OrdinaryITPostAd

কী-লগার কী? Keylogger কি পাসওয়ার্ড চুরি করে?

কী-লগার কী এবং Keylogger কিভাবে আপনার পাসওয়ার্ড চুরি করে তা নিয়ে বিস্তারিত জানতে পড়ুন পুরো পোস্টটি। মনে করুন আপনি ইন্টারনেট সিকিউরিটি সম্পর্কে মোটামুটি ভালই জানেন। তাই আপনি আপনার সমস্ত অনলাইন অ্যাকাউন্টে টু-ফ্যাক্টর সিকিউরিটি বা অনেক কড়া সিকিউরিটি দিয়ে রেখেছেন যাতে করে কেউ আপনার অ্যাকাউন্ট পাসওয়ার্ড না জানতে পারে। অথবা জানলেও অ্যাক্সেস না করতে পারে। এরপর বিভিন্ন ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার সময় ভিপিএন ব্যবহার করেন যাতে আপনার আইপি  না ট্র্যাক হয় বা আপনার ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার জানতে না পারে আপনি কোন সাইট ব্রাউজ করছেন। এছাড়াও আরোও অনেক ধরণের সিকিউরিটি দিয়ে নিশ্চিন্তে আপনার কাজ করেন। তো একদিন রাতে আপনার বিভিন্ন অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ডগুলো কম্পিউটার বা মোবাইলের কোন এক ফোল্ডারে সেভ করলেন। এছাড়া সেদিন রাতে আপনার কোন এক বন্ধুকে চ্যাটে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা বললেন।


কিন্তু হঠাৎ সকালে উঠে দেখলেন আপনার সকল অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড অন্য কেউ নিয়ে নিয়েছে। আপনার বন্ধুকে গোপনে যে গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলো বলেছিলেন সেগুলোও জেনে গেছে। এবং এসব তথ্য নিয়ে সেই ব্যক্তি আপনাকে ব্ল্যাকমেইল করছে। এখন আপনার মাথায় হাত। কিন্তু এত সিকিউরিটি দেয়ার পরেও কীভাবে এটি সম্ভব হল? দুঃখের বিষয় হল এটি আসলেই সম্ভব। এটি সম্ভব হয়েছে কী-লগারের মাধ্যমে। একটি কী-লগার আপনার অজান্তেই আপনার কী-বোর্ডে টাইপ করা প্রতিটি লিখা সংরক্ষণ করে সেই ব্যক্তির কাছে পাঠিয়ে দিতে পারে যে ব্যক্তি কী-লগারটি চালিয়েছিল।
তাহলে এখন হয়ত একটু ধারণা করতে পারছেন একটি কী-লগার আপনার অজান্তেই আপনার উপর নজরদারি চালাতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন হল কী এই কী-লগার এবং কীভাবে একটি কী-লগার আপনার উপর নজর রাখতে পারে। তাহলে চলুন এই প্রশ্নের উত্তরগুলো দেখে নেয়া যাক।

কী-লগার কী?

একজন ব্যাক্তির কী-বোর্ডের টাইপ করা প্রতিটি লেখাকে সেই ব্যক্তির অজান্তেই একটি লগ ফাইল আকারে রেকর্ড করে রাখাকে কী-লগার বা কীস্ট্রোক লগিং বলে। এটি নিম্নস্তরের হ্যাকিং পদ্ধতিগুলোর একটি। কেননা এটি ব্যবহার করার জন্য বিশেষ কোন হ্যাকিং দক্ষতা বা জ্ঞানের প্রয়োজন পড়ে না। এটি কারো অ্যাকাউন্টের ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড জানার জন্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও আরোও বিভিন্ন ক্ষেত্রে এটিকে ব্যবহার করা হয়। যেমন কোন অভিভাবক তার সন্তানের উপর নজর রাখতে,কোন প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা কম্পিউটারে কি কি করছেন সেটি নজরে রাখতে। এটিকে তৈরী করার উদ্দেশ্য ছিল ভালো কাজে ব্যবহার করা। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যক্তিরা এটিকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ধরণের অপরাধ সংঘটিত করে থাকে।

কী-লগারের ভাগ

ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে কী-লগার দুই ধরণের হয়ে থাকে।
  • হার্ডওয়্যার ভিত্তিক কী-লগারঃ যেহেতু এটি কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারের সাথে যুক্ত সেহেতু এখানে কোন সফটওয়্যার ইনস্টল করার কোন প্রয়োজন হয় না। এ ধরণের কী-লগার গুলোর উদাহরণ দিতে গেলে বলা যেতে পারে, এটি অনেকটা পেনড্রাইভের মত।
  • সফটওয়্যার ভিত্তিক কী-লগারঃ এ ধরণের কী-লগার অনেকটা সাধারণ সফটওয়্যারের মতোই দেখতে হয় এবং নকল নাম ব্যবহার করা হয় যাতে করে ব্যবহারকারী সহজে বুঝতে না পারে । এই কী-লগার কম্পিউটার বা মোবাইল যেকোন ডিভাইসে ইন্সটল করা যায়। তবে কম্পিউটারের জন্য এবং মোবাইলের জন্য আলাদা আলাদা প্রোগ্রাম হয়।
এই দুই ধরণের কী-লগার আবার আরো বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত। তবে সবগুলোর কাজ কিন্তু একই। আপনার অজান্তেই সকল তথ্য রেকর্ড করে নেবে আপনি টেরও পাবেন না। যায়হোক এতক্ষণে আশা করা যায় মোটামুটি একটা ধারণা আপনি পেয়েছেন কী-লগার সম্পর্কে। তাহলে এখন জানা যাক কীভাবে আপনার উপর গোয়েন্দাগীরি করতে বা নজর  রাখতে  একটি কী-লগার ব্যবহৃত হয়।

যেভাবে কী-লগার আপনার পাসওয়ার্ড চুরি করে

মনে করুন আপনি একটি সাইবার ক্যাফেতে বসে সেখানের একটি কম্পিউটারে নিজের ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট লগিন করলেন এবং আরো কিছু কাজ করলেন। কাজ শেষে আপনার অ্যাকাউন্ট লগ আউট করে দিলেন। কয়েকঘন্টা পরে যখন আপনি আপনার অ্যাকাউন্টে আবার লগিন করতে গেলেন দেখলেন পাসওয়ার্ড ভুল দেখাচ্ছে। মানে আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে গেছে।

এখানে যেটি ঘটেছে সেটি হল যে সাইবার ক্যাফের কম্পিউটারে আপনি আপনার অ্যাকাউন্ট লগিন করেছিলেন সেই কম্পিউটারে আগে থেকেই কেউ সফটওয়্যার ভিত্তিক কী-লগার ইনস্টল করে রেখেছিল বা হার্ডওয়্যার ভিত্তিক কোন কী-লগার লাগিয়ে রেখেছিল। যার ফলে আপনি যখন আপনার পাসওয়ার্ড টাইপ করছিলেন তখন সেটি কী-লগার দ্বারা রেকর্ড হয়ে গিয়েছিল।পরে কেউ সেটি চেক করে পাসওয়ার্ড পেয়ে যায়। এখানে এই কী-লগার যেকেউ লাগাতে পারে। হতে পারে সাইবার ক্যাফের মালিক লাগিয়েছে বা অন্য কোন ব্যক্তি।

তাহলে এখন আশা করা যায় উপরের লেখাগুলো পড়ার পর এখন খুব সহজেই বুঝতে পারছেন একটি কী-লগার কত সহজেই আপনার উপর নজর রাখাতে পারে বা আপনার উপর গোয়েন্দাগিরী করে আপনার অজান্তেই আপনার তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে।সুতরাং এমন বিপদে পড়ার আগেই নিজের কম্পিউটারের সিকিউরিটি বাড়ান এবং ভালো মানের একটি এ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url