OrdinaryITPostAd

পহেলা বৈশাখ অনুচ্ছেদ রচনা ০৯টি - পহেলা বৈশাখ নিয়ে কিছু কথা

আসছে ১৪ই এপ্রিল ২০২২ পহেলা বৈশাখ। এই পহেলা বৈশাখ নিয়ে আমরা অনেক পহেলা বৈশাখ অনুচ্ছেদ রচনা, পহেলা বৈশাখ রচনা পড়েছি। আজ আমরা পহেলা বৈশাখ নিয়ে কিছু কথা লিখব। আশাকরি আপনারা শেষ পর্যন্ত আমাদের পহেলা বৈশাখ অনুচ্ছেদ রচনা পড়বেন।

চলুন আর দেরি না করে দেখে নেই পহেলা বৈশাখ অনুচ্ছেদ রচনা ও পহেলা বৈশাখ নিয়ে কিছু কথা।

পেজ সূচিপত্রঃ পহেলা বৈশাখ অনুচ্ছেদ রচনা - পহেলা বৈশাখ নিয়ে কিছু কথা

পহেলা বৈশাখ অনুচ্ছেদ রচনা

পহেলা বৈশাখ বাংলা বছরের প্রথম মাসের এবং প্রথম দিন। এই দিন বিভিন্ন ধরনের ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান ও উৎসবের মধ্যে দিয়ে পালিত হয়। এই দিনটি পান্তা-ইলিশের মধ্যে দিয়ে শুরু হয়, তারপর বিভিন্ন ধরনের পশুপাখি, হাতি-ঘোড়ার মুখোশ নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা করে। এই দিনে ঢাকার রমনার বটমূল সহ বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, গান, বক্তৃতা, নাটকের আয়োজন করা হয়। এছাড়াও, বৈশাখী মেলা শুরু হয়। এই মেলা ১ মাস পর্যন্ত থাকে।

আরও পড়ুনঃ পহেলা বৈশাখ ২০২২ মেসেজ

গ্রামের ও শহরের বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা এই দিনে হাল খাতা খোলে এবং সবাইকে মিষ্টি বিতরন করে। সকলে এইদিনে নতুন সাদা ও লাল রঙের জামা-কাপড় পরিধান করে, মেয়েরা লাল-সাদা শাড়ি ও পুরুষরা পাঞ্জাবি পড়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যায়। পহেলা বৈশাখে প্রায় সকল স্কুল-কলেজে ছোট-খাটো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। এছাড়াও, বৈশাখ মাসের প্রথম দিন থেকে পরবর্তী ৩ দিন ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীরা "বৈসাবী" উৎসব পালন করেন।

পহেলা বৈশাখ রচনা | পহেলা বৈশাখ রচনা class 5 | বাংলা নব্বর্ষ রচনা hsc | পহেলা বৈশাখ অনুচ্ছেদ রচনা

নিচে পহেলা বৈশাখ নিয়ে রচনা লিখা হলঃ

সূচনাঃ বাংলা বছরের প্রথম মাস বৈশাখ মাস আর বৈশাখ মাসের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ। এই দিন নানা ধরনের উৎসব-অনুষ্ঠান এর মধ্যে পালিত হয়। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে এই দিনটি নববর্ষ নামে পরিচিত। এটি প্রত্যার বাঙ্গালির জন্য আনন্দ-উৎসবের দিন। বাঙালিরা প্রতি বছর এই দিনটি বিভিন্ন উৎসবের মধ্যে দিয়ে বরণ করে নেয়।

নববর্ষ উদযাপনের বৈশিষ্ট্যঃ পহেলা বৈশাখ প্রতিটি বাঙ্গালির অতীতের সকল দুঃখ-কষ্ট, রাগ-অভিমানকে দূর করে দিয়ে সকলকে একই সুতায় বেঁধে দেয়। এই দিনে পুরনো সকল বন্ধু-বান্ধব, আত্নীয়-স্বজন একসাথে হয়। সকলে নতুন পোশাক পড়ে রমনার বটমূলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গিয়ে নৃত্য, সঙ্গীত, আবৃতি সহ বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। এছাড়াও এই দিনে প্রত্যেক ব্যবসায়ীরা তাদের গত বছরের হাল খাতা হিসাব-নিকাশ করে বন্ধ করে ও নতুন করে হাল খাতা খোলে এবং সবাইকে মিষ্টি বিতরন করে।

নববর্ষের গুরুত্ব ও তাৎপর্যঃ নববর্ষের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। এই দিন বাঙ্গালীরা নববর্ষের আগমনী গান "এসো হে বৈশাখ এসো এসো" এর সাথে নববর্ষকে বরণ করে নেয়। এটি বাঙ্গালীর প্রানের দিন যা বাঙ্গালীর সত্তার সাথে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে। বৈশাখ সকলের মনের সকল বিসাদকে ধুয়ে-মুছে দেয়। বৈশাখ এমন একটি উৎসব যা নির্দিষ্ট কোন ধর্ম বা বর্নের মধ্যে সীমাবদ্ধ না। এটি সকল বাঙ্গালী জাতির উৎসব।

নববর্ষের জাতীয় কর্মসূচিঃ বাংলা বৈশাখ মাসের ১ তারিখ পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ পালিত হয়। এই দিনে বাংলা একাডেমী, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী, বাংলাদেশ শিশু একাডেমী, ছায়ানট, বুলবুল ললিতকলা একাডেমী, নজ্রুল ইনস্টিটিউট, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর সহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক কর্মসূচি পালন করে।

নববর্ষের বৈশাখী মেলাঃ নববর্ষের প্রথম দিন থেকে সারা বৈশাখ মাসব্যপী বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলায় থাকে বিভিন্ন ধরনের বাঙ্গালীর ঐতিহ্য। যেমনঃ কৃষিজাত দ্রব্য, কারূপণ্য, লোকশিল্পজাত পণ্য, কুটির শিল্পজাত পণ্য, হস্তশিল্পজাত পণ্য, মৃৎশিল্পজাত পণ্য। এছাড়া শিশুদের বিভিন্ন ধরনের খেলার জিনিস, মহিলাদের সাজের জিনিস। এচাড়াও মেলায় থাকে বিভিন্ন ধরনের খাবার, মুড়ি, মুড়কি, সন্দেশ ছাড়া আরও অনেক কিছু। থাকে নাগরদোলা, পুতুল খেলা, সার্কাস, গম্ভীরা, সারি ও জারি গান, নাটক, ইত্যাদি।

উপসংহারঃ নববর্ষ সকল মানুষের কাছে নতুন জীবনের দ্বার উন্মোচিত করে। এই দিন সকল মানুষ জীবনের সকল দঃখ-কষ্ট ভূলে জীবনকে আনন্দ উল্লাসের পরিপূর্ণ করে। আসুন আমরা সকল দাঙ্গা বিভেদ ভূলে যায় এবং আমরা সবাই চাই নতুন বছর আমাদের জীবনে সকল সুখ-সম্ভার নিয়ে আসুক।

পহেলা বৈশাখ অনুচ্ছেদ for class 7 | বাংলা নব্বর্ষ অনুচ্ছেদ for class 8 | পহেলা বৈশাখ অনুচ্ছেদ for class 9 | পহেলা বৈশাখ অনুচ্ছেদ for class 10 | বাংলা নব্বর্ষ অনুচ্ছেদ ssc | পহেলা বৈশাখ অনুচ্ছেদ রচনা

বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ। বাঙালির অতীত ও হাজার বছরের সংস্কৃতিতে এই দিনটি  অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনটিতে দেশের সব জায়গায় বিভিন্ন উৎসব-অনুষ্ঠানে মধ্য দিয়ে পালিত হয়। পহেলা বৈশাখের ঋতু তার মহান মূল্য ও গুরুত্বের জন্য দেশব্যাপী একটি বিরাট উৎসবে পরিণত হয়েছে। সকলে অনেক আনন্দ এবং আগ্রহের সাথে দিনটি উদযাপন করে। দিনটি উদযাপনের জন্য পুরুষ এবং মহিলা উভয়ই নতুন পোশাক পড়ে। বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরি করে এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও বিনোদনমূলক কার্যক্রমের আয়োজন করে। এই দিনটি সরকারি ছুটির দিন। পুরনো সংস্কৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যবসায়ী ও দোকানদাররা হালখাতা খুলে ক্রেতা ও ক্রেতাদের মিষ্টি খাওয়ায়।

বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক দল অভিনব পরিবেশনার মাধ্যমে এই দিনটি পালন করে। ছায়ানট, একটি প্রধান, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ভোরবেলা রমনা বটমূলে দিনের প্রথম অনুষ্ঠান শুরু হয়। বাংলাদেশ বেতার এবং বিটিভিতে বৈশাখের বিশেষ অনুষ্ঠান পরিবেশন করে এবং বিভিন্ন পত্রিকায় বৈশাখের খবর প্রকাশ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঐতিহ্যগতভাবে বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ বের করে। এ দিনে শহুরে ও গ্রামীণ উৎসবের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। শহরাঞ্চলে, লোকেরা সংগীতানুষ্ঠান, লোকনৃত্য এবং পান্তা-ইলিশ এবং পিঠার মতো অনেক ধরণের খাবারের অনুষ্ঠান উপভোগ করে। তবে দেশীয় এলাকায় হাট-বাজারে নববর্ষের অনেক প্রদর্শনী হয়।
পুতুল খেলা তরুণদের সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করে যখন প্রাপ্তবয়স্করা লাঠির লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা লাভ করে। সার্কাস এবং মেরি-গো-রাউন্ড পছন্দ সকল মানুষের। বিভিন্ন ধরনের ধাতব অলঙ্কার, সরঞ্জাম এবং শো-পিস কিনতে নারীরা ভিড় করে দোকানে। এছাড়াও, পহেলা বৈশাখের দ্বারপ্রান্তে দেশের কিছু কিছু এলাকায় মানুষ নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। সচ্ছল পরিবারের গৃহিণীরা সুস্বাদু খাবার রান্না করেন। দরিদ্র বাবা-মারাও তাদের নিজেদের মধ্যকার সাথে দিনটি পালন করার চেষ্টা করেন। এই দিনের গুরুত্ব অপরিসীম।

বাংলা নববর্ষ রচনা ১০০০ শব্দ | পহেলা বৈশাখ অনুচ্ছেদ রচনা

নিচে বাংলা নববর্ষ রচনা ১০০০ শব্দ দেওয়া হলঃ

সূচনাঃ পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ বাঙালী সংস্কৃতিরশ পালিত অন্যতম একটি ঐতিহ্য। এটা বাংলাদেশের প্রধান উৎসব যা বাঙ্গালির সংস্কৃতির শিকড়ের সাথে বাঙ্গালির বন্ধনকে প্রতিনিধিত্ব করে। এটি বাংলা বছরের ও বাংলা মাসের প্রথম দিন এবং ইংরেজি বছরের ১৪ এপ্রিল। বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা এবং বিশ্বব্যাপী সমস্ত বাঙালিদের মধ্যে পালিত হয় এই বাংলা নববর্ষ। এছাড়াও পহেলা বৈশাখের মূল আকর্ষণ "পান্তা-ইলিশ"। যা এই দিনে ধনী-গরীব নির্বিশেষ সকলে খায়।

পহেলা বৈশাখের পিছনের ইতিহাসঃ পহেলা বৈশাখের উৎস সম্রাট আকবরের মুঘল শাসনামল থেকে শুরু হয়। সেই সময় হিজরি ক্যালেন্ডার অনুসারে সমস্ত কৃষি কর আদায় করা হত, যা ফসল কাটার চক্রের সাথে ভিন্ন ছিল। এ কারণে কৃষকরা মৌসুমের বাইরে কর দিতে হিমশিম খেত। তাই কর আদায়ের ন্যায্যতার জন্য সম্রাট আকবর ক্যালেন্ডারের সংস্কার করার নির্দেশ দেয়।

নতুন ক্যালেন্ডারের নতুন বছরটি "বাংলা বর্ষ" হিসাবে পরিচিত হয়, যা সাধারণত "বঙ্গাব্দ" নামে পরিচিত। বাংলা বছরের শেষ মাসের শেষ দিনে অর্থাৎ, চৈত্রের শেষ দিন সমস্ত বকেয়া, কর এবং ঋণ পরিশোধ করার রেওয়াজ ছিল। পহেলা বৈশাখের দিনে বাড়িওয়ালারা তাদের ভাড়াটিয়াদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করতেন এবং ব্যবসায়ী ও দোকানদাররা “হালখাতা” নামে একটি নতুন হিসাবের খাতা খুলতেন এবং তাদের পুরানো খাতা গুলি তালাবদ্ধ করে রাখতেন। তখন থেকেই মানুষ আনন্দ-উল্লাসের সাথে নতুন বছর উদযাপন করে যার নাম দেওয়া হয় "বর্ষবরণ"।

যেভাবে পহেলা বৈশাখ উৎসবে পরিনত হলোঃ ১৯১৭ সালে আধুনিক নববর্ষের নিদর্শন হিসেবে পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা বার্তা হিসেবে "শুভ নববর্ষ" উদ্ভাবন করা হয়। যা ব্রিটিশদের জয়লাভ কামনা করে পূজা এবং হোম কির্তনের আয়োজন করা হয়েছিল। আর তারপর থেকেই শুরু করা হয় আধুনিক নববর্ষ পালন।

বৈশাখের গুরুত্বঃ ঢাকায় পহেলা বৈশাখের সবচেয়ে জমকালো উদযাপন হয় কিন্তু আজকাল ঢাকা ছাড়াও অন্যান্য সকল জেলায় খুব জাঁকজমকভাবে পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ পালিত হয়। বৈশাখ  উদযাপন শুরু হয় ভোরবেলা রমনায় বটগাছের নিচে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা, ‘এষো হে বৈশাখ’ গানের মাধ্যমে ছায়ানটের সুন্দর পরিবেশনার মাধ্যমে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে আয়োজিত ঐতিহ্যবাহী বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সকালের দিকে সকলে মিলে রাস্তায় নেমে পড়ে।

শোভাযাত্রায় প্রতিবছর দেশের সংস্কৃতি ও রাজনীতির সঙ্গে প্রাসঙ্গিক একটি ভিন্ন ধরনের থিম থাকে। লোকেরা রঙিন মুখোশ এবং ভাস্কর্য সাথে নিয়ে আনন্দ ও চেতনায় ফেটে মিছিলে অংশগ্রহণ করে। মহিলারা লাল পাড়ের সাদা শাড়ি এবং পুরুষরা পাঞ্জাবি পায়জামা পরিধান করে। যা আমাদের বাংলাদেশী সংস্কৃতির ও ঐতিহ্য বহন করে। মেয়েরা রঙিন ফুল দিয়ে তাদের চেহারা শোভা পায় এবং শিশু ও বড়রা রং দিয়ে তাদের মুখে ছবি আঁকে। হাজারো মানুষের ভিড়ে নগরীর রাস্তাগুলো ব্যস্ত হয়ে ওঠে। এবং এই দিনে সবাই একে অপরকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানায়।

নববর্ষ উদযাপনের বৈশিষ্ট্যঃ পহেলা বৈশাখ প্রতিটি বাঙ্গালির অতীতের সকল দুঃখ-কষ্ট, রাগ-অভিমানকে দূর করে দিয়ে সকলকে একই সুতায় বেঁধে দেয়। এই দিনে পুরনো সকল বন্ধু-বান্ধব, আত্নীয়-স্বজন একসাথে হয়। সকলে নতুন পোশাক পড়ে রমনার বটমূলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গিয়ে নৃত্য, সঙ্গীত, আবৃতি সহ বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। এছাড়াও এই দিনে প্রত্যেক ব্যবসায়ীরা তাদের গত বছরের হাল খাতা হিসাব-নিকাশ করে বন্ধ করে ও নতুন করে হাল খাতা খোলে এবং সবাইকে মিষ্টি বিতরন করে।

বাংলা নববর্ষ যেভাবে পালিত হয়ঃ বাংলা নববর্ষের ও ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য একটি অংশ হয়ে উঠেছে এই পহেলা বৈশাখের বৈশাখী মেলা। শহর ও গ্রাম সব জায়গাতেই বৈশাখী মেলাকে ঘিরে সব ধর্মের ও সব বয়সের মানুষ ভিড়। বিভিন্ন ধরনের খেলনা, শো-পিস, অভিনব জিনিসপত্র ইত্যাদি প্রদর্শনের জন্য বিভিন্ন স্টল তৈরি করা হয়। নাগরদোলা এই মেলার প্রধান আকর্ষণ। সব বয়সের মানুষ নাগরদোলায় ওঠে। 
সুন্দর সুন্দর হাতে তৈরি বিভিন্ন ধরনের মুখোশ এবং ঐতিহ্যবাহী কৃষিজাত দ্রব্য, কারূপণ্য, লোকশিল্পজাত পণ্য, কুটির শিল্পজাত পণ্য, হস্তশিল্পজাত পণ্য, মৃৎশিল্পজাত পণ্য ইত্যাদি বিক্রি করা হয়। এবং বাঙ্গালীরা ঐতিহ্যবাহী খাবার যেমন "পান্তা ভাত, কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ এবং ভাজা ইলিশ মাছ" খেয়ে বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি তাদের ভালবাসা প্রকাশ করে। ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন পিঠা, বাতাসা, মুড়ি-মুড়কি এই মেলায় বিক্রি হয় যা আমাদের মুখে গ্রামীণ স্বাদ ফিরিয়ে আনে। এছাড়াও, যাত্রাপালা, সুফি ও লোকশিল্পীদের দ্বারা জারি, সাড়ি গান পাপেট শো এবং ম্যাজিক শো পরিবেশন করা হয় যা মানুষকে আনন্দ দেয়।
গ্রামে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠানের মধ্যে মুন্সীগঞ্জে ষাঁড়ের দৌড়, চট্টগ্রামে কুস্তি, নৌকাবাইচ, মোরগ লড়াই, পায়রা দৌড় ইত্যাদি অনুষ্ঠিত হয়।

বিভিন্ন দেশে নববর্ষঃ বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময়ে পালিত হয় নববর্ষ। যেমনঃ পহেলা জানুয়ারি পালিত হয় খ্রিস্টানদের নববর্ষ যা এখন আমাদের দেশের কিছু মানুষও পালন করে। ধর্মীয় দিক থেকে মুহাররমের আশুরা থেকে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিমদের নববর্ষ পালিত হয়। রাশ ইহুদিদের নববর্ষ, তেত হন ভিয়েতনামিদের নববর্ষ এবং নওরোজ হল ইরানিদের নববর্ষ। নববর্ষকে যে যেই নামের ডাকুক না কেন সব নববর্ষেই সবার একটাই লক্ষ্য জীবনের সকল ক্লান্তি, গ্লানি, হতাশার অবসান হোক এবং নতুন করে নতুন বছরের ন্যায় জীবনটা আনন্দ উল্লাসে ভরে উঠুক। কবিগুরু বলেছেন-
নিশি অবসান, ওই পুরাতন
বর্ষ হল গত!
আমি আজি ধূলিতলে এ জীর্ণ জীবন
করিলাম নত।
বন্ধু হও, শত্রু হও,  যেখানে যে কেহ রও
ক্ষমা করো আজিকার মতো
পুরাতন বরষের সাথে
পুরাতন অপরাধ যত।
বাংলা নববর্ষের তাৎপর্যঃ বাংলা নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ যা আমাদের বাঙ্গালির পরিচয় বহন করে। এটি আমাদের ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ সকলের প্রানের উৎসব। এখানে নেই কারও ভেদাভেদ। এখানে সকলের একটাই পরিচয় সকলে এক সূত্রে বাঁধা আমার বাঙালি। বাংলা নববর্ষের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আমরা বাংলার আসল রূপটি খুঁজে পায়। নববর্ষের অনুষ্ঠানে গ্রাম বাংলার রূপটিকে সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলে কিশোর-কিশোরী ছেলে-মেয়েরা। নববর্ষ আমাদের সকল পিছুটান, সকল খারাপ সময়, সকল খারাপ অভিজ্ঞতা কাটিয়ে নতুন করে এগিয়ে চলার প্রেরণা দেয় ও উজ্জীবিত করে। দুঃখের মধ্যেও বাঙ্গালী কবি বলেছেন-
"হে চির নতুন আজি এ দিনের প্রথম গানে
জীবন আমার উঠুক বিকশি তোমার গানে।"
বৈশাখের অপকারিতাঃ পহেলা বৈশাখ যেমন মানুষের জীবনে সুখ-আনন্দ, উল্লাস, গান -বাজনা, নিয়ে এসেছে তেমনি করে মানুষের দুঃখও বয়ে নিয়ে আসে। বাংলাদেশে ষড় ঋতুর দেশ। হওয়ায় বাংলা বছরের সাথে ঋতুও আসে। বেশী ভাগ সময় পহেলা বৈশাখের আগে থেকে আবার বৈশাখের দিনে শুরু হয় প্রচন্ড কালবৈশাখী ঝড়। এই ঝড়ে গরীবের বেহাল দশা হয়। প্রচন্ড ঝড়ে গরীবের বাড়ি-ঘর নষ্ট হয়ে বা উড়ে যায়, রাস্তা-ঘাটে, বাড়ির উপর বড় বড় গাছপালা ভেঙ্গে পড়ে। অনেক মানুষের প্রানহানি হয়। অনেকে গৃহহীন হয়। ফসলি জমিগুলো পানিতে ডুবে যায়। এই সময় আম-কাঠাল, জাম গাছে কুড়ি হয় কিন্তু ঝড়ের প্রভাবে সেসব নষ্ট হয়ে যায়। অনেক সময় নদীর পানি বেড়ে যায় যার ফলসরূপ নদী ভাঙ্গন হয় এবং তাতে প্রান যায় অনেকের। এছাড়াও আরও অনেক ধরনের অপকারিতা আছে এই বৈশাখ মাসের।
উপসংহারঃ পহেলা বৈশাখ একটি রঙিন দিন যা আমাদেরকে আমাদের সংস্কৃতি এবং আমাদের ঐতিহ্যেকে মনে করিয়ে দেয়। এ উৎসবটি বাঙালির জাতীয় চিন্তা-চেতনা, কৃষ্টি-কালচারের এক বিশেষ দিক; যা ধর্ম-বর্ণ ও সকল সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে। এভাবেই পহেলা বৈশাখ প্রতি বছর আমাদের জীবন থেকে গত এক বছরের সকল খারাপ দূরে সরিয়ে নতুন জীবন উপহার দিক। এবং এভাবেই পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ বাংলাদেশের গ্রামীন ঐতিহ্যকে বার বার ফিরিয়ে আনুক।

পহেলা বৈশাখ নিয়ে কিছু কথা | পহেলা বৈশাখ অনুচ্ছেদ রচনা

পহেলা বৈশাখের আরেক নাম বাংলা নববর্ষ। যা প্রতিটি বাঙ্গালির নিজস্ব উৎসব। এই দিনে ঢাকার রমনার বটমূলে সবচেয়ে বড় করে বর্ষবরণের উৎসব পালন করা হয়। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন জায়গাতে বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে পালিত হয় বাংলার নববর্ষ। বাঙ্গালির হালখাতা, নৃত্য, সঙ্গীত, আবৃতি, নাটক, গম্ভীরার মাধ্যমে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকে। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে বৈশাখী মেলারও আয়োজন করা হয়। এরকম আরও বিভিন্ন আয়োজনে সেজে ওঠে বাংলার ঐতিহ্য এই বাংলা পহেলা বৈশাখ।

শেষ কথাঃ পহেলা বৈশাখ অনুচ্ছেদ রচনা - পহেলা বৈশাখ নিয়ে কিছু কথা

বন্ধুরা, আজ আমরা পহেলা বৈশাখ অনুচ্ছেদ রচনা - পহেলা বৈশাখ নিয়ে কিছু কথা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমাদের এই পহেলা বৈশাখ অনুচ্ছেদ রচনা, পহেলা বৈশাখ নিয়ে কিছু কথা পোস্টে পহেলা বৈশাখ রচনা, পহেলা বৈশাখ রচনা class 5, পহেলা বৈশাখ অনুচ্ছেদ for class 7, বাংলা নব্বর্ষ অনুচ্ছেদ for class 8, পহেলা বৈশাখ অনুচ্ছেদ for class 9, পহেলা বৈশাখ অনুচ্ছেদ for class 10, বাংলা নব্বর্ষ অনুচ্ছেদ ssc, বাংলা নব্বর্ষ রচনা hsc, বাংলা নববর্ষ রচনা ১০০০ শব্দ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

ট্যাগ সমূহঃ পহেলা বৈশাখ অনুচ্ছেদ রচনা এবং পহেলা বৈশাখ নিয়ে কিছু কথা। পহেলা বৈশাখ রচনা, পহেলা বৈশাখ রচনা class 5, পহেলা বৈশাখ অনুচ্ছেদ for class 7, বাংলা নববর্ষ অনুচ্ছেদ for class 8, পহেলা বৈশাখ অনুচ্ছেদ for class 9, পহেলা বৈশাখী অনুচ্ছেদ for class 10, বাংলা নববর্ষ অনুচ্ছেদ ssc, বাংলা নববর্ষ রচনা hsc, বাংলা নববর্ষ রচনা ১০০০ শব্দ।

আশা করি, আমাদের এই পহেলা বৈশাখ অনুচ্ছেদ রচনা - পহেলা বৈশাখ নিয়ে কিছু কথা পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগবে। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url