ওয়েবসাইটের জন্য ফ্রি হোস্টিং কোথায় পাবেন? | ২০২৫ সালের সেরা ৫টি হোস্টিং
ওয়েবসাইটের জন্য ফ্রি হোস্টিং কোথায় পাবেন এটি নিয়ে দুশ্চিন্তার কমতি নেই। বর্তমান সময়ে অনেক ফ্রি ডোমেইন ও হোস্টিং প্রভাইডার ওয়েবসাইট রয়েছে। আজকে আমরা কোথায় ফ্রি হোস্টিং পাওয়া যায় এবং ফ্রি হোস্টিং সেটআপ করার সম্পূর্ণ নিয়ম ধাপে ধাপে দেখবো।
ওয়েবসাইটের জন্য ফ্রি হোস্টিং অনেক কোম্পানি সরবরাহ করলেও বর্তমান সময়ে এখন পর্যন্ত ফ্রি হোস্টিং সেবা দিয়ে আসছে গুগলের ব্লগার। গুগলের ব্লগারের সাহায্যে ওয়েবসাইট তৈরি করা হলে ১৫ জিবি হোস্টিং ও ফ্রি SSL সার্টিফিকেট প্রদান করে থাকে যা অন্য কোথাও পাওয়া দুর্লভ।
ওয়েবসাইটের জন্য ফ্রি হোস্টিং কোথায় পাবেন
- ওয়েবসাইটের জন্য ফ্রি হোস্টিং কোথায় পাবেন
- টপ কোয়ালিটি সম্পূর্ণ ৩টি ফ্রি হোস্টিং সাইট
- ওয়েবসাইট চালানোর জন্য ৫টি ফ্রি হোস্টিং সাইট
- ফ্রি হোস্টিং ওয়েবসাইটে অ্যাড করার পদ্ধতি
- ফ্রি হোস্টিং ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা
- কাদের জন্য ফ্রি হোস্টিং ব্যবহার করা উচিত নয়
- হোস্টিং কত প্রকার ও কি কি বিস্তারিত জানুন
- আপনার জন্য কোন হোস্টিং সেরা জেনে নিন
- ফ্রি হোস্টিং নিয়ে কিছু সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর
- পরিশেষেঃ ওয়েবসাইটের জন্য ফ্রি হোস্টিং কোথায় পাবেন
ওয়েবসাইটের জন্য ফ্রি হোস্টিং কোথায় পাবেন
ওয়েবসাইটের জন্য ফ্রি হোস্টিং কোথায় পাবেন এই প্রশ্ন নিয়ে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। বর্তমান সময়ে ফ্রি হোস্টিং সার্ভিস সাইটের অভাব নেই। আপনি যদি শেখার উদ্দেশ্যে অথবা কোন টাকা পয়সা খরচ করা ছাড়াই একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান তাহলে নিচের দেওয়া ফ্রি হোস্টিং সাইট গুলো আপনার অনেক কাজে আসতে পারে। এখন আমরা ফ্রি হোস্টিং সাইট গুলো সম্পর্কে জানবো এবং এদের সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
ফ্রি হোস্টিং সম্পর্কে কথা বললে সবার প্রথমে আসে গুগলের ব্লগার। ফ্রি হোস্টিং গুলো সাধারণত ধীরগতির হলেও গুগলের ব্লগার হচ্ছে ব্যতিক্রম কেননা এটি ফ্রি হলেও আপটাইম, লোডিং স্পিড এবং নিরাপত্তা খুবই ভালো। এরপর যে ফ্রি হোস্টিং সার্ভিস সবচেয়ে জনপ্রিয় সেটি হচ্ছে গিটহাব পেজেজ। ব্লগারে ওয়েবসাইট কাস্টমাইজেশন সীমিত আকারে করা গেলেও গিটহাব পেজেজ হোস্টিং দিয়ে আপনি আপনার ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেসে চালাতে পারবেন এবং নিজের ইচ্ছেমতো সম্পূর্ণ কাস্টমাইজ করতে পারবেন। উপরে দুইটি হোস্টিং সহ আরোও কিছু ফ্রি হোস্টিং সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
টপ কোয়ালিটি সম্পূর্ণ ৩টি ফ্রি হোস্টিং সাইট
এখন পর্যন্ত যত ফ্রি হোস্টিং সার্ভিস রয়েছে তাদের মধ্যে সেরা হচ্ছে গুগল এর ব্লগার। গুগল এর ব্লগারের সাহায্য আপনি যদি ওয়েবসাইট তৈরি করেন তাহলে শুরুতেই আপনি পেয়ে যাবেন ১৫ জিবি হোস্টং। আপনি যদি ব্লগিং করার জন্য বা একটি পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট তৈরি করার উদ্দেশ্যে ওয়েবসাইট বানাতে চান তাও আবার টাকা পয়সা খরচ করা ছাড়াই তাহলে গুগল এর ব্লগার হবে আপনার জন্য সেরা একটি সিদ্ধান্ত।
গুগল এর ব্লগারের পর গিটহাব পেজেজ (GitHub Pages) হতে পারে আপনার জন্য সেরা হোস্টিং সার্ভিস। আপনি যদি চান আপনি ব্লগারে না বরং ওয়ার্ডপ্রেসের মাধ্যমে সম্পূর্ণ কাস্টমাইজ করা যাবে এমন ওয়েবসাইট তৈরি করবেন তাহলে গিটহাব পেজেজ থেকে ফ্রিতে হোস্টিং সার্ভিস নিতে পারেন। এখান থেকে ফ্রি হোস্টিং নিলে সুবিধা হচ্ছে কোন অ্যাড দেখার প্রয়োজন নেই এবং লোডিং স্পিড খুব ভালো দেয় সেই সাথে সম্পূর্ণ ফ্রি এসএসএল (SSL) সার্টিফিকেট প্রদান করে থাকে।
আরোও পড়ুনঃ গুগল ক্রোমে ওয়েবসাইট ব্লক করার নিয়ম
এরপর সব চাইতে ভালো যে ফ্রি হোস্টিং প্রভাইডার সেটি হচ্ছে নেটলিফাই (Netlify) এই হোস্টিং সাইট বিশেষ করে ল্যান্ডিং পেজ, ব্লগ, স্ট্যাটিক, এপিআই বেস অ্যাপ ইত্যাদি সার্ভিস গুলোর জন্য পারফেক্ট। এখান থেকে হোস্টিং নিলে সুবিধা হচ্ছে কাস্টম ডোমেইন ও ফ্রি এসএসএল সার্টিফিকেট পেয়ে যাবেন। এছাড়াও সব চেয়ে যে জিনিস ভালো সেটি হচ্ছে আপনি মাত্র এক ক্লিকে সম্পূর্ণ ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলতে পারবেন এবং নিজ ইচ্ছে মত কাস্টমাইজ করতে পারবেন।
ওয়েবসাইট চালানোর জন্য ৫টি ফ্রি হোস্টিং সাইট
আমরা উপরে এতক্ষণ কিছু টপ লেভেলের ফ্রি হোস্টিং সার্ভিস নিয়ে আলোচনা করলাম। উপরের দেওয়া যেকোনো একটি ওয়েবসাইটে সাইনআপ করে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের জন্য হোস্টিং সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে ব্যবহার করতে পারবেন। উপরের দেওয়া হোস্টিং সার্ভিস গুলো ছাড়াও আরো অনেক ফ্রি হোস্টিং সার্ভিস রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করেও আপনি ওয়েবসাইট চালাতে পারবেন। এখন আমরা সেই সকল ফ্রি হোস্টিং সার্ভিস গুলো সম্পর্কে জানবো।
- InfinityFree হচ্ছে ফ্রি হোস্টিং সার্ভিস গুলোর একটি। এটি ব্যবহারের সব চেয়ে বেশি যে সুবিধা সেটি হচ্ছে সম্পূর্ণ ফ্রি হওয়া সত্ত্বেও আনলিমিটেড ডিস্ক স্টোরেজ ও ব্যান্ডউইথ দিয়ে থাকে। কোন অ্যাড দেখায় না এবং অসুবিধা হচ্ছে ডিস্ক স্টোরেজ হওয়ার কারণে ওয়েবসাইটের স্পিড ধীর গতির হতে পারে।
- 000WebHost হচ্ছে হোস্টিংগার কোম্পানির মত জনপ্রিয় হোস্টিং সার্ভিসের একটি অঙ্গ শাখা। এর মাধ্যমে হোস্টিং নিলে সুবিধা হচ্ছে ৩০০ এমবি ডিস্ক স্টোরেজ ও ৩ জিবি ব্যান্ডউইথ এর পাশাপাশি সিপ্যানেল দিয়ে ওয়েবসাইট নিয়ন্ত্রণ করা যায়। অসুবিধা হচ্ছে আপনার ওয়েবসাইটে তাদের অ্যাড দেখাতে পারে যা নিয়ন্ত্রণ আপনি করতে পারবেন না।
- AwardSpace হলো আরো একটি ফ্রি হোস্টিং সার্ভিস প্লাটফর্ম। এখানে আপনি ১ জিবি ডিস্ক স্টোরেজ ও ৫ জিবি ব্যান্ডউইথ পেয়ে যাবেন। এর সুবিধা হচ্ছে মাত্র এক ক্লিকে সিএমসি ইন্সটল করে ফেলতে পারবেন। এর অসুবিধা হচ্ছে এর স্টোরেজ কম এবং ধীর গতি সম্পূর্ণ হওয়ার পাশাপাশি ফ্রি এসএসএল সার্টিফিকেট নেই।
- ByetHost হলো ফ্রি হোস্টিং সার্ভিস প্রোভাইডার গুলোর একটি। এর সাথে আপনি পেয়ে যাবেন ১ জিবি ডিস্ক স্টোরেজ ও ৫০ জিবি ব্যান্ডউইথ। আপনি যদি ব্লগিং করেন ও আপনার অনেক ভিজিটর এক সাথে ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলে এই ৫০ জিবি ব্যান্ডউইথ এর কারণে আপনার ওয়েবসাইটের উপর কোন প্রভাব পড়বে না। এর সাথে ফ্রি সাব ডোমেইন ও কন্ট্রোল প্যানেল থাকলেও মাঝে মাঝে তাদের অ্যাড আসতে পারে।
- Render হলো আমাদের তালিকার আজকের শেষ ফ্রি হোস্টিং সার্ভিস। এটি বিশেষ করে স্ট্যাটিক ও ডাইনামিক যেমন জাভা, পাইথন, নোড ইত্যাদি সাপোর্ট করে। এর সুবিধা হচ্ছে ফ্রি এসএসএল সার্টিফিকেট সহ একটি তাদের কাস্টম ডোমেইন নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। অসুবিধা হচ্ছে তাদের অ্যাড আসতে পারে যা আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।
ফ্রি হোস্টিং ওয়েবসাইটে অ্যাড করার পদ্ধতি
আমরা উপরে এতক্ষণ ওয়েবসাইটের জন্য ফ্রি হোস্টিং কোথায় পাবেন এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করলাম কিন্তু কীভাবে এই সাইট গুলো থেকে হোস্টিং নিয়ে নিজে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করবো সে বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়নি। তাই এখন আমরা যেকোনো দুইটি টপ লেভেল ফ্রি হোস্টিং সার্ভিস থেকে কীভাবে ফ্রিতে হোস্টিং নিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করতে হয় সে বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। আশা করা যায় যে নিচে দেওয়া পদ্ধতি অনুসরণ করলে আপনিও ফ্রিতে টপ কোয়ালিটি সম্পূর্ণ ওয়েবসাইট বানাতে পারবেন তাও আবার টাকা পয়সা খরচ করা ছাড়াই।
এখন পর্যন্ত সব চাইতে নির্ভর যোগ্য ও ফাস্ট ফ্রি হোস্টিং সার্ভিসের তালিকায় গুগলের ব্লগারকে কোন কোম্পানি পেছন ফেলতে পারেনি। গুগলের ব্লগারে আপনি ওয়েবসাইট খোলা মাত্রই ১৫ জিবি উচ্চ গতি সম্পূর্ণ স্টোরেজ ও আনলিমিটেট ব্যান্ডউইথ পেয়ে যাবেন। অর্থাৎ আপনার ওয়েবসাইটে মাসে লক্ষ লক্ষ ভিজিতর আসলেও ওয়েবসাইট ডাউন হবে না। ব্লগারে ওয়েবসাইট খোলার জন্য শুধু আপনার একটি ই-মেইল অ্যাড্রেস থাকলেই হবে। এরপর গুগলে গিয়ে গুগল ব্লগার লিখে সার্চ দিয়ে একটি ফ্রিতে ওয়েবসাইট খুলে নিলেই আপনার কাজ শেষ।
এরপর আরো একটি ফ্রি হোস্টিং সার্ভিস হচ্ছে GitHub Pages এটি দিয়ে কীভাবে হোস্টিং ব্যবহার করে ওয়েবসাইট খুলবেন তার ধাপে ধাপে বর্ননা করা হলো। প্রথমেই তাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে একটি ই-মেইল দিয়ে ফ্রিতে অ্যাকাউন্ট খুলে নিতে হবে। এরপর আপনার প্রয়োজন হবে একটি HTML, CSS, JS বা যেকোনো প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের ওয়েবসাইট ফাইল। এরপর অ্যাকাউন্ট খুলা হয়ে গেলে সাইন-ইন করে নিউ রেস্পনসিটরি তে গিয়ে একটি নাম দিয়ে পাব্লিক করে পাবলিশ করে দিতে হবে। এরপর আপনার ওয়েবসাইটের থিম আপলোড করে ছোট কিছু সেটিংস সেটআপ করলেই আপনার ফ্রিতেই একটি ওয়েবসাইট রেডি হয়ে যাবে।
ফ্রি হোস্টিং ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা
ফ্রি হোস্টিং ব্যবহারের যেমন রয়েছে সুবিধা ঠিক তেমনি এটি ব্যবহারে তার চেয়ে বেশি কিছু অসুবিধা রয়েছে। তাই ফ্রি হোস্টিং ব্যবহার করে ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য সব সময় এক্সপার্ট ওয়েব ডেভেলপাররা নিষেধ করে থাকেন। তবে আপনি যদি শেখা উদ্দেশ্যে ফ্রি হোস্টিং ব্যবহার করে ওয়েবসাইট বিল্ড করতে চান তাহলে এটি আপনার জন্য সেরা সিদ্ধান্ত হতে পারে। এখন আমরা ফ্রি হোস্টিং ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে জানবো।
সুবিধা | অসুবিধা |
---|---|
সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে হোস্টিং ব্যবহার করা যায় | ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড বেশি থাকে |
SEO শেখার জন্য ব্যবহার করা যায় | ওয়েবসাইটে হোস্টিং কোম্পানির বিজ্ঞাপন দেখায় |
টাকা ছাড়াই থিম কাস্টমাইজেশন শেখা যায় | সার্ভার ডাউন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে |
ব্লগিং বা পোর্টফোলিও ওয়েবসাইটের জন্য পারফেক্ট | হ্যাকার আক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে |
বিনামূল্যে সাবডোমেইন পাওয়া যায় | ওয়েবসাইট ভিজিটের পরিমাণ সীমিত থাকে |
কাদের জন্য ফ্রি হোস্টিং ব্যবহার করা উচিত নয়
আমরা উপরে এর আগেও বলেছে যে সবার জন্য ফ্রি হোস্টিং ব্যবহার করা একদমই উচিত নয়। একনা এটি শুধু প্রফেশনাল নয় সেটি নয় বরং এর পেছনে রয়েছে অনেক কারণ। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কম নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আপনি যদি ফ্রি হোস্টিং ব্যবহার করে ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে খুব পরিশ্রম করে আপনার ওয়েবসাইটকে গুগল সার্চ রাঙ্কিং এর উপরে দিকে উঠান তাহলে আপনার ওয়েবসাইটটি অনেক ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। কেননা এমন অবস্থায় এই সকল হোস্টিং গুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল থাকার কারণে হ্যাকাররা খুব সহজেই এই ধরনের ওয়েবসাইট হ্যাক করে নিতে পারে।
তাই আপনি যদি শেখা উদ্দেশ্যে এই ফ্রি হোস্টিং ব্যবহার করে ওয়েবসাইট বানাতে চান তাহলে এটি আপনার জন্য পারফেক্ট কিন্তু আপনি যদি লং টার্ম বা অনেক দিন এই হোস্টিং ব্যবহার করে ওয়েবসাইট বানিয়ে ব্লগিং করে বা ই-কমার্স ওয়েবসাইট বানিয়ে অর্থ ইনকাম করার পরিকল্পনা করে থাকেন তাহলে এটি আপনার ভুল সিদ্ধান্ত হবে। এক্ষেত্রে আপনি নির্ভরযোগ্য কোন হোস্টিং প্রভাইডারের কাছে থেকে অল্প টাকা খরচ করে হোস্টিং ক্রয় করে ওয়েবসাইট বিল্ড করতে পারেন। তাই বলা যায় যে লং টার্ম কাজের জন্য ফ্রি হোস্টিং ব্যবহার করা একদম ভুল সিদ্ধান্ত হতে পারে।
হোস্টিং কত প্রকার ও কি কি বিস্তারিত জানুন
আমরা উপরে শুধু ফ্রি হোস্টিং সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি। আপনি যদি প্রফেশনাল ও লং টার্ম কাজের জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই ভালো মানের হোস্টিং ক্রয় করতে হতে। তাই আমাদের হোস্টিং কত প্রকার হয় এবং কোন হোস্টিং এর কি কাজ এই ধরনের সাধারণ জ্ঞান থাকতে হবে। এখন আমরা হোস্টিং এর ধরন ও প্রকারভেদ সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।
- শেয়ার্ড হোস্টিং
- ভিপিএস হোস্টিং
- ডেডিকেটেড হোস্টিং
- ক্লাউড হোস্টিং
- ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং
- রিসেলার হোস্টিং
শেয়ার্ড হোস্টিং মাত্র একটি হোস্টিং সার্ভারে একাধিক ওয়েবসাইট চালানো হয়ে থাকে। এই ধরনের হোস্টিং খরচ কম হলেও এর অন্যতম অসুবিধা হচ্ছে একই সার্ভারের অন্যদের ট্রাফিক আপনার ওয়েবসাইটের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। ভিপিএস হোস্টিং গুলো একটি সার্ভার অনেক গুলো ভার্চুয়াল সার্ভারে রূপান্তর করে ব্যবহার করা হয়। ডেডিকেটেড হোস্টিং পুরো একটি সার্ভার শুধুমাত্র আপনার ওয়েবসাইটের জন্য ব্যবহার করতে পারবেন। ক্লাউড হোস্টিং হচ্ছে আপনার ওয়েবসাইটের তথ্য একাধিক সার্ভারে সংরক্ষিত হয়। ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং হচ্ছে ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটের জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি করা এবং পরিশেষে রিসেলার হোস্টিং হচ্ছে আপনি নিজে অন্য মানুষের কাছে হোস্টিং সার্ভিস বিক্রি করতে পারবেন।
আপনার জন্য কোন হোস্টিং সেরা জেনে নিন
আপনি যদি ওয়েবসাইট তৈরি করা এবং থিম সহ অন্যান্য বেসিক জিনিস শিখতে চান তাহলে আপনার জন্য ফ্রি হোস্টিং সেবা গ্রহণ করা একদম পারফেক্ট হলেও এক্ষেত্রে নিরাপত্তার একটি ঝুঁকি থেকে যায়। আর আপনি যদি সম্পূর্ণ নিরাপত্তা সহকারে ওয়েবসাইট বিল্ড ও কাস্টমাইজেশন শিখতে চান তাহলে আপনার জন্য শেয়ার্ড হোস্টিং সেরা হতে পারে।
আপনি যদি ব্লগ বা পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান তাহলে অল্প টাকা খরচ করেই শেয়ার্ড হোস্টিং অথবা ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন। এ ধরনের কাজের জন্য শেয়ার্ড হোস্টিং অথবা ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং একদম পারফেক্ট। এরপর আপনি যদি অল্প পরিসরে ব্যবসা করতে চান এবং আপনার ওয়েবসাইট ভিজিটরের সংখ্যা শুরুর দিকে অনেক কম তাহলে আপনি ভিপিএস হোস্টিং ব্যবহার করতে পারেন।
আপনি যদি ই-কমার্স বা একটু বড় ধরনের ব্যবসা করতে চান তাহলে আপনার জন্য ডেডিকেটেড হোস্টিং ব্যবহার করা উত্তম। আর আপনার যদি ওয়েবসাইটে দ্রুত বেশি ভিজিটর আনার ইচ্ছে থাকে তাহলে ওয়েবসাইট যেন ডাউন না হয় এই জন্য ক্লাউড হোস্টিং ব্যবহার করতে পারেন। এবং সব শেষে আপনিও যদি অন্যান্য কোম্পানির মত হোস্টিং সেবা বিক্রয় করতে চান তাহলে রিসেলার হোস্টিং ব্যবহার করে হোস্টিং সেবা বিক্রয় করতে হবে।
ফ্রি হোস্টিং নিয়ে কিছু সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্নঃ ফ্রি হোস্টিং সার্ভিস গুলোর কোনটি কত নাম্বার র্যাংকিং এ আছে?
উত্তরঃ
র্যাংক | হোস্টিং সাইট |
---|---|
১ | blogger |
২ | GitHub Pages |
৩ | Netlify |
৪ | InfinityFree |
৫ | 000WebHost |
প্রশ্নঃ ফ্রি হোস্টিং ব্যবহার করা কি নিরাপদ?
উত্তরঃ জনপ্রিয় কিছু ফ্রি হোস্টিং কোম্পানি গুলো ব্যবহার করা নিরাপদ হলেও কম জনপ্রিয় বা অজানা হোস্টিং কোম্পানি গুলো ব্যবহার করা নিরাপদ নাও হতে পারে।
প্রশ্নঃ ফ্রি হোস্টিং দিয়ে কি ওয়ার্ডপ্রেস সাইট বানানো যায়?
উত্তরঃ হ্যাঁ এমন অনেক ফ্রি হোস্টিং রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করে ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট বানানো যায়। যেমনঃ InfinityFree, 000WebHost এর মত ফ্রি হোস্টিং দিয়ে ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট বানানো যায়।
প্রশ্নঃ ফ্রি হোস্টিং এ কি আমি আমার ডোমেইন ব্যবহার করতে পারব?
উত্তরঃ হ্যাঁ বেশির ভাগ ফ্রি হোস্টিং ব্যবহার করে তৈরি কৃত ওয়েবসাইটের কাস্টম ডোমেইন ব্যবহার করা যায়।
প্রশ্নঃ ফ্রি হোস্টিং এ তৈরি করা ওয়েবসাইটে কি SEO করা যায়?
উত্তরঃ বেশির ভাগ ফ্রি হোস্টিং থেকে তৈরি করা ওয়েবসাইটে অনিয়ন্ত্রিত বিজ্ঞাপন ও হার্ড ড্রাইভ উক্ত স্টোরেজের জন্য ওয়েবসাইট স্লো হওয়ার কারণে সেই সকল ওয়েবসাইটে SEO করা কঠিন হতে পারে। তবে অনেক ক্ষেত্রে SEO করলে ভালো ফলাফলও লক্ষ্য করা গিয়েছে।
প্রশ্নঃ কাদের ফ্রি হোস্টিং ব্যবহার করা উচিত নয়?
উত্তরঃ যারা লং টার্ম বা প্রফেশনাম কাজের জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করতে চায় তাদের জন্য ফ্রি হোস্টিং ব্যবহার করা উচিত নয়।
প্রশ্নঃ কোন ধরনের কাজের জন্য ফ্রি হোস্টিং ব্যবহার করা উচিত?
উত্তরঃ ওয়েবসাইট সম্পর্কে ধারণা নেওয়া ও শেখার উদ্দেশ্যে ফ্রি হোস্টিং ব্যবহার করে ওয়েবসাইট তৈরি করা উচিত।
প্রশ্নঃ ফ্রি হোস্টিং ব্যবহার করে বানানো ওয়েবসাইট থেকে টাকা ইনকাম করা যায়?
উত্তরঃ ফ্রি হোস্টিং ব্যবহার করে বানানো ওয়েবসাইট গুলো প্রফেশনাল ও বিশ্বাস যোগ্য না হওয়ার কারণে টাকা ইনকাম করা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। বিশেষ করে ব্লগিং এর জন্য অ্যাডসেন্স বা ই-কমার্স ব্যবসার জন্য টাকা এই ধরনের ওয়েবসাইট থেকে টাকা ইনকামের সম্ভাবনা খুবই কম।
প্রশ্নঃ ফ্রি হোস্টিং কত দিন ব্যবহার করা যায়?
উত্তরঃ কিছু ফ্রি হোস্টিং প্লাটফর্ম সারা জীবনের জন্য ফ্রি থাকলেও কিছু হোস্টিং সার্ভিস কিছুদিন পর পর হোস্টিং আপডেট করার জন্য টাকা চাইতে পারে।
পরিশেষেঃ ওয়েবসাইটের জন্য ফ্রি হোস্টিং কোথায় পাবেন
ওয়েবসাইটের জন্য ফ্রি হোস্টিং কোথায় পাবেন এই নিয়ে আমরা উপরে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আমরা আশা করি যে উপরের দেওয়া তথ্য ভালোভাবে পড়লে ফ্রি হোস্টিং সম্পর্কিত সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। কেননা আমরা উপরে ওয়েবসাইটের জন্য সেরা কিছু ফ্রি হোস্টিং সম্পর্কে জেনেছি এবং তার পাশাপাশি কেন আমাদের ফ্রি হোস্টিং ব্যবহার করা উচিত এবং কেন ব্যবহার করা উচিত নয় সেই বিষয়ও জেনেছি। ফ্রি হোস্টিং এর কিছু সুবিধা ও অসুবিধাও জেনেছি। তাই উপরের তথ্য গুলো থেকে আপনি ফ্রি হোস্টিং সম্পর্কে একটি পূর্ণাঙ্গ ধারণা পেয়ে যাবেন। 250311
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url