OrdinaryITPostAd

বাবা দিবস উদযাপনের ইতিহাস কী - বাবা দিবসের গুরুত্ব এবং তাৎপর্য

বাবা দিবস উদযাপনের ইতিহাস কী? তা জানতে চাইলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাবা দিবস উদযাপনের ইতিহাস কী, এই প্রশ্নের সঠিক বিস্তারিতভাবে নিচে তুলে ধরা হবে। তাই আপনি যদি জানতে চান যে, বাবা দিবস উদযাপনের ইতিহাস কী? তাহলে মনোযোগ সহকারে এই আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন। 

সারা বিশ্বের প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার বিশ্ব বাবা দিবস পালন করা হয়। বাবা দিবস কোথা থেকে কিভাবে শুরু হলো সেই ইতিহাস অনেকেরই অজানা। যেকোনো দিবস পালন করার পূর্বে সেই বিষয় সম্পর্কে জেনে নেয়া বুদ্ধিমানের কাজ। না জেনে না বুঝে যেকোনো দিবস পালন করা সমীচীন নয়। যাইহোক আপনি যদি বাবা দিবসের ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। 

বাবা দিবস উদযাপনের ইতিহাস কী

বাবা দিবসের ইতিহাস অনুসন্ধান করলে পিতৃ ভক্ত একজন নারীর কথা সামনে চলে আসে। যিনি তার পিতাকে অত্যন্ত ভালোবাসতেন। পিতার প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটানোর জন্যই মূলত তিনি সর্বপ্রথম নিজ উদ্যোগে বাবা দিবস পালন করা শুরু করেন। আর তিনি হলেন: সনোরা স্মার্ট ডড।  কোন এক শুভ সকালে সনোরা স্মার্ট ডড প্রার্থনার উদ্দেশ্যে গির্জায় গমন করেন। সেখানে তিনি গির্জার ফাদারদেরকে মায়ের প্রতি ভালোবাসা এবং মা দিবসের গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তার আলোচনা করতে দেখেন।

মায়ের প্রতি এই ধরনের ভালোবাসা এবং সম্মানবোধ তাকে বড়ই আপ্লুত করে। তিনি মনে করেন মা যেমন তার সন্তান-সন্ততি লালন পালন করার জন্য জীবনের সর্বস্ব দান করেন, ঠিক তেমনি ভাবে বাবাও তার সন্তানকে মানুষ করতে গিয়ে লালন পালন করতে গিয়ে সারা জীবন ব্যয় করেন। বাবা জীবনের সুখ-স্বজন বিসর্জন দিয়ে সন্তানের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যান। 

যেহেতু মায়ের মত বাবাও সন্তানকে ভালোবাসে, সন্তানকে লালন পালন করে সন্তানের জন্য সর্বস্ব ত্যাগ করে। তাহলে কেন শুধুমাত্র মা দিবস পালন করা হবে? বাবা দিবস কেন পালন করা হবে না? যেহেতু মা-বাবা উভয়ই সন্তানের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেন তাই মা দিবসের মতো বাবার দিবসে থাকা উচিত। তিনি যখন এই বিষয়গুলো গির্জার ফাদারদের সামনে উপস্থাপন করলেন তখন তাদের কাছেও বিষয়টি যুক্তিযুক্ত মনে হলো।
সনোরা স্মার্ট ডড মনে প্রানে পিতার প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশের জন্য বাবা দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি ১৯১০ সালের ১৯শে জুন সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে বাবা দিবস পালন করেন। এভাবে তিনি প্রতিবছর বাবা দিবস পালন করে যাচ্ছিলেন। এবং বাবা দিবস পালন করার ব্যাপারে অনেকেই উদ্বুদ্ধ করে আসছিলেন। 

তার একান্ত প্রচেষ্টার ফলে অনেকেই বাবা দিবস পালন করতে সচেষ্ট হয়। যদিও কেউ কেউ বাবা দিবস পালনের বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেছিল। তারা মনে করতো যে বাবা দিবস পালন করা নিষ্প্রয়োজন। তবে পরবর্তীতে ধীরে ধীরে বাবা দিবস পালন করার প্রতি মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। এমনকি এক পর্যায়ে বাবা দিবস পালন করার বিষয়টি সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টে আলোচনা উত্থাপন করা হয়। এবং ১৯১৩ সালে বাবা দিবসকে সরকারি ছুটির দিবস হিসেবে ঘোষণা করার বিল উত্থাপন করা হয়। 

পরবর্তীতে ১৯২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ক্যালভিন কুলিজ এই বিলটি সমর্থন করেন। প্রেসিডেন্ট ক্যালভিন কুলিজ এই বিলটি সমর্থন করার ফলে তা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে যায়। এবং জনগণ বাবা দিবস পালন করার তাৎপর্য সম্পর্কে জানতে পারে। খুব দ্রুতই বাবা দিবস পালন করার বিষয়টি সকলের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। পরবর্তীতে ১৯৬৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট  লিন্ডন বি. জনসন বাবা দিবসকে সরকারি দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। 

এরপর থেকেই মূলত সারা বিশ্বে বাবা দিবস পালন করার প্রচলন শুরু হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে এবং অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাবা দিবস পালন করা হয়। বাবার প্রতি ভালোবাসা সহমর্মিতা এবং শ্রদ্ধা জানানোর জন্য অনেকেই বিশ্ব বাবা দিবসে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন। বাংলাদেশের যথাযথ মর্যাদা এবং আনুষ্ঠানিকতার সাথে বিশ্ব বাবা দিবস উদযাপন করা হয়। বাবা দিবস উদযাপনের ইতিহাস কী? আশা করি এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর জানতে পারলেন।  

কেন আমরা বাবা দিবস উদযাপন করি

বাবা দিবস উদযাপনের ইতিহাস কী, সেই বিষয় সম্পর্কে ইতোমধ্যেই উপরে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হয়েছে। আর্টিকেলটি এই অংশে কেন আমরা বাবা দিবস উদযাপন করি? সেই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করা হবে। তাই আপনি যদি বিশ্ব বাবা দিবস পালন করার উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান তাহলে নিম্ন বর্ণিত তথ্য গুলো মনোযোগের সাথে পড়তে থাকুন। 
  • বাবার সম্মান ও মর্যাদা স্মরণ করা: বাবার যে সম্মান ও মর্যাদা রয়েছে তা কতটুকু রক্ষা করতে পেরেছেন সেই ব্যাপারে চিন্তা করার মোক্ষম উপায় হলো বাবা দিবস উদযাপন করা। আপনি যখন বাবা দিবস উদযাপন করবেন তখন সেই দিন বাবার সম্পর্কে কতটুকু করা উচিত ছিল সে বিষয়ে সম্পর্কে ভাবতে পারবেন। এবং পরবর্তী বছর আপনি আপনার বাবার সাথে কি কি করবেন সে বিষয়গুলো সম্পর্কেও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবেন। 
  • সন্তানের প্রতি বাবার ভালোবাসা স্মরণ করা: বাবা তার সারা জীবনের সকল সুখ ত্যাগ করে সন্তানের সুখের জন্য যা যা করে গিয়েছেন সে বিষয়গুলো সম্পর্কে সারা বছর ভাবনার সুযোগ নাও থাকতে পারে। তাই নির্দিষ্ট এই দিনে আপনি সন্তানের প্রতি বাবার ভালোবাসার কথা স্মরণ করতে পারবেন। এবং পিতার প্রতি আপনার যে দায়িত্ব রয়েছে সেগুলো যথাযথভাবে পালন করার প্রয়াস পাবেন। 
  • বাবার সার্বিক দেখাশোনার ব্যাপারে তৎপর হওয়া: একটা সময় বাবা তার জীবনের সর্বস্ব ব্যয় করে সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথ নির্মাণ করেন। অথচ এই পিতামাতাই যখন বৃদ্ধ হয়ে যায় তখন তারা কোন কোন কুলাঙ্গার সন্তানের নিকটে বোঝা হয়ে দাঁড়ায়।আসলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়া মানবজাতির জন্য সবচেয়ে ঘৃণিত ও নিকৃষ্ট কাজ।বাবা দিবসের এই দিনে আপনি নিজেকে আপনার বিবেকের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবেন, যে আপনি আপনার পিতার দেখাশোনার ব্যাপারে কতটুকু তৎপর। তারা আপনার প্রতি যতটুকু তাৎপর ছিল আপনি আদৌ কি তার সিকি ভাগ পুরন করতে পেরেছেন? যাই হোক যদি পিতা মাতার প্রতি আপনার কোন অবহেলা হয়ে থাকে তাহলে তা শুধরানোর মোক্ষণ সময় হলো বাবা দিবস। বাবা দিবসের বাবা মায়ের দেখাশোনার ব্যাপারে সংকল্প বন্ধ হবেন। বাবা মায়ের সার্বিক দেখাশোনা করে তাদেরকে আনন্দিত রাখবেন। 
  • বাবার জন্য দোয়া করা: আপনার বাবার যদি ইতোমধ্যেই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে কবরবাসী হয়ে থাকেন সে ক্ষেত্রে আপনার দোয়া ছাড়া আর কিছুই করার নেই। তাই বাবা দিবস অবশ্যই আপনাকে আপনার পিতার জন্য বিশেষভাবে দোয়া করতে পারেন। তবে পিতার জন্য সন্তান সারা বছরের প্রতিদিন দোয়া করবে এটাই নিয়ম। 

বিশ্ব বাবা দিবসের গুরুত্ব এবং তাৎপর্য

বাবা দিবস উদযাপনের ইতিহাস কী? সেই বিষয় সম্পর্কে উপরে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হয়েছে। নিচে বিশ্ব বাবা দিবসের গুরুত্ব এবং তাৎপর্য সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোকপাত করা হবে। বাবা দিবস কবে গুরুত্ব ও তাৎপর্যপূর্ণ একটি দিবস। এই দিবস প্রত্যেক সন্তানদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে, তার পিতার প্রতি তার যে সকল দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছিল সেই দায়িত্ব ও কর্তব্য গুলো সে যথাযথভাবে পালন করেছে কিনা? 
সারা বছর বিভিন্ন কাজকর্মে ব্যস্ত থাকায় যদি আপনি আপনার হক সঠিকভাবে আদায় করতে না পারেন, তাহলে আপনার জন্য ক্ষতির কারণ। বাবা দিবসে আপনি সেই বিষয়গুলো সম্পর্কে ভাবার অবসর পাবেন। অর্থাৎ এই দিনটিতে আপনি সকল হিসেব নিকাশ করতে পারবেন যে, বাবার জন্য কতটুকু করা উচিত ছিল আর কতটুকু করতে পেরেছি। এক কথায় বাবা দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

উপসংহার

আপনি যদি মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পুরো আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই বাবা দিবস উদযাপনের ইতিহাস কী? সেই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছেন। কেননা বাবা দিবসের ইতিহাস গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে এই আর্টিকেলটিতে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হয়েছে। আর্টিকেলটি যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে সকলের সাথে শেয়ার করবেন। ১৬৪১৩

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url