OrdinaryITPostAd

মধু পূর্ণিমার তাৎপর্য ও কেন মধু পূর্ণিমা পালন করা হয়

মধু পূর্ণিমার তাৎপর্য ও কেন মধু পূর্ণিমা পালন করা হয়, সে বিষয় সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকলে, এই আর্টিকেলটিতে আপনাকে স্বাগতম। নিচে মধু পূর্ণিমার তাৎপর্য ও কেন মধু পূর্ণিমা পালন করা হয় সে বিষয় সম্পর্কে আলোকপাত করা হবে। আসুন দেখে নেয়া যাক, মধু পূর্ণিমার তাৎপর্য ও কেন মধু পূর্ণিমা পালন করা হয়।
হিন্দু ধর্ম মতে মধু পূর্ণিমা তাৎপর্যপূর্ণ একটি অনুষ্ঠান। আর মধু পূর্ণিমা পালন করার বিশেষ একটি ঘটনা রয়েছে। আপনি যদি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে মধু পূর্ণিমার তাৎপর্য সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন। 

মধু পূর্ণিমা কেন পালন করা হয়? সে বিষয়ে সম্পর্কেও নিচে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে। যাইহোক আসুন দেখে নেয়া যাক, মধু পূর্ণিমার তাৎপর্য ও কেন মধু পূর্ণিমা পালন করা হয়? সেই বিষয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত।

মধু পূর্ণিমার তাৎপর্য ও কেন মধু পূর্ণিমা পালন করা হয়

আর্টিকেলটির এই অংশে প্রথমে মধু পূর্ণিমার তাৎপর্য সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। এবং তারপর কেন মধু পূর্ণিমা পালন করা হয়? তা উল্লেখ করা হবে। তাই মধু পূর্ণিমার তাৎপর্য ও পালন করার কারণ সম্পর্কে জানতে নিম্ন বর্ণিত তথ্যগুলো পড়তে থাকুন। 

বুদ্ধ ধর্মের যতগুলো ধর্মীয় অনুষ্ঠান রয়েছে তার মধ্য থেকে অন্যতম একটি হলো মধু পূর্ণিমা। ভাদ্র মাসের পূর্ণিমাতে মধু পূর্ণিমা পালন করা হয়। বুদ্ধ ধর্ম মতে, বুদ্ধদেবের প্রতি বানরের ত্যাগ ও ভালোবাসার কথা স্মরণ করার জন্যই মধু পূর্ণিমা পালন করা হয়। 

মধু পূর্ণিমা পালন করার উপলক্ষ হল একটি বানর। ভিক্ষুদের দ্বন্দ্বের কারণে তাদের প্রতি বিক্ষুব্ধ হয়ে যখন গৌতম বুদ্ধ কোশাম্বী ত্যাগ করে পারিলেয়্য গমন করলেন, তখন প্রথমত একটি হাতি বুদ্ধদেবের খাবারের যোগান দিব। বন থেকে বিভিন্ন ফল-ফসল এনে বুদ্ধকে দিত, আর বুদ্ধ তা খেয়েই জীবন ধারণ করত।
এক পর্যায়ে একটি বানর বুদ্ধদেবের সামনে মধু সহ একটি মৌচাক নিয়ে আসেন। এবং তা বুদ্ধকে দান করেন। বুদ্ধ সেটি হাতে নিয়ে দেখতে পান যে, সেখানে মৌমাছির ছোট ছোট বাচ্চা রয়েছে, ফলে সেখান থেকে মধু পান করা পরিহার করেন। 

বিষয়টি বানর বুঝতে পেরে বুদ্ধদেবের কাছ থেকে মৌচাকটি নিয়ে ময়লা পরিষ্কার করে পুনরায় তার হাতে দেন। তখন বুদ্ধ সেখান থেকে মধু পান করেন। বুদ্ধদেব বানরের দেয়া মধু পান করায় বানর অত্যন্ত খুশি হয়ে যায়। ফলে সে বনের এ ডাল থেকে সে ডালে ছুটেছুটি করতে লাগলো। 

অসাবধানতাবশত একটি ডাল থেকে পড়ে গিয়ে বানর মৃত্যুবরণ করল। যেহেতু সেই বানানটি বুদ্ধদেবের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে নিজের দেহত্যাগ করেছে তাই, বুদ্ধ ধর্ম মতে সে তাবতিংস স্বর্গে ত্রিশ যোজন বিস্তৃত কনক বিমান ও সহস্র অপ্সরা লাভ করে। সেই ঘটনাকে স্মরণ করার জন্য এই প্রতিবছর ভাদ্র মাসের পূর্ণিমাতে মধু পূর্ণিমা পালন করা হয়। 

গৌতম বুদ্ধের শান্তির বাণী

মধু পূর্ণিমার তাৎপর্য ও কেন মধু পূর্ণিমা পালন করা হয়? আশা করি সেই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন কেননা সেই বিষয়গুলো সম্পর্কে উপরে বিস্তার আলোচনা করা হয়েছে। আর্টিকেলটির এই অংশে গৌতম বুদ্ধের শান্তির বাণী তুলে ধরা হলো। 
  • ধ্যান থেকে আসে জ্ঞান; ধ্যানের অভাবে আসে অজ্ঞতা। জানতে শেখো কি তোমাকে এগিয়ে নিয়ে যায় আর কি পিছু টানে, জেনে নিয়ে নিজের পথ নির্ণয় করো যা জ্ঞানের দিকে যায়।
  • তুমি যা ভাবো সেটাই হও, যা অনুভব করো সেটাই আকর্ষণ করো, যা কল্পনা করো তাই সৃষ্টি করো।
  • যেমনভাবে একটা মোমবাতি আগুন ছাড়া নিজে জ্বলতে পারেনা, ঠিক সেইরকমই একটা মানুষ আধ্যাত্মিক জীবন ছাড়া বাঁচতে পারেনা।
  • আলস্য ও অতিভোজের দরুন স্থূলকায় নিদ্রালু হয়ে বিছানায় গড়াগড়ি দেওয়া স্বভাবে পরিনত হলে সেই মূর্খের জীবনে দুঃখের পুনঃ পুনরাবৃত্তি ঘটবে।
  • জ্ঞানগর্ভ জীবনের জন্য মুহূর্তের ইতিবাচক ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে। এই জন্য ভয়কে তুচ্ছ করতে হবে, এমনকি মৃত্যুকেও।
  • আমরা প্রত্যেকেই একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত। একজন আরেকজনের পরিপূরক। অর্থাৎ সমাজে আমরা কেউ একা নই।
  • খারাপটি সর্বদা তুমি নিজেই পছন্দ করছো। সুতরাং, তোমার খারাপ কাজের জন্য তুমি নিজেই দায়ী। এর দায়ভার অন্য কারো নয়।
  • তুমি কতটা ভালোবাসা দিলে, কতটা পূর্ণতার সাথে জীবনকে উপভোগ করলে এবং কতটা গভীরতার সাথে হতাশাকে জীবন থেকে ত্যাগ করলে- এই সবকিছুই সবশেষে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • যখন আমরা মনের রূপান্তর ঘটাই, আর চিন্তাগুলো বিশুদ্ধ করি, তখন আমরা অন্যায় কাজ থেকে জীবনকে পরিশুদ্ধ করি। এর মাধ্যমে খারাপ কাজের চিহ্নও মুঁছে যায়। একটা মোমবাতি যেমনভাবে আগুন ছাড়া নিজে জ্বলতে পারেনা, ঠিক সেইরকমই একটা মানুষ আধ্যাত্মিক জীবন ছাড়া বাঁচতে পারেনা।
সূত্র: attoprokash.com, bongquotes.com, adisikha.com, banglaprotibedon.com

গৌতম বুদ্ধের গৃহত্যাগ এর ঘটনা

মধু পূর্ণিমার তাৎপর্য ও কেন মধু পূর্ণিমা পালন করা হয়? সে বিষয় সম্পর্কে উপরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। নিচে গৌতম বুদ্ধের গৃহত্যাগ এর ঘটনা উল্লেখ করা হবে। তাই আপনি যদি গৌতম বুদ্ধের গৃহত্যাগের ঘটনা সম্পর্কে জানতে চান, তাহলে নিম্ন বর্ণিত তথ্য গুলো মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। 

বুদ্ধ ধর্মের শাস্ত্র থেকে জানা যায় যে, ২৯ বছর বয়সে সিদ্ধার্থ অর্থাৎ বুদ্ধ, বুদ্ধের পূর্ব নাম ছিল সিদ্ধার্থ। তিনি স্ত্রী সন্তান এবং বিলাসবহুল জীবনের মায়া ত্যাগ করে, কোন এক রাত্রিতে বাড়ি থেকে বের হয়ে আসে। সিদ্ধার্থ যখন বাড়ি থেকে বের হন তখন তার স্ত্রী পুত্র এবং পরিবারের সকলেই ছিল ঘুমন্ত। তিনি নিঃশব্দে তার ঘরা এবং তার সারথি ছন্নকে নিয়ে বিলাসবহুল জীবন পরিত্যাগ করে সন্ন্যাসিত্য গ্রহণ করে রাজবাড়ি ত্যাগ করেন। 

এরপর থেকেই তিনি নেপালের কোন একটি বনে ধ্যান পালন করার জন্য বেছে নেন। এবং তারপর থেকে তিনি সেখানেই ধ্যান করতে থাকেন। সর্বদাই তার সাথে তার সারথি ছিল। তিনি ধ্যান করার জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গুরুর কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন। প্রথমে তিনি শিক্ষা গ্রহণ করেন  "আলার কালাম" নামক একজন সন্ন্যাসীর কাছ থেকে। 
তবে সেই সন্ন্যাসীর কাছে তিনি তার প্রশ্নের যথাপোযুক্ত উত্তর না পাওয়ায় তার সান্নিধ্য পরিত্যাগ করেন। এবং পরবর্তীতে তিনি "উদ্দক রামপুত্ত" নামক আরেকজন সন্ন্যাসীর কাছে শিক্ষা গ্রহণ করা শুরু করেন এবং তার সান্নিধ্যে থাকতে থাকেন। 

এছাড়াও তিনি পরবর্তীতে আরো অনেক গুরুর সান্নিধ্য লাভ করেন এবং তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করেন। এভাবে এক পর্যায়ে তিনি ধর্ম গুরুতে রূপান্তরিত হন এবং বুদ্ধ ধর্ম প্রচার করা শুরু করেন।

উপসংহার

আপনি যদি এই আর্টিকেল দিয়ে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই, মধু পূর্ণিমার তাৎপর্য ও কেন মধু পূর্ণিমা পালন করা হয়? সেই বিষয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। মধু পূর্ণিমার তাৎপর্য ও পালন করার কারণ উল্লেখ করার পাশাপাশি গৌতম বুদ্ধের শান্তির বাণী তুলে ধরা হয়েছে  এবং গৌতম বুদ্ধের গৃহত্যাগের ঘটনার সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে। ১৬৪১৩

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url