OrdinaryITPostAd

ফরজ গোসল না করলে কি ক্ষতি হয় - ফরজ গোসলের নিয়ম

ফরজ গোসল না করলে কি ক্ষতি হয় আপনি কি তা জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আজ এই পোস্টে আমি ফরজ গোসল না করলে কি ক্ষতি হয় তার বিস্তারিত আলচনা করবো। আপনারা যারা ফরজ গোসল না করলে কি ক্ষতি হয় তা ভালোভাবে জানতে চান তারা পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

একজন ব্যক্তি দুটি জিনিস দ্বারা নাপাক হয়ে যায় যৌন মিলন এবং বীর্য নির্গত হওয়া তা ঘুমন্ত বা জাগ্রত দুই অবস্থায় বের হয়। এটা অল্প বা বেশি এবং ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক বীর্যপাত হলে গোসল আপনার জন্য ফরজ হয়ে যায়। এখানে প্রশ্ন হল ফরজ গোসল না করলে কি ক্ষতি হয়। তাহলে চলুন নিচে জেনে নেওয়া যাক ফরজ গোসল না করলে কি ক্ষতি হয়।

সূচিপত্রঃ ফরজ গোসল না করলে কি ক্ষতি হয়

ফরজ গোসল কয় প্রকার?

যেসব কারণে নাপাক হলে আপনার জন্য গোসল ফরজ হয়ে যায় তার কিছু প্রকার আছে। তাহলে ফরজ গোসল সাত প্রকার। এই সাত কারণে কোনোভাবে যদি আপনি নাপাক হয়ে যান তাহলে আপনাকে খুব তাড়াতাড়ি ফরজ গোসল করে নিতে হবে। তাহলে নিচে দেখুনঃ

  • সহবাসের পর অপবিত্র হলে ফরজ গোসল করতে হয় একে জানাবত ও বলা হয়
  • শুধু মহিলাদের মাসিকের জন্য গোসল একে হায়েজ ও বলা হয়
  • শুধু মহিলাদের লোচিয়ার জন্য গোসল একে নিফাস ও বলা হয় এটা যোনি স্রাব যা প্রসবের পর ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত চলতে পারে।
  • শুধু মহিলাদের অনিয়মিত রক্তপাত হলে ইস্তিহাজার জন্য গোসল
  • মৃতদেহ স্পর্শ করলে ফরজ গোসল
  • মৃতদেহের জন্য গোসল করানো ফরজ
  • মানত বা শপথ করার কারণে গোসল ফরজ হয়ে যায়

ফরজ গোসল না করলে কি ক্ষতি হয়

পবিত্রতা হল ঈমানের একটা অঙ্গ। আল্লাহ নিজে পবিত্র তাই সবাইকেই পবিত্র থাকতে বলেছেন। পবিত্রতা বলতে শরীর ও মন দুইটাই বোঝানো হয়েছে। তবে আমাদের এখানে প্রশ্ন হচ্ছে ফরজ গোসল না করলে কি ক্ষতি হয়। তাহলে আমাদের জানার বিষয় হচ্ছে শারীরিকভাবে পবিত্র থাকা বিষয়। অপবিত্র বা নাপাক হয়ে যদি গোসল না করা হয় তাহলে কি ক্ষতি হতে পারে বা ফরজ গোসল না করলে কি ক্ষতি হয় তা নিচে দেখুন।
উপরে আমরা একটা বিষয় জেনেছি কখন আমাদের ওপর গোসল কখন ফরজ হয়ে যায়। বা কি কি কাজ করার পর আমাদের গোসল করতেই হবে। তাহলে আপনি যদি এইগুলার একটাও করে থাকেন তাহলে আপনার ওপর গোসল ফরজ হয়ে যাবে। আর আপনি যদি গোসল ফরজ হওয়ার পর ও গোসল না করেন তাহলে আল্লাহর ইবাদাত করার প্রধান উপায় নামাজ পড়তে আবার কোরআন তেলাওয়াত করতে পারেবন না। আপনি যদি ফরজ গোসল না করার জন্য নামাজ কাযা করে ফেলেন তাহলে আপনার কবিরাহ গুনাহ হবে।

আর কবিরাহ গুনাহ খুব বড় গুনাহ যা আল্লাহ ক্ষমা করবেন না সহজে এর জন্য আপনাকে কিয়ামতের মাঠে আল্লাহর কাছে জবাব দিতে হবে। এর থেকে বড় ক্ষতি মানুষের জন্য আর কি হতে পারে। আল্লাহর দেখানো পথে না চললে আপনাকে অবশ্যই সেই শাস্তি আখিরাতে পেতে হবে। তাহলে এখান বুঝতে পারি যে ফরজ গোসল না করলে কি ক্ষতি হয়।

ফরজ গোসলের নিয়ম

গোসল করার সময় মুসলমানদের কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। এটাও বলা হয় যে গোসলের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি ব্যবহার করা উচিত এবং ফরজ গোসল করার সময় কথা বলা থেকে বিরত থাকা উচিত। তবে গোসলের আগে অজু করে নেওয়া সুন্নত। গোসল করার সময় হাত এবং গোপনাঙ্গ উভয়ই ভালোভাবে ধুতে হবে। গোসল করার সময় যদি শরীরের একটি অংশও শুকনো থাকে তাহলে গোসল হবে না তবে আপনাকে আবার গোসল করতে হবে না কিন্তু সেই অংশটি ধুয়ে ফেলতে হবে। যদি আপনি আপনার নাক, মুখ, কান এবং নাভি ধুতে ভুলে যান তবে সেগুলিও ধুয়ে ফেলতে হবে।
এছাড়াও গোসল শুরু করার আগে সমস্ত খুলে খুলে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হয়। এভাবে শরীরের কোনো অংশ শুকিয়ে যাবে না। গোসলের জন্য যে জায়গার পানি ব্যবহার করা যেতে পারে তা হল কূপের পানি, বৃষ্টির পানি, গলিত বরফের পানি, ঝর্ণা, নদী বা সমুদ্রের পানি এবং পুকুর বা বড় ট্যাঙ্কের পানি। ফরজ গোসল করতে নোংরা পানি ব্যবহার করা যাবেনা। কারণ গোসল করার আসল উদ্দেশ্য হল পবত্রিতা অর্জন করা।

গোসলের ওয়াজিব কাজ

  • পুরো মুখে পানি না আসা পর্যন্ত মুখ ধুয়ে নিন।
  • নাকের মাংসের অংশ পর্যন্ত নাকের ছিদ্র ধুয়ে ফেলুন।
  • আপনার সমস্ত শরীর ধুয়ে ফেলুন তা ইচ্ছা করুক বা না করুক।
  • হাত ভালো করে ঘষে সারা শরীর ভিজিয়ে নিন।
শুদ্ধ ভাবে গোসল ছাড়া নিষিদ্ধ কাজঃ
কিছু কিছু ভক্তিমূলক কাজ আছে যা একজন মুসলমান প্রথমে শুদ্ধ ভাবে গোসল ও অজু না করে করতে পারেনা।
  • নামাজ বা গোসলের দুআ করবেন না।
  • পবিত্র কুরআন বা এর কোন আয়াত স্পর্শ ও পাঠ করবেন না।
  • আল্লাহর ঘর পবিত্র কাবাকে ঘিরে তাওয়াফ করবেন না।
  • জরুরী অবস্থাতে বাধ্য না হলে মসজিদে প্রবেশ করবেন না।

মাসিকের পর কিভাবে গোসল করতে হবে?

মহিলাদের জন্য গোসল হল যৌন মিলন ও মাসিকের পর শরীর সম্পূর্ণ ধৌত করা। ঋতুস্রাবের পর মহিলারা গোসল করতে পারে এমন দুটি পদ্ধতি রয়েছে। মহিলাদের জন্য কীভাবে ফরজ গোসল করতে হয় নিচে দেখুন।
মাসিকের পর ফরজ গোসল করা
  • শরীর থেকে সমস্ত প্রসাধনী, কাপড় এবং গহনা সরান। শরীর এবং পানির মধ্যে কোনও বাধা থাকা উচিত নয়।
  • ঝরনা চালু করুন এবং এর নিচে দাঁড়ান। গোসল শুরু করার আগে প্রতিদিনের মতো নিজেকে পরিষ্কার করুন।
  • আপনার মাথা পিছনে কাত করুন এবং আপনার মুখ এবং নাক ধুয়ে ফেলুন।
  • অন্তত একবার পানি দিয়ে আপনার সমস্ত শরীর পরিষ্কার করুন। আপনার শরীরকে বাম এবং ডানদিকে ঘুরিয়ে দিন যাতে সমস্ত অংশে পানি পৌঁছায়। আপনি এটি তিনবারও করতে পারেন কারণ এটি সম্পূর্ণ গোসলের জন্য প্রয়োজনীয় সময়।
  • আপনার শরীরের প্রতিটি অংশে পানি পৌঁছেছে কিনা তা নিশ্চিত করুন। আপনি আপনার চুল এদিক ওদিক নাড়াতে পারেন যাতে আপনার মাথার ত্বক ভালোভাবে ভিজে যায়।

মাসিকের পর সুন্নত আমলের সাথে সম্পূর্ণ গোসল করা

  • প্রথমে অজু করে নিন তারপর আপনার সমস্ত পোশাক এবং গহনাগুলি সরিয়ে ফেলতে পারেন যেন পুরো শরীর ভিজে।
  • "বিসমিল্লাহ" বলুন এবং তিনবার আপনার হাত ভাল করে ধুয়ে ফেলুন।
  • আপনার বাম হাত দিয়ে, আপনার গোপনাঙ্গ ধুয়ে ফেলুন। শরীরের সমস্ত অংশ পানি দিয়ে ঘষুন বিশেষ করে মাসিকের পরে আপনার গোপনীয় অংশগুলি।
  • গন্ধ দূর করতে সাবান ব্যবহার করতে পারেন তা নাহলেও গন্ধ যতক্ষণ না যায় ধুতে থাখুন।
  • আপনার মাথায় তিনবার পানি ঢালুন যেন পানি মাথার ত্বকে পৌঁছায়।
  • পুরো শরীর পরিষ্কার করতে আপনার হাত ব্যবহার করুন।

ফরজ গোসল না করলে কি ক্ষতি হয় - শেষ কথা

ফরজ গোসল বলতে আমাদের শরীর যদি কিছু কারণে নাপাক থাকে তখন পরিষ্কার হতে যে গোসল করা হয় তাকে বলে। কোনো কারণে যদি আমাদের ওপর গোসল ফরজ হয়ে যায় যেমন সহবাস করে, মেয়েদের মাসিকের পর বা কোনো কারণে বীর্যপাত হলে ইত্যাদি আরো কিছু কারণ এর জন্য যদি আমরা গোসল না করি তাহলে আমাদের নামাজ কাযা হয়ে যাবে আবার আল্লাহর অন্যান্য ইবাদাত করতে পারব না ফলে আমাদের কবিরাহ গুনাহ হবে। আশা করি উপরের আলোচনা থেকে ফরজ গোসল না করলে কি ক্ষতি হয় তা জানতে পারবেন। ২২৪৯৮

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url