বায়ার স্ক্যাম এবং মার্কেপ্লেসে সফলতার ৬৫টি টিপস

ফাইভারে বায়ারের সাথে কথা বলার সময় প্ল্যাটফর্মের নীতিমালা মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে ফাইভারে আলাপচারিতায় কী বিষয়ে আলোচনা করা যাবে বা যাবে না, তার একটি তালিকা দেওয়া হলো:

ফাইভার নীতিমালা অনুযায়ী যা আলোচনা করা যাবে:

  1. প্রজেক্ট সংক্রান্ত আলাপ: কাজের ধরণ, প্রয়োজনীয়তা, ডেলিভারি টাইম, এবং কাজ কিভাবে করা হবে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে পারেন।
  2. প্রাইস এবং অফার: গিগ-এর মূল্য নিয়ে আলোচনা করতে পারেন এবং কোন অতিরিক্ত কাজ থাকলে তার জন্য কাস্টম অফারও দিতে পারেন।
  3. ডেলিভারি প্রক্রিয়া ও ফাইল শেয়ারিং: কিভাবে কাজ সম্পূর্ণ করে ফাইল শেয়ার করবেন বা ডেলিভারি করবেন সে বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পারেন।
  4. আপনার সার্ভিস সম্পর্কে তথ্য: আপনি কীভাবে কাজ করেন, আপনার অভিজ্ঞতা, এবং আপনি কীভাবে বায়ারকে সাপোর্ট দিতে পারেন সে বিষয়ে আলোচনা করতে পারেন।

ফাইভার নীতিমালা অনুযায়ী যা আলোচনা করা যাবে না:

  1. কন্টাক্ট ডিটেইল শেয়ারিং: বাইরের যোগাযোগ মাধ্যম (ইমেইল, ফোন নাম্বার, সোশ্যাল মিডিয়া) শেয়ার করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
  2. পেমেন্ট বাইপাস: ফাইভার প্ল্যাটফর্মের বাইরে লেনদেন করার চেষ্টা করা যাবে না। ফাইভার ছাড়া অন্য পেমেন্ট মাধ্যম উল্লেখ করাও নীতিমালা বিরোধী।
  3. অবৈধ কাজের প্রস্তাব: কপিরাইটেড কনটেন্ট তৈরি, জাল কাগজপত্র তৈরি, অথবা অন্য যে কোন অবৈধ কাজের প্রস্তাব দেওয়া বা গ্রহণ করা যাবে না।
  4. স্প্যামিং বা অযথা মেসেজ পাঠানো: নিয়মিত অপ্রয়োজনীয় মেসেজ পাঠালে বা স্প্যাম করলে আপনার অ্যাকাউন্টের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

স্ক্যামার বায়ারদের থেকে সাবধান থাকার কৌশল:

  1. প্রলোভনের ফাঁদ এড়ানো: কেউ যদি খুব বেশি লাভের প্রলোভন দেখায়, বুঝে নিন এটি স্ক্যাম হতে পারে। যেমন: অল্প সময়ে বেশি ইনকামের কথা বলে।
  2. বাইরের লেনদেনের প্রস্তাব এড়ানো: স্ক্যামাররা অনেক সময় বাইরের মাধ্যমে লেনদেনের প্রস্তাব দেয়। ফাইভারের বাইরে লেনদেন না করার চেষ্টা করুন।
  3. অস্বাভাবিক প্রস্তাবে সতর্ক থাকুন: যদি কেউ কাজের জন্য অ্যাডভান্স ফি প্রদান করতে বলে, অথবা আপনার ব্যক্তিগত তথ্য চায়, তবে সতর্ক থাকুন।
  4. প্রোফাইল যাচাই: বায়ারের প্রোফাইল রিভিউ চেক করুন। নতুন প্রোফাইল বা কোনো রিভিউ ছাড়াই বড় প্রজেক্টের কথা বললে সতর্ক থাকুন।
  5. রিপোর্ট করুন: যদি কোনো বায়ার সন্দেহজনক মনে হয়, তবে ফাইভারের হেল্প সেন্টারের মাধ্যমে তাদের রিপোর্ট করুন।

ফাইভারের নীতিমালা মেনে সতর্কতার সাথে কাজ করলে আপনার প্রোফাইল ও আর্থিক নিরাপত্তা বজায় থাকবে।

ফাইভারে সফলভাবে কাজ করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

ফাইভারে কাজ করার সময় যে সকল বিষয়ে সতর্ক থাকবেন:

১. ফেক রিভিউ থেকে সতর্ক থাকা

  • ফাইভার অনেক কড়া নীতি অনুসরণ করে ফেক রিভিউয়ের ব্যাপারে। তাই নিজের গিগ-এ ফেক রিভিউ কেনার চেষ্টা করবেন না। এটি আপনার অ্যাকাউন্ট স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

২. ওভারপ্রমিজ করা থেকে বিরত থাকা

  • বায়ারের আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য নিজের ক্ষমতার বাইরে কোন কিছু প্রমিজ করবেন না। এতে কাজের মান কমে যেতে পারে এবং নেতিবাচক রিভিউ পেতে পারেন।

৩. ডেলিভারি টাইম মেনে চলা

  • প্রজেক্টের ডেলিভারি টাইম যথাযথভাবে মেনে চলা খুবই জরুরি। ডেলিভারি লেট হয়ে গেলে বায়ার রিভিউতে খারাপ মন্তব্য দিতে পারে এবং ফাইভারে আপনার র‍্যাংকিং কমে যেতে পারে।

৪. স্প্যামিং ও অতিরিক্ত মেসেজ পাঠানো এড়িয়ে চলুন

  • বায়ারের অনুমতি ছাড়া বারবার মেসেজ পাঠানো থেকে বিরত থাকুন। এ ধরনের আচরণকে ফাইভার স্প্যাম হিসেবে গণ্য করতে পারে।

৫. বায়ারের নির্দেশনা ভালোভাবে বোঝা

  • বায়ারের নির্দেশনা ভালোভাবে বুঝে কাজ শুরু করুন। কোন কিছু পরিষ্কার না হলে আগে থেকেই বায়ারের সাথে আলোচনা করে নিন, এতে করে ভুল কম হবে এবং কাজের মান উন্নত থাকবে।

৬. অতিরিক্ত কাজ চেয়ে বসা

  • প্রজেক্ট শুরুর পর বায়ার অনেক সময় অতিরিক্ত কাজ চেয়ে বসতে পারেন যা মূল স্কোপের বাইরে। এ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কাজের জন্য কাস্টম অফার পাঠিয়ে দিন বা বায়ারকে সঠিকভাবে বুঝিয়ে বলুন।

৭. প্রাইস নেগোসিয়েশন ঠিকভাবে করা

  • অনেকে বেশি কাজ কম দামে করাতে চায়। এতে আপনার কাজের মান এবং সময় নষ্ট হতে পারে। সঠিক মূল্যে কাজ করতে সম্মতি দিন এবং আপনার দক্ষতার মূল্য দিন।

৮. বায়ারের রিভিউ ও প্রোফাইল যাচাই করা

  • কাজ শুরুর আগে বায়ারের প্রোফাইল রিভিউ দেখে নিন। নতুন বায়ার হলেও কোনো অসঙ্গতি লক্ষ্য করলে সতর্ক থাকুন।

৯. গিগ আপডেট ও অপটিমাইজেশনে মনোযোগ দিন

  • আপনার গিগ আপডেট করুন এবং ট্রেন্ড অনুযায়ী কিওয়ার্ড ও টাইটেল পরিবর্তন করুন। গিগের ছবির মান ভালো রাখুন এবং নির্দিষ্ট ইন্ডাস্ট্রির জন্য কাস্টমাইজ করুন।

১০. ফাইভার কনটাক্ট সাপোর্ট ব্যবহারে অভ্যস্ত হন

  • যদি কোনো সমস্যা বা বায়ারের আচরণে সন্দেহ হয় তবে ফাইভারের কনটাক্ট সাপোর্টে রিপোর্ট করুন। এ বিষয়ে ফাইভারের সাহায্য নিন।

এই সব বিষয় মেনে চললে ফাইভারে আপনার প্রোফাইল নিরাপদ থাকবে এবং বায়ারের সাথে কাজের সম্পর্কও আরও মজবুত হবে।

ফাইভারে বায়ারের সাথে ভিডিও কল

ফাইভারে বায়ারের সাথে ভিডিও কল করার সময় পেশাদারিত্ব বজায় রাখা ও ফাইভারের নীতিমালা মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে কিছু বিষয় উল্লেখ করা হলো যেগুলো ভিডিও কল করার সময় সতর্কতার সাথে মানতে হবে:

ভিডিও কলের সময় সতর্ক থাকবেন যে বিষয়গুলোতে:

  1. কন্টাক্ট শেয়ারিং এড়িয়ে চলা:

    • ফাইভারের বাইরে যোগাযোগের মাধ্যম (যেমন ইমেইল, ফোন নাম্বার, সোশ্যাল মিডিয়া) শেয়ার করবেন না। ফাইভারের চ্যাট এবং ভিডিও কল ব্যবস্থার মধ্যেই আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখুন।
  2. শালীন ও পেশাদার আচরণ বজায় রাখা:

    • বায়ারের সাথে সবসময় শালীন ভাষায় এবং পেশাদার ভঙ্গিতে কথা বলুন। অন্যথায়, এটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং বায়ার অভিযোগ করতে পারে।
  3. বাইরের পেমেন্ট উল্লেখ না করা:

    • ভিডিও কলে বাইরের মাধ্যমে পেমেন্ট বা ফাইভারের বাইরের কোন লেনদেনের কথা আলোচনা করা ফাইভারের নীতিমালার বিরুদ্ধে। সবসময় ফাইভারের পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করার বিষয়ে আলোচনা করুন।
  4. বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখুন:

    • শুধুমাত্র কাজের বিষয়বস্তু, কাজের প্রক্রিয়া এবং ডেলিভারি সম্পর্কে আলোচনা করুন। ব্যক্তিগত বা ব্যক্তিগত তথ্য জানতে চাওয়ার চেষ্টা করবেন না এবং এ ধরনের কোনো প্রশ্নের উত্তরও দেবেন না।
  5. নির্দেশনা ভালোভাবে শোনা এবং বুঝে নেয়া:

    • বায়ারের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন এবং যে কোন বিভ্রান্তি থাকলে সেগুলো পরিষ্কার করে নিন। এটা কাজের মান উন্নত করতে সহায়তা করবে।
  6. পেশাদার পোশাক পরিধান করা:

    • ভিডিও কলে পেশাদার পোশাক পরিধান করুন, যা আপনার গুরুত্ব ও দক্ষতাকে প্রতিফলিত করবে। এটি বায়ারের কাছে একটি ইতিবাচক বার্তা পাঠাবে।

ভিডিও কল করার ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ সাজেশন:

  1. অগ্রিম প্রস্তুতি নেয়া:

    • ভিডিও কলে যাওয়ার আগে কাজের বিষয়বস্তু সম্পর্কে ভালোভাবে প্রস্তুতি নিন। বায়ারের প্রয়োজনীয় তথ্য বা নির্দেশনা যদি ফাইল আকারে থাকে, তাহলে সেগুলো প্রস্তুত রাখুন।
  2. সময় নির্ধারণ করা:

    • বায়ারের সাথে সময় নির্ধারণ করে ভিডিও কলে অংশগ্রহণ করুন। এটি আপনার পেশাদারিত্বের পরিচয় দেবে এবং উভয়ের জন্য সুবিধাজনক হবে।
  3. নিরিবিলি জায়গা বেছে নেয়া:

    • ভিডিও কলে অংশগ্রহণের জন্য এমন একটি জায়গা বেছে নিন যেখানে কোন শব্দ বা ডিস্টার্বেন্স নেই। এটি বায়ারের কাছে আপনার মনোযোগী দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরবে।
  4. ভালো ইন্টারনেট কানেকশন নিশ্চিত করা:

    • ভিডিও কল চলাকালীন ইন্টারনেট কানেকশন ভালো থাকতে হবে। এর মাধ্যমে কলে কোন বিঘ্ন ছাড়াই কথা বলতে পারবেন।
  5. ভিডিও কল শেষে একটি সংক্ষেপিত মেসেজ পাঠানো:

    • কল শেষে বায়ারকে একটি ছোট্ট মেসেজে করে মূল পয়েন্টগুলো লিখে পাঠান। এতে বায়ার বুঝতে পারবেন আপনি কাজের ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন।

ভিডিও কলের মাধ্যমে কাজ নিয়ে স্পষ্টভাবে আলোচনা করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে, তবে সবসময় ফাইভারের নিয়ম মেনে সতর্কতার সাথে এসব আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে।

নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে দ্রুত গিগ অর্ডার পেতে করণীয়

ফাইভারে একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে দ্রুত অর্ডার পেতে হলে কিছু কৌশল মেনে চলতে হবে যা আপনার প্রোফাইলকে আরও আকর্ষণীয় ও দৃশ্যমান করে তুলতে সাহায্য করবে। নিচে কিছু কার্যকর পরামর্শ দেওয়া হলো:

১. এক্সক্লুসিভ ও ভালোভাবে কিওয়ার্ড অপটিমাইজ করা গিগ তৈরি করুন

  • গিগের টাইটেল, ডেসক্রিপশন এবং ট্যাগে এমন কিওয়ার্ড ব্যবহার করুন যা বায়ার সাধারণত সার্চ করে থাকেন। কিওয়ার্ড সঠিকভাবে ব্যবহার করলে গিগ ফাইভার সার্চে সহজে উঠে আসবে।

২. কম্পিটিটিভ প্রাইসিং এবং প্রাথমিক অফার দিন

  • শুরুতে আপনার সার্ভিসের জন্য একটু কম দাম নির্ধারণ করুন। এতে করে বায়াররা নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনাকে সহজেই অর্ডার দিতে আগ্রহী হবেন। পরে রিভিউ ও র‌্যাংক বাড়লে দাম বাড়াতে পারবেন।

৩. প্রফেশনাল গিগ ইমেজ এবং ভিডিও ব্যবহার করুন

  • গিগের ছবি এবং ভিডিওর মান যত ভালো হবে, বায়ারের দৃষ্টি আকর্ষণের সম্ভাবনা তত বেশি। আপনার গিগের জন্য প্রফেশনাল ইমেজ বা সংক্ষিপ্ত একটি ভিডিও ব্যবহার করলে সেটি আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে এবং ফাইভারেও আরও বেশি প্রাধান্য পায়।

৪. বায়ার রিকোয়েস্টে সক্রিয় থাকুন

  • ফাইভারের বায়ার রিকোয়েস্ট বিভাগে নিয়মিত চোখ রাখুন এবং বায়ারদের রিকোয়েস্টের উত্তর দ্রুত দিন। এক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ত অথচ আকর্ষণীয় প্রস্তাব তৈরি করে পাঠান, যাতে বায়ার সহজে আপনাকে বেছে নেয়।

৫. গিগের SEO-ফ্রেন্ডলি ডেসক্রিপশন লিখুন

  • গিগের ডেসক্রিপশনে আপনার সার্ভিসের বিশদ বিবরণ দিন, কিন্তু সেটি SEO ফ্রেন্ডলি হতে হবে। কিওয়ার্ড এবং রিলেটেড সার্ভিস সম্পর্কে কথা বলে স্পষ্ট ও সংক্ষেপে বর্ণনা দিন।

৬. প্রোফাইল সম্পূর্ণ এবং পেশাদার রাখুন

  • আপনার প্রোফাইল সম্পূর্ণ করুন এবং পেশাদার ভাষায় নিজেকে বর্ণনা করুন। প্রোফাইলে নিজের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, এবং আগ্রহের বিষয়গুলো সঠিকভাবে উল্লেখ করুন, যাতে বায়ার আপনার উপর ভরসা করতে পারে।

৭. শিক্ষামূলক এবং সহায়ক কনটেন্ট তৈরি করে প্রমোশন করুন

  • সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাইভার গিগ প্রমোট করতে পারেন। কাজের সাথে সম্পর্কিত শিক্ষামূলক বা সহায়ক কনটেন্ট তৈরি করে সেটি ফেসবুক, লিংকডইন, টুইটার বা ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করুন, যাতে আরও বেশি দর্শক আপনার গিগে আসতে পারেন।

৮. ফাইভারের লেভেল-১ টার্গেট করুন

  • দ্রুত লেভেল-১ অর্জনের জন্য আপনার প্রথম কাজগুলোর সময়মতো ডেলিভারি করুন এবং রিভিউ অর্জন করার উপর ফোকাস করুন। এটি আপনাকে আরও বেশি বায়ারের সামনে নিয়ে আসবে।

৯. ফাইভারে নিজেকে আপডেট রাখুন

  • ফাইভারের নিয়মিত আপডেট এবং গিগ অপটিমাইজেশনের নিয়ম জানুন এবং সেটি আপনার গিগে প্রয়োগ করুন। মার্কেটের নতুন ট্রেন্ড বা ফাইভারের পরিবর্তন সম্পর্কে অবগত থাকলে প্রোফাইল ও গিগ সহজেই উপরের দিকে উঠে আসবে।

১০. ধৈর্য্য এবং নিয়মিত উপস্থিতি বজায় রাখুন

  • ফাইভারে নিয়মিত সক্রিয় থাকুন এবং ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করুন। ফাইভার একজন নতুন ফ্রিল্যান্সারকে অ্যালগরিদম অনুযায়ী কিছুদিন সময় দেয় নিজেকে প্রমাণ করার জন্য, তাই সক্রিয়তা ও ধারাবাহিকতা বজায় রাখলে দ্রুত সফল হতে পারবেন।

১১. স্মার্টলি প্রথম অর্ডারের জন্য অফার দিন

  • নতুন বায়ারকে স্পেশাল ডিসকাউন্ট বা ছোটখাটো অতিরিক্ত সার্ভিস দেওয়ার কথা বলুন। এটি বায়ারের কাছে আকর্ষণীয় হতে পারে এবং আপনাকে অর্ডার দিতে আগ্রহী করবে।

এই কৌশলগুলো নিয়মিত প্রয়োগ করলে ফাইভারে অল্প সময়ে অর্ডার পেতে অনেকটা সহায়ক হবে।

একজন নতুন ফিল্যান্সার কিভাবে বায়ারকে ইম্প্রেস করতে পারে 

একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে রিভিউ কম বা না থাকলেও বায়ারের আস্থা অর্জন করা সম্ভব। কিছু কৌশল রয়েছে যা মেনে চললে বায়ার সহজেই ইম্প্রেস হতে পারেন এবং নতুন হলেও আপনাকে কাজের জন্য বেছে নিতে পারেন।

নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে বায়ারকে ইম্প্রেস করার কৌশল:

  1. প্রোফাইল এবং গিগকে প্রফেশনালভাবে সাজান:

    • প্রোফাইল এবং গিগ বায়ারের কাছে আপনার প্রথম ইমপ্রেশন তৈরি করে। প্রোফাইলে আপনার অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, এবং যোগ্যতা স্পষ্টভাবে তুলে ধরুন। প্রোফাইল পিকচার, গিগ ইমেজ এবং ডেসক্রিপশন পেশাদার রাখুন।
  2. গিগ ডেসক্রিপশনে স্পষ্টতা বজায় রাখা:

    • আপনার সার্ভিস সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট ও সহজবোধ্য ভাষায় ডেসক্রিপশন লিখুন। গিগে কি কি সার্ভিস দিচ্ছেন, প্রজেক্ট প্রক্রিয়া, এবং আউটপুট সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দিন।
  3. অতিরিক্ত অফার বা বোনাস সার্ভিস দিন:

    • বায়ারকে আকৃষ্ট করতে বিনামূল্যে ছোটখাটো অতিরিক্ত সেবা বা ডিসকাউন্ট অফার করতে পারেন। যেমন, একজন কনটেন্ট রাইটার হিসেবে ৫০০ শব্দের সাথে অতিরিক্ত ১০০ শব্দ ফ্রি দিতে পারেন। এটি বায়ারের কাছে পজিটিভ ইম্প্রেশন তৈরি করতে সহায়ক।
  4. রেসপন্স টাইম এবং যোগাযোগের দক্ষতা:

    • বায়ারের মেসেজের দ্রুত উত্তর দিন এবং যথাসম্ভব পরিষ্কারভাবে কথা বলুন। ভালো যোগাযোগ দক্ষতা নতুন ফ্রিল্যান্সারদের প্রতি বায়ারের আস্থা তৈরি করে এবং আপনার পেশাদারিত্বের ছাপ ফেলে।
  5. কাস্টম অফার তৈরি করা:

    • অনেক বায়ার নির্দিষ্ট প্রয়োজন অনুসারে কাস্টমাইজড অফার চান। তাদের প্রয়োজন বুঝে দ্রুত কাস্টম অফার প্রদান করলে তারা আপনাকে বেছে নিতে আগ্রহী হবে।
  6. পোর্টফোলিও সংযুক্ত করুন:

    • যদি পূর্বে অন্য প্ল্যাটফর্মে বা ব্যক্তিগতভাবে কাজ করে থাকেন, তাহলে সেই কাজগুলোর উদাহরণ পোর্টফোলিও হিসেবে গিগে যুক্ত করুন। এতে করে বায়ার আপনার কাজের মান সম্পর্কে ধারণা পেতে পারে।
  7. ডেমো বা ট্রায়াল অফার করুন:

    • বায়ারকে কিছুটা ডেমো বা ছোটখাটো নমুনা কাজ করে দেখানোর কথা বলুন। এতে বায়ার আপনার দক্ষতা যাচাই করতে পারবেন এবং আপনার উপর আস্থা বাড়বে।
  8. মোটিভেশন ও পজিটিভিটি বজায় রাখুন:

    • বায়ারের সাথে সবসময় পজিটিভ এবং মোটিভেটেড আচরণ করুন। বায়ার যখন অনুভব করবেন যে আপনি কাজের জন্য আগ্রহী ও আত্মবিশ্বাসী, তখন তারা আপনাকে নিয়োগের বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করবেন।
  9. প্রথম অর্ডারে অতিরিক্ত মনোযোগ দিন:

    • প্রথম অর্ডারে কাজের মান, টাইম ম্যানেজমেন্ট এবং ক্লায়েন্টের ফিডব্যাক নেওয়ার ব্যাপারে সর্বাধিক গুরুত্ব দিন। ভালো কাজ করে পজিটিভ রিভিউ পেলে তা ভবিষ্যতে আরও বায়ারকে আকৃষ্ট করবে।
  10. সোশ্যাল প্রুফ যোগ করুন:

    • যদি সম্ভব হয়, ফাইভারের বাইরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটে নিজের সাফল্য, দক্ষতা, ও কাজের উদাহরণ শেয়ার করুন। প্রোফাইলে বা গিগে সোশ্যাল প্রুফের লিঙ্ক দিলে বায়ারের কাছে আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়বে।

এই কৌশলগুলো প্রয়োগ করলে নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে বায়ারের আস্থা অর্জন করা সম্ভব হবে এবং দ্রুত অর্ডার পেতে সুবিধা হবে।

নতুন ফ্রিল্যান্সারদের কাজ না পাওয়ার মূল কারণ

নতুন ফ্রিল্যান্সারদের অনেকেই প্রথম অর্ডার পেতে কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন। বেশ কিছু সাধারণ কারণ রয়েছে যেগুলোর জন্য তারা দ্রুত অর্ডার পেতে ব্যর্থ হন। নিচে এমন কিছু বৈশিষ্ট্যের তালিকা দেওয়া হলো যেগুলোর অনুপস্থিতি প্রথম অর্ডার পেতে সমস্যা তৈরি করতে পারে:

১. পেশাদার প্রোফাইলের অভাব

  • অনেক নতুন ফ্রিল্যান্সার প্রোফাইল পূর্ণাঙ্গভাবে সেটআপ করেন না। যেমন প্রোফাইল পিকচার না থাকা, প্রফেশনাল বায়ো না থাকা বা গুরুত্বপূর্ণ স্কিল ও অভিজ্ঞতার তথ্য উল্লেখ না করা।

২. আকর্ষণীয় ও সঠিকভাবে অপটিমাইজ করা গিগের অভাব

  • গিগের টাইটেল, ডেসক্রিপশন ও ট্যাগ যথাযথভাবে সাজানো না হলে ফাইভারের সার্চে সেই গিগ সহজে দেখা যায় না। এছাড়া, কিওয়ার্ড সঠিকভাবে ব্যবহার না করলেও গিগের র‍্যাঙ্ক কমে যায়।

৩. ভালো গিগ ইমেজ ও ভিডিওর অনুপস্থিতি

  • অনেক ফ্রিল্যান্সার সাধারণ মানের ইমেজ ব্যবহার করেন বা ভিডিও যুক্ত করেন না, যা বায়ারের আগ্রহ কমিয়ে দেয়। প্রফেশনাল ইমেজ ও ভিডিও দ্রুত বায়ারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সাহায্য করে।

৪. সার্ভিসের বিষয়ে পরিষ্কার ব্যাখ্যার অভাব

  • গিগের ডেসক্রিপশনে পরিষ্কারভাবে সার্ভিস সম্পর্কে না বললে বায়ারের কাছে এটি কম আস্থাশীল মনে হয়। গিগ ডেসক্রিপশনকে সহজ, বিস্তারিত, ও বোঝার উপযোগী করতে না পারলে বায়ারের আগ্রহ কমে যায়।

৫. প্রাইসিং স্ট্র্যাটেজির ঘাটতি

  • অনেক নতুন ফ্রিল্যান্সার তাদের কাজের প্রাইসিং সঠিকভাবে সেট করেন না। প্রাথমিক অবস্থায় প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে পরিষেবা না রাখলে বায়ারের জন্য সেটি আকর্ষণীয় হয় না।

৬. বায়ার রিকোয়েস্টে সক্রিয়তার অভাব

  • নতুনদের জন্য বায়ার রিকোয়েস্ট একটি সহজ সুযোগ হতে পারে প্রথম অর্ডার পাওয়ার জন্য। অনেকেই এই সেকশনে সক্রিয় থাকেন না বা সঠিকভাবে প্রস্তাব পাঠাতে ব্যর্থ হন, ফলে অর্ডার পেতে দেরি হয়।

৭. কাস্টমার সার্ভিস ও যোগাযোগের ঘাটতি

  • অনেক ফ্রিল্যান্সার বায়ারের মেসেজের উত্তর দিতে দেরি করেন বা কমিউনিকেশন স্কিল দুর্বল হওয়ায় বায়ার প্রফেশনালিজমের অভাব অনুভব করেন। দ্রুত রেসপন্স ও যোগাযোগ দক্ষতা ভালো না হলে বায়ারের আস্থা কমে যায়।

৮. রিভিউ সংগ্রহে কার্যকর কৌশলের অভাব

  • নতুন ফ্রিল্যান্সারদের প্রোফাইলে রিভিউ না থাকলে বায়ারের কাছে সেটি কম আকর্ষণীয় হতে পারে। প্রথম কয়েকটি কাজের পরামর্শ নিয়ে পজিটিভ রিভিউ সংগ্রহে মনোযোগ না দিলে আরও অর্ডার পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

৯. ডেমো বা উদাহরণ কাজ না থাকা

  • কাজের কোনো উদাহরণ বা পোর্টফোলিও না থাকলে বায়ারের জন্য ফ্রিল্যান্সারের দক্ষতা যাচাই করা কঠিন হয়। কাজের ডেমো বা পোর্টফোলিও প্রদান করলে বায়ারের কাছে সেটি আরও বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে।

১০. সঠিক কাস্টমাইজড অফার দেওয়ার অভাব

  • অনেক সময় বায়াররা নিজেদের প্রয়োজন অনুসারে কাস্টমাইজড অফার চান। ফ্রিল্যান্সার যদি সঠিকভাবে অফার কাস্টমাইজ না করতে পারেন, তবে বায়ার অন্য অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সারকে বেছে নিতে পারেন।

এই বৈশিষ্ট্যগুলোর অনুপস্থিতি নতুন ফ্রিল্যান্সারদের প্রথম অর্ডার পেতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। এজন্য প্রথম থেকেই এগুলোতে মনোযোগ দিয়ে প্রোফাইল ও গিগ সাজানো গুরুত্বপূর্ণ।

এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url