নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ৫টি সেরা মার্কেটপ্লেস
নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ৫টি সেরা মার্কেটপ্লেস নিয়ে আজকে আলোচনা করা হবে। অধিকাংশ নতুন ফ্রিল্যান্সারদের তাদের ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে সফল না হওয়ার পেছেনে অন্যতম কারণ হচ্ছে সঠিক মার্কেটপ্লেস বাছায় না করা। তাই এই বিষয় গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে।
শুধু সঠিক মার্কেটপ্লেস নির্বাচন করলেই ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে সফল হওয়া যায় না বরং এর জন্য আরোও অনেক নিয়মনীতি মেনে চলতে হয়। তবে সঠিক মার্কেটপ্লেস বেছে নেওয়ার ফলে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে সফল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক অংশের বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।
নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ৫টি সেরা মার্কেটপ্লেস
- নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ৫টি সেরা মার্কেটপ্লেস
- কোন মার্কেটপ্লেসে কোন ধরনের কাজ বেশি পাওয়া যায়?
- নতুনদের জন্য কাজ পাওয়ার সহজ কৌশল ও টিপস
- ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হতে হলে যে বিষয়গুলো মাথায় রাখা জরুরি
- নতুনদের জন্য সবচেয়ে সহজ ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম কোনটি?
- দীর্ঘমেয়াদী কাজ করার জন্য কোন প্ল্যাটফর্ম সব চেয়ে ভালো?
- নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সঠিক মার্কেটপ্লেস নির্বাচন করার টিপস
- নতুনদের জন্য কোন স্কিল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করা ভালো?
- মার্কেটপ্লেসে পেমেন্ট গ্রহণের সহজ উপায় সম্পর্কে জানুন
- পরিশেষেঃ নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ৫টি সেরা মার্কেটপ্লেস
নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ৫টি সেরা মার্কেটপ্লেস
নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ৫টি সেরা মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত
জানবো। যারা নতুন ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন তাদের কাজ শুরু করার
জন্য মার্কেটপ্লেস নির্বাচন করা অনেক গুরুত্বপূর্ন। প্রায় সময় দেখা যায়
অনেক নতুন ফ্রিল্যান্সার যারা রয়েছেন তারা বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে
একাউন্ট খুলে বসে থাকেন কিন্তু কোন কাজ পান না। এর ফলে এই
সকল ফ্রিল্যান্সাররা মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েন এবং অনলাইনে ইনকাম করার
আশা ছেড়ে দেন। ঠিক এই কারণেই নতুন কাজ শুরু করার আগে অবশ্যই
সঠিক মার্কেটপ্লেস নির্বাচন করতে হবে। তাই আজকে আমরা নতুন
ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা ৫টি মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে
জানবো।
- Fiverr - ফাইভারে নতুনদের কাজ পেতে হলে কিছুটা কষ্টকর হলেও নতুনদের জন্য বেস্ট একটি মার্কেটপ্লেস। কারণ এখানে অন্যান্য মার্কেটপ্লেসের মত বিড করতে হয় না। এখানে কাজ পাওয়ার জন্য গিগ পাবলিশ করতে হয়। যদি আপনার গিগ ক্লায়েন্ট পছন্দ করেন তাহলে ক্লায়েন্ট নিজে থেকে যোগাযোগ করবে আপনাকে আলাদা ভাবে জব রিকোয়েস্ট পাঠানোর প্রয়োজন পড়বে না।
- Kwork - ফাইভারের মত এই মার্কেটপ্লেসেও আলাদা আলাদা ভাবে ক্লায়েন্টকে জব রিকোয়েস্ট পাঠানোর প্রয়োজন হয় না। আপনি যে সার্ভিসে কাজ করতে চান সেটি নিয়ে সুন্দর ভাবে একটি গিগ পাবলিশ করতে হয় এই মার্কেটপ্লেসে। আপনার সার্ভিস যদি কোন ক্লায়েন্ট নিতে চায় তাহলে ক্লায়েন্ট নিজে থেকেই আপনার সাথে যোগাযোগ করবে। তুলনা মূলক ভাবে এখানে কম্পিটিশন কম থাকায় নতুনদের জন্য এই মার্কেটপ্লেস অনেক ভালো।
- Upwork - এটি হচ্ছে একটি প্রফেশনাল মার্কেটপ্লেস। তবে এখানে কাজ পাওয়া কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। কারণ এখানে ফাইভার বা কেওয়ার্ক এর মতো গিগ তৈরি না করে প্রতিটি কাজের জন্য ক্লায়েন্টকে প্রোপোজাল পাঠাতে হয়। কাজ পাওয়ার জন্য আপনাকে প্রোফাইল সুন্দরভাবে সাজাতে হবে এবং আকর্ষণীয় কভার লেটার লিখতে হবে। যদিও শুরুতে কষ্ট হয় কিন্তু একবার কাজ পেলে পরবর্তীতে রেগুলার ক্লায়েন্ট পাওয়া যায়।
- Freelancer.com - এটি একটি বহুল ব্যবহৃত আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেস যেখানে নতুনরা সহজেই ছোট ছোট কাজের বিড করে শুরু করতে পারে। এখানে কাজ পাওয়ার জন্য প্রতিটি প্রজেক্টে বিড করতে হয়। প্রোফাইল ঠিকভাবে সাজিয়ে ও দক্ষতা অনুযায়ী বিড করলে সফলতার সম্ভাবনা বাড়ে। সময়ের সাথে রিভিউ ও রেটিং ভালো হলে কাজ পাওয়া অনেক সহজ হয়ে যায়।
- PeoplePerHour - এটি একটি ইউকে ভিত্তিক ফ্রিল্যান্সিং সাইট যা মূলত ইউরোপীয়ান ক্লায়েন্টদের মাঝে জনপ্রিয়। এই মার্কেটপ্লেসেও কাজ পাওয়ার জন্য বিড করতে হয়। তবে বিড করার পাশাপাশি ফাইভারের মত সরাসরি গিগ পাবলিশ করা যায়। যারা নতুন ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন তারা কাজ পাওয়ার জন্য গিগ পাবলিশ করার পাশাপাশি কাজের জন্য বিড করলে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। এছাড়াও এখানে কম্পিটিশন তুলনামূলক কম এবং স্পেসিফিক স্কিল নিয়ে কাজ শুরু করা অনেক সুবিধাজনক। যারা নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট কাজ সম্পন্ন করতে পারদর্শী তাদের জন্য এটি একটি ভালো প্ল্যাটফর্ম হতে পারে।
কোন মার্কেটপ্লেসে কোন ধরনের কাজ বেশি পাওয়া যায়?
আমরা উপরে এতক্ষন নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা কিছু মার্কেটপ্লেস
নিয়ে আলোচনা করলাম। এখন আমরা জানার চেষ্টা করবো এই
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস প্লাটফোর্মে কোন ধরনের কাজের চাহিদা বেশি বা
কোন ধরনের কাজ বেশি পাওয়া যায়। নিচে কোন মার্কেটপ্লেসে কোন ধরনের কাজ
বেশি পাওয়া যায় এই সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো।
মার্কেটপ্লেস | কাজের ধরন |
---|---|
Fiverr | গ্রাফিক ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং, কনটেন্ট রাইটিং, ভিডিও এডিটিং, ওয়েবসাইট ডিজাইন |
Kwork | ডিজিটাল মার্কেটিং, SEO সার্ভিস, কনটেন্ট রাইটিং, গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েবসাইট ফিক্সিং |
Upwork | ওয়েবসাইট ডিজাইন, কনটেন্ট রাইটিং, ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং |
Freelancer.com | ডাটা এন্ট্রি, গ্রাফিক ডিজাইন, কনটেন্ট রাইটিং, ওয়েবসাইট ডিজাইন, ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট |
PeoplePerHour | ওয়েব ডিজাইন, কপি রাইটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট, ভিডিও প্রোডাকশন |
নতুনদের জন্য কাজ পাওয়ার সহজ কৌশল ও টিপস
বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শেখা যতটা সহজ কাজ পাওয়া ঠিক ততটা সহজ হয়
না। কারণ এক সময় কাজের পরিমাণ অনেক বেশি ছিলো কিন্তু
দক্ষ ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা অনেক কম থাকায় যারা কিছুটা কাজ শিখেছে
এমন ফ্রিল্যান্সারও কাজ পেয়ে যেত। কিন্তু বর্তমান
সময়ে ফ্রিল্যান্সিং ভালোভাবে শেখার পরেও হাজার হাজার ফ্রিল্যান্সার
কাজ পাচ্ছে না। এর অন্যতম কারণ দুইটি হতে পারে। একটি হচ্ছে কাজের তুলনায়
ফ্রিল্যান্সারের পরিমাণ বেশি হওয়ার কারণে ক্লায়েন্ট শুধু মাত্র বেশি রিভিও ও
কাজ সম্পূর্ন করা ফ্রিল্যান্সারদের কাজ দিচ্ছে এবং দ্বিতীয় কারণ হতে
পারে কাজ পাওয়ার সঠিক কৌশল ও টিপস না জানার কারণে নতুন ফ্রিল্যান্সাররা
কাজ পাচ্ছে না। তাই এখন আমরা নতুনদের জন্য কাজ পাওয়ার কিছু সহজ কৌশল ও
টিপস নিয়ে আলোচনা করবো।
প্রথমেই যে দিকটি লক্ষ্য রাখতে হবে সেটি হচ্ছে বর্তমান সময়ে এবং ভবিষ্যতেও
চাহিদা আছে এমন কোন স্কিল শিখতে হবে। উদাহরণ সরূপঃ এক সময় ফটোশপ দিয়ে ছবির
ব্যাকগ্রাউন্ড রিমুভ করার জন্য মানুষ ফ্রিল্যান্সারদের ব্যবহার করতো এবং এই
কাজের জন্য ভালো পরিমাণ টাকাও দিতো। বর্তমানে এই কাজের চাহিদা নেই বললেই চলে
এখন সবাই নিজে নিজেই ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড দিমুভ করতে পারে। তাই এই ধরনের স্কিল
না শিখে চাহিদা সম্পূর্ন স্কিলে নিজেকে এক্সপার্ট করতে হবে। এরপর যে দিকটি
লক্ষ্য রাখতে হবে সেটি হচ্ছে কাজ শেখার পর নিজের একটি শক্তিশালী প্রোটফোলিও
তৈরি করতে হবে। এরপর মার্কেটপ্লেস গুলোতে অ্যাক্টিভ থাকতে হবে। সব চেয়ে বড় যে
টিপস সেটি হচ্ছে হাল ছাড়া যাবে না। এই দিক গুলো লক্ষ্য করলে এবং মেনে চললে
আশা করা যায় কাজ পাওয়া যাবে।
ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হতে হলে যে বিষয়গুলো মাথায় রাখা জরুরি
ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হতে হলে এমন অনেক বিষয় আছে যেগুলো মাথায় রাখতে হয়। আমরা
লক্ষ্য করলে এমন অনেক মানুষ দেখতে পাবো যারা অনেক আগে
থেকেই ফ্রিল্যান্সিংয়ের কোন একটি সেক্টরে কাজ করতো কিন্তু বর্তমানে কাজ
না করে বসে আছে বা অন্য কোন কাজ করছে। এর একটি মাত্র কারণ হতে পারে এবং সেটি
হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে ব্যার্থতা। ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হতে
হলে সবার আগে নিজেকে ব্র্যান্ড হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আপনি যে কাজটি ভালো
পারেন সেটি যদি আপনি মানুষকে বুঝাতে পারেন তাহলে ক্লায়েন্ট আপনাকে অবশ্যই কাজ
দিবে। নিজেকে ব্র্যান্ড হিসেবে তৈরি করতে সবার আগে একটি স্ট্রং প্রোফাইল এবং
নিজের একটি পোর্টফোলিও তৈরি করতে হবে।
আপনি যে কাজ গুলো করেছেন সেই কাজের নমুনা সেই প্রোফাইল
এবং পোর্টফোলিও তে সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করতে হবে। বর্তমান সময়ে নতুনদের
কাজ না পাওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে নিজের একটি প্রোফাইল এবং পোর্টফোলিও
না থাকা অন্যতম কারণ হিসেবে ধরা হয়। আপনি যখন কোন ক্লায়েন্টের কাছে থেকে কাজ
পাবেন সেই কাজ ক্লায়েন্টের চাহিদা অনুযায়ী শেষ করে সময় মত ডেলিভারি দিতে হবে।
অনেক সময় অনেকে ইংরেজিতে একটু দূর্বল হওয়ার কারণে ক্লায়েন্ট যে কাজ দিয়েছে
এবং ক্লায়েন্টের চাহিদা বুঝতে না পারার কারণে এবং সময় মত ডেলেভারি না দেওয়ার
কারণে ক্লায়েন্ট বাজে রিভিও দিয়ে থাকে। যা পরবর্তিতে কাজ পাওয়ার সময় সমস্যার
কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হতে হলে এই বিষয় গুলো মাথায়
রাখা অনেক গুরুত্বপূর্ন বিষয়।
নতুনদের জন্য সবচেয়ে সহজ ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম কোনটি?
বর্তমান সময়ে অনেক ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম রয়েছে কিন্তু নতুনদের
জন্য সবচেয়ে সহজ ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে কেওয়ার্ক। কারণ অন্যান্য
সকল ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম গুলোতে কাজ পাওয়ার জন্য বিড করতে
হয়। আর এই বিড গুলো ফ্রিতে পাওয়া যায় না। উয়াদাহরন স্বরূপ আপওয়ার্কে কাজ
পাওয়ার জন্য যে বিড গুলো করতে হয় সেগুলো আআদা ভাবে টাকা খরচ করে কিনতে হয়।
প্রতিমাসে মাত্র কয়েকটা বিড দেওয়া হয় যেগুলো দিয়ে মাত্র এক থেকে দুইটি কাজের
জন্য বিড করা যায়। এই এক থেকে দুইটি বিডের মধ্যে কাজ না পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক
বেশি থাকে। তাই বাধ্য হয়ে টাকা খরচ করে বিড কিনতে হয়।
অপর দিকে কেওয়ার্কে কাজ পাওয়ার জন্য আলাদা ভাবে বিড করতে হয় না বা কেনার
প্রয়োজন হয় না। আপনি যে স্কিল বা কাজ ভালো পারেন সেই স্কিলের বর্ননা দিয়ে
একটি গিগ পাবলিশ করতে হয়। আপনার এই স্কিলের যদি কোন ক্লায়েন্টের প্রয়োজন হয়
তাহলে সেই ক্লায়েন্ট নিজে থেকে কাজ করার জন্য আপনাকে ম্যাসেজ করে। আলাদা ভাবে
আপনাকে ক্লায়েন্ট খুঁজে খুঁজে ম্যাসেজ করতে হয় না। এছাড়াও নতুনদের জন্য
সবচেয়ে সহজ ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম কেওয়ার্ক হওয়ার অন্যতম কারণ
হচ্ছে ইউজার ফ্রেন্ডলি ইন্টারফেস। কেওয়ার্কের ওয়েবসাইট অনেক সহজ এবং
নতুনদের জন্য বোঝা ও ব্যবহারে অনেক সুবিধাজনক। আবার কেওয়ার্কে অনেক ছোট ছোট
কাজ করার সুযোগ থাকার কারণে নতুন ফ্রিল্যান্সার খুব সহজেই কাজ পাওয়ার
সম্ভাবনা বেশি থাকে।
দীর্ঘমেয়াদী কাজ করার জন্য কোন প্ল্যাটফর্ম সব চেয়ে ভালো?
বর্তমানে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে কাজের সুযোগ থাকলেও
দীর্ঘমেয়াদী কাজের জন্য সবচেয়ে ভালো প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে আপওয়ার্ক। কারণ এই
প্ল্যাটফর্মে অনেক বড় কোম্পানি ও সিরিয়াস ক্লায়েন্ট নিয়মিত কাজ দিয়ে থাকে।
এখানে বেশিরভাগ কাজই হয় মাসিক, সাপ্তাহিক বা নির্দিষ্ট সময় ভিত্তিক চুক্তির
মাধ্যমে। আপওয়ার্ক এ অনেক ক্লায়েন্ট আছে যারা একবার কাজ দিলে দীর্ঘদিন ধরে
একই ফ্রিল্যান্সারকে নিয়েই প্রজেক্ট শেষ করতে চায়। এতে করে একটি
নির্ভরযোগ্য সম্পর্ক তৈরি হয় এবং ইনকামও নিয়মিত হয়। যারা ফ্রিল্যান্সিংকে
স্থায়ী ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে চান তাদের জন্য আপওয়ার্ক ফ্রিল্যান্সিং
প্ল্যাটফর্ম সব চেয়ে ভালো।
এছাড়াও আপওয়ার্ক এর মাইলস্টোন পেমেন্ট সিস্টেম, টাইম ট্র্যাকার এবং
কনট্রাক্ট বেইজড সিস্টেম দীর্ঘমেয়াদী কাজের জন্য অনেক নিরাপদ। ক্লায়েন্ট ও
ফ্রিল্যান্সার উভয়ের জন্য এটি একটি প্রফেশনাল ও
বিশ্বাসযোগ্য ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম। ফাইভার বা কেওয়ার্ক এর মতো
ছোট ও এককালীন কাজের তুলনায় এখানে লং টার্ম বা অনেক সময় ধরে আয় করা সম্ভব।
সময়মতো কাজ ডেলিভারি, ভালো যোগাযোগ এবং প্রোফাইল মেইন্টেইন করলে একাধিক
ক্লায়েন্ট থেকেও দীর্ঘমেয়াদী কাজ পাওয়া যায়। আপওয়ার্ক এ একবার প্রোফাইল গড়ে
তুলতে পারলে মাসের পর মাস এমনকি বছরের পর বছর কাজ পাওয়া যায়। তাই যারা
সিরিয়াসলি ফ্রিল্যান্সিং করতে চান তাদের জন্য আপওয়ার্ক সবচেয়ে উপযুক্ত
প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে আপওয়ার্ক।
নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সঠিক মার্কেটপ্লেস নির্বাচন করার টিপস
ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগে সঠিক মার্কেটপ্লেস নির্বাচন করা নতুনদের জন্য
খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ। কারণ প্রতিটি মার্কেটপ্লেসের কাজের ধরন,
কম্পিটিশন ও ক্লায়েন্টের আচরণ আলাদা হয়ে থাকে। তাই প্রথমেই বুঝে নিতে হবে
আপনি কোন স্কিলে ভালো এবং কোন প্ল্যাটফর্মে সেই স্কিলের চাহিদা বেশি।
উদাহরণস্বরূপ আপনি যদি গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং বা
কনটেন্ট রাইটিং ভালো জানেন তাহলে ফাইভার কিংবা কেওয়ার্ক আপনার জন্য ভালো
হতে পারে। অন্যদিকে আপনি যদি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বা সফটওয়্যার রিলেটেড
কাজ ভালো জানেন তাহলে আপনার জন্য আপওয়ার্ক বেস্ট হতে পারে। নিজের দক্ষতা ও
আগ্রহ অনুযায়ী প্ল্যাটফর্ম বেছে নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ন একটি ধাপ।
প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করার সময় আরও কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। যেমনঃ
প্রতিযোগিতা কেমন, নতুনদের সুযোগ কেমন, এবং পেমেন্ট সিস্টেম কেমন। ফাইভার
এবং কেওয়ার্ক মার্কেটপ্লেসে বিড করতে না হওয়ায় নতুনরা সহজেই গিগ পাবলিশ করে
কাজের জন্য অপেক্ষা করতে পারে। কিন্তু আপওয়ার্কের মতো প্ল্যাটফর্মে
প্রফেশনাল রেজ্যুমে, প্রোফাইল এবং প্রপোজাল খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সঠিক মার্কেটপ্লেসে শুরু করলে হতাশা ও সময় নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
তাই ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্যারিয়ার শুরু করার আগে ভালোভাবে রিসার্চ করে এবং
নিজের অবস্থান বিচার করে প্ল্যাটফর্ম বেছে নেওয়াই হচ্ছে সবচেয়ে কার্যকর
টিপস। উপরের এই বিষয় গুলো মাথায় রেখে যদি মার্কেটপ্লসে নির্বাচন করে কাজ
শুরু করেন তাহলে আশা করা যায় খুব সহজেই কাজ পেয়ে যাবেন।
নতুনদের জন্য কোন স্কিল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করা ভালো?
নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার সময় এমন একটি স্কিল নির্বাচন করা
উচিত যেটা শেখা সহজ এবং চাহিদাও বেশি। সাধারণত গ্রাফিক ডিজাইন, কনটেন্ট
রাইটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, ভিডিও এডিটিং ও ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট
কাজগুলো শেখা তুলনামূলক সহজ। বিশেষ করে কন্টেন্ট রাইটিং ও সোশ্যাল মিডিয়া
ম্যানেজমেন্ট এমন দুটি কাজ যা কম খরচে এবং স্বল্প সময়ে শিখে আয় শুরু করা
যায়। আবার অনেকেই গ্রাফিক ডিজাইন শিখতে চায় এর অন্যতম কারণ হচ্ছে ফাইভার বা
কেওয়ার্কে মার্কেটপ্লেসে এ ধরনের কাজের প্রচুর চাহিদা থাকে। ইউটিউব ও
বিভিন্ন অনলাইন কোর্স প্ল্যাটফর্ম থেকে খুব সহজেই এসব স্কিল শেখা যায়। তাই
শুরুতেই জটিল কোনো স্কিল না নিয়ে সহজ এবং জনপ্রিয় স্কিল শেখা নতুন
ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ভালো।
স্কিল বাছাইয়ের সময় নিজের আগ্রহ এবং দীর্ঘমেয়াদে ক্যারিয়ার গঠনের
সম্ভাবনাকেও বিবেচনায় নিতে হবে। যেমন আপনি যদি লেখালেখি পছন্দ করেন তবে
কনটেন্ট রাইটিং বা ব্লগিং আপনার জন্য বেস্ট অপশন হতে পারে। আর যদি
ভিজ্যুয়াল কাজ পছন্দ করেন তবে গ্রাফিক ডিজাইন বা ভিডিও এডিটিং আপনার জন্য
বেস্ট অপশন হতে পারে। তাছাড়াও বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং যেমন ফেসবুক
অ্যাডস SEO বা ইমেইল মার্কেটিং এর চাহিদাও অনেক বেশি। এমন কিছু স্কিল বেছে
নেওয়া উচিত যেগুলো ভবিষ্যতে আপগ্রেড করা সম্ভব এবং যেগুলোর বিভিন্ন
মার্কেটপ্লেসে কাজ রয়েছে। শেখার পাশাপাশি ছোট ছোট প্রজেক্টে কাজ করে
অভিজ্ঞতা অর্জন করলে ক্লায়েন্টের আস্থা অর্জন সহজ হয়। সব মিলিয়ে বলা যায়
যে নতুনদের বর্তমানে এবং ভবিষ্যতেও এর চাহিদা থাকবে এমন স্কিল
শেখা উচিত।
মার্কেটপ্লেসে পেমেন্ট গ্রহণের সহজ উপায় সম্পর্কে জানুন
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ করার পর ক্লায়েন্ট থেকে পেমেন্ট পাওয়ার
জন্য নির্দিষ্ট কিছু পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করতে হয়। জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস
যেমন Fiverr, Upwork, Freelancer, Kwork ইত্যাদিতে পেমেন্ট নেওয়ার জন্য
Payoneer, PayPal এবং ব্যাংক ট্রান্সফার সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশে
PayPal সরাসরি না থাকলেও Payoneer একটি নিরাপদ ও সহজ মাধ্যম হিসেবে সকলের
মাঝে পরিচিত। আপনি মার্কেটপ্লেসে পেমেন্ট অপশনে গিয়ে আপনার Payoneer
অ্যাকাউন্ট লিংক করতে পারেন। এরপর প্রতিবার পেমেন্ট আসলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে
আপনার Payoneer এ চলে আসবে। সেখান থেকে আপনি আপনার স্থানীয় ব্যাংকে টাকা
তুলতে পারবেন।
আবার আপনি যদি ফাইভার বা কেওয়ার্ক মার্কেটপ্লেস ব্যবহার করেন তাহলে খুব
সহজেই Payoneer অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। এর জন্য
প্রথমে আপনাকে একটি Payoneer অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে এবং সেটি মার্কেটপ্লেসে
অ্যাড করতে হবে। অনেক মার্কেটপ্লেসে ডাইরেক্ট ব্যাংক ট্রান্সফারও রয়েছে তবে
সেটির প্রক্রিয়া তুলনামূলক জটিল হয়ে থাকে। পেমেন্ট রিসিভ করার পর সেটি দুই
থেকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে ব্যাংকে পৌঁছে যায়। নিরাপদ পেমেন্টের জন্য
সবসময় মার্কেটপ্লেসের অফিশিয়াল পেমেন্ট মেথড ব্যবহার করা উচিত। ভুলভাবে বা
বাইরের মাধ্যমে পেমেন্ট নেওয়া হলে প্রতারণার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই পেমেন্ট উইথড্রো করার সময় এই সকল বিষয় নিয়ে সতর্কতা অবল্বন করতে হবে।
পরিশেষেঃ নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ৫টি সেরা মার্কেটপ্লেস
নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ৫টি সেরা মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে উপরে বিস্তারিত
আলোচনা করেছি। নতুনদের ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস প্লাটফোর্ম গুলোতে সফল না
হওয়ার পেছনে অন্যতম যে কারণ রয়েছে সেটি হচ্ছে সঠিক মার্কেটপ্লেস
নির্বাচন না করা। সঠিক মার্কেটপ্লেস নির্বাচন না করে
এমন মার্কেটপ্লেস গুলোতে কাজ করতে যায় যেখানে কাজের চাহিদা তেমন নেই
কিন্তু কম্পিটিশন রয়েছে অনেক। এর ফলে তারা কাজ না পেয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে
ভেঙ্গে পড়ে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ ছেড়ে দেয়। ঠিক এই কারণেই আজকে
আমরা নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ৫টি সেরা মার্কেটপ্লেস নিয়ে এসেছি। আশা
করা যায় নিয়ম মেনে কাজ করলে এই মার্কেটপ্লেস গুলো থেকে খুব সহজেই
নতুন ফ্রিল্যান্সারা কাজ পেয়ে যাবে। 250311
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url