মোবাইল দিয়ে প্রোফেশনাল ভিডিও এডিটিং টিপস
মোবাইল দিয়ে প্রোফেশনাল ভিডিও এডিটিং টিপস সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত জানবো। বর্তমান সময়ে ভিডিও এডিটিং করার জন্য ভালো পিসি বা কম্পিউটারের প্রয়োজন হয়না। আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোন দিয়েই প্রোফেশনাল মানের হাই কোয়ালিটি সম্পূর্ণ ভিডিও এডিট করতে পারবেন।

মোবাইল দিয়ে প্রোফেশনাল ভিডিও এডিটিং টিপস
- মোবাইল দিয়ে প্রোফেশনাল ভিডিও এডিটিং টিপস
- ভালো ভিডিও এডিটিং অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে
- ভালো স্ক্রিপ্ট বা প্ল্যান ব্যবহার করে ভিডিও শুট করা
- সঠিক ভাবে কাট, ট্রিম আর স্প্লিট ফিচার ব্যবহার করা
- সঠিক ভাবে ভিডিও এর মধ্যে ট্রানজিশন ব্যবহার করা
- ভিডিও এর ধরণ অনুযায়ী কালার গ্রেডিং ব্যবহার করা
- ভালো ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ও সাউন্ড ইফেক্ট যুক্ত করা
- ভিডিও ক্যাপশনে সঠিক ভাবে টাইপোগ্রাফি ব্যবহার করা
- ভিডিও এর রেজুলিউশন ও ফ্রেমরেট ঠিক রেখে এক্সপোর্ট করা
- পরিশেষেঃ মোবাইল দিয়ে প্রোফেশনাল ভিডিও এডিটিং টিপস
মোবাইল দিয়ে প্রোফেশনাল ভিডিও এডিটিং টিপস
মোবাইল দিয়ে প্রোফেশনাল ভিডিও এডিটিং টিপস সম্পর্কে আজকে আমরা বেসিক থেকে জানবো। একটি সময় ছিল যখন প্রোফেশনাল ভিডিও এডিট করার জন্য ভালো কম্পিউটারের প্রয়োজন পড়ত। বর্তমান সময়ে প্রোফেশনাল মানের ভিডিও এডিটিং করার জন্য কম্পিউটারের প্রয়োজন হয় না। আপনার কাছে যদি একটি স্মার্টফোন থাকে এবং ভিডিও এডিটিং করার ইচ্ছে শক্তি ও ধৈর্য থাকে তাহলে আপনিও খুব সহজেই আপনার মোবাইল দিয়েই প্রোফেশনাল ভিডিও এডিটিং করতে পারবেন।
মোবাইল দিয়ে প্রোফেশনাল ভিডিও এডিটিং করার জন্য খুব ভালো মানের মোবাইল প্রয়োজন হয়না। আপনার মোবাইলে যদি সর্বনিম্ন ৪ জিবি র্যাম থাকে তাহলেই আপনি ভিডিও এডিটিং শুরু করতে পারবেন। প্রোফেশনাল মানের ভিডিও এডিটিং করার জন্য আপনাকে অবশ্যই ভালো একটি এডিটিং অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে এবং ভিডিও এডিটিং করার জন্য কিছু দিক লক্ষ্য রাখতে হবে। এখন আমরা নিচে মোবাইল দিয়ে প্রোফেশনাল ভিডিও এডিটিং টিপস নিয়ে আলোচনা করবো।
একটি প্রোফেশনাল মানের ভিডিও এডিট করার জন্য একটি ভালো অ্যাপ ব্যবহার করার পাশাপাশি আরো কিছু দিক যেমনঃ ভালো স্ক্রিপট বা প্ল্যান করে একটি ভালো ভিডিও তৈরি করে নিতে হবে। একটি ভিডিও এডিট কেমন হবে তার বেশির ভাগ নির্ভর করে ভিডিওর কোয়ালিটির উপর। তাই ভিডিও শুট করার সময় ভালো ভাবে স্ক্রিপট বা প্ল্যান করে ভিডিও শুট করতে হবে। এরপর যে দিকটি লক্ষ্য রাখতে হবে সেটি হচ্ছে ভিডিও এর কোন কোন জায়গায় কাট, ট্রিম আর স্প্লিট ব্যবহার করতে হয় এই বিষয়ে একটি ভালো ধারণা রাখতে হবে।
একটি ভিডিও মান সম্মত কিনা তার অধিকাংশ নির্ভর করে ভিডিও এর কালার গ্রেডিং ও সাউন্ড ইফেক্ট এর উপর। তাই ভিডিও এডিট করার সময় এই দিক গুলো বিশেষ ভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে। এছাড়াও একটি প্রোফেশনাল মানের ভিডিও এডিট করতে আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ দিক বিবেচনা করতে হয়। এখন আমরা কিভাবে আপনি মোবাইল দিয়েই প্রোফেশনাল ভিডিও এডিট করবেন এই সম্পর্কে ধাপে ধাপে বিস্তারিত জানবো।
ভালো ভিডিও এডিটিং অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে
প্রোফেশনাল মানের ভিডিও এডিটিং করার জন্য আপনাকে অবশ্যই ভালো ভিডিও এডিটিং অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে। কেননা ভালো মানের ভিডিও এডিটিং অ্যাপ ভিডিও এডিটকে আরো সহজ করে দেয়। আপনি যদি ভালো বা মন্দ বিচার না করেই যেকোনো একটি ভিডিও এডিটিং অ্যাপ দিয়ে এডিটিং করতে লাগেন তাহলে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। তাই এখন আমরা ভিডিও এডিট করার জন্য সেরা কিছু মোবাইল অ্যাপ সম্পর্কে জানবো।
ক্যাপকাট, কাইনমাস্টার, ভিএন ভিডিও এডিটর, ইনশট ইত্যাদি অ্যাপ গুলো মোবাইলে ভিডিও এডিট করার জন্য খুবই ভালো। বিশেষ করে ক্যাপকাট দিয়ে আপনি খুব সহজে এডিটিং টুল গুলো ব্যবহার করে প্রোফেশনাল ভিডিও এডিটিং করতে পারবেন এবং আপনি যদি মাল্টিলেয়ার এডিটিং সাপোর্ট করে এমন অ্যাপ খুঁজেন তাহলে কাইনমাস্টার আপনার জন্য সেরা চয়েজ হতে পারে। একটি কথা বলে রাখা ভালো যে অ্যাপ গুলো সম্পূর্ন ফ্রি না হওয়ার কারণে আপনি সকল ফিচার ব্যবহার করতে পারবেন না। তাই সকল ফিচার ব্যবহার করার জন্য প্রিমিয়াম কিনতে পারেন। তবে শেখার উদ্দেশ্যে শুরু করতে চাইলে ফ্রিতেও খুব ভালো ভাবে ভিডিও এডিট করতে পারবেন।
ভালো স্ক্রিপ্ট বা প্ল্যান ব্যবহার করে ভিডিও শুট করা
একটি প্রফেশনাল ভিডিও বানানোর ক্ষেত্রে শুধু সুন্দর এডিট করলেই চলে না বরং তার শুরুটা হয় সঠিক পরিকল্পনা থেকে। ভিডিও শুটের আগে যদি আপনি স্ক্রিপ্ট বা প্ল্যান তৈরি না করেন তাহলে শুটিংয়ের সময় অনেক কিছু এলোমেলো হয়ে যাবে। কনটেন্টের ধারাবাহিকতা হারিয়ে যাবে এবং শেষ পর্যন্ত ভিডিওটি বোরিং বা অপ্রাসঙ্গিক মনে হবে। তাই ভিডিও শুরুর আগে আপনাকে ভাবতে হবে ভিডিওর উদ্দেশ্য কী, কারা টার্গেট অডিয়েন্স, কী বার্তা দিতে চান, আর কোন কোন দৃশ্যের মাধ্যমে তা ফুটিয়ে তুলবেন। এছাড়াও কোন অংশে কথা বলবেন এবং কোথায় মিউজিক দেবেন এবং কোথায় ভিজ্যুয়াল ফুটেজ ব্যবহার করবেন তা আগেই প্ল্যান করে নেওয়া দরকার। এতে করে সময় বাঁচে ও এডিটিং সহজ হয় এবং ভিডিওটি আরো প্রোফেশনাল ভাবে তৈরি হয়।
স্ক্রিপ্ট বা প্ল্যান তৈরি করার সময় প্রথমে ভিডিওর একটি আউট লাইন বা সারাংশ লিখে ফেলতে হবে। প্রতিটি দৃশ্য বা অংশের জন্য একটি করে ছোট্ট বিবরণ দিতে হবে যা শুটিংয়ের সময় গাইডলাইন হিসেবে কাজ করবে। আপনি চাইলে নোট আকারে গুরুত্বপূর্ণ সংলাপ বা কথাপকথন, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের নির্দেশনা বা বিশেষ কোনো ক্যামেরা মুভমেন্টও যোগ করতে পারেন। এভাবে আগে থেকেই সব কিছু পরিকল্পনা করা থাকলে ভিডিও করার সময় দ্বিধা বা সময় নষ্ট হয় না। একজন সফল ভিডিও ক্রিয়েটর জানেন যে ভালো স্ক্রিপ্ট মানে ভালো কনটেন্টের অর্ধেক প্রস্তুতি শেষ। তাই মোবাইল দিয়েই হোক বা ক্যামেরা দিয়েই হোক ভালো ভিডিও তৈরি করতে গেলে একটি পরিষ্কার ও বাস্তবসম্মত প্ল্যান থাকতেই হবে।
সঠিক ভাবে কাট, ট্রিম আর স্প্লিট ফিচার ব্যবহার করা
ভিডিও এডিটিংয়ের সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর মধ্যে একটি হলো কাট, ট্রিম এবং স্প্লিট করা। অনেক সময় শুটিংয়ের সময় কিছু অপ্রয়োজনীয় মুহূর্ত ভিডিওতে থেকে যায় যেগুলো কন্টেন্টের ধারাবাহিকতা বা গতি কমিয়ে দেয়। এ ধরনের অংশগুলো এডিট করার সময় কেটে বাদ দিতে হয় যাতে ভিডিওটি আকর্ষণীয় হয়। কাট অপশনের মাধ্যমে আপনি বড় ভিডিও থেকে নির্দিষ্ট অংশ সরিয়ে ফেলতে পারেন। অন্যদিকে ট্রিম ফিচার ব্যবহার করে ভিডিওর শুরু বা শেষের অপ্রয়োজনীয় অংশ মুছে দিয়ে কন্টেন্টের ফোকাস বজায় রাখা যায়। এভাবে অপ্রয়োজনীয় ক্লিপ বাদ দিলে দর্শক সহজেই পুরো ভিডিও দেখার আগ্রহ ধরে রাখে।
স্প্লিট ফিচার ব্যবহার করে একটি বড় ভিডিওকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করা সম্ভব যা এডিটিংকে আরো সহজ ও সুগঠিত করে তোলে। মনে করুন আপনি একটি ১০ মিনিটের ভিডিও করেছেন যেখানে ২ থেকে ৩টি ভিন্ন ভিন্ন বিষয় আছে তখন স্প্লিট ব্যবহার করে প্রতিটি বিষয় আলাদা করতে পারবেন। এতে করে প্রতিটি অংশে প্রয়োজনমতো ইফেক্ট, ট্রানজিশন কিংবা টেক্সট যুক্ত করা সহজ হয়। স্প্লিট করার পরে যদি কোনো অংশ কমপ্লিটলি অপ্রয়োজনীয় মনে হয় তাহলে সেটি সরিয়ে দিয়ে ভিডিওটিকে আরও প্রফেশনাল লুক দেওয়া যায়। তাই কাট, ট্রিম আর স্প্লিটের কৌশল জানা থাকলে মোবাইল দিয়েই আপনি প্রোফেশনাল মানের ভিডিও তৈরি করতে পারবেন।
সঠিক ভাবে ভিডিও এর মধ্যে ট্রানজিশন ব্যবহার করা
ভিডিওর এক অংশ থেকে আরেক অংশে যাওয়ার সময় যে স্টাইল বা মুভমেন্ট দেখা যায় তাকেই বলে ট্রানজিশন। ট্রানজিশন ঠিকভাবে ব্যবহার করা হলে ভিডিওর গতি বজায় থাকে এবং ভিজ্যুয়াল অভিজ্ঞতা আরও মসৃণ হয়। অনেকে ভিডিও এডিটিংয়ের সময় অতিরিক্ত ট্রানজিশন ব্যবহার করে ফেলেন যার ফলে ভিডিওটি অপেশাদার ও অগোছালো মনে হয়। সঠিক ট্রানজিশন বেছে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যাতে প্রতিটি দৃশ্যের মধ্যে একটি স্বাভাবিক এবং নরম পরিবর্তন ঘটে। সাধারণত ফেড, ডিসলভ, স্লাইড, বা স্মুথ কাট টাইপের ট্রানজিশন সবচেয়ে বেশি প্রফেশনাল লুক তৈরি করে।
আরোও পড়ুনঃ ১৫টি সেরা মোবাইলে ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার
ট্রানজিশন ব্যবহারের সময় অবশ্যই কনটেন্টের ধরন অনুযায়ী নির্বাচন করতে হবে। যদি ভিডিও সিরিয়াস বা ইনফরমেটিভ হয় তাহলে খুব সিম্পল ও কমন ট্রানজিশন ব্যবহার করা উচিত। আবার যদি মজার বা ক্রিয়েটিভ ভিডিও হয় সেখানে একটু এনার্জি যোগ করার জন্য মুভিং ট্রানজিশন ব্যবহার করা যেতে পারে। ট্রানজিশনের সময়কাল বা স্পিডও ঠিক রাখতে হবে যেন সেটা দৃশ্য পরিবর্তনের সাথে স্বাভাবিকভাবে মিশে যায়। সবশেষে ভিডিও এক্সপোর্ট করার আগে প্রতিটি ট্রানজিশন মনোযোগ দিয়ে রিভিউ করা উচিত যাতে কোনো ট্রানজিশন অতিরিক্ত ইফেক্ট বা চোখে লাগার মতো না হয়। সঠিক ট্রানজিশন ব্যবহারে ভিডিওর মান কয়েকগুণ বেড়ে যায়। তাই আপনার ভিডিওটি প্রোফেশনাল মানের করতে এই ফিচার অনেক সাহায্য করতে পারে।
ভিডিও এর ধরণ অনুযায়ী কালার গ্রেডিং ব্যবহার করা
কালার গ্রেডিং ভিডিও এডিটিংয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ যা ভিডিওর মুড এবং ফিলিং তৈরি করে। আপনার ভিডিও যদি দুঃখজনক বা রোমান্টিক ধরনের হয় তাহলে নরম এবং উষ্ণ রঙের ব্যবহার করা উচিত। আবার যদি ভিডিওটি এনার্জেটিক বা অ্যাকশনধর্মী হয় তাহলে একটু উজ্জ্বল এবং কনট্রাস্টেড কালার টোন ব্যবহার করা ভালো। সঠিক কালার গ্রেডিং না থাকলে ভিডিও অনেক সময় মলিন বা অগুছালো মনে হতে পারে। তাই ভিডিওর বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিলিয়ে রং ঠিক করা অত্যন্ত জরুরি। বিশেষ করে মোবাইল এডিটিং অ্যাপে এখন এমন অনেক টুলস আছে যেগুলোর মাধ্যমে খুব সহজেই কালার টোন অ্যাডজাস্ট করা যায়।
ভিডিও এডিট করার সময় প্রথমে দেখুন ভিডিওটি কোন ধরণের অনুভূতি প্রকাশ করতে চায়। এরপর মোবাইল অ্যাপের ফিল্টার বা ম্যানুয়াল কালার এডজাস্ট অপশন ব্যবহার করে সঠিক ব্রাইটনেস, কনট্রাস্ট, স্যাচুরেশন এবং টেম্পারেচার সেট করতে হবে। মনে রাখবেন কালার গ্রেডিং মানে শুধু ভিডিওকে সুন্দর করা নয় বরং দর্শকের মনে নির্দিষ্ট একটি আবেগ তৈরি করা। তাই খুব বেশি ওভার কালারফুল না করে ভিডিওর প্রাকৃতিকতা বজায় রাখার চেষ্টা করতে হবে। ভালো কালার গ্রেডিং করলে আপনার ভিডিও আরও আকর্ষণীয় ও প্রফেশনাল দেখাবে যা দর্শকদের মন জয় করতে অনেক সাহায্য করবে।
ভালো ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ও সাউন্ড ইফেক্ট যুক্ত করা
একটি ভিডিওর আবেগ ও প্রাণ নির্ভর করে তার ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক এবং সাউন্ড ইফেক্টের উপর। ভিডিওর কনটেন্ট যদি ভালো হয় কিন্তু ব্যাকগ্রাউন্ডে সঠিক মিউজিক না থাকে তাহলে দর্শকের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত অনুভূতি তৈরি হয় না। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক এমনভাবে নির্বাচন করতে হবে যেন সেটি ভিডিওর মুডের সঙ্গে মিলে যায়। একটি ইমোশনাল ভিডিওর জন্য স্নিগ্ধ ও মৃদু মিউজিক দরকার আবার একটি এনার্জেটিক বা ট্রাভেল ভিডিওর জন্য দরকার ফাস্ট বিটের সাউন্ড। মোবাইলে এডিট করার সময় ফ্রি মিউজিক লাইব্রেরি বা এডিটিং অ্যাপের বিল্ট ইন মিউজিক কালেকশন থেকে উপযুক্ত মিউজিক বেছে নিতে পারেন।
সাউন্ড ইফেক্টও ভিডিওর বাস্তবতা এবং আকর্ষণ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যেমনঃ কোনো ক্লিপে দরজা বন্ধ হওয়ার শব্দ, বৃষ্টির আওয়াজ, অথবা লাফ দেয়ার সময় হালকা লফানোর সাউন্ড যোগ করলে ভিডিও অনেক বেশি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। তবে মনে রাখতে হবে যে মিউজিক এবং সাউন্ড ইফেক্ট কখনোই ভিডিওর মূল ভয়েস বা মেসেজকে ঢেকে ফেলবে না। তাই ভলিউম ব্যালান্স করে রাখা অত্যন্ত জরুরি। ভালো ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক এবং সাউন্ড ইফেক্টের সমন্বয় ভিডিওটিকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে এবং দর্শকের পছন্দের তালিকায় আপনার ভিডিওটি থাকতে পারে। ভিডিও এর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের ব্যালেন্স সব সময় ১৫% অথবা সর্বোচ্চ ২০% থেকে ২৫% রাখতে পারেন। এর থেকে বেশি রাখলে মেইন সাউন্ডের উপর বাজে প্রভাব ফেলতে পারে।
ভিডিও ক্যাপশনে সঠিক ভাবে টাইপোগ্রাফি ব্যবহার করা
ভিডিও এডিটিংয়ে ক্যাপশন বা টেক্সট ব্যবহার এখন খুবই জনপ্রিয় একটি ট্রেন্ড। কারণ এটি দর্শকের জন্য ভিডিও কনটেন্ট বুঝতে আরও সহজ করে তোলে। তবে ক্যাপশনে ব্যবহৃত টাইপোগ্রাফি যদি সঠিক না হয় তাহলে ভিডিওটির কোয়ালিটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। টাইপোগ্রাফি মানে হলো টেক্সটের ফন্ট, সাইজ, কালার এবং স্টাইল কেমন হবে তা নির্ধারণ করা। সাধারণত সহজপাঠ্য, ক্লিন এবং মোডার্ন ফন্ট ব্যবহার করাই ভালো। ক্যাপশন এমনভাবে প্লেস করতে হবে যাতে তা ভিডিওর গুরুত্বপূর্ণ ভিজ্যুয়াল অংশ ঢেকে না ফেলে এবং দর্শকের চোখে সহজে পড়ে। ক্যাপশনের রং ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ডের সাথে কনট্রাস্ট করে রাখতে হবে যেন লেখা স্পষ্টভাবে পড়া যায়।
ভিডিও এর রেজুলিউশন ও ফ্রেমরেট ঠিক রেখে এক্সপোর্ট করা
ভিডিও এডিট করার পর এক্সপোর্ট করার সময় রেজুলিউশন এবং ফ্রেমরেট ঠিক রাখা অত্যন্ত জরুরি। অনেক সময় দেখা যায় যে ভালোভাবে এডিট করা ভিডিও এক্সপোর্ট করার সময় ভুল সেটিংসের কারণে কোয়ালিটি নষ্ট হয়ে যায়। যদি ভিডিওর আসল রেজুলিউশন ১০৮০P হয় তাহলে এক্সপোর্ট করার সময়ও সেটি ১০৮০P রাখতে হবে। কোনোভাবেই রেজুলিউশন কমিয়ে ফেললে ভিডিও ঝাপসা বা অস্পষ্ট দেখাতে পারে। একইভাবে ভিডিওর ফ্রেমরেট সাধারণত ৩০fps বা ৬০fps হয়ে থাকে তাই এডিট করার পরও সেই ফ্রেমরেট বজায় রাখতে হবে। এতে ভিডিওর মুভমেন্ট স্মুথ থাকে এবং ভিজ্যুয়াল কোয়ালিটি সুন্দর হয়।
মোবাইল এডিটিং অ্যাপগুলোতে এখন সহজেই এক্সপোর্টের সময় কাস্টম রেজুলিউশন এবং ফ্রেমরেট সেট করা যায়। এক্সপোর্ট করার আগে অবশ্যই চেক করে নিতে হবে যে ভিডিও কোথায় ব্যবহার করবেন যদি ইউটিউবে আপলোড করার জন্য হয় তাহলে ১০৮০P বা তার বেশি রেজুলিউশনে রাখা ভালো। সোশ্যাল মিডিয়ার জন্যও মিনিমাম ৭২০P রেজুলিউশন রাখা উচিত। ফ্রেমরেট কমিয়ে দিলে ফাইল সাইজ ছোট হতে পারে তবে এতে ভিডিওর স্মুথনেস কমে যাবে। তাই সর্বোচ্চ কোয়ালিটি বজায় রাখার জন্য রেজুলিউশন এবং ফ্রেমরেট ঠিকঠাক রেখে এক্সপোর্ট করা সবসময় প্রফেশনাল এডিটরের অন্যতম প্রধান কাজ। এখানে বলে রাখা ভালো যে P বলতে ভিডিও এর পিক্সেল এর কথা বোঝানো হয়েছে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
পরিশেষেঃ মোবাইল দিয়ে প্রোফেশনাল ভিডিও এডিটিং টিপস
মোবাইল দিয়ে প্রোফেশনাল ভিডিও এডিটিং টিপস নিয়ে আমরা উপরে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আমরা উপরে মোবাইলের জন্য কোন ভিডিও এডিটিং অ্যাপ ভালো সেটি থেকে শুরু করে বেসিক থেকে প্রোফেশনাল মানের ভিডিও এডিটিং টিপস নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করা যায় যে আপনি যদি উপরের লিখা গুলো মনোযোগ সহকারে পড়েন এবং অনুশীলন করেন তাহলে আপনিও খুব সহজে আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়েই প্রোফেশনাল মানের ভিডিও এডিটিং করতে পারবেন। 250311
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url