জের মোট
যোগফল দেখাবে। SUM ফাংশনের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো বড় টেবিলে একসাথে বহু মান
যোগ করা যায় আলাদা আলাদা হিসাব করার প্রয়োজন হয় না। ব্যক্তিগত মাসিক খরচ,
ব্যবসার বিক্রয় রেকর্ড কিংবা পরীক্ষার ফলাফল সব ক্ষেত্রেই এটি ব্যবহার করা
যায়। ক্যালকুলেটর ছাড়া কয়েক সেকেন্ডে সঠিক ফলাফল বের করার জন্য এক্সেলের SUM
ফাংশন সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে।
এক্সেলে IF ফাংশন এর ব্যবহার
এক্সেলের IF ফাংশন হলো একটি লজিক্যাল ফাংশন যা শর্ত অনুযায়ী ভিন্ন ফলাফল
দেখাতে সাহায্য করে। কোনো শিক্ষার্থীর নাম্বার যদি ৪০ বা তার বেশি হয় তবে
Pass এবং কম হলে Fail দেখাতে চাইলে আমরা লিখতে পারি
=IF(B2>=40,"Pass","Fail")।
Enter চাপলে এক্সেল আপনাকে pass/fail result দেখাবে।
এই ফাংশনের মাধ্যমে আমরা পরীক্ষার ফলাফল নির্ধারণ, ব্যবসায় ডিসকাউন্ট হিসাব,
বেতন বা খরচের সীমা যাচাইসহ নানা শর্তভিত্তিক কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে করতে পারি।
IF ফাংশন ব্যবহার করলে সময় বাঁচে, হিসাবের ভুল কমে এবং কাজ অনেক বেশি কার্যকর
হয়।
এক্সেলে AVERAGE ফাংশন শেখার উপায়
এক্সেলের AVERAGE ফাংশন এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট সেল বা সেল রেঞ্জের গড় মান বের
করা যায়। AVERAGE ফাংশন সবসময় = চিহ্ন দিয়ে শুরু হয় এবং এর পরে ফাংশনের নাম
লিখে, ভেতরে সেই সেল বা রেঞ্জ নির্ধারণ করতে হয় যেটির গড় বের করতে চান। যদি
B2 থেকে B6 সেলে পাঁচজন শিক্ষার্থীর নম্বর লেখা থাকে, তাদের গড় বের করতে
ফর্মুলা হবে =AVERAGE(B2:B6)।
এই ফাংশন সব সংখ্যার যোগফলকে সংখ্যা গণনার মাধ্যমে ভাগ করে গড় বের করে দিতে
পারে। এছাড়া আলাদা আলাদা সেলও যোগ করা যায় যেমন =AVERAGE(B2, B4, B6)।
AVERAGE ফাংশন শেখার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো নিয়মিত প্র্যাকটিস করা। নিজের
মাসিক খরচ, বিক্রি বা পরীক্ষার ফলাফলের তালিকা তৈরি করে এতে AVERAGE ব্যবহার
করুন। ধীরে ধীরে আপনি বড় সেল রেঞ্জ বা শর্তভিত্তিক গড় হিসাব করতেও সক্ষম
হবেন।
এক্সেল শর্টকাট কী লিস্ট
এক্সেল অ্যাকাউন্টিং শেখার সহজ উপায় জানলে হিসাব আপনার জন্য অনেক সহজ হবে।
এক্সেলে কাজ দ্রুত ও সহজ করার জন্য কিছু শর্টকাট রয়েছে। এই শর্টকাটগুলো
নিয়মিত ব্যবহার করলে এক্সেলে কাজের গতি অনেক দ্রুত হবে এবং হিসাব-নিকাশ আরও
সহজ ও সঠিকভাবে করতে পারবেন।
সাধারণ ও নেভিগেশন শর্টকাটঃ
Ctrl + N = নতুন শীট খোলা
Ctrl + O = বিদ্যমান ফাইল খোলা
Ctrl + S = ফাইল সেভ করা
Ctrl + P = প্রিন্ট করা
Ctrl + Z = শেষ কাজ Undo করা
Ctrl + Shhift + Z = Undo করা কাজ আবার করা
Ctrl + F = খুঁজে বের করা
Ctrl + H =বদলানো
F2 = সেল এডিট মোডে যাওয়া
Ctrl + C = কপি
Ctrl + X = কাট
Ctrl + V = পেস্ট
Ctrl + Shift + "+" = সেল/রো/কলাম যোগ করা
Ctrl + "-" = সেল/রো/কলাম মুছে ফেলা
Ctrl + Arrow Key = ডেটার শেষ পর্যন্ত দ্রুত যাওয়া
= ফর্মুলা শুরু করা
Alt + = স্বয়ংক্রিয়ভাবে SUM ফাংশন ব্যবহার
F4 সেল রেফারেন্স লক করা
Ctrl + B=Bold করা
Ctrl + I = Italic করা
Ctrl + U = Underline করা
Ctrl + 1 = Format Cells উইন্ডো খোলা
Ctrl + Shift + $ = Currency ফরম্যাট
Ctrl + Shift + % = Percentage ফরম্যাট
Ctrl + Page Up/Page Down = শীট পরিবর্তন
Shift + F11 = নতুন শীট যোগ করা
Ctrl + Space = পুরো কলাম সিলেক্ট করা
Shift + Space = পুরো সারি সিলেক্ট করা
লেখকের মন্তব্যঃএক্সেল অ্যাকাউন্টিং শেখার সহজ উপায়
এক্সেল অ্যাকাউন্টিং শেখার সহজ উপায় হলো প্র্যাকটিস এবং ধাপে ধাপে শেখা।
প্রথমে বেসিক ডেটা এন্ট্রি, টেবিল তৈরি ও সারি-কলাম চেনা শেখা উচিত। এরপর
ধীরে ধীরে SUM, AVERAGE, IF, VLOOKUP-এর মতো ফাংশন প্র্যাকটিস করা উচিত।
শেখার সময় ছোট ছোট বাস্তব উদাহরণ ব্যবহার করলে সবচেয়ে ভালো মনে থাকবে।
নিয়মিত অনুশীলন করলে ফর্মুলা, ফাংশন এবং চার্ট তৈরির দক্ষতা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি
পাবে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো ধৈর্য এবং ধাপে ধাপে শেখা। প্রথমে সহজ টেবিল,
তারপর ফাংশন এরপর শর্তভিত্তিক হিসাব এভাবে এগোলে এক্সেল অ্যাকাউন্টিং শেখা
কঠিন হবে না। একবার দক্ষ হয়ে গেলে এটি আপনার ব্যক্তিগত বাজেট, ব্যবসায়িক
হিসাব এবং চাকরির কাজে এক অনন্য হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে। ভালো থাকবেন।
ধন্যবাদ। 250737
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url