ব্যাংক লোন পাওয়ার জন্য অনলাইন ফর্ম পূরণ কিভাবে করতে হয় আজকে আমরা এই বিষয়ে বিস্তারিত ধাপে ধাপে জানবো। ব্যাংকে লোন নেওয়ার জন্য সাধারণত দুইভাবে আবেদন করা যায়। একটি হচ্ছে নিজে ব্যাংকে গিয়ে আবেদন ও আরেকটি হচ্ছে অনলাইন আবেদন।
ব্যাংক লোন নেওয়ার জন্য নিজে সরাসরি ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে আবেদন প্রক্রিয়া অনেক সময় সাপেক্ষ ও জটিল হওয়ার কারণে এই আবেদন প্রক্রিয়াটি অনেকে অনলাইনে করাই পছন্দ করে থাকেন। আজকে আমরা জানবো কিভাবে ঘরে বসে ব্যাংক লোন পাওয়ার আবেদন করতে হয়।
ব্যাংক লোন পাওয়ার জন্য অনলাইন ফর্ম পূরণ সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত জানবো। ব্যাংক লোন সাধারণত অনেক ধরনের হয়ে থাকে। উদাহরণ স্বরূপঃ ব্যাক্তিগত লোন, হোম লোন, শিক্ষা লোন, ব্যবসা লোন ইত্যাদি। এই লোন গুলো আলাদা হলেও এদের আবেদন প্রক্রিয়া প্রায় একই যদিও লোন ভেদে কাগজ পত্র বা শর্ত আলাদা থাকতে পারে। এখন আমরা দেখবো কিভাবে আপনি ছোট ব্যবসা দাঁড় করানোর জন্য কিভাবে ক্ষুদ্র ঋনের জন্য আবেদন করবেন।
আজকে আমরা যে ব্যাংকের মাধ্যমে ব্যবসার জন্য লোনের আবেদন করবো সেই ব্যাংকের নাম হচ্ছে কর্ম সংস্থান ব্যাংক। অনলাইনে লোনের আবেদন করার জন্য প্রথমেই এই ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার জন্য যেকোন ব্রাউজারে karma sangsthan bank এই কথাটি লিখে সার্চ করতে হবে। এরপর এদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর আপনি দেখতে পাবেন উপরে এক কোনায় লগইন করার একটি অপশন রয়েছে। এবার সেখানে প্রবেশ করতে হবে। এছাড়াও আপনি এখান থেকে ব্যাংকের সকল শর্ত ও নিয়ম নীতি দেখে নিতে পারেন।
লগইন লিখার উপর ক্লিক করার সাথে সাথে একটি লগইন অপশন চলে আসবে। আমাদের যেহেতু এই ব্যাংকে কোন একাউন্ট নেই তাই লগইন করতে পারবো না। এই জন্য Registration লিখার উপর ক্লিক করে একটি ফ্রি একাউন্ট খুলে নিতে হবে। রেজিস্ট্রেশন লিখার উপর ক্লিক করলে একটি ছোট ফর্ম চলে আসবে এখানে আপনার নাম, ইমেইল ও একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড দিয়ে Register লিখা উপর ক্লিক করলেই আপনার রেজিস্ট্রেশনের কাজ শেষ।
সফলভাবে রেজিস্টার করার পর আপনাকে ঠিক উপরে দেখানো ছবির মত একটি নতুন ড্যশবোর্ডে নিয়ে চলে আসবে। এখান থেকে আপনি সর্বমোট আবেদন সংখ্যা, আপনার আবেদন প্রক্রিয়াটি কত দূর অবস্থান করছে, চলমান চূড়ান্ত আবেদন থেকে শুরু করে আরোও কিছু অপশন যেমন প্রথমিক আবেদন পত্র ও চুড়ান্ত আবেদন পত্র ইত্যাদি দেখতে পাবেন। এখন এখান থেকে আবেদন করার জন্য "প্রথমিক আবেদন করুন" এই লিখাটির উপর ক্লিক করতে হবে।
এরপর আপনার সামনে একটি ফর্ম চলে আসবে। এখন এই ফর্মটি আপনাকে মনোযোগ সহকারে পূরণ করতে হবে। কেননা অনেকের আবেদন প্রক্রিয়া বাতিল হয়ে যায় শুধু মাত্র এই ফর্মটি ভুলভাবে পূরণ করার জন্য। এখানে আপনাকে কত টাকা ঋণ করতে চান, কোন শাখা হতে ঋণ করতে চান, আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, ঠিকানা, জম্ন তারিখ ইত্যাদি ভালোভাবে পূরণ করতে হবে। তথ্য গুলো পূরণ করা শেষ হলে সাবমিট বাটনে ক্লিক করলেই আপনার আবেদন করা শেষ হয়ে যাবে। এরপর নির্দিষ্ট সময় পর আপনি যদি উক্ত লোনের জন্য গ্রহণযোগ্য হন তাহলে ইমেইল বা ফোন নাম্বারে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ঋণের জন্য আবেদন
মূলত প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের মালিকানাধীন একটি বিশেষায়িত ব্যাংক যারা বিদেশগামী কর্মীদের স্বল্পসুদে ঋণ প্রদান এবং প্রবাস ফেরতদের পুনর্বাসন সহায়তার জন্য কাজ করে থাকে। তবে এই লোনের জন্য অনেকেই আবেদন করে থাকলেও সকলে আবেদন গ্রহণ করা হয়না। তার অন্যতম কারণ হচ্ছে ভুলভাবে আবেদন করা, ঋণের জন্য যোগ্যতা না থাকা এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস না থাকা। তাই অনলাইনে এই লোনের জন্য আবেদন করার পূর্বে এই বিষয় গুলো জেনে রাখা ভালো।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক দুই ধরনের লোন দিয়ে থাকে। একটি হচ্ছে বিদেশগমন ঋণ এবং আরেকটি হচ্ছে পুনর্বাসন ঋণ। এই দুই ঋনের মধ্যে পার্থক্য সংক্ষেপে জেনে নিই।
বিদেশগমন ঋণ
পুনর্বাসন ঋণ
বিদেশে চাকরি করতে যেতে চান তাদের জন্য
প্রবাস ফেরত ব্যক্তিদের জন্য
১ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ
সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত
স্বল্পসুদের হারে (৪%-৯%)
সরল সুদের হার (৪%-৯%)
১ থেকে ৩ বছরের কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য
মেয়াদ ও সুদের হার প্রোগ্রাম অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে
আবেদনের যোগ্যতাঃ
বৈধ পাসপোর্টধারী বিদেশগমনেচ্ছু ব্যক্তি অথবা
বৈধভাবে দেশে ফেরা প্রবাসী হতে হবে।
১৮ থেকে ৫৫ বছর বয়স হতে হবে।
চাকরি অফার লেটার (বিদেশগমন ঋণের ক্ষেত্রে) থাকতে হবে।
উপযুক্ত জামিনদার থাকতে হবে।
জাতীয় পরিচয়পত্র ও অন্যান্য নথিপত্র সঠিকভাবে জমা দিতে হবে।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ
পাসপোর্ট ও পাসপোর্টের কপি
জাতীয় পরিচয়পত্র
পাসপোর্ট সাইজ ছবি (২-৪ কপি)
বিদেশি চাকরির চুক্তিপত্র বা অফার লেটার
ট্রাভেল এজেন্সির লাইসেন্স কপি (যদি থাকে)
গ্যারান্টরের জাতীয় পরিচয় পত্র ও ছবি
ব্যাংক স্টেটমেন্ট
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ঋণের অনলাইনে আবেদন করার জন্য প্রথমেই তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার জন্য pkb.gov.bd লিখে সার্চ দিয়ে প্রথমে যে ওয়েবসাইট আসবে বা একটু নিচে অফিসিয়াল ওয়েবসাইট খুঁজে বের করে তারপর প্রবেশ করতে হবে। প্রবেশ করার পর Loan Services বা Apply for Loan অপশন সিলেক্ট করতে হবে। এরপর আপনার সামনে লগইন করতে বলা হবে। আপনার যদি একাউন্ট না থাকে তাহলে খুব সহজে শুধু নাম ও ইমেইল অ্যাড্রেস দিয়ে একাউন্ট খুলে নিতে পারবেন।
এরপর লগইন করলে একটি ফর্ম চলে আসবে। উক্ত ফর্মটি ভালো করে পূরণ করতে হবে। এই ফর্মে ভুল তথ্য দেওয়া মানে আপনার আবেদন প্রক্রিয়া প্রায় বাতিল হয়ে যাওয়া। তাই ভালো করে দেখে তথ্য গুলো পূরণ করে নিতে হবে। এরপর আবেদন সাবমিট করার পর আপনার সাথে আরেকটি অপশন চলে আসবে। এখানে মূলত KYC ডকুমেন্টস আপলোড করতে হবে। ভালো করে স্ক্যান করে স্পষ্ট ভাবে যে তথ্য গুলো দিতে বলা হবে সেগুলো আপলোড করতে হবে। এরপর প্রাথমিক আবেদন সমাপ্ত হলে ব্যাংক থেকে আপনাকে ফোন করে জানিয়ে দেওয়া হবে। তবে প্রথমবার আবেদন করলে সরাসরি ব্যাংকে গিয়ে যোগাযোগ করা ভালো।
পার্সোনাল লোনের জন্য অনলাইন আবেদন
ব্যক্তিগত কোন কাজের জন্য যেমন চিকিৎসা, ভ্রমণ, বিয়ে, পড়াশোনা বা হঠাৎ কোনো জরুরি খরচ মেটানোর জন্য যে লোন নেওয়া হয় তাকে পার্সোনাল লোন বলে। বাংলাদেশে প্রায় সকল ব্যাংক এই লোন দিয়ে থাকে তবে এই লোন নেওয়ার জন্য কোন আমানতের প্রয়োজন হয়না। আজকে আমরা AB Bank থেকে কিভাবে পার্সোনাল লোনের জন্য অনলাইন আবেদন করবেন এই বিষয়ে জানবো। এর জন্য প্রথমেই আপনাদের পূর্বের নিয়মে AB Bank এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।
এরপর এবি ব্যাংকের ড্যাশবোর্ড থেকে প্রথমে বাংলা সেকশনে প্রবেশ করতে হবে এরপর ব্যক্তিগত-ঋণ এই অপশনে প্রবেশ করতে হবে। প্রবেশ করার পর আপনার সামনে একটি আবেদন করুন নামে অপশন চলে আসবে। এবার আপনাকে এখানে ক্লিক করতে হবে। ক্লিক করার পর প্রথমে একটি ছোট ফর্ম চলে আসবে।
এবার এই ফর্মে আপনাকে আপনার নাম, ফোন নম্বর, ইমেইল অ্যাড্রেস, বয়স এবং বাৎসরিক আয় টাকায় লিখতে হবে। তবে এখানে কোন ভুল তথ্য দেওয়া যাবে না। ভুল তথ্য দিলে আপনার আবেদন প্রকিয়াটি সম্পূর্ন হবে ঠিকই কিন্তু সেটি ব্যাংক কতৃপক্ষ গ্রহণ করবে না। উক্ত তথ্য গুলো দেওয়ার পর আপনাকে একটি ক্যাপচা পূরণ করতে হবে এবং সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে।
সাবমিট বাটনে ক্লিক করার সাথে সাথে আপনার সামনে আরোও একটি ফর্ম চলে আসবে কিন্তু এই ফর্মটি পূর্বের তুলনায় একটু বড় হবে। এবার আপনাকে এখানে আপনার সম্পূর্ন নাম, কত টাকা লোন নিতে চান, পিতা ও মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার, আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা সহ আরোও অনেক তথ্য দেওয়া লাগতে পারে। মনোযোগ সহকারে এই তথ্য গুলো পূরণ করার পর আরোও একবার চেক করে দেখে নিবের। কারণ কোন তথ্য ভুল হলে আপনার আবেদন বাতিল হয়ে যেতে পারে। এরপর সাবমিট করে দিলেই আপনার পার্সোনাল ব্যাংক লোনের অনলাইন আবেদন সম্পূর্ন হয়ে যাবে।
অনলাইন ফর্ম পূরণের যেসকল তথ্য প্রয়োজন হয়
অনলাইনে ব্যাংকে লোন নেওয়ার জন্য যে আবেদন করতে হয় এখানে অনেক তথ্য প্রদান করতে হয়। আপনি যদি অনলাইনে ব্যাংক লোন নেওয়ার জন্য আবেদন করতে চান তাহলে আপনার উচিত হবে সেই সকল তথ্য সাথে নিয়ে বসে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করা। তা না হলে আবেদনের মাঝখানে কোন তথ্য যদি কাছে না পান তাহলে সেটি খুঁজার জন্য অনেক সময় লাগতে পারে। তাই এই সমস্যাতে আপনি যেন না পড়েন ঠিক এই কারণে অনলাইন ফর্ম পূরণের যেসকল তথ্য প্রয়োজন হয় সেগুলো নিচে দেওয়া হলোঃ
বাংলা ও ইংরেজি নিজে নাম
পিতার নাম
মাতার নাম
জন্ম তারিখ
জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর
পাসপোর্ট নম্বর (যদি থাকে)
বৈবাহিক অবস্থা
স্থায়ী ঠিকানা
বর্তমান ঠিকানা
মোবাইল নম্বর
ইমেইল অ্যাড্রেস
পেশা বা চাকরির ধরন
মাসিক আয়
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর
ব্যাংকের নাম ও শাখা
পূর্বে নেওয়া লোন (যদি থাকে)
মাসিক খরচের পরিমাণ
পাসপোর্ট সাইজ ছবি
নমিনির তথ্য ইত্যাদি।
অনলাইন নাকি অফলাইন কোন আবেদন করা ভালো
ব্যাংক লোন আবেদন সাধারণ দুই ভাবে করা যায়। একটি হচ্ছে সরাসরি ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে এবং আরেকটি হলো ঘরে বসে অনলাইনে ব্যাংক লোনের জন্য আবেদন করা যায়। এখন যদি প্রশ্ন হয় অনলাইন এবং অফলাইন এই দুই ধরনের আবেদনের মধ্যে কোন মাধ্যমে আবেদন করা ভালো তাহলে এর সহজ উত্তর হবে অনলাইন এবং অফলাইন উভয় আবেদন প্রক্রিয়ার রয়েছে আলাদা আলাদা সুযোগ, সুবিধা ও সেই সাথে কিছু অসুবিধা। এখন আমরা সংক্ষেপে জানার চেষ্টা করবো যে অনলাইন নাকি অফলাইন কোন আবেদন করা ভালো।
আপনি যদি সময় বাঁচাতে চান এবং ব্যাংকের লম্বা লাইনে দাঁড়াতে একদমই পছন্দ না করে থাকেন তাহলে আপনি অনলাইনে আবেদন করতে পারেন। এক্ষেত্রে সুবিধা হলো আপনাকে আবেদনের ডকুমেন্ট সমূহ প্রিন্ট করার দরকার হয়না বরং স্ক্যান কপি আপলোড করলেই হয়ে যায়। সেই সাথে আপনার আবেদনের স্ট্যাটাস খুব সহজে দেখে যায়। এই সুবিধা গুলোর পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও আছে যেমন আপনি যদি আবেদন করার সময় ভুল তথ্য বা কোথাও ভুল করে ফেলেন তা সমাধান করা অনেক কঠিন হয়ে যায়।
এখন আপনি যদি প্রথমবার ব্যাংক লোনের জন্য আবেদন করতে যান তাহলে আপনার জন্য ভালো হবে সরাসরি ব্যাংকে গিয়ে আবেদন করা। কারণ এখানে আপনি খুব সতর্কতার সাথে আবেদনের প্রসেস গুলো সম্পূর্ন করতে পারবেন এবং কোথাও কিছু বুঝতে না পারলে ব্যাংকে কর্মরত মানুষদের সাহায্য নিতে পারবেন। সেই সাথে আপনি যদি কোন জায়গায় একান্ত বুঝতে না পারেন তাহলে সেই কাজটি ব্যাংক কর্মকর্তারা করে দিয়ে থাকে। আবার আপনি যদি একটু বড় অংকের লোন নিতে চান তাহলে অফলাইন আবেদন আপনার জন্য ভালো। এখানে সুবিধা গুলোর পাশাপাশি অসুবিধা হলো ব্যাংকে গিয়ে আবেদন করতে অনেক সময় লাগে আবার অনেক সময় আপনার ফাইল গুলো এক জায়গা থেকে অনেক জায়গায় নিয়ে ঘুরানো হতে পারে সেই সাথে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হতে পারে।
KYC ডকুমেন্টস আপলোড করার নিয়ম
KYC ডকুমেন্টস আপলোড করার নিয়ম জানার আগে আমাদের জানা উচিত KYC ডকুমেন্টস বলতে আসলে কি বোঝায়। KYC এর পূর্ণরূপ হলো Know Your Customer যার বাংলা প্রতিশব্দ হচ্ছে আপনার গ্রাহককে জানুন। আপনি যদি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার জন্য আবেদন করতে যান তাহলে আপনাকে অবশ্যই KYC ডকুমেন্টস আপলোড করতে হবে। এটির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রতারণা, অর্থপাচার, সন্ত্রাসী অর্থায়ন ও বেআইনি লেনদেন প্রতিরোধ করা। এখন আমরা জানবো KYC ডকুমেন্টস আপলোড করার জন্য কি কি কাগজপত্র ও তথ্য জমা দিতে হয় এই সম্পর্কে।
জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স
ছবিসহ ফরম পূরণ
বৈধ মোবাইল নম্বর ও ইমেইল ঠিকানা
বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা
পেশা ও আয়ের উৎস সংক্রান্ত তথ্য
নমিনির তথ্য ইত্যাদি।
এখন আমরা অনলাইনে KYC ডকুমেন্টস আপলোড করার ধাপগুলো সম্পর্কে জানবো। এর জন্য প্রথমেই আপনি যে ব্যাংক থেকে আবেদন করেছেন সেই ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে লগইন করে নিতে হবে। এরপর Apply for Loan বা KYC Update এই অপশনে প্রবেশ করতে হবে। এরপর ডকুমেন্ট টাইপ সিলেক্ট করে সেটি তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী আপলোড করতে হবে। তবে ছবি গুলোর ফরমেট সবসময় JPG বা PNG তে রাখতে হবে এবং ছবির সাইজ ১ এমবি থেকে ৫ এমবি এর মধ্যে হলে ঝামেলা ছাড়াই ছবি গুলো আপলোড হয়ে যায়।
ব্যাংক লোন কত প্রকারের হয়ে থাকে বিস্তারিত জানুন
মানুষে চাহিদা, অর্থনৈতিক অবস্থা এবং উদ্দেশ্যের উপর নির্ভর করে ব্যাংক লোনের ধরণ সাধারণত অনেক প্রকারের হয়ে থাকে। সহজ ভাষায় বলতে গেলে আপনার উদ্দেশ্য যদি হয় ব্যাংক থেকে অর্থ লোন করে একটি বাড়ি বানানোর তাহলে এই লোনের ধরণ হবে হোম লোন। আবার অপর দিকে যদি এমন হয় আপনার একটি বাড়ি রয়েছে এবং এই বাড়ির বিপরীতে বা গ্যারান্টি হিসেবে রেখে ব্যাংক থেকে অর্থ লোন নিবেন তাহলে এই লোনের ধরণ হবে মার্জিন লোন বা লোন এগেইনস্ট ডিপোজিট। এখন আমরা ব্যাংক লোন কত প্রকারের হয়ে থাকে এই বিষয়ে জানবো।
পার্সোনাল লোনঃ ব্যক্তিগত প্রয়োজনের জন্য যেমন চিকিৎসা, ভ্রমণ, বিয়ে, পড়াশোনা বা হঠাৎ কোনো জরুরি খরচ মেটানোর জন্য যে লোন নেওয়া হয় তাকে পার্সোনাল লোন বলে। সাধারণত এই লোন জামানত ছাড়াই দেওয়া হয়।
হোম লোনঃ বাড়ি কেনা, তৈরি করা বা পুনর্নির্মাণ করার জন্য যে লোন নেওয়া হয় তাকে হোম লোন বলা হয়। সাধারণত এই ধরনের লোন দীর্ঘমেয়াদি হয়ে থাকে।
এডুকেশন লোনঃ দেশে বা বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য শিক্ষার্থী বা অভিভাবককে যে লোন প্রদান করা হয় তাকে এডুকেশন বা শিক্ষা লোন বলা হয়।
বিজনেস লোনঃ ব্যবসা শুরু, সম্প্রসারণ বা মূলধন সংকট কাটানোর জন্য যে লোন নেওয়া হয় তাকে বিজনেস লোন বা ব্যবসা লোন বলা হয়।
মার্জিন লোন বা লোন এগেইনস্ট ডিপোজিটঃ ব্যাংকে সঞ্চয়পত্র, এফডিআর বা অন্য কোনো গ্যারান্টির মাধ্যমে যে লোন নেওয়া হয় তাকে মার্জিন লোন বা লোন এগেইনস্ট ডিপোজিট লোন বলে।
এগ্রিকালচার লোনঃ কৃষিকাজ, চাষাবাদ, প্রাণিসম্পদ বা মৎস্য খাতের উন্নয়নের জন্য যে লোন নেওয়া হয় তাকে এগ্রিকালচার লোন বলে।
ক্রেডিট কার্ড লোনঃ ক্রেডিট কার্ডে অনুমোদিত সীমার মধ্যে যে লোন নেওয়া হয় তাকে ক্রেডিট কার্ড লোন বলে। এই ধরনের লোনের সুদের হার অনেক বেশি হয়।
অটো লোনঃ সাধারণত বিভিন্ন প্রকার গাড়ি যেমন মটরসাইকেল, প্রাইভেট কার ইত্যাদি কেনার জন্য যে লোন নেওয়া হয় তাকে বলা হয় অটো লোন।
কোন কোন ব্যাংক অনলাইন লোন আবেদন গ্রহণ করে জানুন
বাংলাদেশে নামি দামি অনেক ব্যাংক থাকলেও সকল ব্যাংক অনলাইন আবেদন গ্রহণ করে না। তবে যেসকল ব্যাংক অনলাইন লোন আবেদন গ্রহণ করে না তাদের সংখ্যা অনেক কম। তাই আপনি যখন কোন নির্দিষ্ট ব্যাংকে লোন নেওয়ার জন্য আবেদন করতে যাবেন তার পূর্বে জেনে নেওয়া ভালো যে উক্ত ব্যাংকটি অনলাইন লোন আবেদন গ্রহণ করে কিনা। এই বিষয়টি জানার জন্য সরাসরি ব্যাংকে উপস্থিত হওয়ার কোন প্রয়োজন নেই আপনি চাইলে তাদের যোগাযোগ নাম্বারে ফোন করে এই বিষয়ে জেনে নিতে পারেন। এখন আমরা জানবো বাংলাদেশে কোন কোন ব্যাংক অনলাইন লোন আবেদন গ্রহণ করে।
ব্যাংক
লোনের ধরণ
ব্র্যাক ব্যাংক
পার্সোনাল লোন, হোম লোন, SME লোন
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক
পার্সোনাল ও SME লোন
সিটি ব্যাংক
পার্সোনাল লোন, কার্ড ভিত্তিক লোন
ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড
পার্সোনাল, SME, হোম লোন
প্রাইম ব্যাংক
পার্সোনাল ও বিজনেস লোন
আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক
ইসলামিক শরীয়াহভিত্তিক ফাইনান্স
লোন নেওয়ার জন্য বাংলাদেশে কোন ব্যাংক ভালো
লোন নেওয়ার জন্য বাংলাদেশে কোন ব্যাংক ভালো এটি সম্পূর্ন নির্ভর করবে আপনার লোন নেওয়ার ধরনের উপর। সহজ ভাষায় বলতে গেলে আপনি যদি পার্সোনাল লোন নেন তাহলে আপনার জন্য একটি ব্যাংক ভালো হবে আবার আপনি যদি হোম লোন নিয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্য আরেক ব্যাংক ভালো হবে। এক কথায় বলতে গেলে কোন ব্যাংক আপনাকে সকল লোনের জন্য একই সুযোগ সুবিধা দিবে না। তাই লোনের ধরণ ও পরিমাণের হিসবে মাথায় রেখে আপনাকে একেক ব্যাংক একেক রকম সুযোগ সুবিধা দিবে এবং সেই অনুযায়ী নির্ভর করবে লোন নেওয়ার জন্য বাংলাদেশে কোন ব্যাংক ভালো। এখন আমরা জানার চেষ্টা করবো কোন ধরনের লোনের জন্য কোন ব্যাংক ভালো ও কি কি সুবিধা দেয় এই সম্পর্কে।
ব্যাংক
লোন
সুবিধা
ব্র্যাক ব্যাংক
SME ও পার্সোনাল লোন
দ্রুত প্রক্রিয়া, কাস্টমার সাপোর্ট ভালো, অনলাইন আবেদন ব্যবস্থা
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক
পার্সোনাল ও শিক্ষালোন
কম সুদের হার, রকেট দিয়ে সহজ EMI পেমেন্ট
সিটি ব্যাংক
পার্সোনাল লোন ও ক্রেডিট কার্ড ভিত্তিক লোন
দ্রুত প্রক্রিয়া, একদিনেই অনুমোদন
ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড
পার্সোনাল লোন ও হোম লোন
অনলাইন ফর্ম, দ্রুত প্রসেসিং
প্রাইম ব্যাংক
হোম লোন ও SME
কম কিস্তি ব্যবস্থা, ভালো কাস্টমার সার্ভিস
গ্রামীণ ব্যাংক
গ্রামীণ উদ্যোক্তা, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী
নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ
বিশেষ সতর্কতাঃ উপরের তথ্য গুলো সাধারণত জ্ঞান নেওয়ার জন্য দেওয়া হয়েছে। আপনি যদি একান্তই ব্যাংক লোন নিতে চান এবং জানতে চান কোন ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া আপনার জন্য ভালো হবে তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক থেকে বিস্তারিত তথ্য জেনে অথবা একজন আর্থিক পরামর্শকের পরামর্শ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
পরিশেষেঃ ব্যাংক লোন পাওয়ার জন্য অনলাইন ফর্ম পূরণ
ব্যাংক লোন পাওয়ার জন্য অনলাইন ফর্ম পূরণ কিভাবে করতে হয় এই বিষয়ে উপরে ছবিসহ বিস্তারিত আলোচনা ধাপে ধাপে করা হয়েছে। তাই আশা করা যায় যে আপনি যদি উপরে দেওয়া পদ্ধতিটি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে আপনি খুব সহজে নিজে নিজেই ঘরে বসে এই আবেদনটি করতে পারবেন। আমরা শুধু উপরে আবেদন প্রক্রিয়াটি দেখায়নি বরং সেই সাথে বাংলাদেশে কোন কোন ব্যাংক অনলাইন আবেদন গ্রহণ করে এবং কোন ব্যাংক লোন দেওয়ার জন্য ভালো সেই সকল বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তাই উপরের লিখা গুলো মনোযোগ সহকারে পড়লে ব্যাংক লোন পাওয়ার জন্য অনলাইন ফর্ম পূরণ থেকে শুরু করে এই বিষয়ে সাধারণ সমস্যা গুলো নিজে থেকে সমাধান করতে পারবেন বলে আমরা আশাবাদী। 250311
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url