OrdinaryITPostAd

সেরা ১০টি উইন্ডোজ অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার

পৃথিবীতে বর্তমানে ১ বিলিয়নেরও বেশি মানুষ উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করেন। উইন্ডোজ টেন কে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ অপারেটিং সিস্টেমও বলা চলে। এমনকি উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের চির-প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাপলও স্বীকার করেছে যে, উইন্ডোজ ১০ ম্যাক ওএস এর তুলনায় ৪গুণ বেশি জনপ্রিয়। উইন্ডোজের এমন কদরের কারণ হল সাপোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশনের সংখ্যা। উইন্ডোজে আপনি পৃথিবীর প্রায় সকল অ্যাপ্লিকেশনই ব্যবহার করতে পারবেন। আর উইন্ডোজের এমন জনপ্রিয়তার কারণে সফটওয়্যার ডেভেলপাররাও তাদের সব সফটওয়্যারের উইন্ডোজ সংস্করণ তৈরি করে থাকেন

উইন্ডোজের এমন জনপ্রিয়তার কারণে আমরা একরকম নিশ্চিন্ত হয়েই বলতেই পারি আপনি একজন উইন্ডোজ ইউজার। তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কয়েকটি উইন্ডোজ অ্যাপ্লিকেশন ও তাদের ব্যবহার সম্পর্কে।

1. Franz (ফ্র্যাঞ্জ)

Franz: প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গার পর আপনি কম্পিউটারে নিশ্চয় জিমেইল, ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি সাইটে প্রবেশ করে থাকেন। এভাবে প্রতিদিন একাধিক সাইটে প্রবেশ করা আসলেই বিরক্তিকর। সেজন্য আপনি ব্যবহার করতে পারেন এই ফ্র্যাঞ্জ অ্যাপ্লিকেশনটি। ফ্র্যাঞ্জ মূলত একটি মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশন যেটি ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, জিমেইল ইত্যাদিকে একটিমাত্র স্ক্রিনে রেখে আপনাকে সব একসাথে ব্যবহার করার সুযোগ দেয়। মাত্র ১৪৬ মেগাবাইটের এই অ্যাপ্লিকেশনটি আপনি বিনামূল্যেই ব্যবহার করতে পারবেন। তবে ফ্রি সংস্করণে আপনাকে নির্দিষ্ট সময় পরপর ১০-১৫সেকেন্ডের জন্য মেসেজিং বন্ধ রেখে অ্যাড দেখতে হবে। অ্যাপ্লিকেশনটির প্রিমিয়াম সংস্করণ ব্যবহার করার জন্য আপনার খরচ করতে হবে প্রায় ৩৭০ টাকা।

সুবিধা:

  • প্রয়োজনীয় সকল মেসেঞ্জিং সাইটগুলো একসাথে পাবার ফলে সময় বাঁচে
  • এই অ্যাপ্লিকেশনের বিল্ট-ইন স্পেল ও গ্রামার চেকার আপনার পাঠানো ইমেইল বা যেকোনো মেসেজের ভুলভ্রান্তি ধরে দিতে সাহায্য করবে 

অসুবিধা:

  • ফ্রি ভার্সনের অ্যাডগুলো বেশ বিরক্তিকর

2. Wox (বক্স)

Wox: বক্স মূলত একটি সার্চ বক্স। তবে এটি কোন সাধারণ সার্চ বক্স নয়। এই বক্সটিতে আপনি আপনার পিসির ফাইল থেকে শুরু করে গুগল বা উইকিপিডিয়াতে সার্চ করা সহ যেকোনো ক্যালকুলেশন, মানি কনভার্টিং সবই আপনি করতে পারবেন। অ্যাপ্লিকেশনটির ইউআই খুবই সাধারণ একটি চারকোণা বক্স, যেটি আপনি যেকোনো স্ক্রিনে alt + space শর্টকাট ব্যবহার করে আনতে পারবেন। উপরন্তু এই অ্যাপ্লিকেশনটির সাইজ অনেক কম এবং এটি একেবারে ফ্রি। এমনকি আপনি অ্যাপ্লিকেশনটির সোর্স কোডও কাস্টমাইজ করতে পারবেন।

সুবিধা:

  • শুধুমাত্র ডেক্সটপ থেকেই আপনি যেকোনো কিছু করতে পারবেন
  • বক্স এর সার্চ এলগরিদম অনেক সাবলীল, সেজন্য খুব তাড়াতাড়ি সার্চ কমপ্লিট হয়

অসুবিধা:

  •  অ্যাপ্লিকেশনটি পাইথন ল্যাঙ্গুয়েজে লেখা হয়েছে বলে স্টার্টআপের সময়ে প্রচুর র‍্যাম ইউজ করে

3. Sound Switch (সাউন্ড সুইচ)

Sound Switch: আপনি যদি একাধিক সাউন্ড আউটপুট ডিভাইস (যেমন: স্পিকার, তারযুক্ত হেডফোন, ব্লুটুথ হেডফোন, ব্লুটুথ স্পিকার ইত্যাদি) ব্যবহার করে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে বিভিন্ন ডিভাইসের কোনটি তে আউটপুট নেবেন সেটি ঠিক করার জন্য অনেক সেটিংস ঘাঁটাঘাঁটি করতে হয়। আপনার জন্যেই এই সাউন্ড সুইচ অ্যাপ্লিকেশনটি। মাত্র ৩ এমবি সাইজের এই ফ্রি অ্যাপ্লিকেশনটি আপনার সাউন্ড আউটপুট নিয়ে সব সমস্যার সমাধান করে দেবে। এমনকি আপনি যেকোনো স্ক্রিন থেকে শুধুমাত্র শর্টকাট ব্যবহার করে সাউন্ড ডিভাইস বদলাতে পারবেন।

সুবিধা:

  •  খুবই ছোট সাইজের অ্যাপ্লিকেশন বলে আপনাকে র‍্যাম বা স্টোরেজ নিয়ে কোন চিন্তা করতে হবে না।

4. SandBoxie (স্যান্ডবক্সি)

SandBoxie: আপনি যদি কোন টেক ব্লগার বা কোন ডেভেলপার বা কোন সফটওয়্যারের বেটা টেস্টার হয়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয় আপনাকে অনেক অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করতে হয়। মাঝে মাঝে এমনও হতে পারে যে নতুন ইনস্টল করা কোন সফটওয়্যার আপনার কম্পিউটার টার ফাইলের বারোটা বাজিয়ে দিল। আসলে কোন নতুন সফটওয়্যারকেই চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করতে নেই। এজন্য সেগুলোকে ইনস্টল করতে হয় কোন ভার্চুয়াল বক্সে। স্যান্ডবক্সি একটি ভার্চুয়াল বক্স যেটি ফ্রি এবং বেশ সুবিধাজনক। কারণ অধিকাংশ ভার্চুয়াল বক্সগুলোই অনেক বড় আকারের হয়, যার জন্য আপনার কম্পিউটার সহজেই স্লো হয়ে যেতে পারে। স্যান্ডবক্সি এর সাইজ মাত্র ২.৫৬ এমবি। এটি প্রাথমিক ভাবে ফ্রি, তবে যদি আপনি একইসাথে দুই বা ততোধিক সফটওয়্যার রান করাতে চান তাহলে আপনাকে খরচ করতে হবে ৩৯.৯২ ডলার বা প্রায় ৩৩৮০টাকা। হ্যাঁ প্রিমিয়াম ভার্সনের দাম অনেক। তবে আপনি ফ্রি টা ব্যবহার করতে পারেন নিশ্চিন্তে। 

সুবিধা:

  •  অনেক কম সাইজ
  • অনেক বেশি কার্যকরী ও সহজ  

অসুবিধা:

  •  প্রিমিয়াম ভার্সনের দাম অনেক বেশি

5. Chocolaty (চকলেটি)

Chocolaty: প্রতিবার উইন্ডোজ ইনস্টল করার পরে যে ঝামেলার মুখোমুখি হই সেটা হল নতুন করে সবগুলো অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করা। এ ঝামেলা থেকে বাঁচার জন্য ব্যবহার করতে পারেন এই চকলেটি অ্যাপ্লিকেশনটি। চকলেটি বেসিক্যালি একটা প্যাকেজ ম্যানেজার সফটওয়্যার, যেটিতে আপনি cmd দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। এই অ্যাপ্লিকেশনটি বেশ কাজের হলেও এটি একেবারেই ফ্রি। চকলেটিতে আপনি সর্বমোট ৮,৮০,৬৪১টি সফটওয়্যার ইনস্টল করার সুযোগ পাবেন। অবশ্য চকলেটি তে আপনি ফ্রি সফটওয়্যারগুলোই ইনস্টল করতে পারবেন। আর কোন প্যাকেজ ডাউনলোড করবেন তার উপরে নির্ভর করে চকলেটি এর সাইজ কমবেশি হয়। 

সুবিধা:

  • সফটওয়্যার ইনস্টলেশন তাড়াতাড়ি করে অনেক সময় বাঁচিয়ে দেয়
  • চকলেটি নেটওয়ার্ক ইনস্টল সাপোর্ট করে, সেজন্য আলাদা করে ইনস্টলেশন ফাইল ডাউনলোড করতে হয় না

অসুবিধা: 

  • কোন ফাইল ডিলিট বা নষ্ট হয়ে গেলে চকলেটি সেটাকে ফিক্স করতে পারে না
  • ইন্টারনেট ছাড়া ব্যবহার করা সম্ভব না

6. Simple Sticky Notes (সিম্পল স্টিকি নোটস)

Simple Sticky Notes: উইন্ডোজের একটা নিজের স্টিকি নোটস সফটওয়্যার আছে সত্যি কিন্তু সেটি খুব বেশি কাজের নয়, বিশেষ করে উইন্ডোজ ১০ এর স্টিকি নোটসটা একেবারেই ফালতু ধরণের। অন্যদিকে এই সিম্পল স্টিকি নোটস অনেক কম সাইজের (১.৮১এমবি) আবার অনেক সুবিধাজনকও।

সুবিধা:

  • একেবারেই লাইট-ওয়েট
  • শর্টকাট ব্যবহার করে যেকোনো উইন্ডো তে নোটস গুলোকে আনা যায়

7. Sharp Keys (শার্প কী)

Sharp Keys: আপনার কীবোর্ডের CAPS LOCK, BACKSPACE, SHIFT এসব বাটন গুলো কি কাজে ব্যবহার করেন? ডকুমেন্ট এডিটিং ছাড়া তো এসব বাটন গুলো একেবারেই অপ্রয়োজনীয়। তবে আপনি শার্প কী অ্যাপ্লিকেশন টি ব্যবহার করে এসব বাটন গুলোকে বেশ প্রোডাক্টিভ ভাবে ব্যবহার করতে পারবেন। যেমন, আপনি ক্যালকুলেটর কে যদি CAPS LOCK বাটনের সাথে সংযুক্ত করে দেন তবে আপনি যেকোনো উইন্ডো থেকেই CAPS LOCK প্রেস করে ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে পারবেন। এভাবে আপনার জন্য সুবিধাজনক ভাবে বিভিন্ন শর্টকাট সিলেক্ট করতে দেয় এই শার্প কী। আবার আপনি যদি প্রোগ্রামার হয়ে থাকেন তাহলে আপনি আপনার SHIFT বা CAPS LOCK বাটন কে সেমিকোলন (;) এ রি-ম্যাপ করতে পারেন, এতে কোডিং এর অনেক সুবিধা হবে। 

8. Sejda PDF Desktop (সেজদা পিডিএফ ডেস্কটপ)

Sejda PDF Desktop: পিডিএফ ফাইলের কদর সব জায়গাতেই।  কিন্তু সমস্যা হল পিডিএফ ফাইল কে এডিট করা যায় না। এডিট করতে হলে আবার ওয়ার্ড ফাইলে কনভার্ট করতে হয়। PDF to DOCX কনভার্টিং এর জন্য আপনি হয়তো PDF Escape বা Small PDF ব্যবহার করেছেন। কিন্তু এগুলো সব অনলাইন টুল। অফলাইন পিডিএফ টু ওয়ার্ড ফাইল কনভার্টার গুলো বেশিরভাগই প্রিমিয়াম অথবা আপনার ডকুমেন্ট এর ভেতরে ওয়াটারমার্ক বসিয়ে ডকুমেন্টের বারোটা বাজিয়ে দেয়। তবে সেজদা পিডিএফ ডেস্কটপ অ্যাপ্লিকেশনটি আপনাকে অফলাইন কনভার্টিং করতে দেয় আবার কোন ওয়াটার মার্কও লাগায় না।

সুবিধা:

  • খুব সহজে অফলাইন কনভার্টিং করা যায় 

অসুবিধা

  • ফ্রি ভার্সনে একদিনে সর্বোচ্চ ৩টি ডকুমেন্ট কনভার্ট করতে দেয়
  • অ্যাপ্লিকেশনটির সাইজ বেশ বড় (২৪৫ এমবি)

9. Nox (নক্স) 

Nox: এপিকে ফাইল লঞ্চারের কথা আসলে সবাই বলে ব্লুস্ট্যাকস এর কথা। কিন্তু আমরা সবাই জানি ব্লুস্ট্যাকস এর মত র‍্যাম হাংরি অ্যাপ্লিকেশন চালানোর সাধ্য খুব কম কম্পিউটারেরই আছে। আবার আপনি যদি কোন অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপার হয়ে থাকেন তবে ব্লুস্ট্যাকস আপনার কোন কাজে আসবে না। কারণ ব্লুস্ট্যাকস কোন রুট অ্যাক্সেস দেয় না। তবে নক্স ভিন্ন। নক্স লঞ্চারের সাইজও কম (৩৭৬এমবি) আবার বেশি র‍্যামও খরচ করে না। খুব সহজেই নক্স লঞ্চারে রুট অ্যাক্সেস পাওয়া যায়। 

সুবিধা:

  • সাইজ ছোট তাই দ্রুত চলে
  • রুট অ্যাক্সেস পাওয়া যায়

অসুবিধা: 

  •  শুধুমাত্র অ্যান্ড্রয়েড ৪.৪.২ ও ৫.১.১ ব্যবহার করা যায়

10. Plex (প্লেক্স)

Plex: প্লেক্স একটি মিডিয়া সার্ভার অ্যাপ্লিকেশন। অর্থাৎ এর মাধ্যমে আপনি মুভি বা অডিও ফাইল আপনার ইচ্ছামত ডিভাইসে চালাতে পারবেন। এজন্য প্রথমে আপনাকে একটি কম্পিউটার কে সার্ভার হিসেবে সিলেক্ট করতে হবে, যেটিকে সবসময় চালু থাকতে হবে এবং ইন্টারনেট এ কানেক্টেড থাকতে হবে। এবার আপনি আপনার এই সার্ভার থেকে ভিডিও, ছবি বা অডিও হোস্ট করতে পারবেন যেগুলো আপনার সব ডিভাইসে আপনি দেখতে পারবেন। প্লেক্স সব ধরণের ডিভাইসকেই সাপোর্ট করে। সমস্যা হল, আপনাকে প্লেক্স ব্যাবহারে সময়ে ইন্টারনেটে কানেক্টেড থাকতে হবে। তবে আপনি প্লেক্স প্রিমিয়াম ব্যাবহার করে এ সমস্যা সমাধান করতে পারবেন। সেজন্য প্রতিমাসে খরচ করতে হবে ৫ ডলার।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url