OrdinaryITPostAd

রিজিক সম্পর্কে হাদিস - রিজিক নিয়ে আল্লাহর বাণী

রিজিক সম্পর্কে হাদিস অসংখ্য হাদিসের কিতাবে বর্ণিত হয়েছে। আপনারা সকলেই জানেন জমিনের প্রতিটি প্রাণী আল্লাহর দেওয়া রিজিক ভোগ করে। এছাড়া মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে রিজিক নিয়ে আল্লাহর বাণী রয়েছে। ঈমানদার মুসলিম হিসাবে রিজিক সম্পর্কে হাদিস ও রিজিক নিয়ে আল্লাহর বাণী সম্পর্কে আমাদের সম্যক জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।
আমরা রিজিক বলতে শুধু খাবারকেই বুঝিয়ে থাকি। কিন্তু আমাদের সামগ্রিক জীবনযাপনের সাথে জড়িত উপকরণগুলোকে একত্রে রিজিক বলা হয়। আজ এই পোস্টে আপনারা রিজিক সম্পর্কে হাদিস, রিজিক নিয়ে আল্লাহর বাণী, রিজিক নিয়ে হাদিসে কুদসি এবং রিজিক সম্পর্কিত যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাই পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পোস্ট সূচিপত্র - রিজিক সম্পর্কে হাদিস - রিজিক নিয়ে আল্লাহর বাণী জেনে নিন

রিজিক কী | রিজিক কত প্রকার 

আমাদের পুরো জীবনের সকল কর্মকান্ড যা দ্বারা নির্ধারিত তাই হলো রিজিক। আমরা কি খাবো, কি পরবো, কি আয় করব, কোথায় যাব তথা জীবনের প্রতিটি কর্মকাণ্ড আল্লাহতায়ালা কতৃক নির্ধারিত। মহান আল্লাহর দ্বারা লিখিত রিজিক থেকে আমরা বিন্দুমাত্র বঞ্চিত হবো না আবার এর চেয়ে বেশিও কিছু পাবো না। সুতরাং, রিজিক জিনিসটা এতটাই শক্তিশালী। রিজিকে বিশ্বাস করাও তাই মুমিন ব্যক্তির কাজ। রিজিক সম্পর্কে হাদিসগুলোতে রিজিক কত প্রকার সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

ইসলামে রিজিকের ধারণা অত্যন্ত সুপ্রসারিত। রিজিক মূলত ২ প্রকার: ১) ধন সম্পদের রিজিক এবং ২) অন্তর আত্মার রিজিক। ব্যক্তির মৌলিক সম্পদগুলো ব্যতীত আরও যে সকল প্রকারের রিজিক রয়েছে তা হলো, ১) ঈমান, ২) সুস্থতা, ৩) ইলমে দ্বীন, ৪) নেককার স্ত্রী, ৫) নেককার সন্তান, ৬) ফিকহ্ ইত্যাদি। মোটকথা আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতের জীবনকে কল্যাণকর করে এমন সমস্ত উপকরণই ইসলামের পরিভাষায় রিজিক।
রিজিক সম্পর্কে একটি হাদিস হলো: মহানবী সাঃ বলেন, "রিজিক আল্লাহর পক্ষ থেকে পূর্ব নির্ধারিত ও বণ্টিত, তোমাদের প্রত্যেকের সৃষ্টি ৪০ দিন তার মায়ের গর্ভে থাকে। তারপর ৪০ দিন লাল জমাট রক্ত রূপে রূপান্তরিত হয়। তারপর ৪০ দিনে গোশতের টুকরোর রূপ ধারণ করে। অবশেষে আল্লাহতায়ালা ফেরেশতাকে পাঠান। তখন সে তার মধ্যে রুহ ফুঁকে দেয়। অতঃপর ফেরেশতাকে ওই গর্ভস্থ শিশুর ব্যাপারে চারটি বিষয় চূড়ান্তরূপে লিখতে আদেশ করা হয়। যথা তার রিজিক, মৃত্যু ও আমল" (মুসলিম - ২৬৪৩)।

রিজিক নিয়ে আল্লাহর বাণী সমষ্টি 

মহান আল্লাহ এ বিশ্ব জাহানের সকল প্রাণীর রিযিকদাতা। বান্দার জন্য হালাল রিজিক একমাত্র আল্লাহর পক্ষ হতেই আসে। মহান আল্লাহ বলেন, "আর যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্য নিষ্কৃতির পথ করে দেবেন। আর তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিজিক দান করবেন" (সূরা তালাক, আয়াত ২-৩)। অর্থাৎ আমরা যদি আল্লাহকে ভয় করে তাঁর আনুগত্য করি তবে আমরা তাঁর দেওয়া রিজিক ভালভাবে ভোগ করতে পারব। রিজিক নিয়ে মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে অন্তত ৯০ টি আয়াত নাজিল করেছেন।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ আরও ইরশাদ করেছেন, "পৃথিবীর প্রত্যেক জীবের জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহর। তিনি জানেন তারা কোথায় থাকে এবং কোথায় সমাপিত হয়। আর এ সবকিছুই এক সুবিন্যস্ত কিতাবে [লাওহে মাহফুজে] সংরক্ষিত রয়েছে" (সূরা হুদ- ৬)। সুতরাং, রিজিক বৃদ্ধির একমাত্র আল্লাহর হাতেই। রিজিক সম্পর্কে হাদিস-এ কি কি বিষয় বর্নিত হয়েছে পোস্টের পরবর্তী অংশে এবার চলুন সেগুলো বিষয় জেনে নিই।

রিজিক সম্পর্কে হাদিস

রিজিকের গুরুত্ব সম্পর্কে মহানবী (সাঃ) স্পষ্ট বলেছেন কেউ তার নির্ধারিত রিজিক থেকে বঞ্চিত হয়ে মৃত্যুবরণ করবে না। রিজিক সম্পর্কে হাদিস রয়েছে বেশকিছু। তার মধ্যে একটি হলো, রাসূল (সাঃ) বলেন, "হে মানুষ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। ধনসম্পদ সংগ্রহে উত্তম পন্থা অবলম্বন করো। কেননা কেউ তার রিজিক পরিপূর্ণ না করে মৃত্যুবরণ করবে না। যদিও তা অর্জনে বিলম্ব হয়" [ ইবনে মাজাহ]।
হজরত ওমর (রা:) থেকে বর্ণিত, আরও একটি রিজিক সম্পর্কে হাদিস হলো নবী কারিম (সাঃ) বলেন "তোমরা যদি আল্লাহর উপর দৃঢ় বিশ্বাস রাখতে, তাহলে অবশ্যই আল্লাহ তোমাদের রিজিকের ব্যবস্থা করতেন। যেমনভাবে তিনি পাখিদের রিজিকের ব্যবস্থা করে থাকেন। তারা তো সকালে খালি পেটে ক্ষুধা নিয়ে বাসা থেকে বের হয়, আবার শেষ বিকেলে ভরা পেটে বাসস্থানে ফিরে আসে" [তিরমিজি, হাদিস নং - ২৩৪৪]। এছাড়া, নবীজি (সাঃ) রিজিকের ফজিলত নিয়ে আমাদের অনেক দিক নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। যা আমাদের মেনে চলা ও তার উপর আমল করা অবশ্য কর্তব্য।

রিজিক নিয়ে কিছু কথা

রিজিক নিয়ে হাদিসে কুদসিতে অসংখ্য বর্ণনা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে হাদিসে কুদসির একটি হাদিস হলো:- মাকাল ইবনু ইয়াসার থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ বলেন, "তোমাদের রব বলেছেন, হে বনি আদম! তুমি আমার ইবাদতের জন্য মনোনিবেশ করো, আমি তোমার অন্তরকে সচ্ছলতায় ভরে দেব, তোমার হাত রিজিক দ্বারা পূর্ণ করে দেব। হে আদম সন্তান! তুমি আমার থেকে দূরে যেয়ো না, ফলে আমি তোমার অন্তর অভাবে পূর্ণ করে দেব এবং তোমার দু-হাতকে কর্মব্যস্ত করে দেব"। সুতরাং, আমাদের যথাযথভাবে রিজিক নিয়ে চিন্তা করে রিজিক সম্পর্কে হাদিসগুলো মেনে চলতে হবে। রিজিকের সূরা তথা যেসকল সূরায় রিজিক সম্পর্কে আয়াত নাজিল হয়েছে সে সুরা থেকে শিক্ষা নিয়ে সে অনুযায়ী নিজের আমল করতে হবে।

শেষ কথা - রিজিক সম্পর্কে হাদিস - রিজিক নিয়ে আল্লাহর বাণী

প্রিয় পাঠক, আশা করি পুরো পোস্ট পড়ে রিজিকের যাবতীয় ফজিলত সম্পর্কে ধারণা পেয়ে গেছেন। রিজিক যে একমাত্র আল্লাহ তা'আলা কর্তৃক নির্ধারিত তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। মহান আল্লাহ আমাদের রিজিক সম্পর্কে হাদিসগুলো এবং রিজিক নিয়ে আল্লাহর বাণীগুলো মেনে সুন্দর জীবন যাপন করার তৌফিক দান করুন। পোস্টটি ভালো লাগলে সকলের কাছে শেয়ার করে দিন। @23891

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url