OrdinaryITPostAd

রমজানের শেষ জুমার ফজিলত - রমজানের শেষ জুমার বয়ান

রমজানের শেষ জুমার ফজিলত অনেক। আমরা অনেকে জানি যে রমজানের শেষ জুমাকে জুমাতুল বিদা বলা হয়। জুমাতুল বিদা অর্থাৎ রমজানের শেষ জুমার ফজিলত সম্পর্কে একজন মুসলিম হিসেবে অবশ্যই আমাদেরকে জানতে হবে। তাই আজকের এই আর্টিকেলে রমজানের শেষ জুমার ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

আপনি যদি রমজানের শেষ জুমার ফজিলত সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল জুড়ে আমাদের সঙ্গে থাকুন। তাহলে চলুন দেরি না করে রমজানের শেষ জুমার ফজিলত সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

পেজ সূচিপত্রঃ রমজানের শেষ জুমার ফজিলত - রমজানের শেষ জুমার বয়ান

রমজানের শেষ জুমার ফজিলত

আমরা জানি যে মাহে রমজান হল আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এবাদত পূর্ণ একটি মাস। তাই এই মাসের প্রতিটি ইবাদত মুসলিম এর কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জানি যে জুমার দিন একটি ইবাদত পূর্ণ দিন। সেই জুমা যদি রমজান মাসে হয় তাহলে এর গুরুত্ব আরো কয়েকগুণ বেড়ে যায়। রমজানের শেষ জুমাকে জুমাতুল বিদা বলা হয়।

আরো পড়ুনঃ রমজানে ওমরা করার ফজিলত - রোজার মাসে উমরার ফজিলত কি

রমজান এবং জুমার দিন একত্রে মিলিত হয়ে দিনটিকে আরও বেশি মহিমান্বিত করে তুলেছে। আমরা অনেকেই রমজানের শেষ জুমার ফজিলত সম্পর্কে অবগত নয়। কিন্তু একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের অবশ্যই জুমাতুল বিদা অর্থাৎ রমজানের শেষ জুমার ফজিলত সম্পর্কে জানতে হবে। এই দিনে বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে মহান আল্লাহতালার নৈকট্য অর্জন করা এবং নিজের আত্মার আকুতি আল্লাহতালার কাছে পেশ করা।

কয়েকটি কারণে জুমাতুল বিদা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণঃ

মাহে রমজানের কারণেঃ রমজান মাস সীমাহীন ফজিলত এর মাস এবং আল্লাহ তায়ালার কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণ এবং গ্রহণযোগ্য একটি মাস। এটি হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর উম্মতের জন্য মহান আল্লাহর বিশেষ এক উপহার স্বরূপ।

আর জুমার দিনের মহাত্ম্য সম্পর্কে হযরত আবু হুরায়রা রাঃ বর্ণিত এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, "সূর্যোদয়ের মাধ্যমে যে দিনগুলো হয় তার মধ্যে সর্বোত্তম দিন হলো জুমার দিন। এ দিনে হযরত আদম আঃ কে সৃষ্টি করা হয়েছিল এবং এই দিনে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছিল এবং এই দিনে তাকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল। আর এই দিনের মধ্যে এমন একটি সময় আছে যখন কোন মুসলমান নামাজরত অবস্থায় দোয়া করলে অবশ্যই তার দোয়া কবুল করা হয়"{তিরমিজিঃ ৪৯১}

একটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন ভালো করে গোসল করবে এবং আগে আগে পায়ে হেঁটে মসজিদে যাবে এবং ইমামের কাছাকাছি বসে খুতবা মনোযোগ সহকারে শুনবে আর কোনরকম অনর্থক কাজ করবে না তাকে তার প্রতি কদমের বিনিময়ে লাগাতার এক বছর নামাজ রোজা করার সওয়াব দান করা হবে। { সুনানে আবু দাউদঃ ৩৪৫}

জুমার দিনের এত ফজিলত সেহেতু বোঝা যায় যে সেই জুমা যদি রমজান মাসে হয় তাহলে জুমার ফজিলত আরব বৃদ্ধি পায়। যেহেতু রমজান মাসে যে কোন এবাদত করলে তাকে এমনি সময় সেই এবাদতের কারণে জেনে কি দেওয়া হয়েছে রমজান মাসে তার দ্বিগুণ দেওয়া হয়। সাধারণত তাই জুমার দিন যেহেতু আগে থেকেই একটি ফজিলত পণ্য দিন তাই রমজানের মাসে এ দিনের ফজিলত আরো বৃদ্ধি পায়।

রমজানের শেষ জুমার বয়ান

মুসলিম হিসেবে আমাদের কাছে রমজানের শেষ জুমার বয়ান শোনাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দীর্ঘ এক বছর এর জন্য রমজান মাসে আর কোন জুমা পাওয়া যাবে না। সাধারণত রমজানের শেষ জুমাকে মুসলিমরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন এবং একে জমাতুল বিদা বলা হয়। মসজিদে মসজিদে রমজানের শেষ জুমার বয়ান করা হয়।

জুমাতুল বিদার নামাজ আদায়ের পর মুসল্লিরা আল্লাহর দরবারে মাগফিরাত কামনা করে কান্নায় ভেঙে পড়বেন। দুই নয়নে অশ্রু ঝরিয়ে ক্ষমা ও রহমত অর্জনের বড় সুযোগ এটি। পবিত্র এ মাসের আর কয়েকটি দিন বাকি। হযরত আনাস ইবনে মালেক রাঃ বলেন, একবার রমজান মাস এলো, তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন, এ মাস তোমাদের কাছে এসেছে, এতে একটি রাত রয়েছে, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। যে ব্যক্তি তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে, সে সব ধরনের কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত হয়েছে। মূলত এর কল্যাণ থেকে চিরবঞ্চিত ব্যক্তিরাই বঞ্চিত ব্যক্তি। {ইবনে মাজাহ}

আলাদাভাবে কোনো ফজিলত না থাকলেও ইসলামের সূচনাকাল থেকেই রমজানের শেষ জুমাটি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে পালিত হয়ে আসছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমান এ দিন আগে আগে মসজিদে জড়ো হয়ে থাকেন।জুমার নামাজ শেষে মসজিদে মসজিদে দেশ ও জাতির কল্যাণ এবং মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

জুমাতুল বিদার বাস্তবতা হচ্ছে নিজেকে আত্মজিজ্ঞাসার আয়নার সামনে দাঁড় করানো। জুমাতুল বিদা আমাদের সতর্ক করে দিচ্ছে, রমজান বিদায়ের পথে। রমজান চলে যাচ্ছে। সপ্তাহের এমন গুরুত্বপূর্ণ দিন এ রমজানে আজই শেষ। সুতরাং জুমাতুল বিদায় নিজেকে জিজ্ঞাসা করতে হবে, পবিত্র মাহে রমজান যে উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছে, তা কি অর্জন হয়েছে? তাকওয়ার শিক্ষা কি অর্জন হয়েছে? যদি না হয়ে থাকে তাহলে রমজান এখনো বাকি আছে। এর মধ্যে অবশ্যই সেই শিক্ষা অর্জন করতে হবে।

রমজানের শেষ জুমার আলোচনা

আমরা কয়জন রমজানের শেষ জুমার আলোচনা সম্পর্কে জানি। যেহেতু রমজান মাস আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মাস এর সাথে যদি জুমার দিন যুক্ত হয় তাহলে তার গুরুত্ব আরো বেশি বৃদ্ধি পায়। সেই ক্ষেত্রে আমাদের অবশ্যই রমজানের শেষ জুমার আলোচনা সম্পর্কে আমাদেরকে জানতে হবে। চলতি রমজানের আজই শেষ শুক্রবার।

আরো পড়ুনঃ রমজান মাসের সেরা ২০ টি আমল - রমজানের রোজার ফজিলত

রমজান মাসের শেষ জুমা মুসলিম বিশ্বে জুমাতুল বিদা নামে পরিচিত। প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজে মুসলমানদের বৃহত্তর জামাতে অনুষ্ঠিত হয়। তাই জুমার দিনের মাহাত্ম্য, গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। রমজান মাসের জুমাবার আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতময়।

পবিত্র কোরআনে জুমার নামাজ জামাতে আদায়ের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, "হে মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর। এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয়, যদি তোমরা উপলব্ধি কর।" {সূরা আল-জুমুআ, আয়াত-৯}

ফজিলতময় জুমার দিন যদি হয় সুন্নাতে ভরপুর, তাহলে জুমার ফজিলত পরিপূর্ণভাবে পাওয়ার আশা করা যায়। রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, আগে আগে মসজিদে গমন করল পায়ে হেঁটে মসজিদে গেল ইমামের কাছাকাছি বসল, মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনল, কোনো কথা বলল না আল্লাহ তাআলা তাকে প্রতি কদমে এক বছরের নফল ইবাদতের সওয়াব দান করবেন। {মুসনাদে আহমাদঃ ৫৮১}

রমজানের শেষ জুমায় করণীয়

বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লীগণ প্রতিবছর রমজানের শেষ জুমার ফজিলত জেনে ইবাদত করে থাকে। জুমার দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন তারপরে আবার রমজান মাস এর গুরুত্ব আরো বেশি বৃদ্ধি পায়। রমজানের শেষ জুমায় করণীয় রয়েছে। একজন মুসলিম হিসেবে অবশ্যই সেই করণীয়গুলো আমাদের করা উচিত।

রমজান মাসে রোজা অবস্থায় জুমার দিনের নিশ্চিত দোয়া কবুলের শেষ সুযোগ তাই জুমাতুল বিদা অর্থাৎ রমজানের শেষ জুমায় কিছু সুন্নত আমল রয়েছে অবশেষে সেগুলো আমাদের করণীয়। নিচে আমল গুলো তুলে ধরা হলোঃ

১। ভালোভাবে পরিষ্কার হয়ে গোসল করা।

২। নতুন বা উত্তম জামা কাপড় পড়া।

৩। আতর অথবা সুগন্ধি ব্যবহার করতে হবে।

৪। হেঁটে হেঁটে মসজিদে যেতে হবে।

৫। আগে আগে মসজিদে প্রবেশ করতে হবে।

৬। ইমামের কাছাকাছি কোন জায়গায় বসতে হবে।

৭। ইমামের খুতবা মনোযোগ সহকারে শুনতে হবে।

৮। বেশি বেশি দুরুদ শরীফ পাঠ করতে হবে।

৯। কারো মনে কষ্ট দেওয়া যাবে না কোনরকম অনর্থক কাজ করা যাবে না।

আরো পড়ুনঃ রমজান মাসের কোরআন তেলাওয়াতের ফজিলত

উপরের সুন্নত এবং আমলগুলো অবশ্যই আমাদের করা উচিত। রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন ভালো করে গোসল করে আগে আগে হেঁটে মসজিদে যাবে এবং ইমামের কাছাকাছি বসে মনোযোগ সহকারে খুতবা শুনবে তাকে তার প্রতি কদমে লাগাতার এক বছর নামাজ এবং রোজা করার সওয়াব দান করা হবে।

রমজানের শেষ জুমার ফজিলত - রমজানের শেষ জুমার বয়ানঃ শেষ কথা

রমজানের শেষ জুমার ফজিলত, রমজানের শেষ জুমার আলোচনা, রমজানের শেষ জুমার বয়ান, রমজানের শেষ জুমায় করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনি উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের অবশ্যই জামাতুল বিদা সম্পর্কে জানা উচিত।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। আপনাদের জন্য এরকম ইসলামের তথ্যমূলক পোস্ট আমাদের আর্টিকেলের নিয়মিত পোস্ট করা হয়।১৬৮৩০

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url