OrdinaryITPostAd

মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

 মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত জানবো। মরিঙ্গা পাউডারে প্রচুর প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রোটিন সহ নানান পুষ্টগুণ উপাদান থাকে। যা মানব শরীরের জন্য অনেক উপকারী। তাই এটি খাওয়ার নিয়ম জানা জরুরি।

মরিঙ্গা-পাউডার-খাওয়ার-নিয়ম

মরিঙ্গা পাউডারকে বাংলায় বলা হয় সজনে পাতার পাউডার। আবার এলাকা ভেদে একে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়ে থাকে। সঠিক নিয়মে মরিঙ্গা পাউডার খেলে যেমন উপকার হয় ঠিক তেমনি নিয়ম না মেনে এটি খেলে অপকারও হয়। তাই এটি খাওয়ার সঠিক নিয়ম জানতে হবে। 

মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম

মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম

মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম না জেনে আপনি যতই মরিঙ্গা পাউডার সেবন করেন না কেন আপনার এক্ষেত্রে উপকারিতা পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম। তাই এখন আমরা মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার সঠিক নিয়ম নিয়ে সংক্ষিপ্ত আকারে আলোচনা করবো। অনেকের মতে মরিঙ্গা পাউডার সকালে খালি পেটে খেলে বেশি উপকারিতা পাওয়া যায়। এটি আসলে সম্পূর্ণ ভুল একটি ধারণা। কেননা সকালের খালি পেটে মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার ফলে পেটের নানান রকম সমস্যা হতে হবে পারে। বিশেষ করে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের জন্য এটি আরোও ক্ষতিকর হতে পারে। তাই সকালে হালকা কিছু খাবার খেয়ে তারপর মরিঙ্গা পাউডার সেবন করা সবচেয়ে নিরাপদ।

মরিঙ্গা পাউডার পরিমাণ মত সেবন করা উচিত তা না হলে উপকারের চেয়ে ক্ষতির সম্ভাবনা বেশি হতে পারে। প্রতিদিন মরিঙ্গা পাউডার ৩ থেকে ৪ চামচের বেশি গ্রহণ করা উচিত নয়। আপনি যদি এই মরিঙ্গা পাউডারটি বাড়িতে বানান তাহলেই শুধু মাত্র দিনে সর্বোচ্চ ৪ চামচ গ্রহণ করতে পারবেন আর আপনি যদি এটি অনলাইনে বা বাজার থেকে কিনে আনেন তাহলে দিনে ১ থেকে ২ চামচের বেশি গ্রহণ করা উচিত হবেনা। কেননা বাজারের বা অনলাইনে যে সকল মরিঙ্গা পাউডার পাওয়া যায় সেগুলো আরোও আকর্ষণীয় ও বেশি দিন সংরক্ষণ করার জন্য বিভিন্ন কেমিক্যাল ও প্রিজারভেটিভস ব্যবহার করে থাকে। তাই মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার আগে পরিমাণ যাচাই করে নিতে হবে।
আমরা জানি যে মরিঙ্গা পাউডারে প্রচুর পুষ্টিগুণ থাকলেও এর স্বাদ খুব একটা ভালো হয়। তাই স্বাদ বৃদ্ধি করার জন্য আপনি মধু অথবা লেবু যোগ করতে পারেন। মধু ও লেবু যোগ করার পরিমাণ হবে প্রতি ২৫০ মিগ্রা মরিঙ্গা পাউডারের মিশ্রণে এক থেকে দুই চা চামচ মধু অথবা এক থেকে দুই ফোঁটা লেবুর রস। তবে এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখবেন যে মধু ও লেবু একসাথে যেন না দেন কেননা এর ফলে গ্যাস্ট্রিক হতে পারে। এছাড়াও দ্রুত ও ভালো ফলাফল পেতে গরম পানির পরিবর্তে গরম দুধের সাথে মরিঙ্গা পাউডার সেবন করতে পারেন। আর আপনি যখন প্রথম বার মরিঙ্গা পাউডার খেতে যাবেন তখন অবশ্যই অল্প পরিমাণ মরিঙ্গা পাউডার দিয়ে শুরু করতে পারেন। ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য সকালে হালকা খাবার পর অথবা রাতে ঘুমানোর আগে মরিঙ্গা পাউডার নিয়মিত ২ থেকে ২ মাস খেতে পারেন।

মরিঙ্গা পাউডার কখন খেতে হয়

আমরা উপরে মরিঙ্গা পাউডারটি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি তবে ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য অবশ্যই মরিঙ্গা পাউডার কখন খেতে হয় এই বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে। কোন উপাদানে যতই পুষ্টি গুণাগুণ থাকুক না কেন আপনি যদি সঠিক সময়ে এটি সেবন না করেন তাহলে কখনোই ভালো ফলাফল পাবেন না। সাধারণ মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার সঠিক সময় বলা হয় সকালে কারণ এই সময় শরীর সব চেয়ে বেশি সচল থাকে এবং সকল পুষ্টি উপাদান ভালোভাবে শোষণ করতে পারে। এখন আমরা মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার সঠিক সময় কোনটি এই বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় জানবো।

  • সকালে খাবার পরেঃ এই সময় শরীর সবচেয়ে বেশি সচল থাকে তাই মরিঙ্গার সকল পুষ্টি গুণাগুণ শোষণ করতে পারে।
  • দুপুর বা রাতের খাবারের পরেঃ যাদের গ্যাস্ট্রিক বা অস্বস্তি ভাব হয় তাদের জন্য মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার এটি সঠিক সময়।
  • ব্যায়াম করার আগে বা পরেঃ মরিঙ্গা পাউডারে প্রোটিন ও মিনারেল থাকায় এটি শরীরকে শক্তি দেয় ও পেশি গঠনে সাহায্য করে।

মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার উপকারিতা কি

মরিঙ্গা পাউডার বা সজনে গাছের পাতার গুড়োকে বলা হয় এক ধরনের প্রাকৃতিক সুপারফুড। মরিঙ্গা পাউডারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন A, C, E, ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম ও প্রোটিন থাকে। এই সব উপাদান শরীরের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন অল্প পরিমাণ মরিঙ্গা পাউডার খেলে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর হয় এর ফলে রক্ত পরিষ্কার থাকে এবং শরীরে শক্তি ফিরে আসে। এটি হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং কোলেস্টেরলের মতো দীর্ঘমেয়াদি রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি খুবই উপকারী কারণ এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে থাকে।
মরিঙ্গা-পাউডার-খাওয়ার-নিয়ম
মরিঙ্গা পাউডারের আরেকটি বড় উপকারিতা হলো এটি ত্বক ও চুলের যত্নে বিশেষভাবে কার্যকর। এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান শরীরের অভ্যন্তরীণ প্রদাহ কমায় ফলে ত্বক উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর থাকে। এটি চুল পড়া কমায়, চুলের গোড়া মজবুত করে এবং নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে। এছাড়াও মরিঙ্গা পাউডার হজম শক্তি উন্নত করে, গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটির সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে। যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান তাদের জন্যও মরিঙ্গা পাউডার অনেক কাজে আসতে পারে কারণ এটি ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং চর্বি জমার প্রক্রিয়াকে বাঁধা প্রদান করে। সব মিলিয়ে বলা যায় যে নিয়মিত মরিঙ্গা পাউডার খাওয়া হলে শরীরের ভেতর ও বাইরে দুই দিকেই স্বাস্থ্যকর পরিবর্তন আসে। এই সকল উপকারিতার দিক লক্ষ্য করেই হয়ত মরিঙ্গা পাউডারকে সুপারফুড বলা হয়।

মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার অপকারিতা

প্রত্যেক জিনিসের যেমন উপকারিতার দিক রয়েছে ঠিক তার অপকারিতার দিকও রয়েছে। নিয়মিত ও পরিমাণ মত মরিঙ্গা পাওডার সেবনের ফলে আপনার যেমন উপকার হবে ঠিক তেমন অনিয়মিত ও পরিমাণ মত মরিঙ্গা পাউডার সেবন না করার ফলে আপনার শরীরের ক্ষতিও হবে। এছাড়াও কিছু কিছু মানুষের শারীরিক অবস্থার কারণেও এটি ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করতে পারে। এক কথায় বলতে গেলে মরিঙ্গা পাউডার অতিরিক্ত বা ভুল উপায়ে খাওয়ার ফলে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা অপকারিতা দেখা দিতে পারে। আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি যে মরিঙ্গা পাউডারে অনেক ভিটামিন, মিনারেল ও কিছু সক্রিয় উপাদান থাকে। এর ফলে অতিরিক্ত সেবনের ফলে হজমের সমস্যা তৈরি করতে পারে।

হজমের সমস্যা বলতে প্রথমেই যে উপসর্গ গুলো দেখে দিতে পারে সেগুলো হলো গ্যাস, পেট ফাঁপা বা ডায়রিয়ার মত সমস্যা। আবার কিছু মানুষের ক্ষেত্রে বমি বমি ভাব বা হালকা মাথা ঘোরার মত সমস্যাও দেখে দিতে পারে। আমরা এর আগেও জেনেছি যে মরিঙ্গা রক্তচাপ ও রক্তের সুগার কমাতে সাহায্য করে থাকে। তাই যাদের আগে থেকেই কম রক্তচাপ বা রক্তের সুগারের মাত্রা কম আছে তারা যদি এটি সেবন করে তাহলে শরীরে অনেক ক্ষতি করতে পারে। এছাড়াও গর্ভবতী নারীদের জন্য মরিঙ্গা পাউডার সেবন ক্ষতিকর হতে পারে আবার যারা যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের জন্য মরিঙ্গা পাউডার সেবন করা ক্ষতিকর হতে পারে। এসকল ক্ষেত্রে আপনি যদি একান্তই মরিঙ্গা পাউডার সেবন করতে চান তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তারপর মরিঙ্গা পাউডার সেবন করতে পারবেন।

মরিঙ্গা ক্যাপসুল খাওয়ার নিয়ম

আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি যে মরিঙ্গা পাউডারের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতার জন্য একে সুপার ফুড বলা হয়। তবে এটি সত্য যে মরিঙ্গা পাউডারের অসংখ্য পুষ্টি গুণাগুণ থাকলেও স্বাদের দিক থেকে এটি খুব একটা ভালো না। বিশেষ করে যারা কোন কিছু খাওয়ার পূর্বে সেই জিনিসের স্বাদের কথা আগে চিন্তা করে তাদের জন্য এটি একটি ঝামেলার বিষয় হতে পারে। তাই এই সকল দিক থেকে বাঁচার জন্য আপনি মরিঙ্গা পাউডারের পরিবর্তে মরিঙ্গা ক্যাপসুল গ্রহণ করতে হবে। সাধারণত মরিঙ্গা পাউডার ও মরিঙ্গা ক্যাপসুলের পুষ্ট গুণাগুণ একই তাই আপনি এটি নিশ্চিন্তে সেবন করতে পারেন।

সাধারণ মরিঙ্গা ক্যাপসুল ৪০০ মিগ্রা থেকে ৬০০ মিগ্রা পর্যন্ত পাওয়া যায়। এই ক্যাপসুল গুলো দিনে সর্বোচ্চ ১টি থেকে ২টি গ্রহণ করা উচিত। এর ফলে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই উপকার পাওয়া যায়। এই পরিমাণের চেয়ে অতিরিক্ত ক্যাপসুল গ্রহণ করলে উপকারের চাইতে ক্ষতি বেশি হতে পারে তাই এই বিষয়টি লক্ষ্য রাখতে হবে। মরিঙ্গা ক্যাপসুল সকাল ও রাতের খাবার পরে খাওয়া উচিত। কখনোই খালি পেটে এটি খাওয়া উচিত নয় কারণ খালি পেটে খাওয়ার ফলে পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে। সকাল ও রাতের খাবার পরে পানি অথবা গরম দুধের সঙ্গে মরিঙ্গা ক্যাপসুল সেবন করতে পারেন।
আর আপনি যদি দ্রুত উপকার পেটে চান তাহলে এই ক্যাপসুলটি হালকা গরম দুধের সাথে সেবন করতে পারেন। দুধের সাথে এই ক্যাপসুলটি গ্রহণের ফলে দ্রুত ও আরোও অন্যান্য উপকারিতা পাওয়া যায়। তবে গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারীরা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এটি গ্রহণ থেকে এড়িয়ে চলতে হবে। এছাড়াও যাদের যারা উচ্চ রক্তচাপ, থাইরয়েড, বা কিডনি সমস্যা আছে তারা ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এটি সেবন থেকে বিরত থাকবেন। উপরোক্ত কোন সমস্যা যদি কারো মধ্যে থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এই ক্যাপসুলটি সেবন করতে হবে। পরিশেষে ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য দিনে দুইবার একই সময়ে মরিঙ্গা ক্যাপসুল গ্রহণ করতে পারেন।

মরিঙ্গা পাউডার খেলে কি লম্বা হয়

মরিঙ্গা পাউডার খেলে কি লম্বা হয় এটি সকলের একটি সাধারণ প্রশ্ন। সহজ ভাষায় বলতে গেলে মরিঙ্গা পাউডারে ভিটামিন A, C, ক্যালসিয়াম ও প্রোটিন শরীরের বৃদ্ধি ও হাড় গঠনে সহায়তা করে থাকে কিন্তু সরাসরি মানুষের উচ্চতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা পালন করে না। মানুষের লম্বা হওয়া না হওয়া অনেকটাই নির্ভর করে জেনেটিকস এর উপরে। অর্থাৎ এই বিষয় অনেকটাই কারোও পিতা ও মাতার উচ্চতার উপর নির্ভর করে তাদের সন্তানের উচ্চতা কত টুকু হবে। তাই কেউ শুধুমাত্র মরিঙ্গা পাউডার খেলেই কেউ হঠাৎ লম্বা হয়ে যাবে এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। 

শরীরের উচ্চতা মূলত নির্ভর করে বংশগত গঠন, হরমোনের ব্যালান্স ও বয়স অনুযায়ী হাড়ের বিকাশের ওপর। মানুষের উচ্চতা সাধারণত বৃদ্ধি পায় ১৮ থেকে ২১ বছর বয়স পর্যন্ত। তাই এই বয়সের আগে বেশি করে পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ ও নিয়মিত ব্যায়াম করলে উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে। এই সময়ে মরিঙ্গা পাউডার নিয়মিত সেবন করলে শরীরের পুষ্ট ঘাটতি পূরণ করে এবং মরিঙ্গা পাউডারে থাকা ক্যালসিয়াম ও প্রোটিন শরীরের হাড় গঠনে সহায়তা করে। তাই এক কথায় বলতে গেলে ১৮ থেকে ২১ বছরের আগে নিয়মিত মরিঙ্গা পাউডার সেবন করলে উচ্চতা বৃদ্ধিতে যে সকল ভিটামিন ও মিনারেল প্রয়োজন তা পূরণে সহায়তা করলেও এটি সরাসরি উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে না।

ত্বকের যত্নে মরিঙ্গা পাওডার খাওয়ার নিয়ম

মরিঙ্গা পাউডারে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন A, C ও E ত্বকের মৃত কোষগুলোকে সরাতে এবং নতুন কোষ তৈরিতে সাহায্য করে থাকে। এর ফলে ত্বক দেখতে যেমন সুন্দর লাগে ঠিক তেমনই ত্বক উজ্জ্বল ও দাগহীন রাখতে সাহায্য করে থাকে। আমরা অনেকে ত্বকের যত্ন বলতে শুধু ত্বকের উপরের অংশের যত্ন বুঝে থাকি। ঠিক এই ভুল ধারণার কারণে আমরা অনেকেই বাজার থেকে বিভিন্ন কেমিক্যাল যুক্ত ফেসওয়াশ ও বিভিন্ন রুপচর্চার সামগ্রী ব্যবহার করে ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি করে ফেলছি। তাই ত্বককে ভেতর থেকে সুন্দর করার জন্য ত্বকের পুষ্টি জোগানো জরুরি একটি বিষয়। ঠিক এই কারণে এখন আমরা ত্বকের যত্নে মরিঙ্গা পাওডার খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানবো। ত্বকের যত্নে মরিঙ্গা পাওডার খাওয়ার অনেক নিয়ম থাকলেও আজকে আমরা শুধু একটি নিয়ম জানবো এবং সেটি হচ্ছে ত্বকের যত্নে মরিঙ্গা পাউডারের চা বানানোর ও খাওয়ার নিয়ম।

  • প্রথমে এক কাপ পরিমাণ পানি গরম করে নিতে হবে।
  • এরপর উক্ত পানিতে ২ থেকে ৩ চা চামচ মরিঙ্গা পাউডার মিশাতে হবে।
  • স্বাদের জন্য মধু বা লেবুর রস যুক্ত করতে পারেন।
  • এতে চিনি বা চিনি জাতীয় কিছু ভুলেও দেওয়া যাবে না।
  • এখন এই চা সকালে অথবা বিকালে খাবার পর পান করতে হবে।
  • ভালো রেজাল্ট পাওয়ার জন্য এই চা ২ থেকে ৩ মাস নিয়মিত পান করতে হবে।
  • এই চা সেবনে কোনো সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

মরিঙ্গা পাউডার দাম কত টাকা?

মরিঙ্গা পাউডার সাধারণত বিভিন্ন বড় বড় দোকানে ও অনলাইনে বিক্রি হয়ে থাকে। তবে দোকানের তুলনায় এটি অনলাইনে বেশি বিক্রি হয়ে থাকে। সাধারণত ১০০ গ্রাম মরিঙ্গা পাউডার কিনতে আপনার ৬০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে। এই সামটি সাধারণত ব্র্যান্ড, প্রস্তুত প্রক্রিয়া, এবং এটি অর্গানিক কিনা তার উপর নির্ভর করে নির্ধারন করা হয়ে থাকে। সহজ ভাষায় বলতে গেলে কোন নতুন ব্র্যান্ড অনলাইন পেজে মরিঙ্গা পাউডার বিক্রির ক্ষেত্রে দাম অনেক কম নির্ধারন করে থাকে আবার একই জিনিস কোন নামি ও জনপ্রিয় ব্র্যান্ড উচ্চ দাম নির্ধারন করে থাকে।
তবে আপনি যেখান থেকেই মরিঙ্গা পাওয়াড ক্রয় করেন না কেন আপনাকে সব সময় একটি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে যে আপনি যে পাউডারটি কিনছেন সেটি অর্গানিক কিনা। কেননা বর্তমান সময়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী তাদের পণ্য আরও আকর্ষণীয় করতে ভিন্নধরনের কেমিক্যাল বা প্রিজারভেটিভ মিশিয়ে থাকে যা আমাদের স্বাস্থের জন্য মারাত্নক ক্ষতিকর। তাই যখন আপনি কোন অনলাইন স্টোর থেকে মরিঙ্গা পাউডার ক্রয় করতে যাবেন তখন অবশ্যই সেই স্টোরের রিভিও ভালোভাবে দেখে তারপর ক্রয় করবেন। আর আপনি যদি বাজার থেকে ক্রয় করেন তাহলে ভালোভাবে প্যাকেটের উপর উপাদান গুলোর নাম ভালোভাবে দেখে নিবেন যে কোন ক্ষতিকর কেমিক্যাল বা প্রিজারভেটিভ দেওয়া আছে কিনা।

বাড়িতে মরিঙ্গা পাউডার বানানোর উপায়

আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি যে মরিঙ্গা মানে হচ্ছে সজনে গাছের পাতা। আর এই সজনে গাছের পাতাকে প্রক্রিয়া জাত করে এরপর এটিকে পাউডার করে প্যাকেট করে বাজারে উচ্চ দামে বিক্রি করে থাকে। আপনি চাইলে বাড়িতেই উচ্চ মানের ভেজাল মুক্ত মরিঙ্গা পাউডার বানিয়ে সংরক্ষণ করে অনেক দিন পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারবেন। বাড়িতে বানিয়ে সংরক্ষণ করে ব্যবহার করার একটি অন্যতম সুবিধা হচ্ছে আপনি ভেজাল মুক্ত পাউডারটি পাবেন। বিভিন্ন দোকানে বা অনলাইনে যে মরিঙ্গা পাওডার গুলো পাওয়া যায় সেগুলো মূলত আরোও আকর্ষণীয় করতে বিভিন্ন কেমিক্যাল বা ভেজাল দেওয়া থাকতে পারে।
মরিঙ্গা-পাউডার-খাওয়ার-নিয়ম
বাড়িতে সম্পূর্ণ অর্গানিক মরিঙ্গা পাউডার বানানোর জন্য প্রথমেই পরিমাণ মত সজনে গাছে পাতা গাছ থেকে সংরক্ষণ করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে চেষ্টা করবেন দেশি যে গাছ গুলো আছে সেগুলো থেকে পাতা গুলো নেওয়ার। কারণ দেশি গাছের পাতায় হাইব্রিড গাছের যে পাতায় পুষ্টিগুণ থাকে তা তুলনামূলক অনেক বেশি। এরপর পাতা গুলো পরিষ্কার পানিতে ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর এগুলো রোদে ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে। অনেকে মাইক্রোওভেনে শুকিয়ে থাকে এতে করে পুষ্টিগুণ নষ্ট হতে পারে। রোদে ভালোভাবে শুকানোর পর এবার পাতা গুলো ব্লেন্ডারে ভালোভাবে গুঁড়া করে নিতে হবে। এমন ভাবে গুঁড়া করতে হবে যাতে কোন দানা না থাকে। এরপর এই গুঁড়া মরিঙ্গা পাউডার অনেক দিন সংরক্ষণ করে ব্যবহার করতে পারবেন।

পরিশেষেঃ মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম

মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমরা উপরে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার যেমন উপকারিতা রয়েছে ঠিক তেমনই অপকারিতাও রয়েছে। তাই সঠিক নিয়ম মেনে মরিঙ্গা পাউডার খাওয়া উচিত। ঠিক এই কারণেই উপরে আমরা মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার সঠিক নিয়ম নিয়ে আলোচনা করেছি। আশা করা যায় যে উপরের লিখা গুলো মনোযোগ সহকারে পড়লে মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম নিয়ে সাধারণ প্রশ্ন গুলোর উত্তর পেয়ে যাবেন। অনেকে পাউডার খেতে পারেন না ঠিক এই কথা চিন্তা করে মরিঙ্গা ক্যাপসুল খাওয়ার নিয়ম নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। 250311

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url