উইন্ডোজ ১১-এ অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস কিভাবে ইনস্টল করবেন জানুন

উইন্ডোজ ১১-এ অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস কিভাবে ইনস্টল করবেন এই বিষয়ে এখন আমরা ছবি সহ  বিস্তারিত ধাপে ধাপে আলোচনা করবো। এখন পর্যন্ত উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম দ্বারা পরিচালিত কম্পিউটার বা ল্যাপটপে সরাসরি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস ইনস্টল করা যায় না। তাই অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস ইনস্টল করার জন্য বিভিন্ন থার্ড পার্টি সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হয়। এই সফটওয়্যার গুলোকে আমরা ইমুলেটর নামে চিনে থাকি। এখন আমরা জানবো কিভাবে আপনি উইন্ডোজ ১১-এ অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস কিভাবে ইনস্টল করবেন। এর জন্য প্রথমে যেকোনো ব্রাউজারে Google Play Games on PC Developer Emulator এটি লিখে সার্চ করতে হবে।

সার্চ করার পর Android Developers এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট সবার উপরে চলে আসবে। এখন উক্ত ইমুলেটর ডাউনলোড করার জন্য এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। উক্ত ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর অনেক গুলো অপশন দেখতে পাবেন। এবার এখান থেকে Download Stable Edition এই অপশনটির উপর ক্লিক করতে হবে। ক্লিক করার সাথে সাথে একটি .exe ফাইল ডাউনলোড হওয়া শুরু করবে। এটিই মূলত সেই কাঙ্ক্ষিত ইমুলেটর।এবার উক্ত ডাউনলোড করা সফটওয়্যারটিকে যে ফোল্ডারে রয়েছে সেখানে যেতে হবে এবং মাউসের বাম বাটন এক সাথে দুইবার ক্লিক করতে হবে। এরপর এই সফটওয়্যারটি ইনস্টল হওয়ার জন্য সিস্টেম পারমিশন চাইবে। এবার সেই পারমিশন দিয়ে দিতে হবে। এরপর সফটওয়্যারটির কিছু রিসোর্চ ফাইল ডাউনলোড করা শুরু করবে। রিসোর্চ ফাইল ডাউনলোড শেষ হলে তারপর সফটওয়্যারটি ওপেন হয়ে যাবে।রিসোর্চ ফাইল ডাউনলোড শেষ হলে তারপর সফটওয়্যারটি ওপেন হওয়ার পর একটি একাউন্ট খোলার জন্য নটিফিকেশন আসবে। এবার এখান থেকে Continue with google অপশনটি সিলেক্ট করতে হবে। আপনি চাইলে অন্যান্য ইমেইল দিয়েও খুলতে পারবেন। তবে এটিই হচ্ছে সব চাইতে সহজ পদ্ধতি। এরপর আপনার সামনে আপনার লগইন করা জিমেইল গুলো চলে আসবে। এবার শুধু যেকোন একটি জিমেইল এর উপর ক্লিক করে একটি পারমিশন দিলেই আপনার একাউন্ট খোলার কাজ শেষ।এরপর আপনার সামনে Allow USB debugging এই নামে একটি অপশন আসবে। এই অপশনটি আসলে সেটি Allow করে দিতে হবে। এরপর আপনি যে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস ইনস্টল করতে চান তার apk ভার্সন ডাউনলোড করে নিতে হবে। এরপর উক্ত ফাইলটি সেই ইমুলেটর ফোল্ডারে কানেক্ট করতে হবে। ইমুলেটর কানেক্ট করার জন্য প্রথমে Powershell ওপেন করে নিতে হবে এবং adb devices এই কমান্ড লিখে ইন্টার বাটনে ক্লিক করতে হবে।

এরপর আপনাকে আরোও একটি কমান্ড লিখতে হবে। মূলত এই কমান্ডের মাধ্যমেই আপনাএ উইন্ডোজ ১১ এর সিস্টেমে উক্ত অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস ইনস্টল হবে। কমান্ডটি হলো adb install "app".apk এখানে "app" এর পরিবর্তে আপনার ডাউনলোড করা অ্যাপটির নাম লিখে হবে। এখানে নাম বলতে শুধু অ্যাপের নাম নয় বরং অ্যাপটি ডাউনলোড করার পর যে ফাইল নাম থাকে সেটি দিতে হবে। উদাহরণ স্বরূপঃ adb install "Install-GooglePlayGames-DeveloperEmulator-Stable".apk এইভাবে লিখার পর ইন্টার বাটনে ক্লিক করতে হবে। এখন আপনার কাজ শেষ পাওয়ারশেল বন্ধ করে করে উক্ত ইমুলেটরে প্রবেশ করে app menu তে প্রবেশ করলে দেখতে পাবেন আপনার  উইন্ডোজ ১১-এ অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস ইনস্টল হয়ে গেছে।

উইন্ডোজ ১১-এ অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস চালানোর জন্য আপনার কম্পিউটার বা ল্যাপটপের কিছু  সিস্টেম রিকোয়্যারমেন্টস থাকতে হবে তা না হলে আপনার কম্পিউটার বা ল্যাপটপে  অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস ইনস্টল করে ব্যবহার করতে পারবেন না। ঠিক দিক লক্ষ্য রেখেই মাইক্রোসফট WSA বা Windows Subsystem for Android এই টুলটি অ্যাড করেছে। এই টুলটি ব্যবহার করে আপনি খুব সহজে উইন্ডোজ অপারেটিং সেইস্টেমে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস ইনস্টল করে ব্যবহার করতে পারবেন। এখন আমরা উইন্ডোজ ১১-এ WSA ব্যবহার করে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস চালানোর সিস্টেম রিকোয়্যারমেন্টস গুলো কি কি এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।

আপনার কম্পিউটারটি যদি দুর্বল হয়ে থাকে অর্থাৎ আপনার কম্পিউটারে যদি প্রসেসর, র‍্যাম, স্টোরেজ ইত্যাদি কম হয়ে থাকে তাহলে LDPlayer ইমুলেটর ব্যবহার করে আপনি খুব সহজে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস গুলো ব্যবহার করতে পারবেন। এই ইমুলেটরটি ইনস্টল করার জন্য আপনার কম্পিউটার বা ল্যাপটপের প্রসেসর হতে হবে Dual core এর Intel/AMD প্রসেসর, র‍্যাম সর্বনিম্ন ২ জিবি, স্টোরেজ ২৫ জিবি SDD অথবা HDD আপনার সম্পিউটারে যদি এই রিকোয়্যারমেন্ট গুলো থেকে থাকে তাহলে আপনি খুব সহজে এটি ব্যবহার করতে পারবেন।প্রথমে আপনাকে যোকোনো একটি ব্রাউজার ওপেন করে নিতে হবে সার্চ করতে হবে LDPlayer লিখে। এটি লিখে সার্চ করলেই সবার উপরে এদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট চলে আসবে। এবার এখানে প্রবেশ করে সফটওয়্যারটি ডাউনলোড করে নিতে হবে। এরপর ফাইল ম্যানেজারে প্রবেশ করে যে ফোল্ডারে সফটওয়্যারটি ডাউনলোড হয়েছে সেখানে প্রবেশ করতে হবে। এরপর উক্ত .exe ফাইলের উপর দুইবার ক্লিক করলে পারমিশন চাইবে। পারমিশন দেওয়ার সাথে সাথে কিছু রিসোর্চ ফাইল ডাউনলোড করা শুরু করবে। রিসোর্স ফাইল ডাউনলোড শেষে এটি আপনার সিস্টেমে ইনস্টল হয়ে যাবে। এখন আপনি আপনার ইচ্ছে মত অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস গুলো ইনস্টল করে ব্যবহার করতে পারবেন।

বিঃদ্রঃ আপনার কম্পিউটারে যদি Windows defender বা কোন অ্যান্টিভাইরাস অন করা থাকে তাহলে এই সফটওয়্যারটি ডাউনলোড করার পর ক্ষতিকর সফটওয়্যার ডিটেক্ট এই কথাটি দেখাতে পারে। আপনি চাইলে এটি এড়িয়ে চলে ইনস্টল করতে পারেন অথবা কোন অ্যাকশান নিতে পারেন।

BlueStacks হলো এখন কার সময়ের সব চেয়ে জনপ্রিয় ও বেশি ডাউনলোড হওয়ার একটি ইমুলেটর। এই ইমুলেটরটি মূলত যারা গেম খেলে তারা বেশি ব্যবহার করে থাকে। এই ইমুলেটরটির জনপ্রিয়তার কথা বলতে গেলে এটি এখন পর্যন্ত সারা বিশ্বে ১৪৫ মিলিয়ন মানুষ ব্যবহার করছে এবং ৫০০ মিলিয়ন এর অধিক মানুষ এই ইমুলেটরটি ডাউনলোড করেছে। সিস্টেম অনুযায়ী BlueStacks ইমুলেটরের অনেক গুলো ভার্সন রয়েছে। তাই এটি ডাউনলোড করার পূর্বে আপনার সিস্টেম অনুযায়ী ভার্সন বাছাই করে নিতে হবে। এখন আমরা BlueStacks ইমুলেটরের মাধ্যমে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ইনস্টল করার উপায় সম্পর্কে জানবো।

মাইক্রোসফট স্টোর থেকে এখন পর্যন্ত সরাসরি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস ইনস্টল করা যায় না। তবে কিছু সহজ পদ্ধতিতে আপনি চাইলে মাইক্রোসফট স্টোর থেকে ফ্রি কিছু ইমুলেটর ইনস্টল করে সেই ইমুলেটর ব্যবহার করে অ্যাপ গুলো ইনস্টল করে ব্যবহার করতে পারবেন। আপনি যদি চান কোন ঝামেলা ছাড়াই আপনার কম্পিউটারে একদম সহজ পদ্ধতিতে  অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস ইনস্টল করবেন তাহলে এই পদ্ধতি আপনার অনেক কাজে আসতে পারে। এর জন্য আপনাকে প্রথমেই মাইক্রোসফট স্টোরে প্রবেশ করতে হবে।মাইক্রোসফট স্টোরে প্রবেশ করার পর আপনাকে সার্চ অপশনে সার্চ করতে হবে Android emulator এই কথাটি লিখে। এরপর আপনার সামনে অনেক গুলো সফটওয়্যার চলে আসবে। উক্ত সফটওয়্যার গুলর মধ্যে কিছু ফ্রি এবং কিছু পেইড সফটওয়্যার রয়েছে। এবার এখান থেকে আপনার কম্পিউটারের সিস্টেম অনুযায়ী একটি ফ্রি ইমুলেটর ইনস্টল করে নিতে হবে। ইনস্টল করার পর ওপেন করে নিতে হবে। এবার এখান থেকে আপনি খুব সহজেই যেকোনো অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস ইনস্টল করতে পারবেন।

আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি যে ইমুলেটর কি এবং কিভাবে এই ইমুলেটর গুলো ডাউনলোড করতে হয়। এখন আমরা জানবো এখন পর্যন্ত সবচেয়ে জনপ্রিয় কিছু ফ্রি ইমুলেটর সম্পর্কে। বর্তমান সময়ে অনেক ইমুলেটর থাকলেও সেগুলো ব্যবহারের উপযোগী নয়। কেননা তার বেশি ভাগ গুলো হয়ত পেইড বা প্রতিমাসে টাকা দিয়ে ব্যবহার করতে হয় অথবা এই ইমুলেটর গুলো ব্যবহারের জন্য কম্পিউটারের সিস্টেম রিকোয়্যারমেন্ট অনেক বেশি। যার ফলে উক্ত ইমুলেটর গুলো ব্যবহার করা অনেক ঝামেলার। এখন আমরা ফ্রি ১০টি ফ্রি ইমুলেটর সম্পর্কে জানবো যেগুলো ব্যবহার করতে এক টাকাও খরচ করতে হবে না আবার সেই সাথে সিস্টেম রিকোয়্যারমেন্ট অনেক কম।

আপনি যদি কোন ইমুলেটরের ঝামেলা ছাড়াই সরাসরি আপনার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কম্পিউটার কানেক্ট করে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ব্যবহার করবেন তাহলে এটি আপনার জন্য সেরা একটি অপশন হতে পারে। তবে এটির যেমন সুবিধা রয়েছে ঠিক তেমনই কিছু অসুবিধা রয়েছে। সুবিধার মধ্যে একটি হচ্ছে কোন থার্ড পার্টি ইমুলেটর সফটওয়্যার ব্যবহার করা ছাড়াই আপনার মোবাইলের সকল অ্যাপ গুলো ব্যবহার করতে পারবেন। আর অসুবিধার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে প্রতিবার যখন স্ট্রিম করতে যাবেন তখন বারবার পারমিশন দেওয়া লাগবে এবং এটি সকল অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ব্যবহার করা যায় না। এই ফিচারটি শুধু কিছু স্যামসাং মোবাইল UI 6.1.1 বা তার বেশি ভার্সন এবং বিল্ট-ইন ফোন লিংক ইন্টিগ্রেশন রয়েছে এমন ফোন গুলোতে সাপোর্ট করে। আপনার ফোনে এই ফিচার থাকলে কিভাবে ব্যবহার করবেন আসুন জানি।