OrdinaryITPostAd

শব ই মেরাজ এর রোজা ২০২৩ - শব ই মেরাজ এর ইতিহাস

শব ই মেরাজ এর রোজা সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে সঠিক জায়গাতে এসেছেন আজকের এই আর্টিকেলে আমরা শব ই মেরাজ এর রোজা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আর বেশি দিন নেই আমাদের মাঝে আসতে চলেছে অতিগুরুত্বপূর্ণ একদিন শব ই মেরাজ। এ দিনটিতে অনেকেই রোজা করে। কিন্তু কতটি রোজা করতে হবে অর্থাৎ শব ই মেরাজ এর রোজা সম্পর্কে জানতে চাই তাদের জন্য খুবই উপকারী একটি আর্টিকেল।

তাহলে চলুন দেরী না করে ঝটপট শব ই মেরাজ এর রোজা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। এছাড়া শব ই মেরাজ সম্পর্কে আরও তথ্য আলোচনা করা হবে।

সূচিপত্রঃ শব ই মেরাজ এর রোজা - শব ই মেরাজ এর ইতিহাস

ভূমিকাঃ শব ই মেরাজ এর রোজা - শব ই মেরাজ এর ইতিহাস

আমরা জানি যে শব ই মেরাজ আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। কারণ এই দিনে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিল। সাধারণত তাই প্রতিটি মুসলমান এই দিনটিতে আল্লাহ তাআলার ইবাদত মশগুল থাকে। তাই বেশিরভাগ মানুষ শব ই মেরাজ এর রোজা করে থাকে। সাধারণত নতুনরা শব ই মেরাজ এর ইতিহাস, শব ই মেরাজ এর নামাজ, শব ই মেরাজ ঘটনা জানতে চেয়ে গুগলের সার্চ করে তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি।

শব ই মেরাজ এর রোজা

শব ই মেরাজ একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এই ঘটনাটি কখন ঘটেছিল তা নিয়ে বিভিন্ন মতভেদ রয়েছে। অনেকেই বলে থাকে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নগদ এর পঞ্চম বছরের একটি রাতে শব ই মেরাজ সংগঠিত হয়েছিল। আবার কেউ বলে হযরত মুহাম্মদ সাঃ পাওয়ার পর ষষ্ঠ বছরে শব ই মেরাজ ঘটনাটি ঘটেছিল। কিন্তু হাদীসে উল্লেখ আছে যে রজব মাসের ২৭ তারিখে শব ই মেরাজ হয়েছিল। নিচে শব ই মেরাজ এর রোজা সম্পর্কে উল্লেখ করা হলো।

আরো পড়ুনঃ ঈদে মিলাদুন্নবী কেন পালন করা হয় - রাষ্ট্রীয়ভাবে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন

এ ব্যাপারে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন, " রজব মাস হল আল্লাহর মাস, শাবান মাস হল নবীর মাস, রমজান মাস হল আল্লাহর উম্মতের মাস" আপনি যদি শব ই মেরাজ উপলক্ষে কয়টি রোজা করতে হবে এ বিষয়ে জানতে চান তাহলে এ বিষয়ে কোন সুনির্দিষ্ট হাদিস নেই।

কিন্তু একটি হাদীসে উল্লেখ পাওয়া যায় যে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন, " কোন ব্যক্তি রজব মাস আসলো কিন্তু শস্যখেত চাষ করল না, শাবান মাস আসলো কিন্তু খেত নিড়ানি দিলোনা, আগাছা পরিষ্কার করল না, সে তার ফসল রমজান মাসে ঘরে তুলতে পারবে না"

একটি হাদীসে উল্লেখ পাওয়া যায় যে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রজব মাসের ১০ রোজা রাখতেন। কিন্তু শব ই মেরাজ রোজা কয়টি বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট হাদিস বলার নেই। কিন্তু রজব মাসের সোমবার, বৃহস্পতিবার অথবা শুক্রবার রোজা রাখা সুন্নত।

শব ই মেরাজ এর ইতিহাস - শব ই মেরাজ এর ঘটনা

প্রিয় পাঠকগণ এখন আমরা শব ই মেরাজ এর ইতিহাস সম্পর্কে আলোচনা করব। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা শব ই মেরাজ এর ঘটনা সম্পর্কে জানেনা। সাধারণত তাদের জন্যই আজকের এই আর্টিকেল। আমরা এখানে শব ই মেরাজ এর ইতিহাস সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত জানাবো। তো চলুন বন্ধুরা আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এর শব ই মেরাজ এর ঘটনা জেনে নেওয়া যাক।

শব ই মেরাজ আল্লাহ তার প্রিয় নবীকে দেখিয়েছিলেন অনেক নিদর্শন। নবুওয়াতের প্রথম দিক মেরাজের রাতে পবিত্র নগরী মক্কার থেকে আরেক পবিত্র নগরী জেরুজালেম মুহূর্তের মধ্যেই গমন করেছিলেন আমাদের প্রিয় নবী। সেখানকার মসজিদে আকসার চারপাশের বরকতময় নিদর্শনগুলোর পরিদর্শন। তখনকার সময়ে এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে এক মাসের বেশি সময় লাগতো কিন্তু আল্লাহ তায়ালা তড়িৎ গতিতে এই যাত্রা সম্পন্ন করেছিলেন।

এটি আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর একটি মোজেজা যা মিরাজের পরবর্তীতে মক্কায় অবস্থানরত কাফেরেরা এই বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন এবং অবিশ্বাস করেছিলেন মেরাজের ঘটনা। শব ই মেরাজ দীর্ঘ পথে মদিনায় নামাজ আদায় হাদিসের এক রেওয়াতে এসেছিলে। বোরাক নামক কুদরতি বহনে ভ্রমণের সময় জিব্রাইল আঃ এক জায়গায় প্রিয় নবীকে নামাজ পড়তে পারেন।

আরো পড়ুনঃ থার্টি ফার্স্ট নাইট এর ইতিহাস - থার্টি ফাস্ট নাইট সম্পর্কে ইসলাম কি বলে

তখন আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে বলেন, এই জায়গা আপনি চেনেন? প্রিয়নবী উত্তরে বলেন, না। হযরত জিব্রাইল আঃ বললেন, এটা মদিনা, এটাই হচ্ছে জিয়ারতের জায়গা। এরপরে তুর পাহাড় অতিক্রম করার পরে অন্য এক জায়গায় নামাজ করান এবং বলেন এটা হচ্ছে  তুরে সাইনা অর্থাৎ এখানে আল্লাহ তায়ালা হযরত মুসা আঃ এর সঙ্গে কথা বলতেন।

অতঃপর নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বাইতুল মুকাদ্দাসের পৌঁছান। যেখানে সকল নবী রাসূলগণ একত্রিত হন কেননা এই বায়তুল মুকাদ্দাস হচ্ছে সব নবী ও রাসুলের প্রাণকেন্দ্র। তখন সকল নবী রাসূলদের নেতা আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম নবী-রাসুলদের ইমাম হয়ে নামাজ আদায় করেন।

এরপর আমাদের প্রিয়নবী ঊর্ধ্বলোকে আরোহন করেন ও প্রথম আকাশে প্রবেশ করেন সেখানে হযরত আদম আঃ এর সাক্ষাৎ দুনিয়ার আকাশে আরোহন করে প্রিয়নবী দেখেন এক ব্যক্তি ডানে তাকিয়ে হাসছেন আর বামে তাকিয়ে কাটছেন জিব্রাইল আঃ নবীজির জিজ্ঞাসা জানালেন, ইনি হলেন হযরত আদম আঃ তিনি তার ডান দিকে জান্নাতি সন্তানদের দেখে হাসছে আর বাম পাশে জাহান্নামের সন্তানদের দেখে কাঁদছেন।

এভাবে দ্বিতীয় আকাশে সুদর্শন যুবক হযরত ইউসুফ আঃ তৃতীয় আকাশে হযরত ইয়াহিয়া ও জাকারিয়া আঃ চতুর্থ আকাশে হযরত ইদরিস আঃ পঞ্চম আকাশে হযরত হারুন আঃ, ষষ্ঠ আকাশে হযরত মুসা আঃ সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপরে সপ্তম আকাশে হযরত ইব্রাহিম আঃ এর সাথে সাক্ষাতে আকাশে বায়তুল মামুর এর সঙ্গে ঠেস দিয়ে বসে থাকা মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহিম আঃ কে দেখতে পান।

শব ই মেরাজ এর নামাজ

প্রিয় পাঠকগণ এখন আমরা শব ই মেরাজ এর নামাজ সম্পর্কে আলোচনা করব। আমরা জানি যে মুসলমানদের কাছে শব ই মেরাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। অনেক মুসলিম রয়েছে যারা শব ই মেরাজ উপলক্ষে নামাজ আদায় করে থাকে। সাধারণত তারা শব ই মেরাজ এর নামাজ সম্পর্কে জানতে চাই। তাদের জন্য নিচে শব ই মেরাজ এর নামাজ আলোচনা করা হলো।

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা শব ই মেরাজ উপলক্ষে ১০-১২ রাকাত নামাজ আদায় করে থাকেন। কিন্তু শব ই মেরাজ এর নামাজ সম্পর্কে তেমন কোন হাদীস খুঁজে পাওয়া যায় না। আমরা জানি যে যেকোনো নফল ইবাদত করা আমাদের জন্য অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। তাই আপনি যেকোন সময় নফল নামাজ আদায় করতে পারেন।

তবে শব ই মেরাজ কে উদ্দেশ্য করে কোন ধরনের নফল নামাজ পড়া উচিত নয়। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বলেছেন, " যে আমাদের ধর্মের কোন কিছু সংযোজন বা উদ্ভাবন করবে জাতার শরীয়তের অংশ নয় তা প্রত্যাখান হবে" { বুখারীঃ ১/৩৭১} তাহলে এই হাদীস থেকে জানা যায় যে যদি শব ই মেরাজ এর নামাজ না থাকে তাহলে নিজের মনগড়া নামাজ পড়া উচিত নয়।

শব ই মেরাজের আমল

প্রিয় পাঠকগণ উপরের আলোচনায় আমরা শব ই মেরাজ এর রোজা সম্পর্কে আলোচনা করেছি এখন আমরা শব ই মেরাজের আমল সম্পর্কে আপনাদের জানাবো। আমরা জানি যে শব ই মেরাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা। শুধুমাত্র আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর সাথে ঘটেছিল। তাই আমাদের অনেকেই শব ই মেরাজের আমল সম্পর্কে জানতে চাই তাদের জন্য নিচে শব ই মেরাজের আমল আলোচনা করা হলো।

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বলেন," এ রাতে নফল ইবাদত করবে ও দিনে রোযা পালন করবে" {ইবনে মাজাহ} অনেক মুসলিম ইবাদত-বন্দেগির মধ্যে দিয়েই রাত্রি উদযাপন করে থাকে। ইসলামে মিরাজের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে কেননা শব ই মেরাজ এর মাধ্যমে আমরা ইসলামের ফরয ইবাদত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পেয়েছি।

আরো পড়ুনঃ রজব মাসের কত তারিখে শবে মেরাজ - শবে মেরাজের বিস্তারিত ঘটনা

শব ই মেরাজ রাতে জাগ্রত থেকে আল্লাহ তাআলার ইবাদত করা তথা কোরআন তেলাওয়াত করা দূর পাঠ করা নফল নামাজ আদায় করা এগুলোর মধ্যে দিয়ে আপনি রাত্রি পালন করতে পারেন। কারণ এই রাতে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর কাছ থেকে ৫ ওয়াক্ত নামাজ উপহার পেয়েছিলেন।

বর্ণিত রয়েছে যে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম যখন মিরাজে ভ্রমণ করেছিলেন তখন তিনি রোজা অবস্থায় ছিলেন। তাই তার স্মরণে রোজা পালন করার মধ্যে অনেক ফজিলত রয়েছে। সে ক্ষেত্রে আপনি যদি চান তাহলে এই দিনটিতে রোজা পালন করতে পারেন।

আমাদের শেষ কথাঃ শব ই মেরাজ এর রোজা - শব ই মেরাজ এর ইতিহাস

প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে শব ই মেরাজ এর রোজা, শব ই মেরাজ এর ইতিহাস, শব ই মেরাজ এর ঘটনা, শব ই মেরাজের আমল সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে ইতিমধ্যে উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। যদি না করে থাকেন তাহলে অবশ্যই সম্পূর্ণ আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়ে নিন।২০৭৯১

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url