OrdinaryITPostAd

ওসিডি রোগের ঔষধ কতদিন খেতে হয় - ওসিডি থেকে মুক্তির উপায়

ওসিডি রোগের ঔষধ কতদিন খেতে হয় এ সম্পর্কে বেশিরভাগ মানুষেরই সঠিক ধারণা নেই। আপনি কি জানেন ওসিডি রোগের ঔষধ কতদিন খেতে হয়? না জেনে থাকলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। কেননা এই পোস্টে ওসিডি রোগের ঔষধ কতদিন খেতে হয় তা বিস্তারিত আলোচনা করব। ওসিডি বা শুচিবাই হলো একধরনের মানসিক রোগ।
মানসিক রোগগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রধান রোগ হলো ওসিডি বা শুচিবায়ু। অনেকেই এর চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত নন। আজ এই পোস্টে ওসিডি রোগের লক্ষণ, ওসিডি রোগের চিকিৎসা, ওসিডি রোগের ঔষধ কতদিন খেতে হয়, ওসিডি থেকে মুক্তির উপায় ইত্যাদি ওসিডি রোগ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় নিয়ে তথ্যবহুল আলোচনা করব। তাই পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পোস্ট সূচিপত্র - ওসিডি রোগের ঔষধ কতদিন খেতে হয় জেনে নিন 

ওসিডি কি | ওসিডি রোগের লক্ষণ

ওসিডি এর পূর্ণরূপ হলো Obsessive Compulsive Disorder যাকে বাংলার শুচিবায়ু বলা হয়। আমাদের দেশে বেশ বড় সংখ্যক রোগী এ রোগে ভুগছেন। এ রোগে সাধারণত মনের ভেতরে একই চিন্তা বার বার আসতে থাকে। রোগী নিজেও বোঝে এটি অযৌক্তিক তারপরেও সে এই চিন্তা নিবারণ করতে পারে না। একপর্যায়ে  সে হতাশ হয়ে পড়ে। ওডিসি রোগীরা চূড়ান্ত পর্যায়ের মানসিক রোগী। তাই ওসিডি রোগের ঔষধ কতদিন খেতে হয় তা জেনে রাখা জরুরি। 
ওসিডি রোগের লক্ষণগুলো বিভিন্ন ভাবে প্রকাশ পায়। যেমন: ১) পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে অধিক সচেতন হয়ে বার বার ধোয়া মোছা করতে থাকে ২) আগ্রাসী মনোভাব আসে অর্থাৎ বার বার কাউকে আঘাত করতে চায় ৩) সে যৌনতা নিয়ে নানারকম উদ্ভব চিন্তা করতে পারে ৪) সে ধর্মীয়ভাবে হতাশ হয়ে আল্লাহর বিরুদ্ধে অশ্লীল চিন্তা করতে পারে ৫) কোনো জিনিস তার মনের মতো সাজাতে না পারলে অস্থিরতায় ভোগে। এগুলোই মূলত ওসিডি রোগের লক্ষণ।

ওসিডি রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি | ওসিডি রোগের ঔষধ কতদিন খেতে হয়

ওসিডি রোগীরা সবসময় মানসিক অস্থিরতায় ভোগে। বিভিন্ন কারণে একজন ব্যক্তির ওসিডি রোগ হতে পারে। তারমধ্যে প্রধান কারণ হলো বংশগত, এছাড়া পরিবেশগত এবং মস্তিষ্কের বিশেষ গঠনের কারণেও এ রোগের সৃষ্টি হয়। চলুন ওসিডি রোগের ঔষধ কতদিন খেতে হয় ও এর চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত হই।
  1. রোগীকে ময়লায় হাত দিয়ে হাত ধোয়া থেকে বিরত রাখার প্রাকটিস করাতে হবে। যখনই হাত ধোয়ার চেষ্টা করবে তখনই হাতকে আটকে রাখতে হবে। যাতে তার মানসিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটে।
  2. নিজের অস্বাভাবিকতা রোগীকে বার বার বোঝাতে হবে। দরকার হলে তা রেকর্ড করে তাকে (রোগীকে) দেখাতে হবে। যাতে সে মানসিক ভাবে ব্যাপারটা বুঝতে পারে।
  3. রোগীর চিন্তাধারার ত্রুটি শনাক্ত করে তাকে উন্নত মানসিক ডাক্তার দ্বারা সাইকোথেরাপির ব্যবস্থা করতে হবে। এটি বেশ কার্যকরী একটি চিকিৎসা পদ্ধতি। 
  4. চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী TCA-Clomipramive (SSRI) Fluoxetine, Sertalline, Flvuoxamin ইত্যাদি ঔষধগুলো উচ্চ ডোজে দিতে হবে। কারণ বিষণ্ণতা প্রতিরোধী ওষুধ আস্তে আস্তে উচ্চমাত্রায় না দিলে Obession কখনোই কমবে না। ওডিসি রোগের ঔষধ কতদিন খেতে হয় এ প্রশ্নের জবাবে বলা যায় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী যতদিন রোগ পুরোপুরি ভাল না হয় ততদিন Continue করাই ভাল। কারণ ঔষধ বাদ দিলে রোগ আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাবে।
  5. রোগীকে তার বয়স অনুযায়ী সামাজিকভাবে ব্যস্ত রাখতে হবে। কারণ সে যত মানুষের মধ্যে থাকবে তত এ রোগ থেকে মুক্তি পাবে।

ওসিডি থেকে মুক্তির উপায়  | ধর্মীয় ওসিডি থেকে মুক্তির উপায় | ওসিডি থেকে মুক্তির দোয়া

ওসিডি রোগের ঔষধ কতদিন খেতে হয় আপনারা ইতোমধ্যে সে সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন। তবে ওসিডি রোগ থেকে মুক্তির উপায় রোগীর নিজেকেই সচেষ্ট হয়ে বের করতে হবে। ধর্মীয় ওসিডি থেকে মুক্তির উপায় হিসাবে ওসিডি থেকে মুক্তির দোয়া পড়া যেতে পারে। চলুন ওসিডি থেকে মুক্তির উপায়সমূহ কি জেনে নিই।
  • এটি যেহেতু মানসিক সমস্যা তাই সর্বদা নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা শিখতে হবে। নিজেকে অন্য দশ জনের মতো স্বাভাবিক জীবনযাপনের মতো কল্পনা করে তা অনুসরণ করতে হবে।
  • প্রথমত অতিরিক্ত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা পরিহার করডে হবে। হাদীসে মানুষ হিসাবে যতটুকু পরিষ্কার থাকার কথা বলা হয়েছে ঠিক ততটুকুই অনুসরণ করতে হবে।
  • কেউ ওসিডি থেকে মুক্তির পরামর্শ দিলে তা সাদরে গ্রহণ করতে হবে। তাদের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ তারা আমার ভাল চাইছে বিধায় বলছে এমনটা ভাবতে হবে।
  • ওসিডি এবং ধর্মীয় ওসিডি থেকে মুক্তির দোয়া হিসাবে বার বার এই দোয়াটি পাঠ করতে হবে। উচ্চারণ: "ইয়া-হাইয়্যু, ইয়া-ক্বাইয়্যুমু বিরাহমাতিকা আছতাগীছ।" অর্থ: "হে চিরঞ্জীব, চির প্রতিষ্ঠিত সত্তা! আপনার রহমত দ্বারা আপনার কাছে সাহায্য চাই (তিরমিজী - ৩৫২৪)। রাসূল (সাঃ) যখন চিন্তিত হতেন তখন এই দোয়াটি পাঠ করতেন।
  • শয়তানের ধোঁকায় পড়ে মানুষ একই কাজ বার বার করে। তাই ওসিডি থেকে মুক্তিলাভের জন্য মহান আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে।
  • ওসিডির জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ঔষধ সেবন করতে হবে। ওসিডি রোগের ঔষধ কতদিন খেতে হয় তা ডাক্তারের থেকে ভালোভাবে শুনে নিয়ে হবে তা যথাযথ অনুসরণ করতে হবে। 

ওসিডি কি ভাল হয়?

প্রিয় পাঠক, ওসিডি রোগের চিকিৎসার অংশ হিসাবে আপনারা ওসিডি রোগের ঔষধ কতদিন খেতে হয় তা জেনেছেন। কিন্তু ওসিডি কি ভাল হয়? ওসিডি রোগ সাধারণত পুরোপুরি ভাল হয় না। কারণ দীর্ঘদিন একটা রোগে আক্রান্ত থাকলে তা কাটিয়ে ওঠা বেজায় কঠিন। ওসিডির চিকিৎসা পদ্ধতি তাই দীর্ঘমেয়াদী। তবে বার বার ঔষুধ পরিবর্তন ও নিজে থেকে পরিবর্তন হওয়ার যথেষ্ট চেষ্টা থাকলে ওসিডি বা শুচিবাই রোগ থেকেও অনেকাংশে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হয়।

শেষ কথা - ওসিডি রোগের ঔষধ কতদিন খেতে হয় 

সম্মানিত পাঠকগণ, নিশ্চয়ই এই পোস্টটি পড়ে আপনারা ওসিডি রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি, ওসিডি রোগের ঔষধ কতদিন খেতে হয়, ওসিডি থেকে মুক্তির উপায় ইত্যাদি বিষয়গুলো বিস্তারিত জেনে গিয়েছেন। পোস্টটি আপনার উপকারে আসলে এখনি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে ফেলুন। এছাড়াও স্বাস্থ্য বিষয়ক চমকপ্রদ সব আর্টিকেল পড়তে চাইলে আমাদের সাথেই থাকুন। পোস্টটি পুরোটা পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। @23891

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url