OrdinaryITPostAd

শীতে শিশুর যত্নে ৮ খাবার সম্পর্কে জানুন

শিশুর শরীরের জন্য পুষ্টিকর খাবার গুলোর মধ্যে শীতে শিশুর যত্নে ৮ খাবার সম্পর্ক আপনি কি জানেন। শীতে শিশুর যত্নে ৮ খাবার সম্পর্কে আপনি যদি না জেনে থাকেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্য। কারণ শীতে শিশুর যত্নে ৮ খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করতে চলেছি আজ।
শীতে শিশুর যত্নে ৮ খাবার
তাহলে চলুন শীতে শিশুর যত্নে ৮ খাবার শিশুকে খাওয়াতে ও শিশুর শরীর স্বাস্থ্যের যত্নে গুরুত্বপূর্ণ ৮টি খাবার সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্ট সূচিপত্র: শীতে শিশুর যত্নে ৮ খাবার

ভূমিকা

শীতে শিশুর বিশেষ যত্ন নেওয়া অতি আবশ্যক। কারণ শীতের রুক্ষ শুষ্ক সময়ে শিশুর শরীর, ত্বক ও স্বাস্থ্যের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে থাকে। এজন্য শীতে শিশুর খাবার সম্পর্কে বিশেষ খেয়াল রাখুন। কারণ শীতে শিশুর খাবার শিশুর শরীরকে গরম রাখতে বিশেষভাবে সহায়তা করে। বিশেষ করে শীতে শিশুর যত্নে ৮ খাবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যা আপনার ছয় মাসের শিশুর বিকাশে বিশেষভাবে অবদান রাখে।

আপনার শিশুর বয়স কত মাস বা কত বছর সেটার উপর ভিত্তি করে একটি তালিকা তৈরি করুন। আর সে তালিকা অনুযায়ী আপনার বাচ্চার শরীরের সুস্থতা ও খাওয়া দাওয়ার যত্ন নিন। এতে আপনার বাচ্চা সঠিক মাত্রায় পুষ্টি পাবে এবং বাচ্চার বুদ্ধি বৃদ্ধিতেও বিশেষভাবে সহায়ক হবে।

শীতে শিশুর যত্নে ৮ খাবার

শীতে বড়দের মতো শিশুরাও কাবু হয়ে পড়ে। এই সময়টাই শিশুর শরীর ও স্বাস্থের বিশেষ যত্ন নিন। তাই শীতে আপনার ছোট্ট সোনামনির খাদ্যের তালিকায় রাখুন বিশেষ কয়টি খাবার। শীতকাল মানেই নানা অসুখ বিসুখের সময়। তাই জেনে নিন শীতে কোন কোন খাবার গুলো বাচ্চাকে দিতে হবে। শীতে শিশুর যত্নে ৮ খাবার নিচে আলোচনা করা হলো:
  • শীতে শিশুর যত্নে ৮ খাবারের মধ্যে প্রথমে রয়েছে দুধ। শীতকালে শিশুর যত্নে এক গ্লাস গরম দুধের কোন বিকল্প নেই। দুধের মধ্যে থাকা পুষ্টিকর উপাদান শুধু শিশুই নয় সব বয়সের মানুষের জন্যই উপযোগী।
  • শীতের সময় বাচ্চার শরীরের জন্য খুব উপকারী একটি খাবার হলো ডিম। ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-ডি, জিঙ্ক, ভিটামিন-ই প্রভৃতি যা শিশুর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বিশেষভাবে সহায়ক। তাছাড়া ডিমে থাকা প্রোটিন শিশুদের এনার্জি বৃদ্ধির অনুঘটক হতে পারে।
  • শীতে শিশুর যত্নে ৮ খাবারের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে শাকসবজি। শীতে পালং শাক শিশুর শরীরের জন্য খুব উপযোগী। এছাড়াও লাল শাক, কলমি শাক, মেথি শাক সহ আরো অনেক শাকসবজি থাকে বাজারে। পুষ্টির আধার হিসাবে এসব শাক সবজির কথা বলেন অনেক চিকিৎসক। শীতকালে মৌসুমী শাক সবজি শিশুর ডায়েটে থাকলে শিশুর স্বাস্থ্য থাকবে তরতাজা।
  • বাদাম শিশুর শরীরের জন্য উপযোগী। কাজু, আখরোট, আমন্ড ইত্যাদি বাদামের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ। শীতকালে যা শিশুর শরীরকে বিশেষভাবে রক্ষা করতে পারে। এছাড়া বাদাম খেলে স্মৃতিশক্তিও বৃদ্ধি পায়।
  • শীতে শিশুর যত্নে ৮ খাবারের মধ্যে আরেকটি হচ্ছে মিষ্টি আলু। মিষ্টি আলুর মধ্যে থাকে বিটাক্যারোটিন ও ভিটামিন-এ। আর ভিটামিন-এ যুক্ত খাবারকে শীতের সময় খুব জরুরী বলে মনে করা হয়। এ খাবার সুস্বাদু হওয়ার ফলে শিশুকে খাওয়াতে সাধারণত সমস্যা হয় না।
  • শীতকালে খেজুর শুধু একজন শিশুর জন্যই নয় বরং সব ধরনের বয়সের মানুষের জন্যই খুবই উপযোগী। খেজুরে রয়েছে ক্যালসিয়াম, আয়রন, এবং ম্যাগনেসিয়াম এর মত ভিটামিন ও খনিজ যা ঠান্ডার দিনগুলোতে বাচ্চাদের উষ্ণ রাখতে সহায়তা করে।
  • আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি রয়েছে। আর শীতকালের খাবারের তালিকার মধ্যে সবচেয়ে পুষ্টি যুক্ত খাবার গুলো হচ্ছে ভিটামিন-সি যুক্ত খাবার। তাই বাচ্চাকে শীতের সময় আমলকি খেতে দিন।
  • শীতের সময় গুড় খাওয়া বাড়িয়ে দেওয়া ভালো। শীতে শিশুর যত্নে ৮ খাবারে গুড়ের উপকারিতাও কম নয় ।শীতের সময় বাচ্চাদের সর্দি কাশি হলে আদার সাথে গুড় মিশিয়ে খেলে বাচ্চা আরাম পাবে। চিনির থেকে গুড় বেশি পুষ্টিকর। তাই যেকোনো মিষ্টি খাবারে চিনির পরিবর্তে গুড় ব্যবহার করুন।

ছয় মাসের শিশুর বিকাশ

এই সময় একজন শিশুর মস্তিষ্ক খুব দ্রুত বিকাশিত হয়। এ সময় বাচ্চার সাথে কথা বলা ও সময় কাটানো বাচ্চাকে নানা ধরনের কথা শিখতে সহায়তা করে। তাই এই সময় আপনার সন্তানের সাথে বেশি বেশি সময় কাটান। আপনার বাচ্চা কি শিখলো তার ক্রিয়াকলাপের মধ্যে লক্ষ্য করুন। এতে আপনার ছয় মাসের শিশুর বিকাশ ঘটছে কিনা সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। ছয় মাসের শিশুর বিকাশ হয়েছে কিনা বা কতটুকু হয়েছে সেটা বোঝার উপায় হল:
  • শিশু তার পরিচিত মুখ গুলোকে চিনতে পারবে।
  • নিজের নাম শুনে শিশু সাড়া দিবে।
  • যেকোনো কিছু দেখের কৌতুহল প্রকাশ করবে। যেমন: তার সামনে খেলনা নিয়ে গেলে সেটার দিকে তাকাবে, খুশি হবে, হাত-পা নড়িয়ে সেটাকে নেয়ার চেষ্টা করবে।
  • হেলান না দিয়ে বসতে পারবে।

৭ মাসের শিশুর খাবার তালিকা

৭ মাসের শিশুর খাবার তালিকা তৈরিতে একজন মাকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তারপর ৭ মাসের শিশুর খাবার তালিকা তৈরি করতে হবে। কারণ এই সময় বাচ্চার দ্রুতগতিতে বুদ্ধির বিকাশ হতে থাকে। তাই এ সময় বাচ্চাকে সব ধরনের পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো খুবই জরুরী। চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক ৭ মাসের শিশুর খাদ্য তালিকায় কি কি থাকা জরুরী।
  • ডাল: ডালের মধ্যে রয়েছে মুগ ডাল, মুসুরির ডাল সেদ্ধ ও ডালের পানি বাচ্চার জন্য খুবই উপকারী।
  • সবজি: সবজির মধ্যে রয়েছে মিষ্টি আলু, মিষ্টি কুমড়া, চালকুমড়া, গাজর, মটরশুটি, শিম, আলু, ফুলকপি, টমেটো, পালংশাক এর মতো সবজির ভর্তা বানিয়ে বাচ্চাকে খাওয়াতে পারেন। আবার স্যুপের মধ্যে চটকেও খাওয়াতে পারেন।
  • সুজি: ৭ মাসের শিশুর খাবার তালিকায় সুজি থাকা আবশ্যক। কারণ সুজি নরম ও পাতলা হওয়ায় বাচ্চা সহজে খেতে পারে ও হজম করতে পারে।
  • ভাত: ৭ মাসের শিশুর খাবার তালিকার মধ্যে ভাত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বাচ্চাকে সবজি অথবা মাছের সাথে একটু পানি দিয়ে নরম করে মাখিয়ে ভাত খাওয়ান।
  • ফলমূল: ফলমূল এর মধ্যে রয়েছে আপেল, কলা, নাশপাতি, খেজুর, আম, স্ট্রবেরি, সবেদা, পেঁপে, তরমুজ, কমলালেবু ইত্যাদি।
  • সাবুদানা: ছয় সাত মাসের বাচ্চাকে সাবুদানা খাওয়ানো ভালো।
  • বার্লি: ৬ থেকে ৭ মাসের বাচ্চার জন্য বার্লি পুষ্টিকর খাবার।
  • মুড়ি: সাত মাসের বাচ্চাকে শুকনো মুড়ি খাওয়ানো ঠিক নয়। কারণ শুকনো মুড়ি বাচ্চার গলায় আটকে যেতে পারে। তাই বাচ্চাকে মুড়ি খাওয়ানোর সময় দুধ অথবা চায়ের সাথে খাওয়াতে পারেন।
  • চিড়ে: শুধু ছোট বাচ্চাই নয় বড়দের জন্য চিরে খুব উপকারী একটি খাবার। সাধারণত যখন কোন মানুষের পেটের সমস্যা হয় তখন চিড়ে খাওয়ার উপকারিতা অধিক। কারণ চিড়ে পেটকে ঠান্ডা রাখে। তাই আপনার শিশুর যদি কখনো হালকা পাতলা পেটের সমস্যা হয় তাহলে চিড়ে পানিতে ভিজিয়ে অল্প পরিমানে খাওয়াতে পারেন। এতে বাচ্চার পেট ঠান্ডা হয়ে বাচ্চা উপকৃত হবে।
একটি ৭ মাসের শিশুর খাবার তালিকায় এই খাবার গুলো থাকা অনিবার্য।

দুই বছরের শিশুর খাবার তালিকা

দুই বছরের উপরে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে একটি ডায়েট চার্ট অনুসরণ করা জরুরী। আপনার দুই বছরের শিশুর খাবার তালিকা ও শারীরিক সুস্থতার সুবিধার্থে একটি তালিকা নিচে তুলে ধরা হলো:
  • সকল প্রকার শাকসবজি বেশি বেশি খেতে হবে।
  • মুরগি ও গরুর কলিজা সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন খেতে হবে।
  • দুই বছরের শিশুর খাবার তালিকায় ঘি ও মাখন থাকা আবশ্যক।
  • দুধের সাথে মধু বা বিভিন্ন ধরনের বাদাম মিশিয়ে দিবেন।
  • খাবারে বা রান্নায় তেল ও চিনি বেশি দিবেন না।
  • তরল খাবার খাওয়ানোর থেকে শক্ত খাবার খাওয়ানোর দিকে বেশি জোর দিন।
  • সকাল দশটার মধ্যে শিশুকে কিছুক্ষণ হাটাহাটি করিয়ে নিন।
  • বাচ্চাকে নিয়মিত খেলাধুলা করতে দিন।
  • বাচ্চা পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাচ্ছে কিনা সে দিকে বিশেষ খেয়াল রাখুন। 
  • দুই বছরের শিশুর খাবার তালিকায় লেবু বা অন্যান্য ফল দৈনিক একটি করে থাকা আবশ্যক।
  • মুসুরির ডাল ও মুগ ডাল বাচ্চাকে খেতে দিন।
  • সবজির মধ্যে মিষ্টি আলু, মিষ্টি কুমড়া, আলু, গাজর, মটরশুটি, ফুলকপি, ব্রুকলি, চালকুমড়ো, পালং শাক, পুঁইশাক ইত্যাদি দুই বছরের শিশুর খাবার তালিকায় থাকা অতি আবশ্যক।

শেষ কথা

উপরিউক্ত আর্টিকেলে আজ আপনাদের সাথে আলোচনা করেছি শীতে শিশুর যত্নে ৮ খাবারের গুরুত্ব ও উপকারিতা সম্বন্ধে। এছাড়াও কত মাসের বা কত বছরের বাচ্চাকে কি কি খাবার খাওয়ানো উচিত বা তার খাদ্য তালিকায় কি কি খাবার থাকা উচিত এই সমস্ত বিষয় সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে আজকের আর্টিকেলে। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনার অনেক ভালো লাগবে।

আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি কতটুকু উপকৃত হয়েছেন আপনার মূল্যবান মতামত অবশ্যই শেয়ার করবেন। এমনই গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষনীয় আর্টিকেল প্রতিদিন পেতে সবসময় আমাদের ওয়েবসাইটে যোগ রাখবেন। আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। 26181

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url