OrdinaryITPostAd

অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন করার সকল নিয়ম কানুন জানুন

অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে জানা আমাদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। কেননা এখন আর ঝামেলা করে বড় লাইনে দাঁড়িয়ে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে হয় না। এখন ঘরে বসেই আপনি খুব সহজেই পাসপোর্টের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। 
অনলাইনে-ই-পাসপোর্ট-আবেদন-করার-নিয়ম
তবে কোন তথ্য কোথায় দিতে হবে বা এখনে এই তথ্য দেওয়া ঠিক কি না এ নিয়ে আপনারা বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করবো কিভাবে আপনি নিজেই পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

পেজ সূচিপত্রঃ  অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম

 অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম 

অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম জানা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরী। এখন আর কেউ ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করে না। সবাই ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে পাসপোর্ট  এর জন্য আবেদন করে। অনলাইনে পাসপোর্টের আবেদন করার কিছু নিয়ম আছে সেগুলো আপনি জেনে থাকলে খুব সহজে আপনি ঘরে বসে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন। কিভাবে আবেদন করবেন তা আমরা ধাপে ধাপে দেখাবো। চলুন দেখে নেওয়া যাক আবেদন করার ধাপ গুলো;
ধাপ ০১ঃ প্রথমে আপনাকে ই-পাসপোর্ট  অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে(epassport.gov.bd)প্রবেশ করতে হবে। এর পর আপনাকে একটা অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে এই ওয়েবসাইটে। অ্যাকাউন্ট তৈরি করা ছাড়া  আপনি পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন না। পাসপোর্ট এর আবেদন করতে হলে অবশ্যই আপনাকে অ্যাকাউন্ট করতে হবে। এখানে আপনাকে আপনার ইমেল এড্রেস, পিন এবং আপনার ব্যাক্তিগত তথ্য দিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। 
অনলাইনে-ই-পাসপোর্ট-আবেদন-করার-নিয়ম
ধাপ ০২ঃ অ্যাকাউন্ট তৈরি করার পর সেখানে আপনার অ্যাকাউন্ট টি লগ ইন করে নিতে হবে। লগ ইন করার পর ড্যাশ বোর্ডে আপনাকে Apply for a new e-Passport একটা বাটন দেখাবে। এই বাটনে ক্লিক করার পর আবেদন এর ফ্রোম আসবে আপনার কাছে। যদি না আসে তবে আপনার লগ ইন করা সঠিক হয়নি। 
অনলাইনে-ই-পাসপোর্ট-আবেদন-করার-নিয়ম
ধাপ ০৩ঃ এর পর নতুন পৃষ্ঠায় প্রথমে আপনাকে পাসপোর্ট এর ধরন নির্বচন করতে হবে। পাসপোর্ট দুই ধরনের হয়ে থাকে একটা Ordinary Passport এবং অন্য টি Official Passport । Ordinary Passport সাধারন ব্যাক্তির জন্য এবং Official Passport সরকারি কর্মজীবি দের জন্য যারা অফিসের কাজের জন্য বানাই। এজন্য আপনাকে প্রয়োজনীয় কাজ জমা দিতে হবে যদি আপনি Official Passport বানান তবে। যদি আপনি কোন অফিসের কাজের জন্য না বানান তবে আপনাকে প্রথম অপশন (Ordinary Passport) টি ক্লিক করতে হবে, ক্লিক করার পর নিচের Save and continue বাটনে ক্লিক করতে হবে। 
অনলাইনে-ই-পাসপোর্ট-আবেদন-করার-নিয়ম
ধাপ ০৪ঃ এর পর নতু পেজে আপনার personal information দেওয়ার জন্য অপশন আসবে। সেখানে প্রথমেই একটা অপশন থাকবে I apply for myself  এখানে টিক দিতে হবে। এটির মানে আপনি আপনার জন্য পাসপোর্ট এর আবেদন করছেন এবং সে আপনার পাসপোর্ট তৈরি হয়ে আসবে। এটি করা হয়ে গেলে বাকি নিচে যে যে information গুলো চাইবে সে গুলো আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্মনিবন্ধনের তথ্য অনুসারে সঠিক ভাবে পুরন করতে হবে। করা হয়ে গেলে পুনরাই Save and continue বাটনে ক্লিক করুন। 
অনলাইনে-ই-পাসপোর্ট-আবেদন-করার-নিয়ম
ধাপ ০৫ঃ personal information এ  তথ্য প্রদান করার পরে বাম সাইডের address এর উপর ক্লিক করতে হবে। এর পর এখানে আপনার জেলা, থানা, ডাকঘর, পোস্টাল কোড, গ্রাম/রাস্তা সকল ঠিকানা দিতে হবে। যদি আপনার বর্তমান address ও আগের address একই হয় তাহলে ভালো ভাবে মিলিয়ে নিবেন আপনার address কারন আপনার বর্তমান address এ পুলিশ ভেরিফিকেশন এর জন্য আসতে পারে। সকল তথ্য ভালো ভাবে দিয়ে আপনি আবারো Save and continue বাটনে ক্লিক করতে হবে আপনাকে। 
অনলাইনে-ই-পাসপোর্ট-আবেদন-করার-নিয়ম
ধাপ ০৬ঃ এটি ভালো ভাবে পুরন করা হয়ে গেলে আবার বাম দিক থেকে id  documents অপশন টি সিলেক্ট করতে হবে আপনাকে। সিলেক্ট করার পর ওখানে ৩ টি অফশন আসবে প্রথম টি যদি এর আগে আপনার কোন MRP পাসপোর্ট  থাকে তাহলে আপনাকে ১নং অফশন সিলেক্ট করতে হবে, যদি আপনার এর আগের ই-পাসপোর্ট থেকে থাকে তাহলে আপনাকে ২নং অফশন সিলেক্ট করতে হবে এবং যদি আপনা কোন পাসপোর্ট না থেকে থাকে একবারে নতুন পাসপোর্ট করতে চান তাহলে আপনাকে ৩নং অফশন সিলেক্ট করতে হবে। যদি আপনার আগের পাসপোর্ট থেকে থাকে এবং যদি ১নং বা ২ নং সিলেক্ট করেন তবে আপনাকে আগের পাসপোর্ট এর ইনফরমেশন দিতে হবে। দেওয়া হয়ে গেলে  Save and continue বাটনে ক্লিক করতে হবে। 
অনলাইনে-ই-পাসপোর্ট-আবেদন-করার-নিয়ম
ধাপ ০৭ঃ এর পর বাম দিকে perental information নামের অফশন থাকবে সেটা সিলেক্ট করতে হবে। এখানে প্রথমে পিতার তথ্য দিতে হবে , পিতার নাম , পেশা ইত্যাদি তার নিচে অনুরূপ ভাবে মাতার দিতে হবে। এখানে একটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে আপনার বয়স যদি ১৮ বছরে কম হয় বা আপনার যদি জাতীয় পরিচয়পত্র না হয়ে থাকে তবে আপনাকে অবশ্যই আপনার পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার দিতে হবে এখানে। সকল তথ্য ভালো ভাবে দেওয়া হয়ে গেলে Save and continue বাটনে টিপতে হবে। 
অনলাইনে-ই-পাসপোর্ট-আবেদন-করার-নিয়ম
ধাপ ০৮ঃ ৭নং ধাপ হয়ে গেলে বাম দিকে spouse information এর কাজ এবার। মানে আপনার বৈবাহিক অবস্থা। আপনি বিবাহিত না অবিবাহিত বা ডিভোর্স প্রাপ্ত তা আপনাকে এখান থেকে সিলেক্ট করতে হবে। আপনার বর্তমান অবস্থা অনুসারে এখানে থেকে marital status সিলেকট করে Save and continue অফশনে ক্লিক করতে হবে। 

ধাপ ০৯ঃ spouse information সম্পূর্ণ করার পর তার পরের অপশন emergency contact অপশনে যায় তে হবে আপনাকে। এখনে আপনাকে জরুরী যোগাযোগ এর জন্য যেকোন কাছের মানুষ এর তথ্য প্রদান করতে হবে। আপনি চাইলে দেশে বা দেশের বাইরের যে কোন যায়গার দিতে পারেন। তার সাথে আপনার কিসের সম্পর্ক তা দিতে হবে। সব দেওয়া হয়ে গেলে আবার Save and continue বাটনে ক্লিক করতে হবে। 
অনলাইনে-ই-পাসপোর্ট-আবেদন-করার-নিয়ম
ধাপ ১০ঃ  এর পর শেষ কাজ passport option এ। এখান থেকে আপনাকে নির্বচন করতে হবে আপনি কত পাতার নিবে এবং কত বছর মেয়াদ এর নিবেন। এখানে পাসপোর্ট সিলেক্ট করে Save and continue বাটনে ক্লিক করতে হবে। 
অনলাইনে-ই-পাসপোর্ট-আবেদন-করার-নিয়ম
উপরে সকল তথ্য ভালো করে পুরন করার পর আপনার কাছে ডেলিভারি অপশনে আসবে। এখানে দুটি অফশন থাকে একটি Regular ও অন্যটি Express । যদি আপনি Regular অপশন বেছে নেন তাহলে আপনার পাসপোর্ট হতে সময় লাগবে ২১ দিন। আবার যদি আপনি Express বেছে নেন তাহলে আপনার পাসপোর্ট হতে সময় লাগে ১৫ দিন । কিন্তু Express সিলেক্ট করলে দাম বেশি লাগবে। এর পর দেখবেন সকল তথ্য আলাদা আলাদা হয়ে আসছে। আপনি যদি মনে করে এখানে কিছু ভুল আছে তাহলে এডিট অফশনে গিয়ে আবার আপনি পরিবর্তন করতে পারবেন। 
আমরা যে ভাবে আপনাকে দেখাইলাম আপনি যদি ভালো ভাবে দেখে থাকেন তাহলে খুব সহজে আপনি ঘরে বসে পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই। উপরে আলোচনা যে নিয়ম নিয়ে এটি অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম। 

নতুন পাসপোর্ট করার জন্য কত টাকা লাগে 

অনেকে প্রশ্ন করে যে নতুন পাসপোর্ট তৈরি করার জন্য কত টাকা লাগে? এ নিয়ে তাদের কাছে কোন সঠিক ধারণা থাকে না যার কারণে অনেকেই বিভ্রান্তে পড়তে হয়। আপনি যদি ঘরে বসে নিজেই অনলাইনে পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করেন তাহলে আপনাকে বাড়তি খরচ পোহাতে হবে না পাসপোর্টে যে বেসিক খরচ তা শুধু প্রদান করতে হবে। পাসপোর্ট এর বেসিক খরচ নির্ধারিত হয় পাসপোর্ট এর ধারণা অনুসারে পাসপোর্ট দুই মেয়াদী পাওয়া যায় মেয়াদের উপর ভিত্তি করে পাসপোর্ট এর দাম কম বেশি হয় তাছাড়া পাসপোর্ট এর পৃষ্ঠা যত নিবেন তত দাম হবে।

তার পাশাপাশি আর একটা জিনিসের উপর নির্ভর করে তা হল আপনার ডেলিভারির টাইম। তিন ধরনের ডেলিভারি সিস্টেম পাওয়া যায় যথা; সাধারণ, জরুরী এবং অতি জরুরী। এ ধরনের উপর ভিত্তি করে টাকা কম বেশি হবে। চলেন দেখে নেওয়া যাক কোন ধরনের পাসপোর্ট বানাতে কত টাকা লাগে; 
মেয়াদ পাতার সংখ্যা ডেলিভারি টাইপ ফি (টাকা)
৫ বছর ৪৮ পৃষ্ঠা সাধারণ (২১ কর্মদিবস) ৪,০২৫ টাকা
৫ বছর ৪৮ পৃষ্ঠা জরুরি (১০ কর্মদিবস) ৬,৩২৫ টাকা
৫ বছর ৪৮ পৃষ্ঠা অতীব জরুরি (২ কর্মদিবস) ৮,৬২৫ টাকা
৫ বছর ৬৪ পৃষ্ঠা সাধারণ ৬,৩২৫ টাকা
৫ বছর ৬৪ পৃষ্ঠা জরুরি ৮,৬২৫ টাকা
৫ বছর ৬৪ পৃষ্ঠা অতীব জরুরি ১২,০৭৫ টাকা
১০ বছর ৪৮ পৃষ্ঠা সাধারণ ৫,৭৫০ টাকা
১০ বছর ৪৮ পৃষ্ঠা জরুরি ৫,৭৫০ টাকা
১০ বছর ৪৮ পৃষ্ঠা অতীব জরুরি ৫,৭৫০ টাকা
১০ বছর ৬৪ পৃষ্ঠা সাধারণ ৮,০৫০ টাকা
১০ বছর ৬৪ পৃষ্ঠা জরুরি ১০,৩৫০ টাকা
১০ বছর ৬৪ পৃষ্ঠা অতীব জরুরি ১৩,৮০০ টাকা

নতুন পাসপোর্ট করার জন্য কি কি কাগজপত্র লাগবে

অনেকে জানেন না পাসপোর্ট করার জন্য কি কি কাগজ পত্র দরকার করা হয়ে থাকে। যার কারণে যখন পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করেন তখন অনেক সমস্যা সম্মুখীন হতে হয় আপনাকে। আজকের আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের বলব নতুন পাসপোর্ট করতে কি কি কাগজ লাগবে যাতে করে আবেদন করার সময় আপনাকে কোন সমস্যার সম্মুখীন না হতে হয়। অনলাইনে নতুন পাসপোর্ট আবেদনের জন্য আপনাকে কিছু কাগজপত্র অবশ্যই গুছিয়ে রাখতে হবে নিজের কাছে। পাসপোর্ট এর জন্য সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ যে কাগজটি সেটি হল আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদ। 

আপনি যখন অনলাইনে পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করবেন তখন আপনাকে একটি ফর্ম পূরণ করতে হয় এ ফরম পূরণ শেষে Application Summary আর Registration Form পাবেন যেগুলো আপনাকে প্রিন্ট করে জমা দেওয়া লাগবে। এ ফর্মটা হাতে না আপনি যখন অনলাইনে পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করবেন তখন পূরণ হয়ে যাবে। এ ফরম পূরণের সময় আপনি যে তথ্যগুলো প্রদান করবেন সেগুলো যেন অবশ্যই আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদ এর সাথে মিল থাকে। যদি পূরণ কৃত তথ্যগুলোর সাথে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদের মিল না থাকে তাহলে আপনাকে অফিসে গিয়ে অনেক ঝামেলা পোহাতে হবে। 

যাদের বয়স 20 বছরের উপরে বা যাদের জাতীয় পরিচয় পত্র হয়ে গেছে তাদের অবশ্যই পাসপোর্ট এর আবেদন করার জন্য জাতীয় পরিচয় পত্র লাগবে। আর যারা জাতীয় পরিচয় পত্র পায়নি তাদের জন্য ইংরেজি ভার্সনে জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রয়োজন হবে। তাছাড়া শিশুদের ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের এনআইডি কার্ডের তথ্য প্রদান করতে হবে যেহেতু তার কোনো তথ্য নাই সেহেতু বাবা-মায়ের তথ্য তার তথ্য হিসাবে গৃহীত হবে। আপনি যদি বিবাহিত হয়ে থাকেন তাহলে সেখানে আপনার স্বামী বা স্ত্রীর তথ্য এবং বিয়ের সার্টিফিকেট ও প্রদান করতে হবে। মূল কথা সকল প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপনাকে ওখানে দিতে হবে।এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কি কি কাগজ পত্র লাগবে;

  • জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) অথবা জন্মনিবন্ধন সনদ (যাদের NID হয়নি)।
  • অনলাইনে পূরণকৃত আবেদন ফর্ম (প্রিন্ট কপি)।
  • আবেদন ফি জমার রশিদ।
  • পুরোনো পাসপোর্ট যদি আগের পাসপোর্ট থাকে তবে।  
  • জন্ম সনদ + বাবা-মায়ের NID (যদি আবেদনকারী ১৮ বছরের কম বয়সী হয়)।
  • বিবাহ সনদ। 

ই-পাসপোর্টের বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়া

বাংলাদেশে পাসপোর্ট বানানোর জন্য বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়াটি বাধ্যতামূলক। বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়া ছাড়া আপনার পাসপোর্ট আবেদন অসম্পূর্ণ। আপনার সঠিক পরিচয় নির্ধারণ এবং আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তার জন্য পাসপোর্ট পাওয়ার জন্য বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়াটি করতে হয়। বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আপনার আঙ্গুলের ছাপ আপনার ছবি এবং আপনার চোখের আইরিশের ছবি  এবং আপনার ডিজিটাল স্বাক্ষর নেওয়া হয়ে থাকে।বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়ার জন্য আপনাকে আপনার নিজ এলাকার স্থানীয় পাসপোর্ট অফিস এ গিয়ে বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে হবে। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরবর্তী সময়ে আপনি ভুয়া পরিচয় বহন করতে পারবেন না। 

অনেকে জানেন না বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়ার সময় কোন কোন কাগজগুলো পাসপোর্ট অফিসে নিয়ে যেতে হবে। যা কারনে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে তাদের অনেক ধরনের বিভ্রান্তি হতে হয়। কি কাগজপত্র লাগবে আজকের আর্টিকেলটি পড়লে আপনি সহজে বুঝতে পারবেন এবং পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে আপনাকে বিভ্রান্ত হতে হবে না। সাধারণত পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে যে যে কাগজপত্র প্রয়োজন হয়ে থাকে সেগুলোই আপনাকে বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়ার জন্য পাসপোর্ট অফিসে নিয়ে যেতে হবে। বিশেষ করে আবেদন ফরম, টাকা প্রদানের স্লিপ, জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদ বাড়ির বিদ্যুৎ, বাড়ির ট্যাক্স এর কাগজ ইত্যাদি নিয়ে যেতে হবে।

কাগজপত্র নিয়ে যাওয়ার সময় অবশ্যই এক দুই কপি করে ফটোকপি নিয়ে যাবেন সাথে যাতে পরবর্তীতে কোন প্রকার সমস্যা না পড়তে হয় আপনাকে। এই কাগজগুলো নিয়ে গেলেই আপনি খুব সহজেই বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন। 

ব্যক্তিগত তথ্য কীভাবে সঠিকভাবে পূরণ করবেন

অনেক সময় দেখা যায় অনেকে ব্যক্তিগত তথ্য পূরণের সময় অনেক রকমের ভুল করে, খুব বড় ভুল করে তেমনটা না ছোট্ট ছোট্ট ভুলগুলোর জন্যই তাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। পাসপোর্ট যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস তাই আবেদনের সময় ভুল হলে বিভ্রান্তির মধ্যে পড়তে হবে তা স্বাভাবিক। নতুন পাসপোর্ট আবেদনের সময় নিজের তথ্যগুলো সঠিকভাবে পূরণ করা খুবই জরুরী। কারণ কোন কোন সময় ছোট্ট ভুলের জন্য অনেক বড় ঝামেলার মুখে পড়তে হয়। তাই আপনাকে অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদনের সময় আপনার ব্যক্তিগত তথ্য এর পাশাপাশি অন্যান্য তথ্যগুলো ধীরে সুস্থে এবং মনোযোগ সহকারে সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। 

অনেক সময় দেখা যায় যে অনেকে তাদের নামেই ভুল করে, কারণ তারা লিখে এক এবং তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রে অন্য ভাবে লেখা থাকে। তাই নাম লেখার ক্ষেত্রে বলতে গেলে যখন আপনি নামগুলো ফ্রমে  বসাবেন তখন অবশ্যই আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র দেখে বসাবেন। জাতীয় পরিচয় পত্র দেখে বসালে ভুল হওয়া সম্ভব না খুব কম থাকে। অনুরূপভাবে আপনার পিতা-মাতার ইনফরমেশন গুলো তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে বসাতে হবে যাতে করে আবেদন ফরমে আবেদন করার সময় কোন প্রকার ভুল না হয়। আবেদন ফরমে আপনার জন্ম তারিখ এবং জন্ম স্থান বসানোর পরে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদ এর সাথে ভালোভাবে মিলিয়ে নিবেন।
তাছাড়া আবেদন ফরমে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস লাগে সেটি হচ্ছে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার বা জন্ম নিবন্ধন সনদের নাম্বার, এ নাম্বার আপনাকে খুব সতর্কতার সাথে দিতে হবে। কারণ নাম্বার যদি একটা ভুল হয় তাহলে আপনার পুরো আবেদনটাই বাদ হয়ে যেতে পারে। তাই অবশ্যই আপনি আবেদন ফর্মে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার বা জন্ম নিবন্ধন সনদে নাম্বার দেওয়ার সময় অবশ্যই ভালোভাবে দেখে দিবেন। আপনার স্থায়ী বর্তমান ঠিকানা একই প্রদান করবেন যাতে পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময় সেই ঠিকানায় এবং ভেরিফিকেশন করে। এবং খেয়াল রাখবেন সে ঠিকানা আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদের সাথে মিল আছে কিনা। 

আবেদনের সময় যে ফোন নম্বরটা দিতে হয় সেটা অবশ্যই আপনার সচল নম্বর দিবেন কারণ পাসপোর্ট অফিস থেকে বিভিন্ন সময় আপনাকে এসএমএস এর মাধ্যমে তথ্য প্রদান করবে। জীবন যখন আপনার বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়ার দিন দিবে তখন আপনাকে এসএমএস এ জানিয়ে দিবে। তাছাড়া আপনার পাসপোর্ট এর কাজ সম্পূর্ণ হলেও আপনাকে এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে যে আপনার পাসপোর্ট এর কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে। এ সকল ছোট্ট ছোট্ট দিকগুলো ভালোভাবে খেয়াল রাখলে আবেদন করার সময় ভুল হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম হয়ে থাকে। তাই অবশ্যই আবেদন করার সময় এ সকল বিষয়গুলোর উপর নজর রাখবেন। 

১৮ বছরের নিচে পাসপোর্ট করার নিয়ম কী?

অনেকে আছে যারা ১৮ বছর বয়সের আগেই বাইরে যেতে চাই অনেক কাজে , কেউ ঘুরতে যায় কেউ পড়াশোনা করতে যায় আবার কেউ কাজের জন্যও যায়। তবে তাদের কাছে ধারণা থাকে না কিভাবে ১৮ বছর বয়সের নিচে পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে হয়। ১৮ বছরের নিচের মানুষের পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়মটা একটু আলাদা। যেহেতু তার জাতীয় পরিচয়পত্র হয় না এজন্য পাসপোর্ট এর আবেদন করার সময় তার বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর প্রদান করতে হয় শুধু নাম্বার না তার বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপিও জমা দিতে হয়। বাকি সবকিছু যেমন তার নাম জন্ম তারিখ জন্মস্থান ইত্যাদি এগুলো ভালোভাবে পূরণ করতে হবে।

এবং তাকে তার অভিভাবকের স্বাক্ষরিত অনুমতি পত্র পাসপোর্ট এর আবেদন করার সময় জমা দিতে হবে যাতে করে তারা বুঝে যে সে সবার সম্মতিতেই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করেছেন। সকল কাগজ পাতি পর্যবেক্ষণ করার পর আবেদন গ্রহণ করা হয়। এভাবেই ১৮ বছরের নিচে মানুষদের  পাসপোর্ট আবেদন করা হয়ে থাকে। তবে ১৮ বছরের নিচে মানুষের পাঁচ বছরের বেশি মেয়াদী পাসপোর্ট তৈরি করা যায় না। উক্ত সত্যের সাপেক্ষেই যাদের বয়স ১৮ এর নিচে তাদের পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন নেওয়া হয়ে থাকে। 

বিবাহিতদের পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে

বিবাহিত দের পাসপোর্ট আবেদন করতে অতিরিক্ত কিছু কাগজ পাতি প্রয়োজন হয়ে থাকে। কেউ যদি চায় ফ্যামিলি নিয়ে বাইরের দেশে যাবে তবে অবশ্যই তাকে পাসপোর্ট আবেদনের সময় ম্যারিটাল স্ট্যাটাস বিবাহিত দেখাতে হবে যার ফলে তারা বৈধ হিসেবে গণ্য হবে। যদি ম্যারিটাল স্ট্যাটাস বিবাহিত না দেখায় তবে তারা অবৈধ হিসাবে গণ্য হবে। অনেকের প্রশ্ন থাকে বিবাহিতদের পাসপোর্ট করতে কি কি কাগজ লাগে। সব কাগজ পাতি একই লাগলেও বিবাহিতদের জন্য কিছু তথ্য প্রদান করতে হয়। আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র নিয়ে যান পাশাপাশি আপনি বৈধভাবে বিবাহিত প্রমাণ করার জন্য আপনাকে সাথে করে বিবাহ সনদ নিয়ে যেতে হবে।

যাতে করে বিদেশ যাওয়ার সময় কোন ধরনের ঝামেলা না হয়। যদি আপনার কাছে আগের কোন পাসপোর্ট থেকে থাকে তাহলে সেই পাসপোর্ট এর কপি জমা দিতে হবে। বিদেশ যাওয়ার সময় কাগজ পাতি জমা দেওয়ার জন্য অবশ্যই আপনার কাগজ পাতি প্রস্তুত থাকা জরুরী। যাদের প্রশ্ন ছিল যে বিবাহিতদের পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে আশা করি তারা বুঝতে পেরেছেন

ঠিকানা পূরণের সময় যেসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে

পাসপোর্ট এর ঠিকানা সংক্রান্ত তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাসপোর্ট আবেদন করার সময় ভুল ঠিকানা থাকলে ঠিকানা যাচাই বাছাই করা অনেক ঝামেলা হয়ে দাঁড়ায়। পাসপোর্টে আবেদন করার সময় ঠিকানা খুব ভালোভাবে দিতে হবে কোন প্রকার ভুল করা যাবে না। যদি ভুল ঠিকানা দিয়ে থাকেন এবং পুলিশ ভেরিফিকেশনে যদি সত্যতা না পাই তাহলে আপনার আবেদনটি বন্ধ হয়ে যাবে। তাই অবশ্যই আপনার ঠিকানা পূরণের সময় ভালোভাবে ঠিকানা দেখে নিবেন প্রয়োজনে না জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদের সাথে মিলিয়ে নিবেন। আপনি চাইলে আপনার বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা ভিন্ন দিতে পারেন কিন্তু যদি আপনার বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা একই হয় তাহলে একই দিবেন সমস্যা হবে না।

আপনার আবেদন কৃত ঠিকানার সাথে আপনার বাসার বিদ্যুৎ বিল বা ট্যাক্স বিলের সাথে মিল থাকলে বুঝবেন আপনার ঠিকানাটি সঠিক হয়েছে। সঠিক ঠিকানা দেওয়া অত্যন্ত জরুরী কারণ যখন আপনি ভিসার জন্য আবেদন করবেন তখন আপনাকে ঝামেলার মতো করতে হবে। তাই অবশ্যই ভালোভাবে আপনার গ্রাম, ওয়ার্ড, পোস্ট অফিস, উপজেলা ও জেলা ভালোভাবে পূরণ করতে হবে। সঠিকভাবে ঠিকানা দেওয়া থাকলে আপনার পাসপোর্ট প্রক্রিয়া খুব দ্রুত সম্পন্ন হবে। 

আবেদন সাবমিট করার আগে যেসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে

পাসপোর্ট আবেদনের ফরম জমা দেওয়ার পূর্বে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে। পাসপোর্ট আবেদন ফরম জমা দেওয়ার পূর্বে যদি এ বিষয়গুলো খেয়াল না রাখেন তাহলে পরবর্তী সময়ে বড় ধরনের ঝামেলার মুখোমুখি হতে পারে আপনারা কে। যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন তার মধ্যে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য নাম, ঠিকানা, জন্ম তারিখ এবং পিতা-মাতার তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করেছেন কিনা সেটা ভালোভাবে খেয়াল রাখতে হবে। তাছাড়াও আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার বা জন্মনিবন্ধন সনদের নাম্বার আবেদন ফরমে  দেওয়া নাম্বারে সাথে ভালো ভাবে মিল আছে কিনা তা ভালো ভাবে আপনকে খেয়াল রাখতে । 
অনলাইনে-ই-পাসপোর্ট-আবেদন-করার-নিয়ম
আপনার পেমেন্ট স্লিপ এর পাশাপাশি অন্য সব কাগজ পত্র গুলো ভালো ভাবে গুছিয়ে রাখুন যাতে এলোমেল না হয় , যদি আপনার আগের কোন পাসপোর্ট থেকে থাকে তাইলে তার কপিও সাথে যুক্ত করে নিন। সবশেষ আবেদন ফরম সাবমিট পূর্বে ভালোভাবে চোখ বুলিয়ে নিন। পেশা ও শিক্ষাগত যোগ্যতা সংক্রান্ত তথ্য থেকে থাকলে সেগুলাও ভালো ভাবে আপনাকে দিতে হবে। অনেক সময় এগুলা সবাই এড়িয়ে চলে কিন্তু এটিও ভালো ভাবে পুরন করতে হবে। আপনার শিক্ষাগত যগ্যতার কোন পর্যায়ে আপনি আছেন তা ভালো করে দিতে হবে। 

শেষ কথাঃ অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম

অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম খুব একটা কঠিন কাজ না। যাদের মধ্যে সংশয় ছিল আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি ভালোভাবে পড়লে অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদন করতে আপনারা কোন ধরনের সমস্যা সম্মুখীন হতে হবে না। অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদন করার সময় অবশ্যই মনোযোগ দিয়ে আবেদন করবেন , ধীরে সুস্থে আবেদন করলে আপনার আবেদনে কোন ধরনের ভুল হবে না ইনশাল্লাহ। তবে ভালোভাবে খেয়াল রাখবেন আপনার ব্যক্তিগত তথ্য বা অন্যান্য তথ্য যেগুলো আবেদন ফরমে দিবেন সেগুলো। পাসপোর্ট অফিস যাওয়ার আগে আপনার যে সকল কাগজ পত্র সেখানে লাগবে সেগুলো একসাথে গুছিয়ে রাখুন। 

আবেদনের সব শেষে অবশ্যই আপনি একবার সবকিছু ভালোভাবে মিলিয়ে নিবেন। নিয়ম মেনে ফরম পূরণ করলে পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়া সহজ হবে এবং নির্দিষ্ট সময়ে আপনার হাতে নতুন পাসপোর্ট পৌঁছে যাবে। [job-id 250914] 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url