OrdinaryITPostAd

শরীর সম্পর্কে ১০টি অজানা তথ্য যা আপনিও জানেন না?

আপনি কি চিন্তিত হবেন যদি আপনার শরীর আপনার সাথে অদ্ভুত সব আচরণ করে? যেমন ধরুন আপনি যখন নার্ভাস হয়ে পড়েন তখন আপনার শরীরে অনেক ঘাম হয় কিন্তু কেন? কখনও কি ভেবে দেখেছেন আপনি আপনার চিত্তাকর্ষক স্বপ্ন মনে রাখতে পারেন না কেন! বিষয়টা অনেকটা ধাঁধার মতো লাগছে তাইনা! তাহলে চলুন ডুব দেই আমাদের জ্ঞানের রাজ্যে এবং জেনে নেই শরীর সম্পর্কে অজানা এমন ১০টি তথ্য, কেন এই অদ্ভুত বিষয়গুলো আমাদের দেহের সাথে ঘটে।

১. কেন আমরা আমাদের ঠোঁটে কামড় দেই?

আপনি কি কখনও খেয়াল করেছেন আপনি কতবার আপনার ঠোঁট কামড় দিয়েছেন? আপনি এমনটা করেন এর কারণ পুরোটাই মনস্তাত্ত্বিক। এই খারাপ অভ্যাসের উপস্থিতি হল, আপনি নিশ্চয় অনেক মানসিক চাপ কিংবা উদ্বেগের মধ্যে আছেন। যখন আমরা কোনো চাপের মধ্যে থাকি আমাদের ব্রেন আমাদের দেহকে নির্দেশ করে ঠোঁটে কামড় দিতে, যেন আমরা উক্ত সমস্যার কথা কম চিন্তা করি এবং শান্ত থাকি। তবে খেয়াল রাখবেন বেশি কামড় দেওয়ার ফলে আপনার ঠোঁট রুক্ষ হয়ে যেন না পড়ে।

২. কেন আমরা স্বপ্ন ভুলে যাই? শরীরের অজানা তথ্য

সচরাচর এমনটি হয়ে থাকে যে, আপনার স্বপ্নের উপরই পুরো একটা হলিউড মুভির স্ক্রিপ্ট তৈরি করা সম্ভব। কিন্তু ঘুম থেকে জাগা মাত্রই আপনি স্বপ্নের ৯০ ভাগই ভুলে যান, কিন্তু কেন! আমাদের ব্রেন আমাদের ভালোর জন্যই আমাদেরকে স্বপ্ন মনে রাখতে প্রতিরোধ করে। আমরা অতীতকে সর্বদা একটি নির্দিষ্ট ক্রমে এবং যৌক্তিকতা ও কাঠামোর ভিত্তিতে মনে রাখি। তবে স্বপ্ন সবসময় বিশৃঙ্খল এবং অদ্ভুত ছবির হয়ে থাকে তাই আমরা সেগুলো মনে রাখতে পারিনা।

৩. খেয়াল করেছেন কেন অ্যালার্মের আগেই ঘুম ভেঙ্গে যায়!

অ্যালার্মের কারনে ভেঙ্গে যাওয়া  ঘুম শরীরের উপর অনেক ধাক্কার সৃষ্টি করে। এই অপ্রয়োজনীয় চাপ এড়াতে মস্তিস্ক একটি প্রোটিন রিলিজ করে যেটা আপনার জাগরণের জন্য দায়ী। আপনি যদি এই মহাশক্তিকে সূক্ষ্ম ভাবে কাজে লাগাতে পারেন তবে আপনার জন্য এটি বেশ সহজ ও কার্যকর হবে এবং আপনি বেশি সময় ধরে ঘুমানোর কথা ভুলে যাবেন।

৪. সুড়সুড়ি দিলে কেন হাসি পায়!

আমাদের দেহের সবচেয়ে সুড়সুড়িদায়ক স্থান হল বগলের নিচে এবং পেটের দুপাশে যা বেশ কিছু নার্ভ এবং গুরুত্বপুর্ণ অর্গানকে ঢেকে রাখে এবং প্রাকৃতিকভাবে সেগুলো অনেক সংবেদনশীল। আপনাকে যখনই সুড়সুড়ি দেওয়া হয় আপনি সেগুলোকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন এবং ততক্ষণ পর্যন্ত হাসতে থাকেন যতক্ষণ না আপনার কান্না আসে বা আপনি সুড়সুড়ি দাতাকে বলেন "এবার থামুন প্লিজ"। কিন্তু কখনও খেয়াল করেছেন আপনি কিন্তু নিজেকে সুড়সুড়ি দিয়ে হাসাতে পারবেন না। আজ অব্দি এই  বিষয়টা বিজ্ঞানের কাছে রহস্য।

৫. নার্ভাস হলে কেন ঘাম হয়!

এমন কিছু সময়ে আমাদের বগলে ঘাম দৃশ্যমান হয় যা কখনওই উচিত নয়। এটা হয়ে থাকে ভাষনের সময় কিংবা চাকরির ইন্টারভিউতে কিংবা যখন আপনি ডেট এ আছেন তখন। বিষয়টা খুব আপত্তিকর। আপনি যখনই কোনো বিপদের মধ্যে পড়েন কিংবা মানসিক চাপ অনুভব করেন তখনই আপনার ঘাম হয়। ঘামযুক্ত তাল সর্বদাই গাছের ডালে ভালোভাবে আটকে থাকে। তাই নেক্সট টাইম যখন আপনি কোনো প্রেযেন্টেশনে যাবেন শুধু মনে রাখবেন, শত্রুর দখল থেকে সড়ে গাছে উঠা আপনার জন্য অধিক সহজ হবে।

৬. আবহাওয়া কিভাবে আপনাকে মাথা ব্যথা দেয়?

যখন আবহাওয়া পরিবর্তন হয় তখন বায়ু চাপের পরিবর্তন হয়। আপনার ধমনী ও শিরা এই পার্থক্যটা টের পায় এবং সংকুচিত কিংবা প্রসারিত হওয়ার মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দেখায়। কিছু মানুষের এই এই শিরা এবং ধমনী এতটাই বেশি চাপের সৃষ্টি করে যে তারা দেহের ভেতর এবং বাহিরের চাপের পার্থক্য বুঝতে পারে এবং এর ফলে তাদের মাথা ব্যথা অথবা মাইগ্রেন হয়। শরীর সম্পর্কে অজানা এই তথ্যটি জেনে কেমন অদ্ভুত লাগছে তাইনা?

৭. যানবাহনে অস্বস্তি কেন হয়?

আপনি যখন গাড়িতে বসে থাকেন তখন আপনার পেশীগুলো শান্ত থাকে, যার মানে হল আপনার ব্রেন আপনাকে তখন মেসেজ পাঠায় কোনো মুভমেন্ট হচ্ছে না এবং আপনি শান্ত থাকেন। তবে যেহেতু আমাদের কান আমাদের শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখে তাই এটি অনুভব করে যে একটি মুভমেন্ট হচ্ছে। এবং ব্রেন এই বিষয়টা বুঝতে পারেনা যে আসলেই কি হচ্ছে এবং ব্রেন তার ক্ষমতা দেখাতে ব্যর্থ হয় এবং এর ফলে আপনার বমি হয় কিংবা অসস্থি বোধ করেন।

৮. রোদে আমাদের ত্বক কালো হয়ে যাওয়ার কারন কি!

সুর্য্য সবসময় UV-Ray নিঃসৃত করে যেটা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এই রশ্মি থেকে প্রতিরোধ করার জন্য আমাদের ত্বক মেলানিন তৈরি করে। এবং আমাদের শরীরে যত বেশি মেলানিন তৈরি হয় আমাদের ত্বক ততই কালো হতে থাকে। আমাদের চুল এও মেলানিন আছে তবে চুল আলাদাভাবে ত্বক এর মতো মেলানিন প্রস্তুত করতে সক্ষম নয়।

৯. কেন আমরা কানে বাজতে শুনি?

আমাদের কানের অভ্যন্তরিন ভাগে অনেক সুক্ষ্ম চুল থাকে এবং এরা প্রকম্পিত হয় তখনই যখন তারা একটি সাউন্ডওয়েভ এর শিকার হয়। এবং এই প্রকম্পন আমাদের ব্রেনে সিগন্যাল পাঠায় এবং আমরা শুনতে পাই। কিন্তু আমরা যখন উচ্চস্বরে কিছু শুনি তখন আমাদের নার্ভগুলো নষ্ট হয়ে যায় এবং আমাদের ব্রেনকে মিথ্যা বার্তা পাঠায় এবং আমাদের কান বাজতে থাকে।

১০. অনেক খাবার খেলে কেন অলস লাগে?

এই বিষয়টি আমাদের পুরনো সভ্যতায় নিয়ে যায়। বেঁচে থাকার জন্য আমাদের শরীরে সর্বদাই খাবার এবং পানি সহ কিছু মৌলিক চাহিদা রয়েছে। আপনি যখন ক্ষুধার্ত হবেন তখন আপনার শরীর যথেষ্ট সক্রিয় হয় এবং আপনার ব্রেন আপনাকে মেসেজ পাঠায় খাবার গ্রহণের জন্য এবং আপনি খাবার খাওয়া শুরু করেন। আপনার ব্রেন আপনাকে আবার মেসেজ পাঠায় "এবার আমাকে আমার শক্তি সঞ্চয় করে রাখতে হবে" তাই আপনি নিজেকে অলস মনে করতে শুরু করেন ।

মানবদেহের অজানা এই ১০টি তথ্য জেনে আপনাদের নিশ্চয় অনেক ভালো লেগেছে। প্রতিদিন এমন নতুন সব অজানা তথ্য পেতে অর্ডিনারি আইটির ব্লগে চোখ রাখুন। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের জানার সুযোগ করে দিন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url