শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমানোর ৬ টি উপায়
শিশুদের লেখা শেখার প্রথম ধাপআপনি কি, শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায় সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক? তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আজকের আর্টিকেলটিতে শিশুদের মোবাইল এর প্রতি থেকে আসক্তি কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
বর্তমানে শিশুদের মোবাইল এর প্রতি আসক্তি ভয়াবহ ভাবে আকার ধারণ করেছে। প্রতিটি ঘরে ঘরে বেশিরভাগ শিশুরা মোবাইলে প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে। মোবাইলের প্রতি আসক্তি হওয়ার ফলে শিশুরা মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
পেজ সূচিপত্রঃ শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায়
- শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায়
- শিশুদের মোবাইল আসক্তির কারণ
- কিভাবে বুঝব শিশুরা মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়েছে
- শিশুদের মোবাইল আসক্তির কুফল
- শিশুদের মোবাইল আসক্তি মাদকের মতোই
- মোবাইল ফোনের ইতিবাচক ব্যবহার
- শিশুদের বিকল্প কাজে উৎসাহিত করতে হবে
- শিশুদের প্রতিটি কাজের রুটিন করে দিতে হবে
- শিশুদের সামনে অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন
- উপসংহারঃ (শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায়)
শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায়
এই পোস্টটিতে শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। বর্তমানে শিশুদের মোবাইল আসক্তি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দিনে দিনে শিশুরা মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ছে। এর ফলে শিশুদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। শিশুরা সৃজনশীল কাজ শিখতে পারছে না। শিশুরা মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তাই শিশুদেরকে মোবাইল এর প্রতি আসক্ত কমাতে হবে। না হলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নিচে শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায় সম্পর্কে দেওয়া হলঃ
- শিশুকে সময় দিতে হবেঃ বর্তমানে বেশিরভাগ মা বাবা দুজনেই চাকুরীজীবী হয়ে থাকেন। ফলে শিশুরা একাকীত্ব অনুভব করে। শিশুরা মা বাবার সাথে সময় কাটাতে পারে না। এর ফলে মোবাইলের দিকে ঝুঁকে পড়ে। এক সময় আস্তে আস্তে মোবাইলে ভয়ংকর ভাবে আসক্ত হয়ে পড়ে। তাই মা-বাবাকে অবশ্যই শিশুদেরকে সময় দিতে হবে। বাচ্চাদের সময় দেওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ করে রাখতে হবে। বাচ্চাদের সাথে খেলতে হবে। বাচ্চাদের সাথে গল্প করতে হবে। বাচ্চাদের বাইরে ঘুরতে নিয়ে যেতে হবে। এগুলোর মাধ্যমে শিশুরা মোবাইল আসক্তি থেকে দূরে থাকবে।
- শিশুর সামনে মোবাইল ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবেঃ মূলত শিশুরা বড়দের মোবাইল ব্যবহার করা দেখেই মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। তাই শিশুদের সামনে অপ্রয়োজনে মা-বাবাকে মোবাইল ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। তবে প্রয়োজনে কারো সঙ্গে কথা বলার জন্যই শুধু শিশুদের সামনে মোবাইল ব্যবহার করা উচিত। এর চেয়ে বেশি শিশুদের সামনে মোবাইল ব্যবহার করা উচিত নয়।
- সৃজনশীল এবং সামাজিক কাজে উৎসাহ দিতে হবেঃ শিশুদের অবশ্যই সৃজনশীল কাজে উৎসাহিত করতে হবে। পাখি বা কবুতর পোষা, গাছ লাগানো, বড়দের সঙ্গে সদাচরণ, বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক কাজে অংশগ্রহণ, বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ এসব কাজে শিশুদের উৎসাহিত করতে হবে। এসব কাজ করলে শিশুরা অনেকটাই মজা পাবে। তখন মোবাইলের প্রতি আসক্তি কমে যাবে।
- নিজের কাজ নিজে করার অভ্যাস করতে হবেঃ শিশুদের প্রত্যেকটি নিজের কাজ নিজে করা উচিত। যেমনঃ নিজের বইখাতা নিজে গুছিয়ে রাখা, নিজের জামা কাপড় গুছিয়ে রাখা, নিজের স্কুল ব্যাগ গুছিয়ে রাখা, নিজের বিছানা গুছিয়ে রাখা। এই কাজগুলো শিশুদেরকে ছোট থেকে শেখানো উচিত ।এই কাজগুলো করার মাধ্যমে অনেকটাই সময় ব্যয় হয়। ফলে শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমে যায়।
- লাইব্রেরি তৈরি করতে হবেঃ শিশুদের ঘরে একটি ছোট লাইব্রেরী তৈরি করতে হবে। সেই লাইব্রেরীতে ছোটদের গল্পের বই, ছোট ছোট দোয়ার বই, বাচ্চাদের শিখার জন্য নানারকম ইসলামিক বই পাওয়া যায় সেগুলো রাখতে হবে। শিশুদের এগুলো পড়ার অভ্যাস করাতে হবে। এছাড়াও খবরের কাগজ রাখতে পারেন। খবরের কাগজ পড়ার অভ্যাস শিশুদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য খুবই ভালো। এই সকল কিছু পড়ার মাধ্যমে তাদের অনেকটা সময় পড়ালেখার মাঝে কাটে। এর ফলে মোবাইলের আসক্তি কমে যায়।
- নির্দিষ্ট কাজে মোবাইল ব্যবহার করতে হবেঃ বর্তমানে মোবাইলে শিশুদের অনলাইনে ক্লাস করতে হয়। অনলাইনে ক্লাস করার জন্য শিশুরা মোবাইল ব্যবহার করতে পারে। এছাড়াও শিশুরা মোবাইলে শিক্ষামূলক এবং তথ্যমূলক জিনিস দেখার জন্য নির্দিষ্ট সময়ে পর্যন্ত মোবাইল দেখতে পারে। নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত মোবাইল দেখার অভ্যাস করলে মোবাইল আসক্তি কমে যায়।
শিশুদের মোবাইল আসক্তির কারণ
শিশুদের মোবাইল আসক্তির কারণ হলো মা বাবা শিশুদেরকে পর্যাপ্ত সময় দেন না। এর ফলে শিশুরা মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ে। এজন্য মা-বাবাদের উচিত শিশুদের সাথে সময় কাটানোর। শিশুদের সঙ্গে গল্প করতে হবে। শিশুদেরকে বাইরে ঘুরতে নিয়ে যেতে হবে। শিশুদের সঙ্গে খেলতে হবে। শিশুদের মনোভাব বুঝতে হবে। তবে বর্তমানে মা-বাবারা শিশুদের সময় দেন না।
আরো পড়ুনঃ শিশুর জ্বর হলে করণীয় - শিশুর জ্বর কমানোর ২০ উপায়
শিশুদের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করেন না। শিশুদের বাইরে ঘুরতে নিয়ে যান না। শিশুদের সাথে গল্প করেন না। এই সকল কারণেই শিশুরা মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে। বাইরে খেলার মাঠের অভাবের কারণেও শিশুরা মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে। তাই শিশুদের খেলার জন্য খেলার মাঠের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে শিশুরা খেলার মাঠে খেলা করতে পারে।
কিভাবে বুঝব শিশুরা মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়েছে
প্রায় প্রতিটি ঘরের ভয়াবহ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে শিশুদের মোবাইল আসক্তি। শিশুদের মোবাইল আসক্তির কারণে শিশুদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তবে আমরা মা-বাবারা বাচ্চারদের প্রতি প্রথমে গুরুত্বই দেয় না। এর ফলে শিশুরা মোবাইলের প্রতি বেশি আসক্ত হয়ে পড়ছে। আমরা শিশুদেরকে অবাধভাবে মোবাইল ব্যবহার করতে দিয়ে থাকি। এতে করে শিশুরা সব সময় মোবাইল দেখায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। এর ফলে আস্তে আস্তে তা আসক্তিতে পরিণত হয়। আসুন জেনে নেওয়া যাক, আমরা কিভাবে বুঝব শিশুরা মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়েছে সেই সম্পর্কে।
যখন আমরা দেখতে পাবো শিশুরা মোবাইল না পেলে রাগারাগি করে। রাগের মাথায় খারাপ ভাষা ব্যবহার করে। কান্নাকাটি করে। খাওয়ার প্রতি এক ধরনের অনীহা দেখা দেয়। ঘুম বাদ দিয়ে মোবাইল দেখতে বেশি পছন্দ করবে। মোবাইল ছাড়া সব সময় উদাসীন হয়ে থাকবে। পড়ার প্রতি আগ্রহ এবং মনোযোগ কমে যাবে। মোবাইল ব্যবহার করা নিয়ে অনেক মিথ্যা কথা বলবে। এসব বিষয় যখন একটি শিশুর মাঝে দেখতে পাবেন। তখন বুঝবেন শিশুটি মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছে।
শিশুদের মোবাইল আসক্তির কুফল
আজকের এই পোস্টটিতে শিশুদের মোবাইল আসক্তির কুফল সম্পর্কে আলোচনা করব। বর্তমানে প্রতিটি ঘরে শিশুদের মোবাইল আসক্তি একটি মারাত্মক ভয়াবহ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটি শিশু যখন মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ে তখন শিশুটি বিভিন্ন সমস্যায় ভুগে থাকে। অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করলে মোবাইল এর স্কিন থেকে বের হওয়া ক্ষতিকর তড়িৎ চুম্বকীয় বিকরণের জন্য মাথায় এবং কানে নন ম্যালিগন্যান্ট টিউমার হাওয়ার আশঙ্কা অনেক বেড়ে যায়।
এছাড়াও মোবাইল এর স্ক্রিনের দিকে অনেকক্ষণ ধরে তাকিয়ে থাকার ফলে চোখের রেটিনা কর্নিয়া ও অন্যান্য অংশের অনেক ক্ষতি হয়। এর ফলে চোখের দৃষ্টিশক্তি অনেকটাই কমে যায়। দৃষ্টিশক্তি কমে গেলে শিশুরা দূরের জিনিস ঝাপসা দেখে। ফলে শিশুদের চশমা ব্যবহার করতে হয়। এছাড়াও চোখে অসহ্য ব্যথা হয়, মাথা ব্যথা হয়। যে সকল শিশুরা অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করে। তারা শারীরিকভাবে বিভিন্ন সমস্যায় ভুগে থাকে। এই সকল শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই কমে যায়।
এর ফলে শরীর বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে না। বেশিরভাগ সময় অসুস্থ বোধ করে। অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করা ফলে শিশুদের ঘুমে অনীহা জন্মে। পড়ালেখায় অমনোযোগী হয়ে পড়ে। স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে যায়। শিশুরা নিজেদের সৃজনশীলতা হারিয়ে ফেলে। সকল সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকে। যা আমাদের সমাজ জীবনের জন্য অনেক ক্ষতিগ্রস্ত। কারণ আজকের শিশুরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ।
শিশুদের মোবাইল আসক্তি মাদকের মতোই
আমরা এখন প্রতিটি বাড়িতে দেখতে পাই যে, শিশুরা মোবাইলের প্রতি কঠিন ভাবে আসক্ত হয়ে পড়েছে। এমনও অনেক শিশুর রয়েছে মোবাইলে দেখতে না দিলে খাবার খেতে বসে না। মোবাইলের প্রতি এমন ভাবে আসক্ত হচ্ছে যে, পড়ালেখা থেকে মনোযোগ হারিয়ে যাচ্ছে। মোবাইল দেখতে না দিলে বাবা মায়ের সাথে খারাপ আচরণ করছে। অনেক শিশু এমনও দেখা যাচ্ছে যে, মোবাইল দেখতে না দেওয়ার ফলে বাড়ির অনেক কিছুই ভাঙচুর করে। অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে। মোবাইলে আসক্ত হওয়ার ফলে সব সময় ঘরের ভেতরে মোবাইল দেখতে পছন্দ করছে।
একটা সময় একেবারে ঘরকুনো হয়ে যায়। বাইরে বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করা থেকে বিরত থাকছে। যা একটি শিশুর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, শিশুদের মোবাইল আসক্তি মাদকের মতোই ভয়াবহ। একবার মাদকে আসক্ত হয়ে পড়লে যেমন ফিরে আসা খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তেমনি মোবাইল এর প্রতি শিশুরা একবার আসক্ত হয়ে পড়লে। তাদেরকে মোবাইল এর প্রতি থেকে আসক্ত কমাতে কঠিন সংগ্রাম করতে হয়। তাই প্রতিটি মা-বাবার আগে থেকেই সাবধান হওয়া উচিত। বাচ্চা জ্বালাচ্ছে বলে বাচ্চাকে মোবাইল দিয়ে থামাতে যাবেন না।
বরং বাচ্চাকে সময় দিন। না হলে পরবর্তীতে তা শিশুর জন্য ভয়াবহ হয়ে দাঁড়াবে। প্রতিটি মা-বাবাকে সুষ্ঠু নিয়ম শৃঙ্খলার মাধ্যমে বাচ্চাকে লালন পালন করতে হবে। বাচ্চাদের সঠিক শিক্ষা দিতে হবে। বাচ্চাদের সময় দিতে হবে। বাচ্চাদের সাথে মন খুলে কথা বলতে হবে বাচ্চাদের প্রতিটি কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে বাচ্চাদের সব সময় হাসিখুশি রাখতে হবে। বাচ্চাদের বাইরে খেলতে দিতে হবে। বাচ্চাদেরকে মাঝে মাঝে ঘুরতে নিয়ে যেতে হবে। প্রতিটি শিশুর জীবনে যেমন পড়ালেখা গুরুত্বপূর্ণ তেমনি বিনোদনা গুরুত্বপূর্ণ।তাই মাঝে মাঝে বিনোদন এর ব্যবস্থা করতে হবে।
মোবাইল ফোনের ইতিবাচক ব্যবহার
মোবাইল ফোন ব্যবহার করার যেমন নেতিবাচক দিক রয়েছে। তেমনি মোবাইল ফোন ব্যবহার করা ইতিবাচক দিকে রয়েছে। শিশুকে একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে মোবাইল ফোন দিয়ে শিক্ষামূলক কিছু শিখাতে পারা যায়। শিশুকে একবারই যে মোবাইল ফোন দিবেন না তা নয়। সেটা না করে নিয়ন্ত্রিত ভাবে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দিতে পারেন। কিন্তু যখন আপনি মোবাইল ফোন শিশুকে দেখতে দেবেন। তখন মোবাইল ফোনে বিভিন্ন শিক্ষামূলক ভিডিও, সৃজনশীল কোন কিছু শিখতে পারে এরকম ভিডিও বা অ্যাপ দেখতে দিতে পারেন।
তবে অবশ্যই সেটি একটি নির্দিষ্ট টাইম নির্ধারণ করে দিতে হবে। যেমন ধরুন দিনে ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর্যন্ত দেখতে দিতে পারেন। শিশুকে যখন মোবাইল ফোন দেখতে দেবেন তখন আপনি শিশুর সাথে বসে একসাথে মোবাইল দেখতে পারেন। আপনি মোবাইলে ই-লার্নিং এক্টিভ করে শিশুকে দেখতে দিতে পারেন। এর ফলে শিশু প্রযুক্তির মাধ্যমে পড়ালেখা শিখতে পারবে। এভাবে পড়ালেখা শিখতে শিশুরা বেশি আগ্রহ বোধ করবে। ফলে শিশু ভালোভাবে নতুন নতুন তথ্য জানতে এবং শিখতে পারবে।
শিশুদের বিকল্প কাজে উৎসাহিত করতে হবে
শিশুরা সব সময় রুটিন মাফিক কাজ করতে করতে বোরিং ফিল করতে পারে। সেজন্য শিশুদের বিকল্প কাজে উৎসাহিত করতে হবে। তাদেরকে সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজে উৎসাহিত করতে হবে। শিশুদেরকে সামাজিক যেকোনো অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার সুযোগ করে দিতে হবে। এ সকল কাজের মাধ্যমে শিশুরা ভালো কিছু শিখতে পারবে। এছাড়াও আমাদের সমাজে বিভিন্ন শিক্ষামূলক প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় করণীয়
যেমনঃ ছবি আঁকা, ক্রিকেট, ফুটবল, হাডুডু, সাঁতার, ইসলামিক বিষয়ক ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। এই অনুষ্ঠানগুলোতে অংশগ্রহণ করার জন্য উৎসাহিত করতে হবে। এসব কাজে অংশগ্রহণ করলে অনেক কিছু শিখতে পারবে এবং শিখার আগ্রহ অনেক বেড়ে যাবে। শিশুদের সৃজনশীল কাজ শেখানোর জন্য উৎসাহিত করতে হবে। যা তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য অনেক ভালো। শিশুদের বিকল্প কাজে উৎসাহিত করলে মোবাইল থেকে তারা দূরে থাকে এসব কাজে বেশি সময় ব্যয় করে যা একটি শিশু ভবিষ্যৎ এর জন্য উত্তম।
শিশুদের প্রতিটি কাজের রুটিন করে দিতে হবে
একটি শিশুর প্রতিদিনের প্রতিটি কাজের রুটিন করে দিতে হবে। তাহলে শিশুটি রুটিন মাফিক চললে শিশু মোবাইলের প্রতি আসক্ত হতে পারে না। একজন মা-বাবার কর্তব্য হলো শিশুর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা। শিশুর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য প্রতিটি কাজের রুটিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি শিশুর একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে ওঠার রুটিন করতে হবে। বাচ্চার সঠিক সময়ে খাওয়ার রুটিন করতে হবে। বাচ্চার সঠিক সময় স্কুলে পাঠাতে হবে। বাচ্চার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কুরআন শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
কুরআন শিক্ষায় জীবন আলোকিত করলে সকল রকম খারাপ কাজ থেকে বাচ্চা দূরে থাকতে শিখে যাবে। বাচ্চার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় বাইরে খেলাধুলার জন্য বরাদ্দ করতে হবে। বাড়িতে বাচ্চাকে পড়ানোর জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ করে রাখতে হবে। এছাড়াও পারিবারিকভাবে সময় কাটানোর জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ করে রাখতে হবে। শিশুদের জন্য বিনোদনের জন্য একটি সময় বরাদ্দ করে রাখতে হবে। এভাবে বাচ্চারা প্রতিটি কাজ যদি রুটিন মাফিক করে। তাহলে তারা মোবাইল আসক্তি থেকে এমনিতেই দূরে থাকতে পারবে।
শিশুদের সামনে অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন
বর্তমানে আমরা মা-বাবারাই অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করি। আমাদের মোবাইল ব্যবহার করা দেখে শিশুরাও মোবাইল এর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। তাই আমাদের মা-বাবাদের শিশুদের সামনে অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। প্রয়োজনীয় ফোন আলাপ ছাড়া মোবাইল ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। শিশুদের সামনে অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। শিশুদের সামনে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করলে। তারা সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে।
আমরা মা-বাবারা শিশুদের সামনে মোবাইলে গেম খেলে থাকি। শিশুদের সামনে মোবাইলে গেম খেলা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। এছাড়াও আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ধরনের ভিডিও দেখে সময় পার করি। শিশুদের সামনে কখনোই ভিডিও দেখা উচিত নয়। এতে শিশুরাও ভিডিও দেখার প্রতি আগ্রহ বোধ করে। এইভাবে মা বাবাকে একদিন দুইদিন দেখতে দেখতে শিশুরাও আস্তে আস্তে মোবাইলের আসক্ত হয়ে পড়ে।
শিশুদেরকে মা বাবা সময় না দেওয়ার জন্য শিশুরা মোবাইলের প্রতি ঝুঁকে পড়ে। মোবাইল দেখে সময় পার করে। তাই মা-বাবার উচিত শিশুদেরকে পর্যাপ্ত সময় দেওয়া। মোবাইলে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ভিডিও, গেম ইত্যাদি না দেখে শিশুদের সাথে সময় কাটাতে হবে শিশুদের মনোভাব ভালোভাবে বুঝতে হবে শিশুদের সঙ্গে খেলতে হবে শিশুদেরকে ঘুরতে নিয়ে যেতে হবে। শিশুদের মোবাইল আসক্তি আমার ওর জন্য অবশ্যই শিশুদের সামনে অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করা থেকে বাবা-মায়ের বিরত থাকতে হবে।
উপসংহারঃ (শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায়)
আজকের এই আর্টিকেলটিতে শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এছাড়াও শিশুদের মোবাইল আসক্তির কারণ লক্ষণ ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছি আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি এসব বিষয়ে সবকিছু ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। বর্তমানে একটি প্রতিটি বাড়ির প্রধান সমস্যা হচ্ছে শিশুদের মোবাইল এর প্রতি আসক্তি। শিশুদের মোবাইলের প্রতি আসক্তি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নষ্ট করছে।
তাই আমাদের শিশুদেরকে মোবাইলের প্রতি আসক্ত হওয়া থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে। প্রতিটি মা-বাবা যদি ধৈর্য সহকারে একটু চেষ্টা করে। তাহলে শিশুর মোবাইল আসক্তি কমাতে পারবেন। শিশুরা একবার মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়লে পরবর্তীতে তাদের মোবাইল আসক্তি কমানো জন্য অনেক কষ্ট করতে হবে। তাই প্রতিটি মা-বাবার উদ্দেশ্যে এটাই বলব যে, মোবাইলে যেন শিশুরা আসক্ত হতে না পারে। সেই জন্য আগে থেকেই সঠিকভাবে বাচ্চাদেরকে লালন পালন করতে হবে। বাচ্চাদের সাথে সময় কাটাতে হবে। বাচ্চাদের মনোভাব বুঝতে হবে। Job id no: 250833




অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url