OrdinaryITPostAd

ফাতেহা ই ইয়াজদাহম কি সরকারি ছুটি? জেনে নিন

ফাতেহা ই ইয়াজদাহম কি সরকারি ছুটি? এই প্রশ্নের উত্তর হলো: ফাতেহা ই ইয়াজদাহম ঐচ্ছিক ছুটি। মুসলমানদের জন্য যে কয়েকটি ঐচ্ছিক ছুটি রয়েছে তার মধ্যে ফাতেহা ই ইয়াজদাহম অন্যতম একটি। ফাতেহা ই ইয়াজদাহম কি সরকারি ছুটি? নিচে এই প্রশ্নের জবাব বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হবে। ফাতেহা ই ইয়াজদাহম কি সরকারি ছুটি কি না? তা নিম্নরূপ। 

পেজ সূচিপত্র: ফাতেহা ই ইয়াজদাহম কি সরকারি ছুটি?

ফাতেহা ই ইয়াজদাহম কোন ধরনের ছুটি: ভূমিকা

ফাতেহা ই ইয়াজদাহম কি সরকারি ছুটি কিনা তা নিচে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হবে। অনেকেই ফাতেহা ই ইয়াজদাহম পালন করে থাকে। এবং ফাতেহা ই ইয়াজদাহম উপলক্ষে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। নিচে ফাতেহা ই ইয়াজদাহম এর ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। ফাতেহা ই ইয়াজদাহম এর ইতিহাস এবং ফাতেহা ই ইয়াজদাহম কি সরকারি ছুটি কিনা তা জানতে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন। 

ফাতেহা ই ইয়াজদাহম কি সরকারি ছুটি?

ফাতেহা ই ইয়াজদাহম কি সরকারি ছুটি? এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর নিচে তুলে ধরা হলো। আব্দুল কাদের জিলানী(র:) এর মৃত্যু দিবস উপলক্ষে প্রতিবছর হিজরি সালের রবিউস সানি মাসের ১১ তারিখে ফাতেহা ই ইয়াজদাহম পালন করা হয়। বাংলাদেশ, ভারত পাকিস্তান সহ পৃথিবীর বহু দেশে ফাতেহা ই ইয়াজদাহম পালন করা হয়। তবে ফাতেহা ই ইয়াজদাহম পালন করা যাবে কিনা সে ব্যাপারে ওলামায়ে কেরামের মাঝে মতপার্থক্য রয়েছে। নিচে ফাতেহা ই ইয়াজদাহম এর ইতিহাস তুলে ধরা হবে। 

পূর্বেই বলা হয়েছে যে ফাতেহা ই ইয়াজদাহম হচ্ছে ঐচ্ছিক ছুটির অন্তর্ভুক্ত। কর্তৃপক্ষের বিশেষ অনুমোদনের ভিত্তিতে ঐচ্ছিক ছুটি ভোগ করা যায়। প্রত্যেক ধর্মেরই আলাদা আলাদা ঐচ্ছিক ছুটি হয়েছে। ঐচ্ছিক ছুটির বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান উপরে। তারা যদি চায় তাহলে সেই ছুটি প্রদান করতে পারবে। সাধারনত আমাদের দেশে ফাতেহা ই ইয়াজদাহম উপলক্ষে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছুটি দিয়ে থাকে। 
সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ইচ্ছা করলে এই ঐচ্ছিক ছুটি গুলো সাপ্তাহিক ছুটি, সাধারণ ছুটি ও নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটির সহিত একত্রিত করতে পারবে। যেহেতু ফাতেহা ই ইয়াজদাহম ঐচ্ছিক ছুটির অন্তর্ভুক্ত, তাই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ইচ্ছে করলে অবশ্যই এই ছুটি দিতে পারবে। ফাতেহা ই ইয়াজদাহম কি সরকারি ছুটি কিনা? আশা করি এই প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন। 

ফাতেহা ই ইয়াজদাহম এর ইতিহাস

বিখ্যাত অলি আব্দুল কাদের জিলানী(র:) এর মৃত্যু তারিখ নিয়ে ঐতিহাসিকদের মতপার্থক্য রয়েছে। তবে অধিকাংশ ঐতিহাসিকের মতে তিনি ৫৬১ সনের ১১ই রবিউস সানি মৃত্যুবরণ করেছেন। কিছু কিছু ঐতিহাসিকের মতে তিনি রবিউস সানি মাসের ১০ তারিখে মৃত্যুবরণ করেন। আবার কেউ কেউ বলেছেন যে, তিনি রবিউস সানি মাসের ১২ তারিখে মৃত্যুবরণ করেছেন। যাই হোক তার মৃত্যু কবে হয়েছিল সেই বিষয়ে অকাট্য কোন মতামত পাওয়া যায় না। 

ঠিক কবে থেকে ফাতেহা ই ইয়াজদাহম পালন করা হয় তার সঠিক কোন ইতিহাস পাওয়া যায়না। তবে ধারণা করা হয় তার মৃত্যুর বহু বছর পরে এই ধরনের রেওয়াজ চালু হয়। ফাতেহা ই ইয়াজদাহম উপলক্ষে ইরাকের রাজধানী বাগদাদে অবস্থিত গেয়ারভী শরিফে সারা বিশ্ব থেকে লোকদের সমাগম ঘটে। ধারণা করা হয় সেখানে প্রতিবছর ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ লোকের জমায়েত হয়। 

বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্থান সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে গেয়ারভী শরিফে লোকজন ভ্রমণ করে। বাগদাদের গেয়ারভী শরিফে আব্দুল কাদের জিলানী(র:) এর কবর অবস্থিত। আর সে কারণেই ফাতেহা ই ইয়াজ দাহাম উপলক্ষে সেখানে এত জনসমাগম ঘটে। ফাতিহা ই ইয়াজদাহম পালন করার জন্য সুফি পন্থীদের বিরাট একটি অংশ প্রতি বৎসর বাগদাদের গেয়ারভী শরিফে গমন করে।

আর যারা যেতে পারে না তারা বিভিন্নভাবে মাজার গুলোকে সুসজ্জিত করে। আবার দেখা যায় অনেকে  মসজিদে আলোকসজ্জা করে মসজিদকে সুসজ্জিত করে। এছাড়া কেউ কেউ বড় বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ফাতেহা ই ইয়াজদাহম উপলক্ষে। ফাতেহা ই ইয়াজদাহম অনুষ্ঠান সম্পর্কে যাবতীয় বিধিবিধান গুলো নিচে তুলে ধরা হবে। 

ফাতিহা ই ইয়াজদাহম পালন করা কি বৈধ?

ফাতেহা ই ইয়াজদাহম কি সরকারি ছুটি, না সরকারি ছুটি নয় তা ইতোমধ্যেই উপরে তুলে ধরা হয়েছে।  ফাতিহা ইয়াজদাহম পালন করা বৈধ কিনা সে সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। ফাতিহা ইয়াজদাহম পালন করা বৈধ কিনা তা জানার পূর্বে চলুন দেখে নেয়া যাক ফাতিহা ই ইয়াজদাহম এই বাক্যটির অর্থ কি। 

ফাতিহা ই ইয়াজদাহম ফার্সি একটি বাক্য এই বাক্যটির অর্থ হলো: ১১ তম দিবসের ফাতিহা। অর্থাৎ রবিউস সানি মাসের ১১ তারিখে যে বিশেষ ফাতেহা পাঠ করা হয়, সেই ফাতিহা পাঠ করা কে ফাতিহা ই ইয়াজদাহম বলে। অর্থাৎ আব্দুল কাদের জিলানী(র:) এর মৃত্যু দিবস উপলক্ষে যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় সেই অনুষ্ঠানকে বলে ফাতিহা ই ইয়াজদাহম। যদিও আব্দুল কাদের জিলানী(র:) কবে মৃত্যুবরণ করেন সে ব্যাপারে ঐতিহাসিকদের মাঝে মতপার্থক্য রয়েছে।

যদি তর্কের খাতিরে ধরে নেয়া যায় যে, তিনি রবিউস সানি মাসের ১১ তারিখে মৃত্যুবরণ করেছেন।এরপরেও কিন্তু ফাতেহা ই ইয়াজদাহম পালন করার কোন যৌক্তিকতা নেই। কেননা, যেখানে ইসলাম জন্মদিন এবং মৃত্যু দিবস পালন করার বৈধতা প্রদান করে না সেখানে মৃত্যু তারিখ সঠিক থাকাতে কোন সার্থকতা নেই। 

আপনি যদি মূল ঘরানার কোন আলেমের কাছে জিজ্ঞাসা করেন যে, আব্দুল কাদের জিলানী(র:) এর মৃত্যু দিবস উপলক্ষে ফাতেহা ই ইয়াজদাহম পালন করা যাবে কিনা? তাহলে তিনি আপনাকে এই প্রশ্নের জবাবে বলবেন যে, "এই ধরনের কোন অনুষ্ঠান করার বৈধতা ইসলামে নেই"। 
অথচ আলেমদের এই বক্তব্যকে উপেক্ষা করে অনেকেই ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম পালন করেন। শুধু তাই নয়, এই অনুষ্ঠান পালন করার মাধ্যমে তারা সাওয়াবের অধিকারী হবেন বলে মনে করেন। যেখানে কোন ধরনের দিবস পালন করা ইসলামে জায়েজ নয়, সেখানে এরকম একটা বেদাত রসম পালন করে সওয়াবের আশা করা বোকামি ছাড়া আর কিছু নয়। 

আব্দুল কাদের জিলানী(র:) ইসলামের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। তিনি সারা জীবন মানুষকে ইসলামের পথে আহবান করেছেন এবং কুরআন ও হাদীস চর্চা করেছেন। মানুষের মাঝে দ্বীনের দাওয়াত প্রচার করে বিশ্ব বিখ্যাত হয়েছেন। কোরআন-হাদিসের উপরে অগাধ পাণ্ডিত্য থাকায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ কিছু বই রচনা করেছেন, যা মুসলিম জাতির সম্পদ হিসেবে পরিগণিত। 

তাই আব্দুল কাদের জিলানী(র:) এর জন্য প্রতিদিন দোয়া করা উচিত। কেন তার রুহের মাগফেরাত করার জন্য নির্দিষ্ট একদিন বরাদ্দ রাখতে হবে? যাই হোক সঠিক তথ্য জেনে বুঝে আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে। এবং কোন আমল করার পূর্বে অবশ্যই কোরআন এবং হাদিসের মাধ্যমে তা যাচাই করে নিতে হবে। 

ফাতেহা ই ইয়াজদাহম কি সরকারি ছুটি: উপসংহার

ফাতেহা ই ইয়াজদাহম কি সরকারি ছুটি? এই প্রশ্নের উত্তর ইতোমধ্যেই উপরে তুলে ধরা হয়েছে। উপরোল্লিখিত আলোচনা থেকে এই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গেল যে ফাতেহা ই ইয়াজদাহম পালন করার কোন বিধি বিধান নেই। এবং এই ধরনের আচার অনুষ্ঠান থেকে দূরে থাকা উচিত। আমরা যা কিছুই করি না কেন সেগুলো অবশ্যই ইসলামের গন্ডির ভিতরে থেকে করতে হবে। 

কোরআন এবং হাদীসের মাপকাঠিতে মেপে সকল কাজ আমাদেরকে সম্পন্ন করতে হবে। না জেনে না বুঝে কারো কথা মত কোন ধরনের আমল করা যাবেনা। তাই যেকোনো ধরনের আমল করার পূর্বে সেই আমল সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেয়া সকলের একান্ত কর্তব্য। ফাতেহা ই ইয়াজদাহম সহ আরো যে সকল বেদাতি কর্মকাণ্ড রয়েছে সেগুলোর ব্যাপারে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। 
সঠিকভাবে ইবাদত করার মাধ্যমে যেমন আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়, আবার ভুল ভাবে ইবাদত করলে আল্লাহ তাআলা অসন্তুষ্ট হয়ে যান। তাই অবশ্যই আমাদের সকলকে সচেতন থাকতে হবে এবং আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টি অর্জন করার জন্য সঠিক পন্থা অবলম্বন করতে হবে। ১৬৪১৩

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url