OrdinaryITPostAd

উইন্ডোজ ১১ এর জন্য সেরা ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার

 

উইন্ডোজ ১১ এর জন্য সেরা ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো। বর্তমান সময়ে অনেক পেইড ও ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার থাকলেও ফিচারের দিক বিবেচনা করে সকল অ্যান্টিভাইরাস সিস্টেমে উপকারের চাইতে ক্ষতি বেশি করতে পারে।
উইন্ডোজ-১১-এর-জন্য-সেরা-ফ্রি-অ্যান্টিভাইরাস-সফটওয়্যার
আজকে আমরা এমন কিছু ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার সম্পর্কে জানবো যেগুলো ফ্রি হওয়ার পাশাপাশি আপনার কম্পিউটারকে হাই কোয়ালিটি প্রটেকশন দিবে। এখন আমরা ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস গুলো ব্যবহারের কিছু সিবিধা ও অসুবিধা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

উইন্ডোজ ১১ এর জন্য সেরা ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার

উইন্ডোজ ১১ এর জন্য সেরা ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার

উইন্ডোজ ১১ এর জন্য সেরা ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। আলোচনার আগে আমাদের খুব সহজে জানতে হবে যে কম্পিউটার ভাইরাস কি এবং এটি কিভাবে আমাদের কম্পিউটারের উপর প্রভাব বিস্তার করে। কম্পিউটার ভাইরাস হলো এমন একটি ক্ষতিকর প্রোগ্রাম বা কোড যা ব্যবহারকারীর অজান্তে কম্পিউটারে প্রবেশ করে এবং বিভিন্ন ক্ষতি সাধন করে। এটি সাধারণত নিজে থেকে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং অন্যান্য ফাইল বা সফটওয়্যারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কম্পিউটারে ক্ষতিকর কার্যকলাপ ঘটায়।

আর এই ধরণের ক্ষতিকর প্রোগ্রাম বা কোডকে ধ্বংস করার জন্য ব্যবহার করা হয় অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার। অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার সাধারণত ২ প্রকরা হয়। একটি হচ্ছে ফ্রি ও অপরটি হচ্ছে পেইড অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার। আজকে আমরা কথা বলবো কিছু ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার গুলো নিয়ে।

ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার গুলোর মধ্যে সব চাইতে জনপ্রিয় হচ্ছে মাইক্রোসফট ডিফেন্ডার। মাইক্রোসফট ডিফেন্ডার হলো মাইক্রোসফট কম্পানির তৈরি একটি ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার যা প্রত্যেক উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম চালিত কম্পিউটার বা ল্যাপটপের সাথে ফ্রি পাওয়া যায়। এটি ফ্রি হওয়া সত্ত্বেও অনেক শক্তিশালী একটি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার যা ভাইরাস, ম্যালওয়্যার, স্পাইওয়্যার এবং অন্যান্য হুমকি থেকে কম্পিউটারকে রিয়েল টাইমে সুরক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি ফায়ারওয়াল এবং নেটওয়ার্ক প্রোটেকশন, অ্যাপ ও ব্রাউজার কন্ট্রোল, ডিভাইস পারফরম্যান্স এবং হেলথ মনিটরিং ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ন কাজের মাধ্যমে কম্পিউটারকে সুরক্ষা প্রদান করে থাকে।

ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার গুলোর মধ্যে আরেকটি জনপ্রিয় হচ্ছে অ্যাভাস্ট ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস। অ্যাভাস্ট ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস হলো অ্যাভাস্ট কোম্পানির তৈরি একটি ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার যা ব্যবহারকারীদের জন্য বিনামূল্যে ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে থাকে। এটি ফ্রি হওয়া সত্ত্বেও অনেক শক্তিশালী একটি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার যা ভাইরাস, ম্যালওয়্যার, স্পাইওয়্যার এবং অন্যান্য হুমকি থেকে কম্পিউটারকে রিয়েল টাইমে সুরক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি ইমেইল শিল্ড, ওয়েব শিল্ড, বিহেভিয়ার শিল্ড, ওয়াই-ফাই ইনস্পেকশন, এবং র‍্যানসমওয়্যার প্রটেকশন ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ন কাজের মাধ্যমে কম্পিউটারকে সুরক্ষা প্রদান করে থাকে।
মাইক্রোসফট ডিফেন্ডার ও অ্যাভাস্ট অ্যান্টিভাইরাস ছাড়াও আরো অনেক অ্যান্টিভাইরাস রয়েছে যেগুলো আপনার কম্পিউটারের ভাইরাস রিমুভ করা থেকে শুরু করে রিয়েল টাইম প্রটেকশন দিতে সাহায্য করে। তাই মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য অ্যান্টিভাইরাস হচ্ছে আভিরা, বিটডিফেন্ডার ইত্যাদি। এখন আমরা কপিউটার ভাইরাসের ধরণ, বৈশিষ্ট্য ও কম্পিউটার ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় থেকে শুরু করে উপরের দেওয়া ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার গুলো নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

কম্পিউটার ভাইরাসের কিছু বৈশিষ্ট্য

কম্পিউটার ভাইরাস এক রকম হয়না অর্থাৎ এদের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য থাকে। এখন আমরা নিচে সবচেয়ে ক্ষতিকর ও কমন কিছু কম্পিউটার ভাইরাসের বৈশিষ্ট সম্পর্কে জানবো।

  • সেলফ রেপ্লিকেশন ভাইরাসঃ এই ধরণের কম্পিউটার ভাইরাসের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এটি নিজেই নিজের কপি তৈরি করতে পারে। এটি একবার কোনো সিস্টেমে প্রবেশ করলে নিজে থেকেই অন্যান্য ফাইল, ফোল্ডার বা কম্পিউটারে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
  • স্টিলথ নেচার ভাইরাসঃ এই ধরণের বেশিরভাগ ভাইরাস গোপনে কাজ করে এবং ব্যবহারকারীর অজান্তে সিস্টেমে প্রবেশ করে। অনেক সময় ভাইরাস এমনভাবে প্রোগ্রাম করা হয় যাতে অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারও সেটিকে সহজে শনাক্ত করতে না পারে।
  • ম্যালেসিয়াস এক্টিভিটি সম্পূর্ন ভাইরাসঃ এই ধরণের ভাইরাস কম্পিউটারের ক্ষতি সাধন করে থাকে। যেমনঃ ফাইল মুছে ফেলা, ডাটা করাপ্ট করা, সিস্টেম স্লো করে দেওয়া, ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করা ইত্যাদি।
  • হোস্ট প্রোগ্রামের ওপর নির্ভরশীলতা সম্পূর্ন ভাইরাসঃ একটি ভাইরাস সাধারণত কোনো নির্দিষ্ট ফাইল বা প্রোগ্রামের সাথে যুক্ত থাকে এবং সেই ফাইলটি চালু করলে ভাইরাসও সক্রিয় হয়। এটি একা কাজ করতে পারে না বরং তাকে কোনো হোস্ট ফাইলের প্রয়োজন হয়।
  • সম্প্রসারণ ক্ষমতা সম্পূর্ন ভাইরাসঃ এই ধরণের ভাইরাস এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ছড়াতে পারে ইমেইল, ফ্ল্যাশ ড্রাইভ, ইন্টারনেট, সফটওয়্যার ডাউনলোড, কিংবা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে।
  • সিস্টেম পারফরম্যান্স হ্রাসকারী ভাইরাসঃ ভাইরাস সংক্রমিত কম্পিউটারে সাধারণত সিস্টেম স্লো হয়ে যায়, ফাইল খোলা দেরি করে বা হ্যাং হয়ে যায়। তাই এই ধরণের ভাইরাস কম্পিউটার সিস্টেমের খুব একটা বেশি ক্ষতিসাধন করেনা।
  • রূপ পরিবর্তন করার ক্ষমতা সম্পূর্ন ভাইরাসঃ এই ধরণের ভাইরাস ভাইরাস বারবার নিজের কোড পরিবর্তন করে ফেলে তাই একে খুব সহজে অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার গুলো সনাক্ত করতে পারেনা।

কম্পিউটার ভাইরাসের ধরণ

কম্পিউটার ভাইরাসের বৈশিষ্টের উপর ভিত্তি করে কম্পিউটার ভাইরাস অনেক রকমের হতে পারে। এখন আমরা নিচে সব চাইতে প্রচলিত কিছু কম্পিউটার ভাইরাসের ধরণ সম্পর্কে জানবো।

  • বুট সেক্টর ভাইরাসঃ এই ভাইরাস কম্পিউটার হার্ড ড্রাইভ বা ফ্ল্যাশ ড্রাইভের বুট সেক্টরে আক্রমণ করে
  • ফাইল ইনফেক্টর ভাইরাসঃ এই ভাইরাস .exe বা .com ফাইলের সঙ্গে যুক্ত হয় এবং যখন সেই ফাইলটি চালানো হয়, ভাইরাসও সক্রিয় হয়।
  • ম্যাক্রো ভাইরাসঃ এই ভাইরাস অনেক ছোট হয়ে থাকে এবং ভাইরাসটি সাধারণত বিভিন্ন ফাইলের মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। 
  • পলিমরফিক ভাইর্টিঃ এই ধরণের ভাইরাস নিজে থেকেই নিজের কোড বার বার পরিবর্তন করে তাই একে সহজে অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার দিয়েও সনাক্ত করা যায়না।

কম্পিউটার ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়

কম্পিউটার ভাইরাস হলো এমন ধরণের ক্ষতিকর প্রোগ্রাম যা আমাদের কম্পিউটার সিস্টেমে আমাদের অজান্তে প্রবেশ করে নানান ভাবে কম্পিউটারকে ক্ষতির মুখে ফেলে। কম্পিউটার ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় সম্পর্কে না জানলে কম্পিউটারে ভাইরাস থাকলেও আমরা নিজে থেকে কিছু করতে পারবো না। তাই নিচে কিছু সহজ ও কার্যকরী উপায় দেওয়া হলো যার মাধ্যমে কম্পিউটার ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।
উইন্ডোজ-১১-এর-জন্য-সেরা-ফ্রি-অ্যান্টিভাইরাস-সফটওয়্যার
  •  আপডেটেড অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করতে হবে
  • নিয়মিত অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার আপডেট করতে হবে
  • সন্দেহজনক লিংক, ইমেইল ও ফাইল ওপেন করা যাবে না
  • অটোমেটিক আপডেট চালু রাখতে পারেন
  • কপি বা পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার করা যাবে না
  • ক্র্যাক  বা কিজেন যুক্ত সফটওয়্যার ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে
  • বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট ছাড়া সফটওয়্যার ডাউনলোড করা যাবে না
  • অজানা USB বা পেনড্রাইভ ব্যবহার করার আগে স্ক্যান করতে হবে
  • সব সময় কম্পিউটারে ফায়ারওয়াল চালু রাখতে হবে
  • ব্রাউজারে পপ আপ ব্লকার ও অ্যাডব্লকার ব্যবহার করতে পারেন

মাইক্রোসফট ডিফেন্ডার ব্যবহার করার সঠিক নিয়ম

মাইক্রোসফট ডিফেন্ডার হলো মাইক্রোসফট কম্পানির তৈরি একটি শক্তিশালী ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার। যা ব্যবহার করে আপনি রিয়েল টাইম ভাইরাস প্রটেক্ট করার পাশপাশি ফায়ারওয়াল থেকে শুরু করে একটি প্রমিয়াম অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারে যে সকল সুবিধা থাকে তা প্রায় সকল কিছুই পাবেন। মাইক্রোসফট ডিফেন্ডারকে অনেকে উইন্ডোজ ডিফেন্ডারও বলে থাকেন কারণ এটি সকল উইন্ডোজ অপারেটিং কম্পিউটার বা ল্যাপটপে বিল্ট ইন ভার্সন হিসেবে আসে। এখন আমরা মাইক্রোসফট ডিফেন্ডার ব্যবহার করার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানবো।
উইন্ডোজ-ডিফেন্ডার-ভাইরাস-এবং-থ্রেট-প্রটেকশন
মাইক্রোসফট ডিফেন্ডারের প্রথম যে ফিচার নিয়ে কথা বলবো সেটি হচ্ছে ভাইরাস অ্যান্ড থ্রেট প্রটেকশন নিয়ে। আপনি এই ফিচারের মাধ্যমে আপনার কম্পিউটারের ফাইলের মধ্যমে ভাইরাস আছে কিনা তা খুব সহজে স্কান করে জানতে পারবেন। স্কান করার পর যদি আপনি জানতে পারেন আপনার কম্পিউটারের কোন ফাইল ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত তাহলে মাত্র এক ক্লিকে সেই ভাইরাস রিমুভ করে ফেলতে পারবেন।
উইন্ডোজ-ডিফেন্ডার-রিয়েল-টাইম-একাউন্ট-প্রটেকশন
এরপর যে ফিচারটি নিয়ে কথা বলবো সেটি হচ্ছে একাউন্ট প্রটেকশন। মাইক্রোসফট ডিফেন্ডারের রিয়েলটাইম অ্যাকাউন্ট প্রোটেকশন মূলত আপনার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টকে হ্যাকিং বা অজান্তে অ্যাক্সেস থেকে রক্ষা করে। এটি সবসময় ব্যাকগ্রাউন্ডে অ্যাক্টিভ থাকে এবং কোনো সন্দেহজনক অ্যাক্টিভিটি দেখলে সঙ্গে সঙ্গে সতর্ক করে। সহজভাবে বললে এটি আপনার ডিজিটাল গার্ড হিসেবে সবসময় তৎপর থাকে। ফলে আপনি নিশ্চিন্তে কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারেন।
উইন্ডোজ-ডিফেন্ডারের-ফায়ারওয়াল-ও-নেটওয়ার্ক-প্রোটেকশন
উইন্ডোজ ডিফেন্ডারের ফায়ারওয়াল ও নেটওয়ার্ক প্রোটেকশন ঠিক আপনার কম্পিউটারের এক ধরণের সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কাজ কর যা সবসময় চেক করে কোন তথ্য ভেতরে ঢুকছে বা বাইরে যাচ্ছে। আপনি যদি অনলাইন থাকেন তখন অনেক রকম হুমকি আসে এই সিস্টেমটা সেটা আটকাতে কাজ করে। অজানা অ্যাপ বা সংযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্লক করে দেয়। সহজ ভাষায় বললে এটা আপনার নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা দেয়াল যেটা সারাক্ষণ পাহারায় থাকে আপনার সিস্টেমকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য।
মাইক্রোসফত-ডিফেন্ডার-এর-ডিফাইস-সিকিউরিটি-এর-এর-কাজ
মাইক্রোসফট ডিফেন্ডারের ডিভাইস সিকিউরিটি মানে আপনার কম্পিউটার যেন ভেতর থেকে সুরক্ষিত থাকে সেই নিশ্চয়তা দেওয়া। এটা হার্ডওয়্যার আর সফটওয়্যারের মিলিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা যা আপনার সিস্টেমে কোন ক্ষতিকর কোড চালাতে দেয় না। ক্ষতিকর কোড চালাতে না দেওয়ার কারণে শক্তিশালী ভাইরাস দ্বারা আক্রমন হওয়ার পরেও আপনার কম্পিউটার সরাসরি ক্ষতিগ্রস্থ হয়না বরং উক্ত ভাইরাসকে শনাক্ত করে।

এতক্ষন আমরা উপরে মাইক্রোসফট ডিফেন্ডারের কোন অপশন কি কাজে আসে সেটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করছিলাম। উপরের অপশন গুলো আপনি যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করেন এবং কপিউটারে সক্রিয় রাখেন তাহলে আশা করা যায় যে আপনাকে আর কোন টাকা খরচ করে অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ক্রয় করতে হবেনা।

অ্যাভাস্ট ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা

অ্যাভাস্ট ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস একটি জনপ্রিয় ও বিশ্বস্ত অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার যা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়। এটি রিয়েল টাইমে ভাইরাস, ম্যালওয়্যার ও স্পাইওয়্যার থেকে ডিভাইসকে সুরক্ষা দেয়। সফটওয়্যারটির ইউজার ইন্টারফেস সহজ এবং ব্যবহারবান্ধব তাই যেকোনো ব্যবহারকারী সহজেই এটি পরিচালনা করতে পারেন। এতে রয়েছে ওয়েব শিল্ড, ইমেইল স্ক্যানার ও র‍্যানসমওয়্যার প্রটেকশন যা ডিভাইসের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করে। হালকা সফটওয়্যার হওয়ায় এটি সিস্টেমকে স্লো করে না এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে খুব সহজে কাজ করে।
যদিও এটি ফ্রি তবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফিচার শুধুমাত্র পেইড ভার্সনে পাওয়া যায় যা অনেক ব্যবহারকারীর জন্য সীমাবদ্ধতা তৈরি করে। অ্যাভাস্ট মাঝে মাঝে অতিরিক্ত বিজ্ঞাপন দেখায় যা ব্যবহারকারীর বিরক্তির কারণ হতে পারে। সফটওয়্যারটি ইনস্টলেশনের সময় অতিরিক্ত টুলবার বা অ্যাপ ইনস্টল করতে চায় যা না জেনে ইনস্টল হয়ে যেতে পারে। অনেক সময় এটি নিরাপদ ফাইলকেও ভুলভাবে ভাইরাস হিসেবে শনাক্ত করে যার ফলে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। তাছাড়াও ডাটা প্রাইভেসি নিয়ে অতীতে অ্যাভাস্টের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ উঠেছিল যা ব্যবহারকারীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছিল।

এভিজি ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস ভাইরাস রিমুভ করতে কতটা কার্যকরী

এভিজি ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস ভাইরাস সনাক্ত ও রিমুভ করার ক্ষেত্রে বেশ কার্যকরী একটি সফটওয়্যার। এটি রিয়েল টাইম প্রোটেকশন দিয়ে কম্পিউটারকে ম্যালওয়্যার, ট্রোজান, স্পাইওয়্যার ইত্যাদি থেকে রক্ষা করে। ক্লাউড ভিত্তিক স্ক্যানিং প্রযুক্তির মাধ্যমে এটি দ্রুত ভাইরাস চিহ্নিত করতে পারে। সফটওয়্যারটি নিয়মিত আপডেট হয় যার ফলে নতুন ভাইরাসের বিরুদ্ধেও সুরক্ষা প্রদান সম্ভব হয়। স্বয়ংক্রিয় স্ক্যানিং ও ম্যালওয়্যার ব্লকিংয়ের মাধ্যমে এটি ব্যবহারকারীদের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে।

যদিও এটি সাধারণ ভাইরাস দূর করতে সক্ষম তবে কিছু উন্নত ধরনের থ্রেট রিমুভ করার জন্য পেইড ভার্সনের প্রয়োজন হয়। ফ্রি ভার্সনে র‍্যানসমওয়্যার ও হ্যাকার অ্যাটাকের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ সুরক্ষা পাওয়া যায় না। অনেক সময় সফটওয়্যারটি সিস্টেম স্ক্যান করতে ধীরগতি হয় বা অনেক সময় নিয়ে থাকে যা ব্যবহারকারীর সময় নষ্ট করতে পারে। ফ্রি ভার্সনটি মাঝে মাঝে প্রিমিয়াম ফিচার কেনার জন্য বারবার নোটিফিকেশন দেয় যা অনেক সময় বিরক্তিকর লাগে। তাছাড়াও নির্দিষ্ট কিছু ভাইরাস বা রুটকিট রিমুভ করতে এটি সবসময় সফল হয় না। সব মিলিয়ে বলা যায় যে এভিজি ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস ছোট ভাইরাস রিমুভ করতে কার্যকারী হলেও তুলনা মূলক শক্তিশালী ভাইরাস গুলো রিমুভ করতে খুব একটা বেশি কার্যকারী নিয়।

আভিরা ফ্রি সিকিউরিটি কাদের ব্যবহার করা উচিত ও কাদের নয়?

আভিরা ফ্রি সিকিউরিটি কাদের ব্যবহার করা উচিতঃ

  • যারা সাধারণ ব্রাউজিং, সোশ্যাল মিডিয়া ও ইমেইল ব্যবহার করেন।
  • শিক্ষার্থী ও হোম ইউজার যারা কম্পিউটারে হালকা কাজ করেন।
  • যাদের বাজেট সীমিত এবং ফ্রি সফটওয়্যার ব্যবহার করতে চান।
  • যারা সহজ, হালকা ও ইউজার ফ্রেন্ডলি অ্যান্টিভাইরাস চান।
  • যারা সাধারণ নিরাপত্তা ও পাসওয়ার্ড ম্যানেজমেন্ট ফিচার পেতে চান।
আভিরা ফ্রি সিকিউরিটি কাদের ব্যবহার করা উচিত নয়ঃ

  • যারা সংবেদনশীল বা ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে কাজ করেন (যেমনঃ ব্যাংকিং, ফিনান্স)।
  • কর্পোরেট বা ব্যবসায়িক ব্যবহারকারীদের জন্য এটি যথেষ্ট নয়।
  • যারা উন্নত ফিচার যেমন র‍্যানসমওয়্যার প্রটেকশন ও ফায়ারওয়াল চান।
  • যারা চান পূর্ণাঙ্গ ভিপিএন ও অনলাইন ট্র্যাকিং প্রতিরোধ ব্যবস্থা।
  • যাদের ডিভাইসে প্রিমিয়াম লেভেল সাইবার সিকিউরিটি প্রয়োজন।

বিটডিফেন্ডার অ্যান্টিভাইরাস ফ্রি এডিশন এর সুবিধা ও অসুবিধা

বিটডিফেন্ডার অ্যান্টিভাইরাস ফ্রি এডিশন একটি শক্তিশালী এবং সহজে ব্যবহারযোগ্য সফটওয়্যার যা রিয়েল টাইম থ্রেট প্রটেকশন প্রদান করে। এটি ম্যালওয়্যার, ভাইরাস এবং স্পাইওয়্যার থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করে। ফ্রি ভার্সনে দ্রুত স্ক্যানিং এবং নির্ভরযোগ্য সিস্টেম সুরক্ষা পাওয়া যায়। এর ইউজার ইন্টারফেস সহজ তাই ব্যবহারকারীরা সহজে এটি ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু এর সুবিধা থাকলেও রয়েছে কিছু উল্লেখযোগ্য অসুবিধাও। এখন আমরা এই অ্যান্টিভাইরাস এর কিছু সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে জানবো।

বিটডিফেন্ডার অ্যান্টিভাইরাস ফ্রি এডিশন এর সুবিধাঃ

  • রিয়েল টাইম থ্রেট প্রটেকশন প্রদান করে যা দ্রুত ভাইরাস সনাক্ত করতে সাহায্য করে।
  • ম্যালওয়্যার, স্পাইওয়্যার, ট্রোজান থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করে।
  • সহজ ও ব্যবহারবান্ধব ইউজার ইন্টারফেস যা নতুন ব্যবহারকারীদের জন্য উপযোগী।
  • দ্রুত স্ক্যানিং এবং হালকা সিস্টেম রিসোর্স ব্যবহার করে যাতে সিস্টেম ধীর হয়ে না যায়।
  • নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট হয় যা নতুন থ্রেটের বিরুদ্ধে সুরক্ষা বজায় রাখে।
  • হালকা সফটওয়্যার হওয়ায় কম্পিউটার বা মোবাইল সিস্টেমে এর প্রভাব কম।

বিটডিফেন্ডার অ্যান্টিভাইরাস ফ্রি এডিশন এর অসুবিধাঃ

  • র‍্যানসমওয়্যার প্রটেকশন এবং পাসওয়ার্ড ম্যানেজার শুধুমাত্র পেইড ভার্সনে আছে।
  • ফ্রি ভার্সনে বিজ্ঞাপন বা আপগ্রেডের জন্য বারবার নোটিফিকেশন আসেতে থাকে।
  • কিছু দুর্বল বা পুরানো ভাইরাস সনাক্ত করতে অনেক সময় নিয়ে থাকে।
  • সীমিত ফিচার হওয়ায় উন্নত সাইবার আক্রমণের বিরুদ্ধে কার্যকরী হতে পারে না।
  • ভারী সফটওয়্যার বা গেমিংয়ের সময় সিস্টেমে কিছুটা ল্যাগ হতে পারে।
  • কাস্টমার সাপোর্ট ফ্রি ভার্সনের জন্য সীমিত যা সমস্যার সমাধানে সময়সাপেক্ষ হতে পারে।

ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহারের সময় যেসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে

ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহারের সময় প্রথম যে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হয় তা হলো নিরাপত্তার লিমিট বা সীমাবদ্ধতা। ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার সাধারণত প্রিমিয়াম ভার্সনের তুলনায় কম ফিচার অফার করে। এতে রিয়েল টাইম প্রোটেকশন বা র‍্যানসমওয়্যার ডিটেকশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা অনুপস্থিত থাকতে পারে। অনেক সময় এসব সফটওয়্যার ডেটা সংগ্রহ করে তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রি করে। তাই ইনস্টল করার আগে এর প্রাইভেসি পলিসি ভালোভাবে পড়ে দেখা নেওয়া উচিত।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো বিরক্তিকর বিজ্ঞাপন ও থার্ড পার্টি সফটওয়্যার ইনস্টল হওয়ার ঝুঁকি। অনেক ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রাম নিজের সঙ্গে অতিরিক্ত টুলবার বা থার্ড পার্টি সফটওয়্যার ইনস্টল করার চেষ্টা করে। এতে কম্পিউটারের স্পিড বা গতি কমে যেতে পারে এবং ইউজার এক্সপেরিয়েন্স খারাপ হতে পারে। এসব বিজ্ঞাপন ব্যবহারকারীকে বিভ্রান্তও করতে পারে। তাই নির্ভরযোগ্য ও জনপ্রিয় অ্যান্টিভাইরাস ছাড়া অন্য কোন অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।

ফ্রি নাকি পেইড কোন অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করবেন?

ফ্রি নাকি পেইড অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করবেন তা সম্পূর্ন নির্ভর করে আপনার প্রয়োজন ও ব্যবহারের ধরন অনুযায়ী। আপনি যদি  সাধারণভাবে ইন্টারনেট ব্রাউজিং, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের মতো সীমিত কাজ করেন তবে ভালো মানের একটি ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস আপনার জন্য যথেষ্ট হতে পারে। তবে অবশ্যই সেটি যেন বিশ্বস্ত এবং নিয়মিত আপডেট হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।
অন্যদিকে যদি আপনি অনলাইন ট্রানজেকশন, অফিসিয়াল কাজ বা সংবেদনশীল ডেটা নিয়ে কাজ করেন, তবে পেইড অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করাই নিরাপদ। পেইড অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারগুলোতে রিয়েল টাইম প্রোটেকশন, ফায়ারওয়াল, প্যারেন্টাল কন্ট্রোল, র‍্যানসমওয়্যার সুরক্ষা সহ উন্নত ফিচার থাকে। এগুলো আপনার ডিভাইসকে আরও শক্তিশালী সুরক্ষা প্রদান করে। তাই ঝুঁকিপূর্ণ বা গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবহারের ক্ষেত্রে পেইড ভার্সনই বেছে নেওয়া উচিত।

উইন্ডোজ ১১ এর নিরাপত্তা বাড়ানোর কিছু কার্যকরী টিপস

উইন্ডোজ ১১ এর নিরাপত্তা বাড়ানোর কিছু কার্যকরী টিপস নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। উইন্ডোজ ১১ মাইক্রোসফট এর লেটেস্ট অপারেটিং সিস্টেম হওয়ার কারণে এর বিশেষ কিছু সেটিংস ও ফিচার ব্যবহার করে কম্পিউটার বা ল্যাপটপকে এক ধাপ বেশি নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব।
উইন্ডোজ-১১-এর-জন্য-সেরা-ফ্রি-অ্যান্টিভাইরাস-সফটওয়্যার
  • উইন্ডোজ সিকিউরিটি ফিচার সব সময় চালু রাখা।
  • শক্তিশালী পিন ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা।
  • ব্রাউজিং এর সময় ফায়ারওয়াল ও নেটওয়ার্ক প্রোটেকশন চালু রাখা।
  • সিকিউর বুট ও টিএমপি চালু রাখা।
  • সিস্টেম সফটওয়্যার সব সময় আপডেট রাখা ইত্যাদি।

পরিশেষেঃ উইন্ডোজ ১১ এর জন্য সেরা ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার

উইন্ডোজ ১১ এর জন্য সেরা ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার সম্পর্কে আমরা উপরে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। কম্পিউটার ভাইরাসের কারণে আমাদের অনেক সময় অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বিশেষে করে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার। তাই কম্পিউটারকে সব সময় ভাইরাস মুক্ত রাখার জন্য অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারের বিকল্প আর কিছু হতে পারেনা। ঠিক এই কারণে আমরা উপরে কিছু ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার নিয়ে আলোচনা করেছি। ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ছাড়াও কম্পিউটারকে কিভাবে ভাইরাস মুক্ত রাখা যায় এই বিষয় নিয়েও আলোচনা করেছি। আর আপনি যদি উইন্ডোজ ১১ ব্যবহার করেন তাহলে উইন্ডোজ ১১ এর জন্য সেরা ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার সম্পর্কে স্পষ্ট একটি ধারনা পাবেন বলে আমরা আশাবাদী।  250311

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url