OrdinaryITPostAd

লাইলাতুল কদর কী? - লাইলাতুল কদর শব্দের অর্থ কি

পবিত্র মাহে রমজানের মধ্যে সবচেয়ে পবিত্র রাত হল লাইলাতুল কদরের রাত। লাইলাতুল কদর রমজানের শেষ ১০ দিন অর্থাৎ নাজাতের বিজোড় রাত্রি গুলোতে পালিত হয়। আমরা অনেকেই আছি যারা লাইলাতুল কদর কী? ও লাইলাতুল কদর শব্দের অর্থ কি তা জানি না। আজ আমরা লাইলাতুল কদর কী? তা নিয়েই আলোচনা করব।
চলুন আর দেরি না করে জেনে নেই লাইলাতুল কদর কী? ও লাইলাতুল কদর শব্দের অর্থ কি।

পেজ সূচিপত্রঃ লাইলাতুল কদর কী? - লাইলাতুল কদর শব্দের অর্থ কি

লাইলাতুল কদর কী?

পবিত্র শবে কদর বা লাইলাতুল কদর একটি মহিমান্বিত, ফজিলতপূর্ন ও বরকতময় রাত। এই রাতটি হাজার মাসের রাতের থেকেও উত্তম এবং এই রাতের ইবাদত হাজার বছরের ইবাদতের থেকেও উত্তম। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন-
তোমরা রমজানের শেষ ১০ দিনের বিজোড় রাত গুলোতে লাইলাতুল কদরের সন্ধান করো। কেননা এই রাতের ইবাদত হাজার বছরের ইবাদতের সমান। এই রাতে পবিত্র আল কুরআন নাজিল করা হয়েছে।

লাইলাতুল কদর শব্দের অর্থ কি?

কদর মানে তকদীর আর লাইলাতুল কদর অর্থ তকদীরের রাত বা ভাগ্য-রজনী। লাইলাতুল কদর আরবি শব্দ যার উর্দু, ফারসি, হিন্দি ও বাংলা অর্থ শবে কদর। পবিত্র কুরআন মাজীদে দেওয়া আছে- মহান আল্লাহ্‌ তায়ালা এই রাতে অর্থাৎ শবে কদরের রাতে তার প্রত্যেক সৃষ্টির জন্য আগামী ১ বছরের জন্য রুযী, মৃত্যু ও ঘটনা ঘটনের কথা লিখেন। 

শবে কদরের বিশেষ দোয়া | লাইলাতুল কদর কী 

পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবে কদরের দোয়া রয়েছে। পবিত্র শবে কদরে মহান আল্লাহ্‌ তায়ালার উপর বিশ্বাস রেখে সওয়াবের আশায় ইবাদত করলে পূর্বের সকল গুনাহ মহান আল্লাহ্‌ তায়ালা মাফ করে দেন। লাইলাতুল কদরের দোয়াটি হল-

আরবি- اللهم انك عفو تحب العفو فاعف عني 
উচ্চারণ- আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফয়া ফা'ফু আন্নি। 
অর্থ- হে আল্লাহ, আপনি বড়ই ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। তাই আমাকে ক্ষমা করে দিন।

শবে কদর হওয়ার সম্ভাবনা কোন রাতে | লাইলাতুল কদর শব্দের অর্থ কি

মহানবী (সাঃ) বলেছেন- আরবি রমজান মাসের শেষ ১০ দিনের বিজোড় রাত গুলোতে (যেমনঃ ২৫তম, ২৭ তম ও ২৯ তম) রাতে তোমরা লাইলাতুল কদর বা শবে কদরের সন্ধান কর। অর্থাৎ শেষ ১০ দিনের বিজোড় রাতের কত তম রাতে শবে কদর পালিত হবে তার কোন সুস্পষ্ট দলিল নেই। তবে বিভিন্ন হাদিস থেকে জানা যায় ২৭তম রাতে শবে কদর হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। 

এই বছর বাংলাদেশে শবে কদর ইংরেজি কত তারিখে পালিত হবে?

শবে কদর একটি মহিমান্বিত, বরকতময় ও ফজিলতপূর্ন রাত। এই রাতের ইবাদত হাজার বছরের ইবাদতের থেকেও উত্তম। প্রত্যেক বছরের ন্যায় এই বছরও মহান আল্লাহ্‌ তায়ালা বান্দাগন মহান আল্লাহ্‌ তায়ালার ইবাদতের মাধ্যমে উদযাপন করবে পবিত্র শবে কদরের রাত। 

এই বছর ২০২২ সালের রোজা যেহেতু ৩রা এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছিল সেই হিসাবে এই বছরের শবে কদর উদযাপিত হবে ২৮ এপ্রিল ২০২২ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে। এছাড়াও রমজানের শেষ ১০ দিনের বিজোড় রাতে অর্থাৎ ২১ রমজান ২২ এপ্রিল শুক্রবার, ২৩ রমজান ২৪ এপ্রিল রবিবার, ২৫ রমজান ২৬ এপ্রিল মঙ্গলবার, ২৭ রমজান ২৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ও ২৯ রমজান ৩০ এপ্রিল শনিবার ২০২২ দিবাগত রাতে শবে কদরের সন্ধান করা ও ইবাদত বন্দেগী করা উচিত।

রমজানের শেষ ১০ দিনের আমল ফর্মূলা | লাইলাতুল কদর কী

রমজান মাসের শেষ ১০ দিন অর্থাৎ নাজাতের ১০ দিন আমল করলে হাজার বছরের সমান সওয়াব পাওয়া যায়। তাই আমাদের এই ১০ দিন নিন্মে উল্লেখিত আমল গুলো করা উত্তম। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- ভালো কাজের পথ প্রদর্শনকারী আমলকারীর সমপরিমাণ সওয়াব পাবে কিন্তু আমলকারীর সওয়াবে কোন ঘাটটি হবে না। (মুসলিম ২৬৭৪)
  • প্রতিদিন এক টাকা করে দান করুন, যদি সেই দিনটি লাইলাতুল ক্বদরের মাঝে পড়ে, তবে আপনি ৮৪ বছর পর্যন্ত প্রতিদিন এক টাকা দান করার সমান সওয়াব পাবেন।
  • প্রতিদিন দু'রাকাত করে নফল সালাত আদায় করুন, যদি সেই দিনটি লাইলাতুল ক্বদরের মাঝে পড়ে, তবে আপনি ৮৪ বছর পর্যন্ত প্রতিদিন দু'রাকাত নফল সালাতের সমান সওয়াব পাবেন।
  • প্রতিদিন তিন বার করে সূরা ইখলাস পাঠ করুন, যদি সেই দিনটি লাইলাতুল ক্বদরের মাঝে পড়ে, তবে আপনি ৮৪ বছর পর্যন্ত প্রতিদিন এক খতম কুরআন তেলাওয়াতের সমান সওয়াব পাবেন। (সুবহানাল্লাহ)

আমরা কিভাবে লাইলাতুল কদর লাভ করব? | লাইলাতুল কদর কী

লাইলাতুল কদর লাভের সবচেয়ে ভালো ও সঠিক উপায় হলো রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফে বসা।
হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, মহানবী (সাঃ) বলেছেন- রমজানের শেষ ১০ দিনে যে ব্যাক্তি ইতিকাফে বসবে সে ব্যাক্তি দুইটি ওমরাহ্‌ ও দুইটি কবুল হজ্জ আদায়ের সমান সওয়াব পাবে।
আর যেহেতু ইতিকাফের মধ্যে শবে কদর পড়ে তাই সেক্ষেত্রে বেশী সওয়াব পাওয়া যায়।

হাদিসে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) লাইলাতুল কদরের রাত চেনার জন্য কিছু নিদর্শনের কথা বলেছেন, তা হলো-
  • শবে কদরের রাতে গভীর অন্ধকারে ছেয়ে যাবে না,
  • শবে কদরের রাত নাতিশীতোষ্ণ হবে,
  • শবে কদরের রাতে হালকা বাতাস প্রবাহিত হবে,
  • শবে কদরের রাতে মানুষ ইবাদত করে তৃপ্তি পাবে,
  • শবে কদরের রাতে বৃষ্টি বর্ষণ হবে,
  • মহান আল্লাহ্‌ তায়ালা কোন ইমানদার ব্যাক্তিকে স্বপ্নে হয়তো শবে কদরের কথা জানিয়ে দিতে পারেন,
  • শবে কদরের দিন সকালে হালকা আলোকরশ্নিসহ সূর্যদয় হবে, যেটা হবে পূর্নিমার চাঁদের মত।
শবে কদরের রাতে মহান আল্লাহ্‌ তায়ালা তা বান্দাদের নেক দোয়াসমূহ কবুল করেন। এই রাতে মহান আল্লাহ্‌ ও অধিক ফেরেস্তা পৃথীবিতে অবতরন করেন যা সকাল না হওয়া পর্যন্ত পৃথীবিতে শান্তি বিরাজ করে।

উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সাঃ) বলেছেন- আমি যদি জানতে পারি কোন রাতটি শবে কদর তাহলে আমি তখনই এই দোয়াটি পাঠ করব। দোয়াটি হলো-

আরবি- اللهم انك عفو تحب العفو فاعف عني 
উচ্চারণ- আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফয়া ফা'ফু আন্নি। 
অর্থ- হে আল্লাহ, নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। তাই আমাকে ক্ষমা করে দিন।(তিরমিযী)

শেষ কথাঃ লাইলাতুল কদর কী? - লাইলাতুল কদর শব্দের অর্থ কি

বন্ধুরা, আজ আমরা লাইলাতুল কদর কী? - লাইলাতুল কদর শব্দের অর্থ কি তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমাদের এই লাইলাতুল কদর কী? - লাইলাতুল কদর শব্দের অর্থ কি পোস্টটিতে লাইলাতুল কদর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
আশাকরি, আমাদের এই লাইলাতুল কদর কী? - লাইলাতুল কদর শব্দের অর্থ কি পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগবে, এবং আপনারা উপকৃত হবেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url