OrdinaryITPostAd

১০টি কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার শর্ত কি কি জানুন

মুসলমান হিসেবে প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানকে কুরবানী করা ওয়াজিব। সে ক্ষেত্রে আমাদের সবার জানা দরকার কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার শর্ত কি কি। তাই আজকে আমরা এর পোস্ট এ আলোচনা করব কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার শর্ত কি কি এই বিষয়ে।
তাহলে চলুন দেরী না করে জেনে নিই, কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার শর্ত কয়টি এবং কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার শর্ত কি কি।

সূচিপত্রঃ কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার শর্ত কি কি

কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার শর্ত কি কি

কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার শর্ত কি কি? এবং আমরা কিভাবে সেটা নির্ধারণ করবো যে, আমরা কুরবানি গরু নাকি খাসি দিব? আমাদের কখন একাধিক গরু বা খাসির ছাগল কুরবানী দিতে হবে? আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আশাকরি কুরআন এবং হাদিসের আলোকে সবকিছু বিস্তারিত নিচে জানানো হলো-
যে ব্যক্তির কাছে আরবি জিলহজ মাসের দশ, এগারো এবং বারো তারিখের সূর্য অস্ত যাওয়ার আগে পর্যন্ত প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত সাড়ে 52 তোলা রুপা এবং এর সমতুল্য কিংবা সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ এর সমতুল্য পরিমাণ সম্পদ থাকে এবং সেগুলো ঋণ বহির্ভূত হয় তাহলে সেই ব্যক্তির উপরে কুরবানী করা ওয়াজিব বা আবশ্যক।
কুরবানী গরু, মহিষ, খাসি, উট, দুম্বা বা ভেড়া যে কোন প্রাণী দিয়েই আদায় করা যাবে। এটা ব্যক্তির এখতিয়ার। এরকম কোন নীতিমালা এই বিষয়ে নেই যে, কখনো গরু, কখনো খাসি বা বকরি, কখনো উট বা দুম্বা, কখনো ভেড়া প্রভৃতি আবশ্যক হয়। বরং কুরবানী করা আবশ্যক। একজন ব্যক্তি তার পছন্দ মতো উপরের যেকোন পশু কুরবানী করতে পারবেন। কোন ধরনের বিধি-নিষেধ এ বিষয়ে নেই।

আবার ইচ্ছে করলে আবশ্যকীয় কুরবানী ছাড়া ও যত ইচ্ছা তত নফল কুরবানী করা যায়। রাসুলুল্লাহ সাঃ যেমন নিজের কুরবানী ছাড়াও উম্মতের দিক থেকে নফল কোরবানি করে থাকতেন।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম দুটি সাদা কালো বড় শিং বিশিষ্ট খাসিকৃত দুম্বা কুরবানীর দিন যবেহ করতেন। জবেহ করার জন্য যখন শোয়ালেন, তখন বলতেন
اني وجهت وجهي للذي فطر السماوات
তারপর বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার বলে জবাই করতেন। [ মুসনাদে আহমদ, হাদিস ১৫০২২; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস ৩৮৬; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস ২২৫]

কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার শর্ত কয়টি

কয়েকটি শর্ত পূর্ণ হওয়ার ক্ষেত্রে কুরবানীর ওয়াজিব হবে। নিচে সেগুলো উল্লেখ করা হলো-
  • মুসলমান হওয়া, অর্থাৎ অমুসলিমদের উপর কুরবানীর বিধান প্রযোজ্য হবে না
  • প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া, অর্থাৎ অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি যদি ও নির্দিষ্ট সম্পদের মালিক হয় তার পরও তার জন্য কুরবানী আবশ্যক নয়।
  • সুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারী হতে হবে, অর্থাৎ কোন পাগল যদি সম্পদের মালিক ও হয় তারপরও কোরবানি ওয়াজিব হবে না।
  • স্বাধীন ব্যক্তি হতে হবে, অর্থাৎ কোন দেশের উপর কোরবানি আবশ্যক হয়না।
  • মুকিম হতে হবে, অতএব কোন জায়গায় 15 দিনের বেশি সময়ের জন্য স্থায়ী হতে হবে, অর্থাৎ মুসাফিরের উপর কোরবানি ওয়াজিব নয়।
  • যাকাত ফরজ হয় এরকম পরিমাণ সম্পদের মালিক হতে হবে। জিলহজ্ব মাসের 10 তারিখ ফজরের পর থেকে জিলহজ মাসের 12 তারিখ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত সময়ে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক যদি হয় তাহলে তাকে কুরবানী দিতে হবে। কোরবানি ওয়াজিব হবার জন্য এই সম্পদ এক বছর পার হবার শর্ত নয়। (আদ দুররুল মুখতার, পৃষ্ঠা: ২১৯, খন্ডঃ ৫)

কোরবানির গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা

শুধুমাত্র একটি কুরবানী ওয়াজিব হয় নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদের মালিক এর উপরে। অনেক সম্পদের যদি মালিক হয় তাহলেও একটি কুরবানী ওয়াজিব হবে। তবে সে যদি একাধিক কুরবানী করতে চাই তাহলে সে বেশি সওয়াবের অধিকারী হবেন। কোরবানি কেবলমাত্র নিজের উপরে ওয়াজিব হবে। সে ক্ষেত্রে সন্তানের দিক থেকে কোরবানি দেয়া পিতার দিক থেকে ওয়াজিব নয়। 
তবে নাবালিক বা নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক নয় এরকম মনের দিক থেকে কুরবানী দিলে সওয়াবের অধিকারী হইবে। কোন নারী যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয় তাহলে তার উপর ও কুরবানী দেওয়া ওয়াজিব হবে। যার ওপর কুরবানী ওয়াজিব নয় এরকম কোন দরিদ্র ব্যক্তি যদি কুরবানী করে তাহলে তার কুরবানি শুদ্ধ হবে এবং সে বেশি সওয়াব লাভ করবে। এরকম দরিদ্র লোক যদি কুরবানীর উদ্দেশ্যে পশু ক্রয় করে থাকে তাহলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হয়ে যাবে। (কিফায়াতুল মুফতিঃ ৮/১৭৮)

আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোরবানি

আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোরবানির পশু জবাই করতে হয়। আল্লাহ তাআলার কাছে কুরবানীর পশুর মাংস বা রক্ত পৌঁছায় না, বরং তোমাদের তাকওয়া (তথা এক নিষ্ঠা ভাবে সম্পন্ন আমল) আল্লাহর কাছে পৌঁছায়।(সূরা হজ, আয়াতঃ ৩৭)
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আরো বলেন, ' হে রাসুল! আপনি বলুন, আমার সালাত, আমার জীবন, আমার কোরবানি, আমার মৃত্যু বিশ্বজগতের পালনকর্তা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য নিবেদিত। (সূরাঃ আনআম, আয়াতঃ ১৬২)
প্রত্যেকটা সামর্থ্যবান ব্যক্তির উপর শর্তসাপেক্ষে কুরবানী করা ওয়াজিব।
আল্লাহ বলেন, ' তুমি তোমার রবের জন্য কোরবানি করো এবং সালাত আদায় করুন।' (সুরাঃ কাউসার, আয়াতঃ ২)
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছে, কোন ব্যক্তির সামর্থ্য থাকার পরেও যদি কোরবানির না করে তাহলে সে যেন আমাদের ঈদগাহের কাছে না আসে। (ইবনে মাজাহ, হাদীস নং: ২১২৩, মুসনাদে আহমদ, হাদীস নংঃ ৮২৭৩)

শেষ কথাঃ কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার শর্ত কি কি

কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার শর্ত কি কি জানতে হলে আমাদের পুরো পোস্টটি পড়ুন। কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার শর্ত কি কি সবার আগে জানতে হলে আমাদের সাথেই থাকুন। কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার শর্ত কি কি জানতে হলে আমাদের পুরো আর্টিকেলটি ভালভাবে পড়ুন, আশা করি সবকিছু ভালোভাবে বুঝতে পারবেন।

আজ আর নয়, কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার শর্ত কি কি এ বিষয়ে আপনার যদি কোন কিছু জানার থাকে তাহলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার শর্ত কি কি এই বিষয়ে সবাইকে জানানোর জন্য আমাদের পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার শর্ত কি কি পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আপনার ফেসবুক ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল এ আমাদের পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url