OrdinaryITPostAd

রমজানের মাগফিরাতের দোয়া - রমজান মাগফিরাতের ১০ দিন

রমজান যেহেতু মাগফিরাতের মাস তাই রমজানের মাগফিরাতের দোয়া করতে হবে। সেই জন্য আমাদের রমজানের মাগফিরাতের দোয়া সম্পর্কে জানতে হবে। আজকের এই আর্টিকেলে পবিত্র মাস মাহে রমজানের মাগফিরাতের দোয়া সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত জানাবো।

তাহলে চলুন দেরি না করে ঝটপট রমজানের মাগফিরাতের দোয়া সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। উক্ত বিষয়টি জানতে হলে আপনাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

সূচিপত্রঃ রমজানের মাগফিরাতের দোয়া - রমজান মাগফিরাতের ১০ দিন

রমজানকে মাগফিরাতের মাস বলা হয় কেন?

পবিত্র মাহে রমজানকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। প্রথম দশ দিনকে রহমত, দ্বিতীয় দশ দিনকে মাগফিরাত এবং তৃতীয় দশ দিনকে নাজাত এই তিন ভাগে বিভক্ত করা হয়। তাহলে রমজানের মধ্য দশক অর্থাৎ ১১ রমজান থেকে ২০ রমজান পর্যন্ত মাগফিরাত অংশ। মাগফিরাত অর্থ হচ্ছে ক্ষমা করা। রমজানের মাগফিরাতের দোয়া করতে হবে একমাত্র আল্লাহ তায়ালার কাছে।

আরো পড়ুনঃ রমজান মাসের সেরা ২০ টি আমল - রমজানের রোজার ফজিলত

রমজান মাসের রহমতের অংশ শেষ হয়ে মাগফিরাতের অংশ শুরু হয়। রমজান মাসের মাগফিরাত সম্পর্কে কোরআন ও হাদিসের বর্ণনা করা হয়েছে। মাগফিরাত শব্দের অর্থ হচ্ছে ক্ষমা। আমরা জানি যে রমজান মাস হল অতি গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যপূর্ণ একটি মাস। মহান আল্লাহ তায়ালা অসংখ্য গুণাবলীর অধিকারী তিনি হচ্ছে ক্ষমাশীল।

আল্লাহ তায়ালার বান্দা গুলো যেন সারা বছরের সব গুনাহ থেকে মুক্তি পেতে পারে এজন্য আল্লাহর রাব্বুল আলামিন রমজান মাসের দ্বিতীয় দশকে মাগফিরাত তথা ক্ষমা লাভের দিন হিসেবে বিবেচনা করেছেন। মাগফিরাতের অংশ অংশে আমাদের করণীয় হলো সর্বোচ্চ ক্ষমাপ্রদর্শন করা। মহানবী সাঃ বলেছেন, ' সকল মানুষ ভুলকারী। আর ভুল কারীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হল যারা তওবাকারী'{ বায়হাকী}

যেহেতু আল্লাহ তায়ালা রমজান মাসের এই দশকে তাঁর বান্দা গুলোকে ক্ষমা করতে থাকে সাধারণত তাই রমজানের দ্বিতীয় দশক কে মাগফিরাত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই দশকে আমাদের বেশ কিছু করণীয় রয়েছে সবথেকে বেশি করণীয় হলো আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। যেন আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে ক্ষমা করে দেন।

রমজানের মাগফিরাতের দোয়া

আমরা জানি যে রমজানের মাগফিরাতের দোয়া করা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই সময় আল্লাহ তা'আলা তার সকল বান্দাকে ক্ষমা করে থাকেন। প্রত্যেক মুমিনের কর্তব্য যে সে যেন কেবল নিজেই মুত্তাকী না হয় বরং সে নিজের পরিবারের সবাইকে নেককার মুত্তাকী হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করে।

মাগফিরাতের দশকে মুসলিম উম্মাহ আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা এবং অনুগ্রহ পেতে কান্নাকাটি করবে। মাগফিরাতের দশকের ক্ষমা পাওয়ার জন্য বেশি বেশি দুইটি দোয়া পড়তে হবে।

আরবিঃ رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَأَنْتَ خَيْرُ الرَّاحِمِيْنَ

উচ্চারণঃ রাব্বিগফির ওয়ারহাম ওয়া আংতা খাইরুর রাহিমিন।'

অর্থঃ হে আমার প্রভু! আমাকে ক্ষমা করুন এবং (আমার উপর) রহম করুন, আপনিই তো সর্বশ্রেষ্ঠ রহমকারী। {সুরা মুমিনুনঃ আয়াত ১১৮}

আরবিঃ رَبِّ إِنِّيْ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ فَاغْفِرْ لِيْ

উচ্চারণঃ রাব্বি ইন্নি জ্বালামতু নাফসি ফাগফিরলি।

অর্থঃ হে আমার প্রভু! নিশ্চয়ই আমি নিজের উপর জুলুম করে ফেলেছি, অতএব আপনি আমাকে ক্ষমা করুন। {সুরা কাসাসঃ আয়াত ১৬}

মহান আল্লাহ তা'আলার অপার রহমতের উসিলা লাভে ধন্য হতে রোজার ১১তম দিনে এই দোয়া পড়তে হবেঃ

আরবিঃ الیوم الحادی عشر اَللّـهُمَّ حَبِّبْ اِلَیَّ فیهِ الاِْحْسانَ، وَکَرِّهْ اِلَیَّ فیهِ الْفُسُوقَ وَالْعِصْیانَ، وَحَرِّمْ عَلَیَّ فیهِ السَّخَطَ وَالنّیرانَ بِعَوْنِکَ یا غِیاثَ الْمُسْتَغیثینَ

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা  হাব্বিব ইলাইয়্যা ফিহিল ইহসান; ওয়া কাররিহ ইলাইয়্যা ফিহিল ফুসুক্বি ওয়াল ই’সইয়ান, ওয়া হাররিম আ’লাইয়্যা ফিহিস সাখাত্বা ওয়ান নিরানা বিআ’ওনিকা ইয়া গিয়াছাল মুসতাগিছিন।

অর্থঃ হে আল্লাহ! এ দিনে সৎ কাজকে আমার কাছে প্রিয় করে দাও আর অন্যায় ও নাফরমানীকে অপছন্দনীয় কর। তোমার অনুগ্রহের ওসিলায় আমার জন্য তোমার ক্রোধ ও যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি হারাম করে দাও। হে আবেদনকারীদের আবেদন শ্রবণকারী।

রমজান মাগফিরাতের ১০ দিন - রমজান মাগফিরাতের ১০ দিনের আমল

রমজান মাস আল্লাহ তায়ালার কাছে গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। রমজান মাগফিরাতের ১০ দিনের আমল সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে। কারণ মাগফিরাতের অংশে আল্লাহ তা'আলা তাঁর বান্দাদেরকে ক্ষমা করে থাকেন। একজন প্রকৃত মুসলিম হিসেবে আমাদের আল্লাহতালার ক্ষমা খুবই প্রয়োজন। কারণ আল্লাহ তাআলার দোয়া এবং ক্ষমা ছাড়া আমরা কখনোই মাফ পেতে পারবো না।

আরো পড়ুনঃ রমজানের গুরুত্বপূর্ণ ৮টি ইবাদাত - রমজানের ইবাদতের ফজিলত

রমজান মাসের ১১ রমজান থেকে ২০ রমজান পর্যন্ত মাগফিরাতের অংশ থাকে। দুনিয়ার সকল গুনাহগার মুসলমান চিরস্থায়ী শাস্তি ও মুক্তির জন্য আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকে। রমজান মাসের এই দশ দিনে আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে থাকেন। তাই আমাদেরকে রমজান মাগফিরাতের ১০ দিনের আমল সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে।

মাগফিরাতের দশ দিন আল্লাহ তা'আলা তাঁর বান্দাদেরকে ক্ষমা করবেন। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন, "রমজানের প্রথম ১০ দিন রহমতের, দ্বিতীয় দশদিন মাগফিরাতের এবং তৃতীয় দশ দিন জাহান্নাম থেকে নাজাত প্রাপ্তির"{ মিশকাত}

রমজান মাস সাধারণত মুমিন ব্যক্তির সারা বছরের নেকি ও পুণ্যের ঘাটতি পূরণের জন্য খুবই বড় একটি সুযোগ। যে চেষ্টা সাধনায় যাবতীয় পাপ অন্যায় অপরাধমূলক চিন্তাভাবনা ও অসৎ কাজকর্ম থেকে ক্ষমা লাভ করা হয় মাগফিরাত এর দশ দিনে। সাধারণত এই জন্যই একজন মুমিন বান্দা প্রথম ১০ দিন সকল প্রকার অন্যায় থেকে নিজেকে মুক্ত করে আল্লাহর রহমত কামনায় অতিবাহিত করেন যার ফলে মাগফিরাতের 10 দিন আল্লাহ তায়ালা তাকে ক্ষমা করে দেন।

রমজান মাসের দ্বিতীয় দশ দিন অতিবাহিত করতে হবে আমাদের সকল প্রকার গুনাহ থেকে ক্ষমা লাভের আবেদন নিয়ে। তখন আল্লাহ রহমত প্রাপ্তদের গুনাহ মাফ করে দেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, " রমজান মাসের প্রতি রাতে একজন ফেরেশতা ঘোষণা করতে থাকেন, হে পূণ্য বান্দাগণ! অগ্রসর হও। হে পাপাচারি! থামো, চোখ খোলো"

তিনি আবার ঘোষণা করেন, 'ক্ষমাপ্রার্থীকে ক্ষমা করা হবে। অনুতপ্তের অনুতাপ গ্রহণ করা হবে। প্রার্থনাকারীর প্রার্থনা কবুল করা হবে।' মাগফিরাত বা ক্ষমা লাভের প্রত্যাশী মাগফিরাতের দশকে প্রতিরাতে গুনাহ মাফে জন্য কান্নাকাটি করবে। আশা করা যায় আল্লাহ তা'আলা তাঁর বান্দার নেক আশা কে কবুল করবেন এবং তার জীবনের সকল গুনাহগুলোকে মাফ করবেন।

রমজান মাগফিরাতের ১০ দিনের ফজিলত

রমজানের ৩০ দিনকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। রমজান মাসের মধ্যের দশ দিন হল মাগফিরাত। মাগফিরাতের ১০ দিনে আল্লাহতালা তার বান্দাদেরকে ক্ষমা করে থাকেন। রমজান মাগফিরাতের ১০ দিনের ফজিলত নিচে উল্লেখ করা হলো।

রমজান মাসের মাঝের ১০ দিন যেহেতু মাগফিরাত বা ক্ষমার, সুতরাং এই ১০ দিন আমাদের করণীয় হবে আল্লাহ পাকের ক্ষমাসংক্রান্ত নামগুলো হৃদয়ঙ্গম করে এর ভাব প্রভাব ও বৈশিষ্ট্য অর্জন ও অধিকার করে নিজের মধ্যে আত্মস্থ করার চেষ্টা করা এবং আজীবন তার ধারক বাহক হয়ে তা দান করা বা বিতরণ করা।

আল্লাহর গুণাবলি নিজের মাধ্যমে তাঁর সৃষ্টির কাছে পৌঁছে দেওয়া। আল্লাহ তাআলার ক্ষমাসুলভ নামগুলো হলো আল গফিরু অর্থ ক্ষমাশীল, আল গফুরু অর্থ ক্ষমাময়, আল গফফারু অর্থ সর্বাধিক ক্ষমাকারী। রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, 'অপরাধ স্বীকারকারী নিরপরাধ ব্যক্তির মতো।' {বুখারি, মুসলিম ও তিরমিজি}

আরো পড়ুনঃ রমজানে ওমরা করার ফজিলত - রোজার মাসে উমরার ফজিলত কি

আপনি ক্ষমা লাভ করেছেন বা ক্ষমার অধিকারী হয়েছেন, তা বোঝা যাবে আপনার আচরণে যদি ক্ষমা প্রকাশিত হয়, নয়তো নয়। রমজানের দ্বিতীয় ১০ দিন মাগফিরাতের ১০ দিন করণীয় হলো সর্বোচ্চ ক্ষমা প্রদর্শন করা। মহানবী সাঃ আরও বলেছেন, 'সকল মানুষ ভুলকারী, আর ভুলকারীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো যারা তওবাকারী।' {বায়হাকি} তিনি আরও বলেন, "তুমি ক্ষমা করো, তোমাকেও ক্ষমা করা হবে।" {তিরমিজি}

আমাদের শেষ কথাঃ রমজানের মাগফিরাতের দোয়া - রমজান মাগফিরাতের ১০ দিন

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে রমজানের মাগফিরাতের দোয়া, রমজান মাগফিরাতের ১০ দিনের ফজিলত, রমজান মাগফিরাতের ১০ দিনের আমল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আশা করি উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

একজন মুসলিম হিসেবে অবশ্যই আপনার উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানা উচিত। অবশ্যই বিষয়গুলো জানতে হলে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে নিন ধন্যবাদ।২০৭৯১

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url