OrdinaryITPostAd

শাওয়াল মাসের রোজার ফজিলত - শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে হাদিস

আপনারা কি শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে হাদিস, শাওয়ালের অর্থ ও তাৎপর্য এবং শাওয়াল মাসের রোজার ফজিলত সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আমাদের আজকের এই পোস্টটি আপনাদের জন্য। আজকে আমরা আলোচনা করব শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে হাদিস, শাওয়াল মাসের সুন্নত এবং শাওয়াল মাসের রোজার ফজিলত সম্পর্কে।
তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেই, শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে হাদিস এবং শাওয়াল মাসের রোজার ফজিলত সম্পর্কে।

সূচিপত্রঃ শাওয়াল মাসের রোজার ফজিলত - শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে হাদিস

শাওয়াল মাসের রোজার ফজিলত

আরবি চন্দ্র বছরের দশম মাস হচ্ছে শাওয়াল মাস। হজ্বের তিন মাসের প্রথম মাস (শাওয়াল, জিলক্বদ, জিলহজ্জ) হচ্ছে এটা। এই মাসের ১ তারিখে রোজার ঈদ বা ঈদুল ফিতর। পহেলা শাওয়ালে সাদকাতুল ফিতর বা ফিতরা দেয়া এবং ঈদের নামাজ পড়া হচ্ছে ওয়াজিব। এই মাসের সাথে হজ্বের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। এর সাথে ঈদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। রোজা ও রমজানের সম্পর্ক রয়েছে এর সাথে। এবং সাদকা ও যাকাতের সম্পর্ক রয়েছে। সেজন্য এই মাস ইবাদত ও আমলের জন্য অনেক উপযোগী বা কার্যকরী।

শাওয়ালের অর্থ ও তাৎপর্য

শাওয়াল হচ্ছে আরবি শব্দ। যার অর্থ হচ্ছে প্রার্থনাই হস্ত উত্তোলন করা, বিজয়ী হওয়া, গৌরব করা, পাল্লা ভারী হওয়া, ফলবতী, পূর্ণতা, উন্নত ভূমি, উন্নতকরণ, উঁচু করা বা ভিক্ষায় হস্ত প্রসারিত করা। এই সবগুলো অর্থের প্রত্যেকটার সাথেই শাওয়ালের সুগভীর সম্পর্ক আছে। এই মাসের আমলের মাধ্যমে উন্নতি লাভ হয়ে থাকে। পূর্ণতা লাভ করা যায়। নেকির পাল্লা ভারী হতে থাকে। গৌরব অর্জিত হয় থাকে এবং সাফল্য আসতেই থাকে।

আরো পড়ুনঃ রোজা ভঙ্গের ০৭ কারণ

আল্লাহর কাছে হাত সম্প্রচারিত করে ফলপ্রার্থী প্রার্থনা করে। সারা মাস রোজা রাখার পর আরো কয়েকটা রোজা রাখে। প্রাপ্তির আনন্দে বিভোর হয়ে থাকে। ফরজ রোজা পালন শেষ করার পর নফল রোজার প্রতি মনোনিবেশ করতে থাকে। আত্মনিয়ন্ত্রণের শক্তি অর্জন করতে থাকে। পরিপক্কতা ও স্থিতি লাভ করে থাকে। এই সবগুলোই হচ্ছে শাওয়াল মাসের তাৎপর্য।

শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে হাদিস

মহান আল্লাহ তায়ালা কোরআনে রমজান মাসের কাজা রোজা সম্পর্কে বলেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সফরে থাকবে কিংবা অসুস্থ থাকবে সে রমজানের পর অন্য দিনগুলোতে রোজা রাখতে পারবে। (সূরা বাকারা, আয়াতঃ ১৮৪)। সেজন্য যারা অসুস্থতার কারণে বা সফরের ক্লান্তির জন্য রমজান মাসে পূর্ণ রোজা রাখতে পারেনি, তারা সেই রোজাগুলো রমজান মাসের পর অন্য সময়ে আদায় করে নেবে। মহিলাদের ঋতুমতী ও এই অসুস্থতার মধ্যে শামিল হয়। মা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু এ বিষয়ে বলেন, আমরা ঋতুমতী হতাম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে।

তখন এই রোজা পড়ে আমাদের কাজা আদায় করার নির্দেশ দেয়া হইলো। কিন্তু নামাজ কাজা আদায় করবার কথা বলা হয়নি। অর্থাৎ নামাজ এই অবস্থাতে মাফ করা গেলেও রোজা কিন্তু মাফ করা হয়নি। পরে তা আদায় করা লাগবে। (বুখারী ও মুসলিম, মিশকাত, হাদিসঃ ২০৩২)। হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বলেছেন, রমজানের যে কাজা রোজা আমার উপর বাকি থাকতো, তা পরবর্তী শাবান মাস ছাড়া আদায় করতে আমি পারতাম না। (বুখারী, হাদিসঃ ১৯৫০; মুসলিম, হাদিসঃ ১১৪৬)।

আরো পড়ুনঃ রোজা খোলার দোয়া

এই হাদিসের মাধ্যমে এটা প্রমাণিত হয় যে, রমজান মাসে ছুটে যাওয়া কাজা রোজা গুলো পরবর্তী রমজান মাস আসার আগেই যে কোন সময় আদায় করতে পারা যাবে। রমজানের কাজা রোজা গুলো রাখার জন্য সময় সংকীর্ণ যদি না হয় তাহলে, তার আগে নফল রোজা গুলো রাখা শুদ্ধ ও বৈধ। অর্থাৎ যথেষ্ট সময় থাকলে ফরজ রোজা কাজা করার আগে নফল রোজা রাখা যাবে।

যেমন ফরজ নামাজ পড়ার আগে যদি সময় থাকে তাহলে নফল নামাজ পড়তে পারবেন। সেজন্য শাওয়াল মাসের ছয়টা সুন্নত রোজা রমজানে কাজা রোজার আগেও করতে পারবেন। হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু যেমন আমল করতেন। তবে যদি সম্ভব হয় তাহলে আগে ফরজ রোজার কাজা আদায় করায় উত্তম হবে।

শাওয়াল মাসের সুন্নত

হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসের মাধ্যমে প্রমাণিত, বিয়ে-শাদী শাওয়াল মাসে করা সুন্নত। যেমন শুক্রবারে, জামে মসজিদে এবং বড় মজলিসে আকদ অনুষ্ঠিত হওয়া সুন্নাত। কেননা, মা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর শাওয়াল মাসের শুক্রবারে মসজিদে নববীতে বিয়ে হয়েছিল। শাওয়াল মাসের ছয় রোজা বিশেষ সুন্নাত। (সহীহ মুসলিম শরীফ)। ছয়টা সুন্নাত রোজা, ছয়টা নফল রোজা এই মাসে রাখা সুন্নত।

আরো পড়ুনঃ আল্লাহু আকবার এর ফজিলত

রাসূল সাঃ বলেছেন, রমজানে যারা রোজা পালন করবে এবং শাওয়াল মাসে আরো ছয়টা রোজা পালন করবে, সারা বছরই তারা যেন রোজা পালন করল। (মুসলিম, হাদিসঃ ১১৬৪)। মূলত শাওয়াল মাসের এই ছয়টা রোজা সুন্নত। যেহেতু নিজে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম আমল করেছেন এবং আমল করবার জন্য নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু পরিভাষায় এই রোজাগুলোকে নফল রোজা হিসেবে বলা হয়ে থাকে। কেননা, এগুলো ওয়াজিব ও ফরজ নয়, অতিরিক্ত অর্থাৎ নফল ইবাদত।

শেষ কথাঃ শাওয়াল মাসের রোজার ফজিলত - শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে হাদিস

শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে হাদিস এবং শাওয়াল মাসের রোজার ফজিলত সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের পুরো পোষ্টটি ভালোভাবে পড়ুন, আশা করি সবকিছু ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে হাদিস এবং শাওয়াল মাসের রোজার ফজিলত সম্পর্কে সবার আগে জানতে হলে আমাদের সাথেই থাকুন।

আজ আর নয়, শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে হাদিস এবং শাওয়াল মাসের রোজার ফজিলত সম্পর্কে আপনার কোন কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আশা করি আমরা আপনার উত্তরটি দিয়ে দেবো। তাহলে আমাদের আজকের এই শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে হাদিস এবং শাওয়াল মাসের রোজার ফজিলত সম্পর্কে পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আপনার ফেসবুক ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলে আমাদের পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ। ২৩৭৬৬

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url