ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করার জন্য যে ২০টি জিনিস প্রয়োজন

আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য উপযুক্ত হতে হবে। কেননা চাইলেই কিন্তু আপনি ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করতে পারবেন না। ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য যে সকল জিনিসের প্রয়োজন সেই বিষয়গুলো সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে।

ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার পূর্বে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। কেননা আপনি যদি পরিপূর্ণভাবে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ না শিখে মার্কেটপ্লেসে যোগদান করেন তাহলে কিন্তু আপনি সেখান থেকে ভালো ফিডব্যাক পাবেন না এবং দক্ষ ফ্রিল্যান্সারদের ভিড়ে হারিয়ে যাবেন। সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য নিচে ২০টি রিকোয়ারমেন্ট তুলে ধরা হলো। 

নির্দিষ্ট লক্ষ্য। আপনি যদি প্রকৃতপক্ষে একজন ফ্রিল্যান্সার হতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে নির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির করতে হবে। কারণ আপনি যদি নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে সামনের দিকে না এগোতে পারেন তাহলে কিন্তু কখনোই ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারবেন না। এলোমেলোভাবে কখনো ফ্রিল্যান্সার হওয়া যায়না।সুতরাং একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হতে চাইলে অবশ্যই আপনার নির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকতে হবে। 

ধৈর্য। একজন ফ্রীল্যান্সার হতে গেলে দ্বিতীয় যে গুনটি আপনাকে অর্জন করতে হবে তা হলো ধৈর্য। ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চাইলে প্রচুর ধৈর্যের প্রয়োজন হয়। কেননা অনেক সময় আপনার ভিতরে একটি হতাশা বা অস্থিরতা কাজ করতে পারে, সেগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য অবশ্যই আপনাকে ধৈর্যশীল হতে হবে। 

পর্যাপ্ত সময়। আপনি যদি একজন ব্যস্ত মানুষ হয়ে থাকেন তাহলে কিন্তু অপনি ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারবেন না। কেননা ফ্রিল্যান্সিং শিখতে গেলে প্রচুর সময়ের প্রয়োজন হয়। তাই ফ্রিল্যান্সিং শেখার পূর্বশর্ত হলো পর্যাপ্ত সময় থাকা। 

প্রচুর ইচ্ছা শক্তি। আপনার যদি প্রচন্ড ইচ্ছা শক্তি থাকে তাহলে আপনি অবশ্যই একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হতে পারবেন। অল্পেই ভেঙ্গে পড়লে কিংবা অল্প সময়ে শেখার পরে ইচ্ছা শক্তি হারিয়ে ফেললে কিন্তু কখনই সফল ফ্রীলান্সার হতে পারবেন না। 

ইন্টারনেট সংযুক্ত কম্পিউটার। ফ্রিল্যান্সিং কাজ যেহেতু ইন্টারনেটভিত্তিক তাই ফ্রিল্যান্সিং কাজ করতে গেলে অবশ্যই আপনার প্রয়োজন হবে ইন্টারনেট সংযুক্ত একটি কম্পিউটার বা ল্যাপটপের।কেননা আপনাদেরকে বায়ারের সাথে কথা বলতে হবে এবং কাজ নিতে হবে, কাজ জমা দিতে হবে ইন্টারনেটের মাধ্যমেই। সুতরাং অবশ্যই আপনাকে একটি ইন্টারনেট সংযুক্ত কম্পিউটার ক্রয় করতে হবে। 

মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে ধারণা। আপনি ফ্রিল্যান্সিং শিখলেন কিন্তু আপনার যদি মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে ধারনা না থাকে তাহলে আপনি কখনই কাজ পাবেন না। তাই অবশ্যই আপনার মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে। কোন মার্কেটপ্লেসে কিভাবে কাজ করতে হয়? বা কোন মার্কেটপ্লেসে কোন ধরনের কাজ বেশি পাওয়া যায়? এই বিষয়গুলো অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে। 

নির্দিষ্ট কাজের উপরে স্কিল ডেভলপমেন্ট। বর্তমানে অনেক ফ্রিল্যান্সিং কাজ রয়েছে। তার মধ্য থেকে আপনাকে আপনার পছন্দ অনুযায়ী একটি কাজ বেছে বেছে নিতে হবে এবং সেই কাজের উপরে নিজের স্কিল ডেভেলপ করতে হবে। কেননা আপনি যদি নির্দিষ্ট কাজের উপর স্কিল ডেভেলপ না করেন তাহলে কিন্তু কখনোই ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন না। 

ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা। ফ্রিল্যান্সিং করতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হতে হবে। যেহেতু বায়ারের সাথে এবং মার্কেটপ্লেসে আপনাকে সবসময় ইংলিশ ভাষা ব্যবহার করতে হবে তাই ইংরেজি সম্পর্কে দক্ষতা না থাকলে ফ্রিল্যান্সিং করা সম্ভব নয়। 

মার্জিত ব্যবহার। একজন ফ্রীল্যান্সার হিসেবে কাজ করতে চাইলে আপনার ব্যবহার অবশ্যই মার্জিত হতে হবে কেননা উগ্র আচরণের কারণে মার্কেটপ্লেস থেকে ব্যান্ড হতে পারেন। তাই অবশ্যই আপনাকে আপনার ব্যবহারের প্রতি যত্নবান হতে হবে। 

মাইন্ড রিডিং। আপনি যদি সফল একজন ফ্রিল্যান্সার হতে চান তাহলে আপনাকে মাইন্ড রিডিং করতে হবে অর্থাৎ বায়ার কোন ধরনের কাজ চলছে বা কাজ কিভাবে করে নিতে চাচ্ছে এই বিষয়টি সঠিকভাবে বুঝতে হবে। 

সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার একাউন্ট থাকতে হবে কেননা অনেক ফ্রিল্যান্সিং কাজে রয়েছে সেই কাজগুলোর জন্য আপনার সোশ্যাল মিডিয়ার প্রয়োজন হতে পারে। তাই আপনি যদি সফল ফ্রিল্যান্সার হতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে প্রফেশনাল মানের সোশ্যাল মিডিয়া তৈরি করতে হবে। 

ডুয়াল কারেন্সি মাস্টার কার্ড, বা পেওনিয়ার। ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করলেন এবং টাকা পেলেন কিন্তু সেই টাকা অপনি কিভাবে দেশে আনবেন যদি আপনার ডুয়েল কারেন্সি মাস্টারকার্ড বা পেওনিয়ার না থাকে? সুতরাং মার্কেটপ্লেস থেকে পেমেন্ট পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনার একটি পেওনিয়ার একাউন্ট থাকতে হবে। 

কাজের প্রতি নিষ্ঠাবান হওয়া। একজন ফ্রিল্যান্সারের অন্যতম একটি গুণ হলো কাজের প্রতি নিষ্ঠাবান হওয়া এবং সঠিকভাবে রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী কাজটি সম্পন্ন করা। কাজের প্রতি নিষ্ঠাবান হলে আপনার কাজের মান বেড়ে যাবে ফলে ভবিষ্যতে আপনি আরো বেশি কাজ পাবেন। 

নিজেকে ছোট মনে না করা। অনেকেই প্রাথমিকভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার পরে নিজেকে ছোট মনে করে আসলে এমনটা মনে করা উচিত নয়। যারা বর্তমানে সফল ফ্রিল্যান্সারের পরিণত হয়েছে তারাও কিন্তু একসময় কষ্ট করে আস্তে আস্তে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেছিল। 

ক্লাইন্টকে ধোঁকা না দেয়। ক্লায়েন্ট আপনাকে যে রিকোয়ারমেন্ট দিবে আপনাকে অবশ্যই সেই এরিকোয়ারমেন্ট পূরণ করে কাজ করতে হবে। ক্লায়েন্টকে ধোকা দেয়া যাবে না। কেননা আপনি যদি ক্লায়েন্টকে ধোকা দেনে তাহলে পরবর্তীতে সমস্যায় পড়বেন।

নিজে নিজে কাজের রিভিশন দেওয়া। কাজ শেষ হওয়ার পরে নিজে নিজেই অন্তত একবার রিভিশন দিয়ে নিবেন এতে করে পারফেক্ট কাজ আপনি বায়ারের কাছে জমা দিতে পারবেন। আপনি চেক না করে যদি কাজ জমা দেন তাহলে বায়ার বিরক্ত হতে পারে।

সময় মত কাজ জমা দেওয়া। যে সময়ের মধ্যে কাজ জমা দেওয়ার কথা আপনাকে সেই সময়ের মধ্যেই কাজ জমা দিতে হবে। কেননা আপনি যদি দেরি করে কাজ জমা দেন তাহলে আপনার চাহিদা কমে যাবে এবং পরবর্তীতে কাজ পাবেন না। 

সর্বদা ক্লায়েন্টকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করা। আপনি সবসময় চেষ্টা করবেন আপনার কাজের মাধ্যমে ক্লায়েন্টকে সন্তুষ্ট রাখতে কেননা ক্লান্ত যদি সন্তুষ্ট হয় তাহলে সে ভালো ফিডব্যাক দেবে ভালো রিভিউ দেবে। যা পরবর্তীতে কাজ পেতে আপনাকে সহায়তা করবে।

আন্তরিকতার সহিত কাজ করা। কাজ করার সময় অবশ্যই আপনাকে আন্তরিক ভাবে কাজ করতে হবে যেনতেন ভাবে কাজ করে সেই কাজ বা এদের কাছে জমা দেওয়া উচিত নয় কেননা কাজের মান ভালো না থাকলে ভাইয়ের আপনাকে ব্যাট রিভিউ দিতে পারে।