শুষ্ক হাতের জন্য কোন লোশন রাতে দিতে হবে ও সেরা ৬ টি লোশন
শুষ্ক হাতের জন্য কোন লোশন রাতে দিতে হবে এটা নির্ভর করে কার হাতের ত্বক কতটা শুষ্ক। আমাদের ত্বক সাধারণত কয়েক প্রকারের হয়ে থাকে,যেমন কারোর ত্বক হয় তৈলাক্ত, কারোরটা শুষ্ক প্রকৃতির, কারোরটা হয় মিশ্র বা সংবেদনশীল এবং কেউ কেউ স্বাভাবিক প্রকৃতির ত্বক পেয়ে থাকে।
তবে যাদের ত্বক শুষ্ক তাদেরকে সাধারণত ভারী প্রকৃতির লোশন লাগাতে হবে। চলুন আজকে জেনে নেই, শুষ্ক হাতের জন্য কোন ধরনের লোশন ব্যবহার করলে সুফল পাওয়া যাবে এবং শুষ্কতার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
পেজ সূচিপত্রঃশুষ্ক হাতের জন্য কোন লোশন রাতে দিতে হবে
- শুষ্ক হাতের জন্য কোন লোশন রাতে দিতে হবে
- হ্যান্ড ক্রিম কি
- কোন ধরনের লোশন ব্যবহার করতে হবে
- রাতে কিভাবে লোশন ব্যবহার করতে হবে
- লোশন ব্যবহারের আগে ত্বকের প্রস্তুতি
- শুষ্ক ত্বক লোশন শোষণ না করার কারণ
- হাতে তেল ব্যবহারের উপকারিতা
- ঘরোয়া উপায়ে হাতের শুষ্কতা দূর করুন
- রাতে ত্বকের লোশন লাগানোর উপকারিতা
- লেখকের মন্তব্য
শুষ্ক হাতের জন্য কোন লোশন রাতে দিতে হবে
যাদের ত্বক শুষ্ক প্রকৃতির তারা জানে এই শুষ্কতা ত্বকের কতটা ভয়ংকর অবস্থায় নিয়ে যেতে পারে বিশেষ করে শীতকালে। শুষ্ক ত্বকের কারণে অনেক চুলকানি হয় এবং দাগ হয়ে যায়। এর জন্য প্রয়োজন সঠিক যত্ন। আর এই যত্নের জন্য বেছে নিতে হবে শুষ্কতার জন্য বিশেষ লোশন। সাধারণত ভারি প্রকৃতির লোশন গুলো বেশি উপকারে আসে। যেমন জলপাইয়ের তেল, গ্লিসারিন, শিয়া বাটার যুক্ত লোশন ইত্যাদি। অবশ্যই লোশনের ঘনত্ব ভালো হলেই এই শুষ্ক তার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
সাধারণত রাতের বেলা শুষ্ক ত্বকের জন্য পেট্রোলিয়াম জেলি এই জাতীয় জিনিস খুব ভালো উপকারে আসে। লোশন এর ক্ষেত্রে ভারী তৈল ভিত্তিক লোশন বেছে নিতে হবে। যেমন গ্লিসারিন বা সিয়া বাটার, কোকো বাটার, হায়ালুরনিক অ্যাসিড যুক্ত লোশন ব্যবহার করা উচিত।হাতের জন্য বিশেষ করে তৈরি হয়েছে হ্যান্ড ক্রিম যা ব্যবহার করা যায় এবং হাতের জন্যই বিশেষ করে তৈরি হয়েছে। তবে হ্যান্ড ক্রিম না থাকলেও উল্লেখিত লোশন গুলো হাতে ব্যবহার করতে হবে যা আমাদের ত্বকে আদ্রতা যুক্ত করবে।
হ্যান্ড ক্রিম কি
শুষ্ক হাতের জন্য কোন লোশন রাতে দিতে হবে এবং তার পাশাপাশি হ্যান্ড ক্রিম কিনে রাখলে খুব ভালো সুবিধা হয়। হ্যান্ড ক্রিম হল হাতের জন্য তৈরি বিশেষ একপ্রকার ঘন ময়শ্চারাইজার যা ত্বকে শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা করে এবং ত্বককে গভীরভাবে আদ্রতা যুগিয়ে ত্বকে কোমল ও মসৃণ রাখে। এই হ্যান্ড ক্রিম হাতের রুক্ষতা, চুলকানি এবং ফাটল ধরার থেকে প্রতিরোধ করে। এটি ত্বকের পুষ্টি যোগায় এবং হাতের চামড়ার খারাপ অবস্থা থেকে বাঁচায়।
আমাদের হাত যদি শুষ্ক থাকে তাহলে দেখা যায় চামড়া সাদা সাদা হয়ে যায় যেটি ত্বকের অতিরিক্ত রুক্ষতার পরিচয়। এই ঘটনাটি বিশেষ করে শীতকালে দেখা যায়। তাই এরকম অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য আমাদেরকে অবশ্যই হ্যান্ড ক্রিম ব্যবহার করা উচিত। কারণ হ্যান্ড ক্রিম তৈরি হয় ঘন প্রকৃতির এবং হাতের শুষ্কতার রক্ষার জন্য হ্যান্ড ক্রিমের কোন বিকল্প নেই। তবে যদি কারো কাছে হ্যান্ড ক্রিম না থাকে তাহলে তৈলাক্ত যুক্ত মশ্চারাইজার ব্যবহার করা যায় কিন্তু হ্যান্ড ক্রিম ব্যবহার করা সর্বোত্তম।
কোন ধরনের লোশন ব্যবহার করতে হবে
আমি এ সংক্ষেপে ইতোমধ্যেই সংক্ষেপে আলোচনা করেছি পূর্বে। এখানে কোন উপাদানের লোশন কতটা উপকারী এবং শুষ্কতার ধরন অনুযায়ী বাছাই করা সহজ হয় সে সম্পর্কে আলোচনা করব।
সাধারণত শুষ্ক ত্বকের জন্য সিয়া বাটার ও কোকো বাটার যুক্ত লোশন খুবই উপকারে আসে। কারণ এখানে রয়েছে বাটার যা একটি ঘন প্রকৃতির তৈলাক্ত পদার্থ। এটি ত্বকের শুষ্কতা ভাব দূর করে এবং ত্বকে মসৃণ রাখে। গ্লিসারিন ব্যবহার করা যেতে পারে কিন্তু ব্যবহার করার পূর্বে দেখে নিতে হবে এটি আপনার হাতের ত্বকের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে কিনা।
এরপরে তৈলাক্ত ভিত্তিক ময়শ্চারাইজার বা বিভিন্ন তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন জলপাই তেল, আরগুন তেল, জোজোবা তেল এগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে আমার মনে হয়, শীতকালে ত্বকে বিশেষ করে হ্যান্ড ক্রিম এর পর হাতে জলপাইয়ের তেল ব্যবহার করলে ভীষণভাবে উপকৃত হওয়া যায়। তবে অবশ্যই হাতের এই যত্ন প্রতিনিয়ত নিতে হবে। কারণ শুষ্ক ত্বক এমন জিনিস যে একদিন ব্যবহার করা বাদ দিলে পরের দিন হাতের চামড়ায় সাদা সাদা দাগ এবং ভাজ দেখা যাবে।
রাতে কিভাবে লোশন ব্যবহার করতে হবে
শুষ্ক হাতের জন্য কোন লোশন রাতে দিতে হবে এটা জানার পূর্বে আগে জানতে হবে যে রাতে কিভাবে লোশন ব্যবহার করতে হবে। কারণ লোশন ব্যবহারের পূর্বে হাতের ত্বককে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে তা না হলে যতই ভারীযুক্ত লোশন লাগানো হোক না কেন সেটা ত্বকের সাথে শোষিত হবে না। তাই রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ত্বককে ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে। একটা ভালো ময়শ্চারাইজার যুক্ত সাবান দিয়ে হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ গায়ে সরিষার তেল মাখার সুবিধা দেখে নিন
হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করার পর ভালোভাবে মুছতে হবে তবে হালকা ভেজা থাকলে ভালো হয়। এরপর শুষ্কতার জন্য উপযোগী এবং পছন্দ মত একটি লোশন বেছে নিয়ে হাতে পরিমাণ মতো নিয়ে ভালোভাবে মাসাজ করতে হবে। ভালোভাবে মাসাজের উপর নির্ভর করে ত্বকের রক্ত সঞ্চালন। রক্ত সঞ্চালন ভালো হলে ত্বক সুস্থ থাকবে। হাত ভালোভাবে মেসেজ করার পর কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে লোশনটা যেন ত্বকের সাথে ভালোভাবে শোষণ হয় এবং সারারাত এভাবে রেখে দিতে হবে।
লোশন ব্যবহারের আগে ত্বকের প্রস্তুতি
লোশন ব্যবহার করার আগে ত্বকে ভালোভাবে প্রস্তুতি নেওয়া খুবই প্রয়োজন এবং হাতের ক্ষেত্রে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। কারণ হাত প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কাজেই ব্যবহৃত হয় এবং এই অঙ্গের ময়লা এবং ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। তাই হাত পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে একটি ময়শ্চারাইজার যুক্ত সাবান ব্যবহার করতে হবে। কারণ সাধারণ সাবান ব্যবহার করলে হাতের ত্বক রুক্ষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে কারণ সাধারণ সাবানের প্রচুর ক্ষার হয় যার শুষ্ক ত্বকের জন্য ক্ষতিকারক।
হাতের ত্বক ভালোভাবে পরিষ্কার হওয়ার পর একটি পরিষ্কার ও নরম কাপড় দিয়ে আলতো করে মুছতে হবে। বেশি ঘষাঘষি করা যাবে না। এতে ত্বক খারাপ হয়ে যেতে পারে। ত্বক মুছে ফেলার পর একটু হালকা ভেজা থাকলে ভালো কারণ লোশন বা হ্যান্ড ক্রিম লাগানোর পর ভেজা ত্বকে এটি শোষণ করতে বেশি সুবিধা হয়। তেল ব্যবহারের ক্ষেত্রেও একই নিয়মাবলী অনুসরণ করতে হবে। কখনোই হাত পরিষ্কার না করার আগে লোশন ব্যবহার করা উচিত না, এতে সেটি ত্বকে শোষিত হবে না।
শুষ্ক ত্বক লোশন শোষণ না করার কারণ
শুষ্ক হাতের জন্য কোন লোশন রাতে দিতে হবে এটা জানার পাশাপাশি এটা জানার পাশাপাশি শুষ্ক ত্বক লোশন শোষণ কি কারনে করবে না সে সম্পর্কেও সতর্ক থাকতে হবে। প্রথমত, যদি ত্বকের জন্য উপযোগী লোশন নির্বাচন না করা হয় তাহলে সেই লোশন ব্যবহারে কোন উপকারিতা আসবে না। এছাড়াও, ত্বকে মৃত কোশ্চেন স্তরে পরিমাণ যদি অনেক বেশি থাকে কিংবা পরস বন্ধ হয়ে যায় তাহলে লোশন ত্বকের ভেতর প্রবেশ করবে না।
সবার আগে তো ত্বকের শুষ্কতার ধরণ অনুযায়ী সঠিক লোশন নির্বাচন করতে হবে। ত্বকের আদ্রতার ধরন যদি স্বাভাবিকের তুলনায় কম হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে লোশন ব্যবহার করলে সুফল পাওয়া যাবে না কিন্তু প্রতিনিয়ত ব্যবহার করার মাধ্যমে ত্বকের আদ্রতা আবার স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরে আসতে পারে।
হাতে তেল ব্যবহারের উপকারিতা
হাতে হ্যান্ডক্রিম, লোশন ব্যবহারের পাশাপাশি তেল ব্যবহার করলেও ভালো সুফল মেলে। বিশেষ করে, জলপাই তেলে শুধু হাতেই নয় বরং মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত এটি ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বক ভাঁজ করা রক্ষা পায়। জলপাই তেলের পাশাপাশি জোজোবা তেল এবং সবথেকে প্রাকৃতিক উপাদান নারকেল তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু অনেক সময় এই বিভিন্ন ধরনের তেল সব ধরনের শুষ্ক ত্বকের জন্য খাপ খাইয়ে নিতে পারে না। তাই আপনার যেটা সুবিধা আপনি সেই ধরনের তেল ব্যবহার করতে পারেন।
ঘরোয়া উপায়ে হাতের শুষ্কতা দূর করুন
অনেক তো আমরা লোশন, তেল, মশ্চারাইজার, গ্লিসারিন ইত্যাদি সম্পর্কে জানলাম। কিন্তু ঘরোয়া ভাবে বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে হাতের ত্বককে প্রাকৃতিকভাবেই শুষ্ক তার হাত থেকে রক্ষা করা যায়। অনেক রাসায়নিক উপাদান ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ঘরোয়া ভাবে প্রাকৃতিক টোটকা হাতের ত্বকের শুষ্কতার জন্য খুব ভালো কাজ করতে পারে এবং কোনরকম ক্ষতি ছাড়াই।
আরও পড়ুনঃ দিনে কয়টি ডিম খাবেন জেনে নিন
ঘরে থাকা চিনি ও তেলে স্ক্রাব তৈরি করা যেতে পারে। এর জন্য প্রথমে আমাদেরকে এক টেবিল চামচ জলপাই তেলের সাথে এক টেবিল চামচ চিনি মিশ্রণ তৈরি করে নিতে হবে। এরপর সেটি স্ক্রাব হিসেবে হাতে খুব আলতো ভাবে মাসাজ করতে হবে। তারপর 15 মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। এছাড়াও একটু ভেসলিন, নারকেল তেল ও গোলাপের পাপড়ি দিয়ে জাল করে ভালোভাবে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিয়ে হাতে ব্যবহার করলে ত্বকের শুষ্কতা দূর হয়ে যাবে।
রাতে ত্বকের লোশন লাগানোর উপকারিতা
শুষ্ক হাতের জন্য কোন লোশন রাতে দিতে হবে এটা জানার পাশাপাশি রাতে লোশন লাগানোর উপকারিতা নিয়েও চলেন জেনে নেওয়া যাক।কারণ সুস্থ সুন্দর ,নরম ও মসৃণ ত্বক পেতে গেলে এই নিয়ম অনুসরণ করতেই হবে। কারণ রাতের বেলা ত্বক আদ্রতা হারায় যার জন্য লোশন ব্যবহার করতে হবে এবং সারারাত এটি ত্বকের আদ্রতা যোগাবে। এছাড়াও দিনের বেলায় সূর্যের অবলোহিত রশ্মির কারণে হাতে কালো দাগ হয়ে যায়, এর জন্য রাতের বেলা লোশন ব্যবহার করলে তা ত্বকের কোষের পুনর্গঠন ও মেরামতের সাহায্য করে।
এছাড়াও রাতের বেলা পুরো শরীর বিশ্রামে থাকে তাই কোষ পুনর্গঠন এর সময়ের মধ্যেই হয়ে থাকে। এর জন্য রাতে লোশন ব্যবহার করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ত্বকের পুষ্টি যোগাবে এবং সেই সাথে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করবে। সারা দিনের ক্লান্তি ও নোংরা তা এই রাতের বেলায় বিশেষ যত্নের মাধ্যমে ঠিক রাখতে হবে। এছাড়া নিয়মিত রাতে হাতের মধ্যে লোশন না লাগালে চুলকানির সমস্যা হতে পারে। হাতে লোশন না না গেলে পরবর্তীতে অযত্ন অবহেলায় তাতে বার্ধক্যের ছাপ পড়ে যেতে পারে।
লেখকের মন্তব্য
হাতের ত্বকের পুষ্টি যোগানোর জন্য লোশন বা হ্যান্ড ক্রিম ব্যবহারের কোন বিকল্প নাই।শুষ্ক হাতের জন্য কোন লোশন রাতে দিতে হবে এটা বাছাই করার পরে প্রতিনিয়ত হাতে ব্যবহার করতেই হবে। সেই সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে এটি ত্বককে ভেতর থেকে হাইড্রেট ও প্রাণবন্ত রাখবে। অবশ্যই লোশন ব্যবহারের পূর্বে হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিবেন। অবশ্যই মনে রাখবেন, ত্বকের প্রকৃতি যেমন সেই অনুযায়ী লোশন ব্যবহার করতে হবে। তাহলে পূর্ণ ফলাফল টা পাওয়া যায়।
শুধু হাতের ত্বকই না এর পাশাপাশি পায়ের যত্ন নিতে হবে এবং মুখসহ সারা শরীরের যত্ন নিতে হবে। কারণ তা না নিলে অল্প বয়সেই ত্বকে বৃদ্ধ হওয়ার ছাপ পড়ে যাবে এবং ত্বক ফেটে গিয়ে ত্বকে ভাজ পড়ে যাবে। 251118




অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url